কুমুদনাথ চৌধুরী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কুমুদনাথ চৌধুরী
126 × 280
শিকারীর বেশে কুমুদনাথ
জন্ম১৮৬২
হরিপুর গ্রাম পাবনা ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে বাংলাদেশ)
মৃত্যু১৯৩৩
মধ্যপ্রদেশ ব্রিটিশ ভারত
পেশাব্যারিস্টার
পিতা-মাতাদুর্গাদাস চৌধুরী (পিতা)
সুকুমারী দেবী (মাতা)

কুমুদনাথ চৌধুরী (১৮৬২ – ১৯৩৩ ) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি ব্যারিস্টার। তিনি সুনাম অর্জন করেন একজন শিকারি হিসাবে। [১]

জীবনী[সম্পাদনা]

কুমুদনাথ চৌধুরীর জন্ম ব্রিটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের পাবনা জেলার অন্তর্গত চাটমোহর উপজেলার হরিপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত ব্রাহ্মণ জমিদার পরিবারে। পিতা দুর্গাদাস চৌধুরী ছিলেন কৃষ্ণনগরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট[২]ও কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের জামাতা। কুমুদনাথের মাতা সুকুমারী দেবী ছিলেন রবীন্দ্রনাথের ভগিনী ।[৩] কুমুদনাথ তার মাতাপিতার দ্বিতীয় সন্তান। সাত সহোদর ভ্রাতার পাঁচ জনই ছিলেন ব্যারিস্টার। তারা হলেন- ব্যারিস্টার স্যার আশুতোষ চৌধুরী, ব্যারিস্টার যোগেশচন্দ্র চৌধুরী, ব্যারিস্টার ও সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার অনাথনাথ চৌধুরী। তার দুই ভগিনীরা হলেন, প্রসন্নময়ী ও মৃণালিনী। কুমুদনাথ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ ডিগ্রি লাভের পর ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য ইংল্যান্ড যান। ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে 'দ্য অনারেবল সোসাইটি অফ লিঙ্কনস ইন' হতে বার-এট ল' ডিগ্রি লাভের পর দেশে ফিরে কলকাতা হাইকোর্টে কর্মজীবন শুরু করেন।

'শিশুকাল হতে' কুমুদনাথকে ঝিল, জঙ্গল, পশুপাখি বিমুগ্ধ ও আকৃষ্ট করত। সেকারণে কর্মজীবনে পরিশ্রমের মধ্যেও যখনই সময় পেতেন, বেড়িয়ে পড়তেন শিকারে। তার কাছে শিকার শুধু চিত্ত বিনোদনের উপায় ছিল না, ছিল শিক্ষাক্ষেত্র। যা দেখেছেন, শুনেছেন, অনুভব করেছেন তা' তার কাছে মৃগয়াপ্রিয়, সমবৃত্তির মানুষের সহায়ক বলে মনে হয়েছে। বহু বৎসরের শিকার জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা, স্বপার্জিত জ্ঞান ভারতের নানা জঙ্গল হতে লাভ করেছেন। শিকার ক্ষেত্রে তিনি নৈপুণ্য ও সাফল্যের যশ অর্জন করেছেন। তিনি চিঠিপত্রে ছোটদের, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের শিকারের ইতিবৃত্ত ইংরাজীতে (স্পোর্টস্ই ইন ঝিল অ্যান্ড জাঙ্গল) লিখেছেন তা যেন জঙ্গলের ডায়েরি। বাংলায় "ঝিলে জঙ্গলে শিকার" নামে সেই জঙ্গলের ডায়েরি অনুবাদ করেন তার ভাগ্নী প্রিয়ম্বদা দেবী (প্রসন্নময়ীর কন্যা)। [৪] অরণ্য, অরণ্যের জীবজগত, শিকার পদ্ধতি ও অস্ত্রের বর্ণনাসহ তৎকালীন সামাজিক ও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের দলিল এই গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

মধ্যপ্রদেশের এক করদ রাজ্যের জঙ্গলে শিকারে গেলে ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে এক বাঘের অতর্কিত আক্রমণে তিনি মারা যান। [১]


তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ১৪২, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. "হরিপুর জমিদারবাড়ি,ভেঙ্গেপড়া জৌলুস"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-১৪ 
  3. "Early Barristers from East Bengal"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৫-১৪ 
  4. চৌধুরী দেবশর্মা, কুমুদনাথ (২০২৪)। ঝিলে জঙ্গলে শিকার। নটিলাস প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ১৭৬। আইএসবিএন 978-98-4985-921-5