বিষয়বস্তুতে চলুন

কিরণশশী দে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কিরণশশী দে
জন্মনামকিরণশশী দে
জন্ম( ১৯১০-০১-২৪)২৪ জানুয়ারি ১৯১০
সুনামগঞ্জ শ্রীহট্ট, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে বাংলাদেশ)
মৃত্যু১৭ মে ১৯৯৬(1996-05-17) (বয়স ৮৬)
ধরনরবীন্দ্রসঙ্গীত
পেশারবীন্দ্রসঙ্গীত বিশেষজ্ঞ ও চিত্রশিল্পী
কার্যকাল১৯৪০–১৯৯৬

কিরণশশী দে ( ২৪ জানুয়ারি ১৯১০ - ১৭ মে ১৯৯৬) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি রবীন্দ্রসঙ্গীত বিশেষজ্ঞ ও চিত্রশিল্পী। [১] রবীন্দ্রগানের গবেষক ও প্রসারক হিসাবে যথেষ্ট অবদানও রেখেছেন।

জন্ম ও সঙ্গীতশিক্ষা জীবন[সম্পাদনা]

কিরণশশী দে'র জন্ম ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জানুয়ারি (১৩১৬ বঙ্গাব্দের ১১ মাঘ) সোমবার ব্রিটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের তৎকালীন শ্রীহট্ট জেলার অধুনা সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ শহরে। [২]

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিরণশশীকে শান্তিনিকেতনে নিয়ে আসেন। সেখানে কলাভবনে নন্দলাল বসুর কাছে চিত্রকলা আর দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে সঙ্গীতের শিক্ষা নেন। শিক্ষালাভের পর কিরণশশী দিল্লির লেডি আরউইন কলেজ ও সিমলার ইউনিয়ন একাডেমিতে শিল্প শিক্ষক হিসাবে কাজ করেন। ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তৎকালীন সিংহলের (অধুনা শ্রীলঙ্কার) হোরানায় শান্তিনিকেতনের আদলে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শ্রীপল্লী তে শিল্প ও সঙ্গীতের শিক্ষক হিসাবে পাঠান। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দের ২০ মে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও জনহিতৈষী উইলমোট আব্রাহাম পেরেরার আহ্বানে রবীন্দ্রনাথ উক্ত প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং নামকরণ করেন শ্রীপল্লী

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবদ্দশায় তিনি বাংলার বাইরে গিয়ে সুবিস্তীর্ণ উত্তর-পূর্ব ও পশ্চিম ভারতের নানা শহরে রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখাবার দায়িত্ব শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করেছেন। সিংহলে অবস্থানকালে আকাশবাণীর তরফে ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে তাকে একাধিকবার রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশনের জন্য বেতারশিল্পী হিসাবে আহ্বান জানানো হয়।[২]

রবীন্দ্রগানের গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও প্রসারে কিরণশশী দে সঙ্গীত শিল্পীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন–

‘… যাঁরা কেবল বিশেষভাবে গানের চর্চা করেন তাঁদের অধিকাংশের নজর থাকে কথার উচ্চারণের চাইতে সুরের উচ্চারণের দিকেই বেশি। ফলে সুর-চর্চায় তাঁরা নিঃসন্দেহে কৃতী হন, – স্ব স্ব কণ্ঠনৈপুণ্যের প্রশংসা পেলে তাঁদের শিল্পী-জীবনের তেমনি চরিতার্থতা আসে নানাভাবে। কিন্তু কথা সংবলিত গানের ভিতরে তো শুধু সুর নয়, সেখানে যে সুরের সঙ্গে কথার দিকেও গায়কদের নজর রাখতে হয় সমান ওজনে।’

[৩]

সুদীর্ঘকাল ধরে কিরণশশী নির্ভীক ও নিরলস রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চায় যুক্ত থেকে এবং অর্ধশতাব্দীকালের অধিক সময় ধরে তিনি অবিরত রবীন্দ্রসঙ্গীতের মূলসুর যথাযথ সংরক্ষণের উপর গুরুত্বের কথা নানাভাবে ব্যক্ত করেছেন।[২] রবীন্দ্রসঙ্গীত বিষয়ে তার রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল–

রচিত গ্রন্থসমূহ[সম্পাদনা]

  • রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রামাণ্য সুর
  • রবীন্দ্রসঙ্গীত সুষমা আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-২৯৫২-০৫৮-৬
  • রবীন্দ্রসঙ্গীত; রবীন্দ্রনাথ: শিক্ষক দিনেন্দ্রনাথ
  • রবীন্দ্রসঙ্গীতের স্বরলিপি জিজ্ঞাসা
  • বিবিধ প্রশ্নোত্তরে রবীন্দ্রগীতি চর্চা (২০০২) আইএসবিএন ৮১২৯৫০০৬৭১
  • উপন্যাস - ইতিহাস নয়

সম্মাননা[সম্পাদনা]

১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে ২৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাকে নির্মলচন্দ্র ঘোষ স্মৃতি পুরস্কার প্রদান করা হয়।

জীবনাবসান[সম্পাদনা]

কিরণশশী দে ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের ১৭ মে প্রয়াত হন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ৯৫, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
  2. দে, কিরণশশী (২০০২)। বিবিধ প্রশ্নোত্তরে রবীন্দ্রগীতিচর্চ্চা। দে'জ পাবলিশিং, কলকাতা। আইএসবিএন 8129500671 
  3. দে, কিরণশশী (১৯৭৫)। রবীন্দ্রসঙ্গীত সুষমা। পৃষ্ঠা ১০৪। আইএসবিএন 978-81-2952-058-6  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)