কিটি থংলঙ্গ্যা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

কিটি থংলঙ্গ্যা (৬ অক্টোবর ১৯২৮ - ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪[১]) হলেন একজন বিশিষ্ট থাই স্তন্যপায়ীপাখিবিজ্ঞানী। খুব সম্ভবত দুইটি বিপদাপন্ন প্রজাতি আবিষ্কারের মাধ্যমে তিনি খ্যাতি অর্জন করে।

জীবনী[সম্পাদনা]

কিটি থংলঙ্গ্যা ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দের ৬ অক্টোবর থাইল্যান্ডের ব্যাংককে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে ব্যাংককের চুলালংকর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জীববিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীকালে তিনি জাতীয় বিজ্ঞান সোসাইটি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি জাদুঘরে জীববিজ্ঞানী হিসেবে কাজে যোগ দেন। এরপর ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি থাই কনজার্ভেশন সোসাইটিতে (থাই সংরক্ষণ সম্প্রদায়) স্থানান্তরিত হন। ১৯৬৫ সালে কিটি থংলঙ্গ্যা থাই ন্যাশনাল রেফারেন্স কালেকশন-এর কিউরেটর নিযুক্ত হন।[১]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

কিটি থংলঙ্গ্যা জন এডওয়ার্ডস হিলের সাথে ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বের ক্ষুদ্রতম বাদুড় প্রজাতি তথা বিশ্বের ক্ষুদ্রতম স্তন্যপায়ী প্রাণী কিটির শূকর-নাসা বাদুড় (বৈজ্ঞানিক নাম: Craseonycteris thonglongyai) আবিষ্কার করেন। তবে গুরুতর হার্ট অ্যাটাকের কারণে কিটি থংলঙ্গ্যা অকস্মাৎ মৃত্যুবরণ করলে তাঁর ব্রিটিশ সহকর্মী জন এডওয়ার্ড হিল বাদুড়ের আনুষ্ঠানিক বর্ণনা করেন। জন হিল আবিষ্কর্তা কিটি থংলঙ্গ্যার স্মরণে তার নামে বাদুড় প্রজাতির নামকরণ করেন। তিনি ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে সালিম আলীর কলা বাদুড় (বৈজ্ঞানিক নাম: Latidens salimalii) নামে আরেকটি বাদুড় প্রজাতি আবিষ্কার করেন, যা অত্যন্ত বিরল। বাদুড়ের এই প্রজাতিটিকে পূর্বে ভারতীয় সংগ্রহশালায় ক্ষুদ্র-নাসা কলা বাদুড় নামে ভুল বর্ণনা করা হতো। কিটি থংলঙ্গ্যা এই প্রজাতিকে পুনরায় বর্ণনা করেন এবং ভারতীয় পক্ষীবিজ্ঞানী সালিম আলীর নামে এর নামকরণ করেন।

পক্ষীবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কিটি থংলঙ্গ্যার আবিষ্কারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত হলো সাদা চোখের নদী মার্টিন (বৈজ্ঞানিক নাম: Pseudochelidon sirintarae), যা তিনি ১৯৬৯ সালে আবিষ্কার করেন। থংলঙ্গ্যা রাজকুমারী সিরিন্ধর্ন থেপ্রাতনসুদার স্মরণে এই বৃহৎ সোয়ালো পাখির নামকরণ করেন। পাখিটিকে তিনি থাইল্যান্ডের মধ্যাঞ্চলের একটি হ্রদে শীতার্ত অবস্থায় খুঁজে পান। তবে এর আবাসস্থল বা প্রজননস্থল এখনও অজানা। পাখিটি বর্তমানে বিলুপ্ত বলে ধারণা করা হয়।

কিটি থংলঙ্গ্যা ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে ম্যাকং খঞ্জনের (বৈজ্ঞানিক নাম: Motacilla samveasna) দুইটি নমুনা সংগ্রহ করেন, যা থাইল্যান্ডে উক্ত প্রজাতির প্রথম আবিষ্কার হিসেবে গণ্য করা হয়।

তিনি “ব্যাটস ফ্রম থাইল্যান্ড অ্যান্ড কম্বোডিয়া” (“থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার বাদুড়”) গ্রন্থের সহ-লেখক হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীকালে তিনি থাইল্যান্ডের বাদুড় প্রজাতির শ্রেণীবিন্যাসগত পর্যবেক্ষণ বা গবেষণা শুরু করেন, যা তার মৃত্যুর পর “দ্য ব্যাটস অ্যান্ড ব্যাট'স প্যারাসাইটস অব থাইল্যান্ড” (“থাইল্যান্ডের বাদুড় ও বাদুড়ের পরজীবী”) নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ডুয়েন এ, শ্লাইটার (১৯৭৫)। "কিটি থংলঙ্গ্যা, ১৯২৮–১৯৭৪"। জার্নাল অব ম্যামালজি ৫৬(১): ২৭৯–২৮০। 

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

  • টার্নার, অ্যাঞ্জেলা কে; রোজ, ক্রিস (১৯৮৯)। অ্যা হ্যান্ডবুক টু দ্য সোয়ালোজ অ্যান্ড মার্টিনস অফ দ্য ওয়ার্ল্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ক্রিস্টোফার হেলম। আইএসবিএন 0-7470-3202-5 
  • কিটির শূকর-নাসা বাদুড়, অ্যানিমেল লাইফ রিসোর্স
  • এডওয়ার্ডস, জন; থংলঙ্গ্যা, কিটি (১৯৭২)। "ব্যাটস ফ্রম থাইল্যান্ড অ্যান্ড কম্বোডিয়া" (ইংরেজি ভাষায়)। বুলেটিন অফ দ্য ব্রিটিশ মিউজিয়াম (ন্যাচারাল হিস্ট্রি) জুলজি। ২২(৬)
  • হিল, জে ই এবং ম্যাকনিলি, জেফরি এ, দ্য ব্যাটস অ্যান্ড ব্যাট'স প্যারাসাইটস অব থাইল্যান্ড