কাঁটানটে
কাঁটানটে | |
---|---|
![]() | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
শ্রেণীবিহীন: | Angiosperms |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Core eudicots |
বর্গ: | Caryophyllales |
পরিবার: | Amaranthaceae |
গণ: | Amaranthus |
প্রজাতি: | A. spinosus |
দ্বিপদী নাম | |
Amaranthus spinosus L. |

কাঁটানটে এর বৈজ্ঞানিক নাম Amaranthus spinosus ও ইংরেজি নাম spiny amaranth,[১] spiny pigweed, prickly amaranth or thorny amaranth। এটি Amaranthaceae পরিবারের অন্তর্গত। অন্যান্য স্থানীয় নাম: কাঁটাখুইড়া, খুড়াকাঁটা, খৈরাকাটা ইত্যাদি।
পরিচিতি
[সম্পাদনা]কাঁটানটে বহুবর্ষজীবী। কাঁটানটে একটি গুল্মজাতীয় কাঁটাযুক্ত পাতাবিশিষ্ট আগাছা। সাধারণত ১.০-১.২ মিটার (৪০-৪৮ ইঞ্চি) পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। কাণ্ড ও পাতা সাধারণত লালচে দাগযুক্ত । পাতার আকৃতি অনেকটা ছোট। পাতার আগার দিকটা ক্রমশ সরু। পাতার বোঁটায় দৃঢ় লম্বা সূচালো দুটি কাঁটা থাকে। কাণ্ড শক্ত গাঁটযুক্ত এবং কাঁটায় ভরা থাকে। কাণ্ড খাড়া হালকা গোলাপী এবং শাখা-প্রশাখাবিশিষ্ট। ফুলের রং ফিকে সবুজ, গুচ্ছবদ্ধ অবস্থায় থাকে। বীজ চকচকে কালো। বীজ দিয়ে বংশবিস্তার করে।[২]
বিস্তার
[সম্পাদনা]বাংলাদেশের সর্বত্র কাঁটা নটে দেখা যায়।
বংশবিস্তার
[সম্পাদনা]বীজ থেকে বংশবিস্তার হয়ে থাকে। বীজের রং কালো তবে রং উজ্জ্বল হয়ে থাকে। বর্ষার শেষে গাছে ফুল ফোটে, আশ্বিন মাসে ফল ধরে। পতিত জমি ও ক্ষেতের আইলে নিজে থেকেই জন্মে থাকে। এমনকি শাক-সবজির ক্ষেতেও দু’চারটে কাঁটা নটে দেখতে পাওয়া যায়। একে কাটিং এর মাধ্যমেও বংশ বিস্তার ঘটানো যায়।
চাষের সময়
[সম্পাদনা]বীজের রং কালচে হলেও উজ্জ্বল। বর্ষার শেষে গাছে ফুল হয় ও আশ্বিনে ফল।[৩]
অন্যান্য ব্যবহার
[সম্পাদনা]কাঁটানটে একটি অনাবাদি উদ্ভিদ। এটা শাক এবং ওষুধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কাঁটানটে শাকে পুস্টি উপাদান
[সম্পাদনা]কাঁটানটে উন্নত মানের পুস্টি রয়েছে। আহার উপযোগী কাঁটানটে শাকে রয়েছে-প্রোটিন, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি৬, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে, থায়ামিন, রিভাফ্লাভিন, নিয়াসিন, Pantothenic acid, খনিজ উপাদানের মধ্যে রয়েছে: ক্যালসিয়াম, আইরন, ম্যানেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, জিঙ্ক, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম, আরও রয়েছে Histidine, Isoleucine, Leucine, Threonine লাইসিন, ট্রিপটোফেন ইত্যাদি।
কাঁটা নটে এর ওষুধি ব্যবহার
[সম্পাদনা]- পোড়া গায়ে: ১০-১৫ গ্রাম কাঁটা নটে গাছের টাটকা মূল এবং ২০ গ্রাম পাতা কোনো মাটি বা স্টিলের পাত্রে রেখে, তাতে ১০০ মিলিলিটার পানি দিয়ে সেদ্ধ করতে হবে। পানি ঠান্ডা হলে পরিষ্কার পাতলা কাপড়ে ছেঁকে পোড়া ঘায়ের ওপর তুলা অথবা পাতলা কাপড়ের টুকরা চার-পাঁচ ভাজ করে বসিয়ে সেটা মূল ও পাতা সেদ্ধ পানিতে ভিজিয়ে দিতে হবে। এভাবে কয়েক দিন চালিয়ে যেতে হবে তাহলে ভালো হয়ে যাবে।
- খোস-পাঁচড়া: কাঁটা নটে গাছের পাতা, কাণ্ড, মূল ভালোভাবে শুকিয়ে তাকে আগুনে পুড়িয়ে সে ছাই নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে খোস-পাঁচড়ায় প্রয়োগ করলে এ দু’টো চর্ম রোগ ভালো হয়ে যাবে।
- ফোঁড়া ও বাগী ফাটাতে: কাঁটা নটে গাছের কচি ডাল ও পাতা বেটে ফোঁড়া বা বাগীতে প্রলেপ দিলে মাত্র দু’তিন দিনের মধ্যেই ফোঁড়া ফেটে যাবে। দিনে একবার প্রলেপ দিলেই যথেষ্ট।
- গনোরিয়া রোগে: কাঁটা নটের শিকড় টাটকা তুলে এনে তা সামান্য পানি দিয়ে শিলে বেটে তার সম্পূর্ণ রস আধা কাপ ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে দেড় চা-চামচ চিনি বা মিছরির গুঁড়া কিংবা সম পরিমাণ মধু মিশিয়ে খেলে অব্যর্থ সুফল পাওয়া যায়।
- মাথা ধরায়: আট গ্রাম কাঁটা নটের মূল এবং এক গ্রাম গোলমরিচ, এ দুটোকে সামান্য পানি দিয়ে বেটে কপালে প্রলেপ দিলে মাধা ধরা সেরে যাবে।
- পেটে-যন্ত্রণায়: ৩/৪ গ্রাম কাঁটা নটের মূল এবং এক গ্রাম রসাঞ্জন। এ দু’টিকে রোজ একবার করে খেলে পেটে যন্ত্রণার রোগী অবশ্যই উপকার পাবেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Amaranthus spinosusaccessdate=7 January 2016" (ইংরেজি ভাষায়)। ন্যাচারাল রিসোর্সেস কনসারভেশন সার্ভিস প্ল্যান্টস ডেটাবেস। ইউএসডিএ।
- ↑ http://27.147.138.56/agro/Weeds/view/8/%E0%A6%95_%E0%A6%9F_%E0%A6%A8%E0%A6%9F/language:bn
- ↑ এ বি এম জাওয়ায়ের হোসেন লেখক; গ্রন্থনা প্রকাশনী; ঔষুধি গাছগাছাড়া; পৃষ্ঠা- ৩০, আইএসবিএন ৯৮৪-৮৬০৫-০০২