কন্যাশ্রী প্রকল্প

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কন্যাশ্রী প্রকল্প
প্রকল্পের ধরনমেয়েদের জন্য স্কলারশিপ স্কিম
অবস্থানপশ্চিমবঙ্গ
মালিকপশ্চিমবঙ্গ সরকার
দেশভারত
প্রতিষ্ঠিত৮ মার্চ ২০১৩ (2013-03-08)
অবস্থাসক্রিয়
ওয়েবসাইটwww.wbkanyashree.gov.in

কন্যাশ্রী প্রকল্প অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারকে নগদ সহায়তার মাধ্যমে মেয়েদের জীবন ও অবস্থার উন্নয়নে পশ্চিমবঙ্গের সরকার কর্তৃক গৃহীত একটি উদ্যোগ, যাতে অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে কোনো পরিবার আঠারো বৎসর বয়সের আগে তাদের মেয়ে সন্তানের বিয়ের ব্যবস্থা না করে। এই প্রকল্পের অন্যতম অভিপ্রায় হল, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা গরিব দুঃস্থ মেয়েদের উচ্চ শিক্ষার জন্য তুলে আনা। এই প্রকল্প তার নক্সা ও সুশাসনের বৈশিষ্ট্যের জন্য একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে।

2013 সালে পশ্চিমবঙ্গের সরকারের উদ্যোগে মহিলাদের জন্য ঘোষণা করেছেন। এই প্রকল্পটি বর্তমানের সর্ববৃহৎ প্রকল্প।

একটি শর্তাধীন অর্থ ট্রান্সফার প্রকল্প[সম্পাদনা]

এই স্কিমটির তিনটি উপাদান রয়েছে:

  1. k1: বার্ষিক বৃত্তি ₹১০০০/- টাকা[১]
  2. k2: এক কালীন ₹২৫০০০/- টাকা বৃত্তি
  3. k3: মাসিক ₹২০০০-₹২৫০০/- টাকা বৃত্তি[২]

বার্ষিক বৃত্তির যোগ্যতা নির্ণায়ক শর্তগুলি হলো-

  1. ছাত্রীর বয়স তেরো বছরের বেশি ও আঠেরো বছরের কম হতে হবে;
  2. ছাত্রীকে অন্তত অষ্টম শ্রেণীতে পাঠরতা হতে হবে;
  3. ছাত্রীর পারিবারিক আয় বাৎসরিক অনধিক এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা হতে হবে;বর্তমানে এই শর্ত তুলে দেওয়া হয়েছে । সরকারি বা সরকার অনুমোদিত বা সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত বিদ্যালয়ে পাঠরতা যেকোনো ছাত্রী এই সুযোগ পাবে
  4. ছাত্রীকে অবিবাহিতা হতে হবে।

এক কালীন বৃত্তির যোগ্যতা নির্ণায়ক শর্তগুলি হলো-

  1. আবেদন করার দিনে ছাত্রীর বয়স আঠেরো বছরের বেশি ও উনিশ বছরের কম হতে হবে;
  2. ছাত্রীকে মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক, কারিগরি, বৃত্তিমূলক, ক্রীড়াবিষয়ক ইত্যাদি যে কোনো বিষয়ে নিবন্ধীকৃত প্রতিষ্ঠানের পাঠরত হতে হবে।

মাসিক বৃত্তির যোগ্যতা নির্ণায়ক শর্তগুলি হলো-

  1. আবেদনকারীকে অবশ্যই একজন স্নাতক হতে হবে।
  2. স্নাতক পরীক্ষায় কমপক্ষে ৪৫% নম্বর থাকতে হবে।
  3. বিজ্ঞান অধ্যয়নরত মেয়েদের প্রতি মাসে ₹২,৫০০/- টাকা করে দেওয়া হবে।
  4. বানিজ্য ও কলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাসিক ₹২,০০০/- টাকা করে দেওয়া হবে।
  5. এই বৃত্তির জন্য বয়সের কোন ঊর্ধ্বসীমা নেই।[৩]

পুরস্কার এবং স্বীকৃতি[সম্পাদনা]

এই প্রকল্প তার নক্সা ও সুশাসনের বৈশিষ্ট্যের জন্য একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে।

  • ২০১৭ সালের জুন মাসে, জাতিসংঘ তাদের সর্বোচ্চ জনসেবা পুরস্কারে সম্মানিত করে কন্যাশ্রীকে।[৪] ৬২ টি দেশের মধ্যে ৫৫২ টি সোশ্যাল সেক্টর স্কিমগুলির মধ্যে সেরা পুরস্কার পায় কন্যাশ্রী।[৫]
  • আইটিইউ ও ইউ এন ওমেন সংগঠিত জিইএম-টেক অ্যাওয়ার্ড ২০১৬ সালে চূড়ান্ত পর্যায় নির্বাচিত।
  • জাতিসংঘ WSIS ২০১৬ এর বিজেতা
  • CSI Nihilent e-গভর্নেন্স পুরস্কার ২০১৪-২০১৫ তে গুণগ্রাহিতা পুরস্কার লাভ করেছে।
  • Skoch SMART গভর্নেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৫ বিজেতা।
  • অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রিফর্মস এবং পাবলিক গ্রিভেন্স দ্বারা আয়োজিত ন্যাশনাল e-governance অ্যাওয়ার্ড ২০১৪-১৫ এ পুরস্কৃত।
  • ২০১৪ সালে ই-ওমেন ও এমপাওয়ারমেন্ট বিভাগে মন্থন অ্যাওয়ার্ড (সাউথ এশিয়া ও এশিয়া প্যাসিফিক) পেয়েছে।
  • ২০১৪ সালে মহিলাদের ক্ষমতায়ন এর জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দ্বারা পুরস্কার লাভ করেছে।
  • U. S. Consulate এবং শক্তি বাহিনী দ্বারা আয়োজিত Trafficking in Persons (TIP) (শিলিগুড়ি, ফেব্রুয়ারি ২০১৬ )
  • NITI Aayog দ্বারা "কন্ডিশনাল ক্যাশ ট্রান্সফার ফর চিলড্রেন : এক্সপেরিয়েন্সেস অফ স্টেট অফ ইন্ডিয়া " এর উপর আয়োজিত জাতীয় কর্মশালা (দিল্লী, ডিসেম্বর ২০১৫ )।
  • বিশ্বব্যাংক দ্বারা আয়োজিত "এমপাওয়ারমেন্ট অফ এডোলেসেন্ট গার্লস " এর অধিবেশন (রাঁচি, মে ২০১৫ )
  • টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সাইন্স দ্বারা আয়োজিত " চাইল্ড ম্যারেজ এন্ড টিনএজ প্রেগ্ন্যান্সিস " এর উপর আলোচনা সভা (দিল্লী, মার্চ ২০১৫) ।
  • গার্লস সামিট ডিএফআইডি ও ইউনিসেফ (লন্ডন, জুলাই ২০১৪) দ্বারা সংগঠিত।

কন্যাশ্রী দিবস[সম্পাদনা]

সমগ্র রাজ্য জুড়ে এই প্রকল্পটি উন্নীত করার জন্য ১৪ই আগস্ট কন্যাশ্রী দিবস হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়। ১৪ই আগস্ট,২০১৩ তারিখে রাজ্যের ব্যাপক অনুষ্ঠানগুলি প্রকল্পটি প্রচারের জন্য অনুষ্ঠিত হয়। কলকাতায় এই অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সভাপতিত্ব করেন। জেলাগুলিতে সরকার দ্বারা সচেতনতা প্রচারের আয়োজন করা হয়েছিল।

কন্যাশ্রী ক্লাব[সম্পাদনা]

কন্যাশ্রী ক্লাব (Kanyashree Club) কন্যাশ্রী প্রকল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। বিদ্যালয় বিদ্যালয় ক্লাব গঠন করার মাধ্যমে কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতাভুক্ত কিশোরী মেয়েদের দল গঠন ও মত বিনিময়ের সুযোগ করে দেওয়া হয়। সেখানে তারা নিজেদের বিভিন্ন বিষয় শিক্ষা হোক সমাজ হোক শরীর হোক সেই সমস্ত বিষয়ে তাদের কৌতুহল জিজ্ঞাসা সমস্ত কিছু আলোচনার একটি প্লাটফর্ম।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের সাফল্য[সম্পাদনা]

১৪ ই আগস্ট, ২০১৯ কন্যাশ্রী প্রকল্পের সফলতা ৬ম বর্ষ অতিক্রম করে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সবকটি জেলাতে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সাফল্য দিবস পালিত হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "কন্যাশ্রী প্রকল্প : Kanyashree Prakalpa - বাংলা প্রকল্প" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০১-২৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-১৭ 
  2. "কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা কারা পাবে, উদ্দেশ্য ও সুবিধা"Jojona। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসে ২০২৩ 
  3. "কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা কারা পাবে, উদ্দেশ্য ও সুবিধা"Jojona। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসে ২০২৩ 
  4. "Kanyashree Scheme For Girls In Bengal Wins UN Award"NDTV.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১০-১২ 
  5. "UN honours Mamata Banerjee with highest public service award for girl child project Kanyashree"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১০-১২ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]