ওয়াস্প-১৩

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ওয়াস্প-১৩
পর্যবেক্ষণ তথ্য
ইপক J2000      বিষুব J2000
তারামণ্ডল Lynx
বিষুবাংশ  ০৯ ২০মি ২৪সে
বিষুবলম্ব +৩৩° ৫২′ ৫৬″
আপাত  মান (V) 10.42[১]
বিবরণ
ভূপৃষ্ঠের অভিকর্ষ (log g)4.04 ± 0.2[১]
তাপমাত্রা5826[২] K
ধাতবতা [Fe/H]0 ± 0.2[২] dex
আবর্তনশীল বেগ (v sin i)< 4.9[১] km/s
অন্যান্য বিবরণ
2MASS J09202471+3352567, GPM 140.102992+33.882691, 1SWASP J092024.70+335256.6, USNO-B1.0 1238-00183620[৩]

ওয়াস্প ১৩ হলো বনমার্জার মণ্ডল-এর একটি তারা। তারকাটি ধাতবতা এবং ভরের দিক থেকে প্রায় সূর্যের মতো, যদিও এর বয়স সূর্যের থেকে অনেক বেশি এবং সূর্য অপেক্ষা তারকাটি উত্তপ্ত। ১৯৯৭ সালে সিম্বাদের ডাটাবেস অনুযায়ী তারকাটি পর্যবেক্ষিত হয় এবং ২০০৬ সালে সুপারওয়াস্প টেলিস্কোপ দ্বারা এটি পর্যবেক্ষিত হয়। তারকা পর্যবেক্ষণ করার সময় বিজ্ঞানীরা ওয়াস্প-১৩বি নামের একটি গ্রহ আবিষ্কার করেন; আবিষ্কারের পেপারটি ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয়।[১]   

পর্যবেক্ষণের ইতিহাস[সম্পাদনা]

দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি হাউট-প্রোভেন্স মানমন্দিরে রাখা হতো, যা রেডিয়েল বেগ পরিমাপে ব্যবহার করা হতো। 

সিম্বাদ অনুসারে, ওয়াস্প-১৩ প্রথম ১৯৯৭ সালে পর্যবেক্ষিত হয়েছিল। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা গ্যালাক্সির তারকাগুলোর সঠিক গতি মাপার সময় ওয়াস্প-১৩ কে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন।[৩] ২৭ নভেম্বর ২০০৬ এবং ১ এপ্রিল ২০০৭ সালের মধ্যে, ক্যানারি আইল্যান্ডের উত্তর সুপারওয়াস্প টেলিস্কোপ ওয়াস্প-১৩ পর্যবেক্ষণ করে। তথ্য বিশ্লেষণ করে পাওয়া যায়, তারকাটিকে একটি গ্রহ প্রদক্ষিণ করে।[১]

পর্যবেক্ষণটি ব্রিটিশ। স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, সুইস এবং আমেরিকানদের একটি দল দ্বারা পরিচালিত হতো-স্কটল্যান্ডের জেমস গ্রেগরি দূরবীক্ষণ যন্ত্রের আলোকমান ব্যবহার করে পর্যবেক্ষণ করা হতো; পাশ্ববর্তী তারকা এইচডি ৮০৪০৮'র সাথে তুলনা করে, তারকার আলোক বক্রতা সংজ্ঞায়িত করা হতো। ওয়াস্প-১৩ এর বর্ণালি ফ্রান্সে অবস্থিত হাউট-প্রোভেন্স মানমন্দিরের সোফি ইচেল স্পেক্টোগ্রাফ ব্যবহার করে মাপা হতো সেই সাথে তারকাটির রেডিয়েল বেগও মাপা যেত। নরডিক অপটিক্যাল টেলিস্কোপ-এর ফাইবার-ফেড ইচেল স্পেক্টোগ্রাফ ওয়াস্প-১৩ এর বর্ণালি মাপনের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা ছিল যার ফলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে ওয়াস্প-১৩ এর বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করা সহজ ছিল। ২০০৮ সালে সোফি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ওয়াস্প-১৩বি আবিষ্কৃত হয় এবং ২০০৯ সালে এই আবিষ্কার প্রকাশ করা হয়।[১]  

২০১০ সালে সিম্বাদের তথ্য অনুসারে ওয়াস্প-১৩'র সাথে আরও ১০ টি গবেষণা পেপার সংযুক্ত হয়েছিল।[৩]

বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

ওয়াস্প-১৩ সূর্যের মতো জি-টাইপের নক্ষত্র যা প্রায় ১৫৬ পারসেক (৫০৯ আলোক বর্ষ) দূরে বনমার্জার মণ্ডল এ অবস্থিত। ১০.৪২ আপাত মান এর তারকাটি পৃথিবী থেকে খালি চোখে দেখা যায়না। তারকাটির কার্যকর তাপমাত্রা ৫৮২৬ কেলভিন যা সূর্যের থেকে বেশি। যাই হোক, এদের ধাতবতা প্রায় একই। এটি লোহার ঘনীভূতকরণ উপর নির্ভর করে দেখা যায় অথবা [লোহা/হাইড্রোজেন] যা প্রায় ০।[২] ওয়াস্প-১৩ এর পৃষ্ঠীয় আকর্ষণ প্রায় ৪.০৪ কি.মি./সেকেন্ড*২ যেখানে ঘূর্ণন গতি প্রায় ৪.৯কি.মি/সেকেন্ড।[১]

ওয়াস্প-১৩ এর ভর সূর্যের ভরের প্রায় ১.০৩ গুণ এবং এর ব্যাসার্ধ সূর্যের থেকে ১.৩৪ গুণ বেশি। লিথিয়াম এর পরিমাণ অনুসারে বোঝা যায় যে তারকাটি এর সমগ্র হিলিয়াম শেষ করে ফেলেছে এবং এর কোর এর চারপাশের শেল-এ লিথিয়াম ফিউশন করছে। এই তথ্য থেকে জানা যায় যে এই নক্ষত্রের বয়স প্রায় ৮.৫ বিলিয়ন বছর যা সূর্যের বয়সের প্রায় দ্বিগুণ। কিন্তু ৪.৪ এবং ১৪ বিলিয়ন বছরের মধ্যে এই মানের পরিবর্তন হয়ে পারে, যেহেতু নক্ষত্রটির বয়স অনিশ্চিত।[১] 

গ্রহ ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

ওয়াস্প-১৩বি হলো একমাত্র গ্রহ যা ওয়াস্প-১৩ নক্ষত্রকে ০.০৫২৭ জ্যোতির্বিদ্যা-একক দুরত্বে প্রদক্ষিণ করে। অথবা পৃথিবী এবং সূর্যের ৫.২৭%পরাক্ষতে প্রদক্ষিণ করে। ওয়াস্প-১৩বি নিজের নক্ষত্রকে ৪.৩৫২৯৮ দিনে বা প্রায় ৪দিন ৮.৫ ঘণ্টায় একবার প্রদক্ষিণ করে। ওয়াস্প-১৩বি এর আনুমানিক ভর বৃহস্পতি গ্রহ এর ০.৪৬ গুণ এবং এর ব্যাসার্ধ বৃহস্পতি গ্রহ এর ১.২১ গুণ।[২]

ওয়াস্প-১৩ গ্রহমণ্ডল[২]
সহচর
(তারকার অনুক্রম)
ভর পরাক্ষ
(AU)
কক্ষীয় পর্যায়কাল
(দিনসমূহ)
উৎকেন্দ্রিকতা কক্ষীয় নতি ব্যাসার্ধ
b 0.485 +0.058
−0.052
 MJ
0.05379 +0.00059
−0.00077
4.353011 (± 1.3e-05) (0)

 

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Skillen, I.; ও অন্যান্য (২০০৯)। "The 0.5Mj transiting exoplanet WASP-13b"Astronomy and Astrophysics502 (1): 391–394। arXiv:0905.3115অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.1051/0004-6361/200912018বিবকোড:2009A&A...502..391S 
  2. Jean Schneider (২০০৯)। "Notes for star WASP-13"Extrasolar Planets Encyclopedia। ৫ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০১১ 
  3. "SIMBAD query result"SIMBADCentre de données astronomiques de Strasbourg। ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০১১