উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় গ্রন্থাগার
এই নিবন্ধটির রচনা সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ ব্যাকরণ, রচনাশৈলী, বানান বা বর্ণনাভঙ্গিগত সমস্যা রয়েছে। |
উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় গ্রন্থাগার উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড়ো গ্রন্থাগার যাহা কোচবিহারে উপস্থিত।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় গ্রন্থাগার কোচবিহারের গরব।গ্রন্থাগারে অনেক পুরাতন ও মূল্যবান পান্ডুলিপি ও পুরানো 'পুঁথি' রয়েছে যেগুলি হাতে বানানো কাগজ ও তালগাছের পাতায় লেখা। এখানে বহু পুরাতন দুষ্প্রাপ্য বই,পুরাতন ভারতীয় পত্রিকা ও দুষ্পরাপ্য বিদেশী নথিপত্র এবং প্রতিবেদন রয়েছে। এই মহামূল্যবান সম্পদটি কোচবিহার রাজত্বের এক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বটে। এই গ্রন্থাগার ১২৫ বছরের ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে যখন মহারাজা নৃপেন্দ নারায়নের রাজত্বকালে কর্নেল জে সি হাউগটেন কোচবিহারে কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন(১৮৬৪-৭৩)। কর্নেল হাউগটেন লন্ডনের মিস রোজারিও এন্ড কো. কম্পানির একটি নিলামী থেকে এক স্টক বই কিনে ১৮৭০ সালে এই গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেন। নীল্কুঠির একটি ঘরে এই গ্রন্থাগার প্রথম চালু করে হয়। পরে মহারাজা নৃপেন্দ নারায়ন ল্যান্ডসডাউন হলে গ্রন্থাগার স্থানান্তর করেন ১৮৯৫ সালে,এই ল্যান্ডসডাউন হল বর্তমানে এখন জেলা শাসকের অফিস.১৮৮২ তে গ্রন্থাগারটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। কোচবিহারের মহারাজা নতুন বই কেনার জন্য গ্রন্থাগারকে বাৎসরিক ২০০০ টাকা অনুদান দান করেন, যার ফলে গ্রন্থাগার সমৃদ্ধ হতে থাকে। জনসাধারনের লাভের জন্য বিভিন্ন পুঁথি, পান্ডুলিপি, রাজদরবারের বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য নথি এই গ্রন্থাগারে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। জে ডাব্লিউ ট্রোটেন তার বই 'ইন্ডিয়া আন্ডার ভিক্টোরিয়া'-তে এই গ্রন্থাগারের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে লিখেছেন,"আসাম সীমানায় অবস্থিত ছোট্ট কোচবিহার রাজ্য একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার যা কলকাতার ছাড়া সারা বাংলায় আর নেই।"
১৯০০ সালে বইয়ের সংখ্যা হয়ে দাঁড়ায় ৮১৮৩ টি, নিম্নে তার বিভাগ দেওয়া হল
- ইংরেজি-৭,০৫৭ সমস্তই প্রথম প্রকাশিত সংখ্যা
- বাংলা-৬০০
- সংস্কৃত-১০৭
- উর্দু ও ফারসি-১১১
- আধুনিক ভাষা-১৩০
- পান্ডুলিপি-১১৮
- মোট-৮১৮৩
গ্রন্থাগারটি আস্তে আস্তে বিভিন্ন দরকারি নথি,প্রতিবেদন ও দুষ্প্রাপ্য পান্ডুলিপির আড়ত হয়ে ওঠে। বেশিরভাগ দুষ্প্রাপ্য বই এবং নথি শতাব্দি পুরাতন। এটি কোচবিহার সাম্রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অমূল্য সম্পদ হয়ে উঠেছে।
কোচবিহার সাম্রাজ্য ও ভারতবর্ষের মিলনক্ষণ থেকেই এই গ্রন্থাগার দেখাশোনার ভার পাঁচজন কর্মী এবং একজন গ্যাজেটেড র্যাংকধারী গ্রন্থাগারিক এর উপর ন্যাস্ত করা হয়। রাজ্য কাউন্সিলের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রীর দায়িত্বে এই গ্রথাগারটিকে রাখা হয়। ভারত সরকারের সাথে কোচবিহার যুক্ত হওয়ার পর থেকে এই গ্রন্থাগার জেলাশসক ও সরকার নিযুক্ত একজন গ্রন্থাগারিক ও একজন পিওনের দায়িত্বে রাখা হয়।
১৩ নভেম্বর ১৯৬৭ সালে কচবিহারে ডেপুটি কমিশনরের চেম্বারে বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে বসা অধিবেশিনে রাজ্য প্রন্থাগার ও জেল গ্রন্থাগারকে একত্রিত করা বা জোড়া লাগানোর সিন্দধান্ত নেওয়া হয়। ১৯৫৭ সালে গ্রন্থাগার পরিকল্পনা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কোচবিহার জেলা গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা পায়। উপর্যুক্ত সংকল্প অনুযায়ী ১৯৬৮ সালে তখনকার ডেপুটি কমিশনার,শ্রী ভাস্কর ঘোষ,আই.এ.এস.,গ্রন্থাগারটি বাঁচানোর আর্জিতে সাড়া দিয়ে জেলা গ্রন্থাগারের সঙ্গে সংযুক্তিকরণের প্রস্তাব পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন ডি.পি.আই এর কাছে পাঠান।
এই প্রস্তাব রাজ্য সরকার গ্রহণ করে এবং গ্রন্থাগার দুটির সংযুক্তিকরণ করে নতুন নামকরন করা হয় "উতরবঙ্গ রাজ্য গ্রন্থাগার"।
সংযুক্তিকরণের সময়,১ এপ্রিল ১৯৬৯, রাজ্য গ্রন্থাগার ও জেলা গ্রন্থাগারে বইয়ের সংখ্যা ছিল নিম্ন্রূপ-
রাজ্য গ্রন্থাগার-
- ইংরেজি-১৬,০০০
- উর্দু-১৮০
- আরবি-১৩৫
- ফারসি-২০৫
- পাণ্ডুলিপি (বাংলা,আসামীয়া,সংস্কৃত)-২২৮
- শতাব্দী পুরাতন প্ত্রিকা,ভারতীয় এবং বদেশী-১,২০০
- তিন-ডাইমেনশনাল বক্স ছবি-৫০ বক্স
- বাংলা বই-৪,০০০
জেলা গ্রন্থাগার-
- ইংরেজি ও বাংলা বই-১২,০০০
অবস্থান
[সম্পাদনা]উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় গ্রন্থাগারটি কোচবিহার শহরের কেন্দ্রস্থলে, এম.জে.এন রোডে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে সাগরদিঘির অবস্থিত।
বর্তমান সংগ্রহ
[সম্পাদনা]উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় গ্রন্থাগারটিতে বর্তমানে ৭৫,০০০ টি বই এবং বহু প্রাচীন পাণ্ডুলিপি সংগৃহীত আছে।
সদস্যতা নীতি
[সম্পাদনা]যে কোনও স্থানীয় মানুষ একটি নামমাত্র ফি প্রদান করে স্থায়ী সদস্য হয়ে উঠতে পারে যে কোন বহিরাগত একটি অস্থায়ী সদস্য হতে পারে এবং পাঠ্য রুমের বই পড়তে পারে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ↑ "Siliguri - The gateway of North East India"। siliguri.co.in। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২১।
- ↑ "North Bengal State Library, Cooch Behar"। coochbehar.nic.in। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২১।