উড়ুক্কু মাছ
উড়ুক্কু মাছ সময়গত পরিসীমা: Miocene–Recent | |
---|---|
Sailfin flying-fish Parexocoetus brachypterus | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণী জগৎ |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | Actinopterygii |
বর্গ: | বেলোনিফর্মিস |
উপবর্গ: | Excoetoidei |
মহাপরিবার: | Exocoetoidea |
পরিবার: | Exocoetidae |
উপপরিবার ও গণ (জীববিদ্যা) | |
|
উড়ুক্কু মাছ (ইংরেজি: Flying fish) বা (লাতিন ভাষা: Exocoetidae) হচ্ছে Beloniformes বর্গের একটি পরিবার। এসব মাছ সমুদ্রের উপরিভাগে অল্প দূরত্ব অবধি উড়ার ক্ষমতা রাখে।বিশ্বজুড়ে ৭১ প্রজাতির উড়ুক্কু মাছের সন্ধান পাওয়া গেছে।[১] এদের বক্ষ পাখনা (Pectoral fin) এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্রোণী পাখনাও (Pelvic fin) প্রসারিত হয়ে ডানার মতন গঠন তৈরী করে। এই মাছের অধিকাংশই সামুদ্রিক এবং সাধারণত ঝাঁক বেঁধে চলে। অতি দ্রুত সাঁতার কাটতে গিয়ে এরা অনেক সময়ে জলের একেবারে উপরিভাগে চলে আসে এবং পাখনা মেলে বাতাসে উড়াল দেয়। বাতাসের গতি বা ঢেউযের অবস্থার উপর নির্ভর করে এরা ৩০ সেকেন্ড অবধি বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। সুগঠিত পাখনা বিশিষ্ট এসব মাছের কোনো কোনোটি জলের উপরিভাগ থেকে ১০ মিটার উচ্চতায় প্রায় ৪০০ মিটার দূরত্ব অবধি চলতে পারে। এই কারণে অনেক সময় এই মাছ আচমকা সমুদ্রগামী জাহাজের ডেকের উপর আছড়ে পড়ে। উষ্ণমন্ডলের সব সাগরেই এই মাছ দেখা যায়। এদের দৈর্ঘ্য ১০ থেকে ৩০ সেমি অবধি হতে পারে। এরা মূলত শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই বাতাসে উড়াল দিয়ে থাকে ।
সময়কাল
[সম্পাদনা]আকাশে পাখি ওড়ার আট কোটি বছর আগে থেকেই উড়ুক্কু মাছের রাজত্ব। ডাইনোসরের আগে থেকেই এ মাছের অস্তিত্ব ছিল। এখনও রয়েছে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সাগরে। উড়ুক্কু মাছ বলতে কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট প্রজাতির মাছকে বোঝায় না।
স্বভাব
[সম্পাদনা]ওড়ার জন্য উড়ুক্কু মাছের কিন্তু কোনো ডানা নেই। আছে চ্যাটাল, ঢাউস, ফাঁপা বক্ষপাখনা। পাখনার ভেতরে হাওয়া ভরা থাকায় ওজনেও হালকা। এই বক্ষপাখনার সাহায্যেই বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। জানিয়ে রাখা ভালো, এই ওড়াউড়ি কিন্তু প্রকৃত উড্ডয়ন নয়। একে বলে গ্লাইডিং। আরও সহজ করে বললে, বাতাসে ভেসে থাকা। পানি ছেড়ে হাওয়ায় ভাসার পেছনে রয়েছে দুটি উদ্দেশ্য। প্রথমটা হলো, প্ল্যাঙ্কটন জাতীয় খাবার খেতে পানির ওপরে উঠতেই হয়। দ্বিতীয়টা হলো আত্মরক্ষা। বড় মাছের তাড়া খেয়ে পালিয়ে বাঁচার জন্য পানি ছেড়ে হাওয়ায় উঠে কোনোমতে পালিয়ে বাঁচা। পানির নিচে গড়পড়তা উড়ুক্কু মাছের বেগ হয় ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটারের কাছাঁকাছি। তবে পানির বাইরে তাদের গতিবিধি কিন্তু আকাশের চোখ তুলে দেওয়ার মতো। ভাবা যায়! পানির ওপরে ৩১২ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত তারা দিব্যি ভেসে বেড়াতে পারে!
রঙ-বেরঙের আলোর প্রতি উড়ুক্কু মাছের রয়েছে মারাত্মক দুর্বলতা। এই আলোর নেশাকে কাজে লাগায় মাছ শিকারিরা। নজরকাড়া নানা রকম আলো দেখাতে দেখাতে সুকৌশলে ছড়ানো জালের মধ্যে আটকে ফেলে। তখন সাঁতার হোক বা ওড়া, সব জারিজুরি খতম হয়ে যায়।
বৈশ্বিক বিস্তৃতি
[সম্পাদনা]উড়ুক্কু মাছ খেতে সুস্বাদু। বাণিজ্যিকভাবে জাপান, ভিয়েতনাম, বার্বাডোস ও ভারতে এ মাছ প্রচুর ধরা হয়। বিপুল পরিমাণ উড়ুক্কু মাছের কারণে ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র বার্বাডোসের নামই ছিল 'উড়ুক্কু মাছের ভূমি'। এই উড়ুক্কু মাছ সে দেশের জাতীয় মাছও বটে।
বাংলাদেশের উড়ুক্কু মাছ
[সম্পাদনা]বাংলাদেশের এই উড়ুক্কু মাছের দুটি গণে তিনটি প্রজাতি আছে। সেগুলো হলো: Cypselurus comatus, Cypselurus poecilopterus, Exocoetus volitans।