উইকিপিডিয়া আলোচনা:উইকিপ্রকল্প কম্পিউটার বিজ্ঞান

পাতাটির বিষয়বস্তু অন্যান্য ভাষায় নেই।
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বাংলা শিরোনাম[সম্পাদনা]

কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়টি যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই পড়ানো হোক না কেন, শিক্ষার মাধ্যম সব সময়ই ইংরেজী। এমতাবস্থায় এই প্রকল্পের কিছু কিছু নিবন্ধের শিরোনাম একজন অনুসন্ধানকারীকে দ্বিধান্বিত করতে পারে। যেমন: উত্তরাধিকার (Inheritance), প্রোগ্রাম-লিখন (programming), বহুরূপিতা(Polymorphism), উপাত্ত কাঠামো (Data structure)। এই ধরণের অনুবাদ গুলো অভিধানের জন্য ঠিক থাকতে পারে, কিন্তু সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এই ধরনের অনুবাদ কতটা যুক্তিযুক্ত তা বিবেচনা করা দরকার। বিশেষ করে কম্পিউটার বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এগুলো হাস্যকর অবস্থা তৈরী করে। তাই, কম্পিউটার বিজ্ঞানের এই প্রকল্পে কিছু কিছু অনুবাদের ক্ষেত্রে ছাড় দেয়ার প্রস্তাব করছি। অর্থাৎ Inheritance কে ইনহ্যারিটেন্স, programming কে প্রোগ্রামিং, Polymorphism কে পলিমরফিজম, এভাবে লিখলেই বরং উপকারে আসবে। --ইয়াদ ০৬:২৫, ২৭ আগস্ট ২০১০ (ইউটিসি)

সম্পূর্ণই একমত। অপ্রচলিত উদ্ভট বাংলা যখন মূলধারায় চালু হবে, তখনই কেবল উইকিতে আমরা সেগুলো ব্যবহার করবো। বাংলা একাডেমীর বইতেও যদি এসব বাংলা দেয়া হয়, তার মানে এই নয় যে উইকিপিডিয়ার মতো তথ্যবহুল বিশ্বকোষে সেগুলো ব্যবহার করতে আমরা বাধ্য। এখানে কম্পিউটার "মাউজ" এর বাংলা যদি "ইঁদুর" করা হয়, তা হলে যেমন হাস্যকর হবে, তেমনই ডেটা স্ট্রাকচারের বাংলা "উপাত্ত কাঠামো" মার্কা বাংলা করলে অদ্ভুত হবে। সুতরাং বহুল প্রচলিত টার্মগুলোই এখানে ব্যবহার করা হোক। --রাগিব (আলাপ | অবদান) ০৭:৩৫, ২৭ আগস্ট ২০১০ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]

ধন্যবাদ, রাগিব ভাই। ব্যবহারকারীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে বেশ কিছু শিরোনাম পরিবর্তন করা হলো। কারো কোন আপত্তি থাকলে আলাপ পাতায় জানাবেন। কম্পিউটার বিজ্ঞানের মত একটি প্রতিনিয়ত উন্নত হওয়া একটি বিষয়ে হাস্যকর শিরোনাম/অনুবাদ কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। -- রাফিদ ওয়াহিদ (আলাপ | অবদান) ২৩:২৯, ২৭ আগস্ট ২০১০ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]


জিনিসটা এতটা সাদা-কালো নয়। কম্পিউটারের মাউসকে "ইঁদুর" বানালে বাংলায় হাস্যকর বা উদ্ভট শোনাতে পারে (যদিও এখানে উল্লেখ্য ইংরেজ বা আমেরিকানদের এ ধরনের উদ্ভট নাম ব্যবহারের ব্যাপারে কোন শুচিবাই নেই, ওরা ইঁদুরকেও মাউস বলে, কম্পিউটারের মাউসকেও মাউস-ই বলে, ওদের এতে কোন গায়ে লাগে না। ওরা আপাত-উদ্ভট নামের ব্যাপারে এতটা স্পর্শকাতর নয়)। কিন্তু উপাত্ত কাঠামো ডেটা স্ট্রাকচারের চমৎকার বাংলা অনুবাদ। বাংলাতে হরহামেশা ডেটার অনুবাদ "উপাত্ত" করা হয় এবং স্ট্রাকচারের অনুবাদ "কাঠামো" করা হয়। এটা মোটেও অদ্ভূত, উদ্ভট, হাস্যকর কোন অনুবাদ নয়। আর আমি এখানে যে অনুবাদগুলি দিয়েছি, এগুলি কেবল শুরু। শেষ কথা নয়। পরিভাষা কখনও একক উদ্যোগে তৈরি বা প্রচলন হয় না।

তবে এসব পারিভাষিক ব্যাপারে আমার বক্তব্য খুব পরিষ্কার, আমাদের এমন সব পরিভাষা ব্যবহার করা উচিত, যেখানে বাংলা ভাষার মৌলিকত্ব যেন বিদেশী ভাষার শব্দের কাছে খর্ব না হয়। যদি কোন বাংলাভাষী গ্রহণযোগ্য বাংলা পরিভাষা উদ্ভাবন করে থাকেন, তাহলে সেই পরিভাষাকেই প্রাধান্য দিতে হবে, ইংরেজি থেকে ধার করা পরিভাষা নয়। অবশ্য কম্পিউটার বিজ্ঞানের মত একটি ক্ষেত্রে এটি করা সাধারণের চাইতে বেশি কঠিন হতে পারে, একথা আমি স্বীকার করি। কিন্তু নিজস্ব বাংলা পরিভাষা গঠন করা অত্যন্ত জরুরী।

শুধু তাই নয়। বাংলাতে বৈজ্ঞানিক পরিভাষা তৈরির একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে। ১৯শ শতকের শেষের দিকে ও ২০শ শতকের শুরুতে যখন আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জয়জয়কার ছিল, নিত্যনতুন তত্ত্ব আবিষ্কৃত হচ্ছিল এবং ইংরেজি ও অন্যান্য ইউরোপীয় ভাষাতে লাতিন-গ্রিক শব্দমূল বা root ব্যবহার করে বহু নতুন পরিভাষা তৈরি হচ্ছিল, তখন তার সাথে তাল মিলিয়ে তৎকালীন বাঙালি পণ্ডিত পদার্থবিজ্ঞানীরা যেমন জগদীশচন্দ্র বসু, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, ও অন্যান্যরা বহু নতুন পদার্থবিজ্ঞান-বিষয়ক বাংলা পরিভাষা তৈরি করেন। আজকাল স্কুল কলেজের বাংলা পাঠ্যপুস্তকে আমরা পদার্থবিজ্ঞানের যে পরিভাষাগুলি বাংলা হিসেবে চিনি ও জানি, তা ঐ সময়কার পরিভাষা গঠনেরই ফসল। ওনারা ঐসব কাজ করেছিলেন বলেই আমরা এখন বাংলা ম্যাস না বলে বলি ভর, ওয়েইট না বলে বলি ওজন; এরকম হাজার হাজার বাংলা পরিভাষা আমরা আজও ব্যবহার করি। এতে আমাদের পদার্থবিজ্ঞানের ধারণাগুলি বুঝতে বিন্দুমাত্র সমস্যা পোহাতে হয় না। এই বাংলা পরিভাষাগুলি এখন আমাদের বাংলা বিজ্ঞান বিষয়ক শব্দভাণ্ডারের গভীরে প্রোথিত, আমাদের গর্বের সম্পদ।

এটা দুঃখজনক যে বিংশ শতাব্দীতে আধুনিক বিজ্ঞান অনেক অগ্রসর হলেও তার সাথে সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের বাংলা পরিভাষা গঠনের এই ঐতিহ্যে এক ধরনের ভাটা পড়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরে একটা জোয়ার এসেছিল। কিন্তু আশির দশকের দ্বিতীয়ার্ধে ও তারও পরে যখন ইন্টারনেট ও কম্পিউটার প্রযুক্তি বাংলাদেশে ও পশ্চিমবঙ্গে জনপ্রিয় হতে শুরু করে, তখন কেউ আন্তর্জাতিক কম্পিউটার পরিভাষাগুলির বাংলা সংস্করণ তৈরির ব্যাপারে বড় রকমের উদ্যোগ নেননি। এই ব্যাপারে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করার কথা ছিল আমাদেরই বাংলা-ভাষা বিষয়ে সচেতন কম্পিউটার প্রযুক্তিবিদ ও প্রকৌশলীদের। এবং এটা করার কথা ছিল ২০১০ সালে এসে নয়, ১৯৯০-এর দশকেই। দুঃখজনকভাবে সম্ভবত সেসময় তাদের মাথায় এই ব্যাপারটা প্রাধান্য পায়নি। যার ফলশ্রুতি বর্তমানে কম্পিউটারের ক্ষেত্রে বাংলা পরিভাষা ব্যবহারের এই অনীহা, যেটা যেকোন সচেতন বাংলাভাষী মানুষেরই “উদ্ভট” লাগার কথা। ব্যাপারটা এখন এমন পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে যে একজন কম্পিউটার প্রযুক্তিবিদ বাংলাতে যখন তার কাজের বিবরণ দেন, তার ভাষাতে ব্যবহৃত শব্দের ৮০%-ই দেখা যায় ইংরেজি শব্দ। সেই ভাষাকে বাংলা বলি কী করে? এর চেয়ে উদ্ভট আর হাস্যকর আর কিছুই হতে পারে না।

একটা ছোট উদাহরণ দেই। পলিমর্ফিজম শব্দটা শুনতে কতটুকু বাংলা লাগে? এটা ইংরেজি ভাষাতেই একটা খটোমটো, অর্থের দিক থেকে অস্বচ্ছ একটা শব্দ। শব্দ দেখে বোঝার উপায়-ই নেই এর মানে কী। একজন ইংরেজিভাষীরও এ শব্দের অর্থ ধরার জন্য লাতিন-গ্রিক ভাষার জ্ঞান থাকা লাগবে। পলি মানে বহু, আর মর্ফ মানে রূপ। বহু মানে কী, রূপ মানে কী, সেটা একজন বাঙালিকে বোঝানো লাগে না। তাই পলিমর্ফিজমের বাংলা পরিভাষা যদি বহুরূপিতা বানানো হয়, তাহলে জিনিসটা বাংলাও হয়, আর বুঝতেও অনেক বেশি স্বচ্ছ হয়। আধুনিক প্রজন্মের অনেকের কাছে হয়তো ইংরেজি শব্দ বলতে অনেক বেশি cool শোনায়, কিন্তু তা-ই বলে বাংলা ভাষার বিপুল শব্দভাণ্ডারের যে অসাধারণ সম্পদ, তা-তো আমরা উপেক্ষা করতে পারি না। যে কাজ বাংলা দিয়ে সুন্দরভাবে চালানো যায়, সে কাজ করতে এত অনীহা কেন?

বাংলা ভাষায় কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ক কোন আদর্শ জ্ঞানকোষ পর্যন্ত নেই, যাতে কম্পিউটার বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়গুলি বাংলায় সুন্দর করে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এর জন্য পূর্ববর্তী প্রজন্মকে দায় দেওয়া যায়, কিন্তু সেটা হবে পেছন ফিরে তাকানো আর সময়ের অপচয়। বাংলাভাষী নতুন প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ প্রজন্মের উচিত নিজের মাতৃভাষার ব্যাপারে আরও সচেতন হওয়া। তাদের উচিত প্রযুক্তিকে বাংলাভাষী জনসাধারণের কাছে আরও উন্মুক্ত করা, আরও স্বচ্ছ করা, এবং সেটা আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্যের ধারক-বাহক বাংলা ভাষা নামের সম্পদটাকে কাজে লাগিয়েই করা। --অর্ণব (আলাপ | অবদান) ১৮:০৫, ১৮ নভেম্বর ২০১০ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]

আমি প্রচলিত বাংলা পরিভাষা গ্রহণের পক্ষে মত দেবো। বিশেষ করে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীতে কম্পিউটার বিজ্ঞান বাংলাতে পড়ানো হয়, সেখানে যে পরিভাষা ব্যবহৃত হয় সেটা ব্যবহার করা যেতে পারে। উপাত্ত কাঠামো, বহুরূপিতা, খুবই সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য পরিভাষা। বাংলা একাডেমী বলেছে দেখে উইকিপিডিয়ার গ্রহণ করতে হবে এমন কোনো কথা নেই, কিন্তু বাংলা ভাষার স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারণে বাংলা একাডেমীর ভূমিকা আছে, তাই তাঁদের প্রণীত পরিভাষা, নিয়ম, এগুলো আমলে নেওয়া যায়। বাংলাদেশের সব বিষয়ের শিক্ষাই এখন ইংরেজি মাধ্যমে হয়, তাই বলে কী সব বিষয়েই আমরা ইংরেজি পরিভাষা গ্রহণ করবো? শুধুমাত্র বাংলা একাডেমী যেমন কোনো গ্রহণযোগ্য যুক্তি হতে পারে না, তেমনি শুধু প্রচলনও কোনো গ্রহণযোগ্য যুক্তি নয়। — তানভিরআলাপ০৪:৩৪, ১৯ নভেম্বর ২০১০ (ইউটিসি)[উত্তর দিন]