ইয়েমেনে ধর্মহীনতা
ইয়েমেনে ধর্মহীনতা সাধারণত অস্বাভাবিক, কারণ ইসলাম ইয়েমেনের প্রধান এবং রাষ্ট্রীয় ধর্ম।[১][২] ইয়েমেনে নাস্তিকদের সংখ্যা নির্ণয় করা কঠিন, কারণ তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের আদমশুমারিতে গণনা করা হয় না।[১] ইয়েমেনে নাস্তিক হওয়া একটি বড় অপরাধ তাই অনেক ইয়েমেনি নাস্তিক ইন্টারনেটের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করে থাকেন।[২]
ইয়েমেনে ইসলাম ত্যাগের শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড।[২][৩][৪][৫]
মুসলমানদের দ্বারা অত্যাচার
[সম্পাদনা]২০১৩ সালের সানা হামলার পর ইয়েমেনের আল হুদায়দাহ গভর্নরেটের বাজিল জেলার একজন ইয়েমেনি মহিলা ইসলাম ত্যাগ করে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন, সরকার তাকে তদন্তের অধীনে রাখে, সুযোগের সময় শেষ হওয়ার পর তাকে একটি মানসিক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।[৬]
ধর্মনিরপেক্ষতা এবং নাস্তিকতা বা এমনকি অ-ধর্মীয় হওয়ার মধ্যে একটি বিস্তৃত ভুল ধারণাও রয়েছে, সেই বিভ্রান্তির কারণে অনেক আন্দোলনকর্মীকে অপহরণ করা হয়েছিল, নিম্নলিখিত ঘটনাগুলি এর উদাহরণ:
- ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তে একজন ধর্মনিরপেক্ষ কর্মী আনোয়ার আল ওয়াজিরকে তার পরিবারের সামনে থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার জন্য।[৭][৮]
- ২৬ এপ্রিল ২০১৬ তে একজন ১৭ বছর বয়সী কর্মী ওমর বাতেয়ীল, যাকে এর আগে নাস্তিকতার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়ছিল, তাকে অ্যাডেনে হত্যা করা হয়। তার একটি বিখ্যাত উক্তি ছিল, "তারা আমাকে নাস্তিকতার অভিযোগে অভিযুক্ত করে! হে মানুষ, আমি ফুলের মধ্যে ভগবানকে দেখি, আর তোমরা তাঁকে কবরস্থানে দেখতে পাও, এটাই আমার আর তোমাদের মধ্যে পার্থক্য"।[৯][১০]
- ১৫ মে ২০১৭ তে ওমর বাতেয়ীলের একজন বন্ধু আমজাদ আবদুলরহমানকে ধর্মত্যাগের অভিযুগে খুন করা হয়। তার পরিবারকে জানাজার নামাজে অংশগ্রহন করতে ও মরদেহ কবরস্থ করতেও বাধা দেওয়া হয়[১১][১২][১৩]
- ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ এ ১৮ বছর বয়সী লুয়াই সাদ্দামকে একটি বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট করার পর তার নিজের ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার গলায় দড়ি লাগানো একটি ছবিও পাওয়া যায় যাতে বোঝা জয় সে আত্মহত্যা করেছে, কিন্তু অনেকে সন্দেহ করেন তাকে খুন করা হয়েছে।[১৪][১৫]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ "2022 Report on International Religious Freedom: Yemen" [আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর ২০২২ রিপোর্ট: ইয়েমেন]। state.gov (ইংরেজি ভাষায়)। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০২৪।
সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা হয়েছে। এটি "আইনের সীমার মধ্যে" চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রদান করে কিন্তু ধর্ম, বিশ্বাস বা বিবেকের স্বাধীনতা উল্লেখ করে না। সংবিধানে বলা হয়েছে সকল আইনের উৎস হল শরিয়া।
- ↑ ক খ গ মামারি, ইস্কান্দর (১১ মার্চ ২০১৪)। "Yemen's Atheists, Banned by Islamic Law, Find Safe Haven Online" [ইসলামী আইন দ্বারা নিষিদ্ধ ইয়েমেনের নাস্তিকরা অনলাইনে নিরাপদ আশ্রয় অনলাইন খুঁজে পেয়েছেন]। themediaonline.org (ইংরেজি ভাষায়)। Media Online। ২৩ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ Robert Evans (৯ ডিসেম্বর ২০১৩)। "Atheists face death in 13 countries, global discrimination: study" [১৩ টি দেশে মৃত্যুদণ্ডের শিকার নাস্তিকরা: বৈশ্বিক বৈষম্য] (ইংরেজি ভাষায়)। Reuters। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "Of little faith: world's most dangerous places for atheists" [নাস্তিকদের জন্য পৃথিবীর সবথেকে বিপজ্জনক দেশগুলো] (ইংরেজি ভাষায়)। Channel 4। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "Laws Criminalizing Apostasy" [ধর্মত্যাগ অপরাধী আইন]। Library of Congress (ইংরেজি ভাষায়)। ৬ এপ্রিল ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "الحكومة اليمنية تـُدخل فاطمة السالم مستشفى المجانين بعد اعتناقها المسيحية" [ইয়েমেনি সরকার ফাতিমা আল-সালেমকে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার পরে পাগলা গারদে ভর্তি করেছিল]। radiosawa.com (ইংরেজি ভাষায়)। ৪ মার্চ ২০১৬। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Killing Anwar Alwazir in front of his kids (Arabic)"। ২০১৭-০৮-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-০৩।
- ↑ "من قتل انور الوزير .. ؟؟!!!!" [আনোয়ার ওয়াজীরকে কে মারল ..??] (আরবি ভাষায়)। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "Omar Mohammad: The 17 Year Old Martyr Of Arab Free Thought and Speech"। stateofmind13.com। ২৭ এপ্রিল ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "Yemeni accused of atheism is murdered"। al-bab। ২৬ এপ্রিল ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ Alwly, Ahmed (৫ জুলাই ২০১৭)। "In Aden, Yemeni activists still live in fear"। Al-Monitor। ২৫ মে ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "Gunmen Kill a Human Rights Activist at an Internet Cafe in Aden"। YemenExtra (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ মে ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "Activist in Aden shot dead by unknown gunmen"। womenpress.org। ১৫ মে ২০১৭। ২৬ আগষ্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "العثور على جثة شاب يمني في منزله بعد يوم من منشور بالفيسبوك يحمل "أفكار الحادية" [“সুখী চিন্তা” লেখা ফেসবুকে পোস্ট করার একদিন পর ইয়েমেনি যুবকের লাশ তার বাড়িতে পাওয়া গেছে]। almashhad-alyemeni.com (আরবি ভাষায়)। ৫ সেপ্টেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ লুয়াই সাদ্দাম (৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪)। "লুয়াই-এর শেষ ফেব্সবুক পোস্ট"। fecebook.com (আরবি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০২৪।