আজারবাইজানের জাতীয় প্রতীক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আজারবাইজানের জাতীয় প্রতীক
Azərbaycan gerbi
Азәрбајҹан ҝерби
আর্মিজারআজারবাইজান
গৃহীত১৭ নভেম্বর, ১৯৯০ (১৯১৮)
প্রতীকচিহ্নের বিবরণমুদ্রার উপর আটবাহুবিশিষ্ট সামুদ্রিক মাছ, এবং তার উপর আঙ্গুলের মত প্রক্ষেপণযুক্ত একটি ঝোপ অথবা প্রজ্বলিত আগুনের শিখা এবং বহিঃস্থ হলুদ সীমানার ভিতরে আকাশি সীমানা যার মধ্যে আটটি হলুদ বিন্দু রয়েছে, তার ভেতরে রয়েছে আরেকটি লাল সীমানা।
Compartmentগম এবং ওক

আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় প্রতীক[১] (আজারবাইজানি: Azərbaycan gerbi) ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতীক। প্রতীকটির কেন্দ্রে আগুনের চিহ্ন রয়েছে। আজারবাইজানে যে অনেক চিরস্থায়ী অগ্নিশিখা রয়েছে সেখান থেকেই এই চিহ্নের আগমন। একারণে দেশটিকে "চিরন্তন আগুনের দেশ" ও বলা হয় যা জরাথুস্ট্রবাদ এর মূলভিত্তিকে প্রতিনিধিত্ব করে।

প্রতীকের নিচের দিকে রয়েছে গমের ডাঁটা। গম থেকে তৈরি রুটি আজারবাইজানের প্রধান খাদ্য। গম আজারবাইজানের প্রাচুর্যতার নিদর্শন। গম সোভিয়েত-আমলের অস্ত্রশস্ত্রকেও নির্দেশ করে। নিচের অংশে অবস্থিত অন্য উদ্ভিদ হল ওক গাছ, যা একটি শক্ত গাছ। আজারবাইজানে ওক হল পরিশ্রম, শক্তি এবং ক্ষিপ্রতার প্রতীক।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

সোভিয়েত ইউনিয়নের অধীনে থাকাকালীন আজারবাইজানের প্রতীক (আজারবাইজান এস.এস.আর)

১৯২০ সালের ৩০ জানুয়ারি তৎকালীন গণপ্রজাতন্ত্রী আজারবাইজান সরকার আজারবাইজানের জাতীয় প্রতীক সৃষ্টির জন্য একটি প্রতিযোগিতার ঘোষণা দেয় এবং একই বছরের মে মাসে প্রতীকের মডেল উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে, ২৮ শে এপ্রিল ১৯২০ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী আজারবাইজান রাষ্ট্রের পতন হবার ফলে প্রতীকটি অননুমোদিতই থেকে যায়।

১৯৯০ সালের ১৭ নভেম্বর নাখিচেভান স্বায়ত্তশাসিত প্রজাতন্ত্রের সুপ্রিম মজলিস জাতীয় প্রতীকের ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা করেছিল এবং আজারবাইজানের জাতীয় প্রতীক সৃষ্টির জন্য নতুন প্রতিযোগিতার আহ্বান করার জন্য আজারবাইজান এস.এস.আর রাষ্ট্রের সুপ্রিম কাউন্সিলের নিকট আবেদন করেছিল।

১৯৯১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের সুপ্রিম কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিযোগিতা ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৯৯১-১৯৯২ সালে প্রতিযোগিতা চলাকালীন সমযয়ে দশটি নমুনা প্রতীক উপস্থাপন করা হয়েছিল। অনেকে আবার ১৯১৯ -১৯২০ এর মধ্যে সৃষ্ট নমুনাগুলোর একটি গ্রহণেরও প্রস্তাব করেছিলেন।

১৯৯৩ সালের ১৯ জানুয়ারি, আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের সুপ্রিম কাউন্সিলের সাংবিধানিক আইন অনুসারে ১৯৯৯-১৯২০ সালের মধ্যে প্রস্তুতকৃত নমুনাগুলির মধ্যে শেষ পর্যন্ত একটি প্রতীককে কিছু পরিবর্তন ও পরিমার্জনা করে আজারবাইজানের জাতীয় প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

অন্যান্য যে সকল সোভিয়েত-পরবর্তী প্রজাতন্ত্রগুলির প্রতীক অক্টোবর বিপ্লবের ইঙ্গিত প্রদান থেকে বিরত, তাদের মতোই আজারবাইজানের বর্তমান প্রতীকটি সোভিয়েত ইউনিয়নের কিছু চিহ্ন আংশিকভাবে ধরে রেখেছে। যেমনঃ গম এবং লাল রঙ (যা আগে সোভিয়েত ব্যানারগুলিতে দেখা যেত)।

অর্থ[সম্পাদনা]

প্রতীকে ব্যবহৃত রঙগুলি জাতীয় পতাকা থেকে নেওয়া হয়েছে। সবুজ রঙ ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করে; লাল আজারবাইজানের উন্নয়ন এবং গণতন্ত্রকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং নীল প্রতিনিধিত্ব করে যে আজারবাইজানীয়রা তুর্ক জাতি। আট-কোণাবিশিষ্ট তারা ( অষ্টভূজ ) নিজেই তুর্ক জাতির আটটি শাখাকে নির্দেশ করে এবং তারাটির প্রতিটি বাহুর মধ্যে একটি ছোট হলুদ বৃত্ত পাওয়া যায়।

আজারবাইজানের জাতীয় প্রতীক দেশটির স্বাধীনতার প্রতীক। এটি প্রাচ্য়ের একটি ঢাল, একটি ওক-গাছের ডাল-পালা এবং এটির মঞ্জুরির দ্বারা গঠিত একটি অর্ধবৃত্তের চিত্র। জাতীয় পতাকার রঙগুলির সমন্বয়ে গঠিত পটভূমিতে একটি আট-কোণাবিশিষ্ট তারার কেন্দ্রে অবস্থিত ঢালটিতে একটি আগুনের চিত্র রয়েছে যা "চিরস্থায়ী আগুনের দেশ" নামটিকে নির্দেশ করে। [২]

ব্যবহার[সম্পাদনা]

আজারবাইজানীয় প্রতীকটি যেসব স্থানে ব্যবহৃত হয়:

  • আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতির বাসভবন এবং ব্যক্তিগত অফিস;
  • আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের সংসদ ভবন, এর সম্মেলন হল এবং সংসদের সভাপতির ব্যক্তিগত কার্যালয়;
  • সকল আদালত, সামরিক ট্রাইব্যুনাল ভবন, বিচার বিভাগীয় হলসমূহ; সুপ্রিম কোর্ট এবং আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের সাংবিধানিক আদালতের সভাপতির ব্যক্তিগত অফিসসমূহ;
  • আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের আইনসভার আওতাভুক্ত রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলির ভবনে;
  • কূটনৈতিক এবং বাণিজ্য়িক ভবন এবং আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের দূতাবাস ভবন।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]