আগমেশ্বরী মাতা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আগমেশ্বরী মাতা
আগমেশ্বরী মাতা,নবদ্বীপ

আগমেশ্বরী মাতা হল নবদ্বীপে পূজিত কালী প্রতিমা। নবদ্বীপের সুপণ্ডিত তথা কালীসাধক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ এই পুজো শুরু করেন। এই পুজো প্রায় ৪০০ বছরের প্রাচীন।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

কৃষ্ণানন্দ দীপান্বিতা অমাবস্যায় একই দিনে ছোট আকারের কালীমূর্তি নির্মাণ করে রাত্রে পূজার্চনা শেষে ভোরে বিসর্জন দিতেন। এই কারণে লোকে বলতো আগমবাগীশি কাণ্ড। কথাটি প্রবাদে পরিণত হয়েছিল। পরবর্তীতে তার পূজিত দেবী আগমেশ্বরী মাতা নামে প্রতিবছর নবদ্বীপে পূজিত হয়।[২]

বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

কৃষ্ণানন্দ দীপান্বিতা অমাবস্যায় একই দিনে কালীমূর্তি গড়ে রাত্রে পূজার্চনা শেষে ভোরে বিসর্জন দিতেন। বর্তমানে এত বড় প্রতিমা এক দিনে গড়া সম্ভব হয় না। এখন কোজাগরী পূর্ণিমার পর কৃষ্ণাপঞ্চমী তিথিতে প্রতিমা নির্মানের কাজ শুরু হয়। একাদশীতে যখন বড় প্রতিমার খড় বাঁধা হয় তখন ছোট ৫ পোয়ার প্রতিমাকে স্থাপন করা হয় বড় প্রতিমার হৃদয়ে। তারপর একমেটে-দোমেটের পর বিগ্রহ রঙ করা হয়। অমাবস্যায় দেবীর চক্ষুদান করা হয়। গভীর রাতে হয় আরাধনা। পরদিন দুপুরে প্রতিমা নিরঞ্জন।

মন্দির[সম্পাদনা]

বিশেষ ধরনের চাঁদ মালা, মূলত এই ধরনের চাঁদ মালা আগমেশ্বরী মাতার পুজোর জন্য ব্যবহার হয়।

বর্তমানে আগমেশ্বরীপাড়ায় যেখানে আগমেশ্বরী মন্দিরটি অবস্থিত ওই অঞ্চলটি কৃষ্ণানন্দের সময়ে কিছুটা ঝোপঝার জঙ্গলাকীর্ণ আর কিছুটা গোপ-সম্প্রদায়ের বাস। আগমেশ্বরী মন্দিরটি পঞ্চমুণ্ডীর আসনের উপর নির্মিত। আনুমানিক ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দের শেষ দিকে ছোট আকারের মন্দির নির্মিত হয়েছিল। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে মন্দির সংস্কার করে নতুন করে গড়ে তোলা হয়। এই পঞ্চমুণ্ডীর আসনেই সাধনা করে কৃষ্ণানন্দ আগমসিদ্ধ হয়ে আগমবাগীশ হয়ে ওঠেন।[৩]

চলচ্চিত্র[সম্পাদনা]

১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলা চলচ্চিত্রে অরুণ চৌধুরীর পরিচালনায় মাতা আগমেশ্বরী নামে একটি ছায়াছবি নির্মিত হয়।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "বাংলায় দক্ষিণা কালীর প্রবর্তক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশের আগমেশ্বরী পুজো"24Ghanta.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-১০-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৩ 
  2. সংবাদ খোজখবর পত্রিকা, ১৬-৩১ অক্টোবর, ২০১৭, পৃষ্ঠা: ৪
  3. বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাশিস। "কৃষ্ণানন্দকে সামনে দেখে জিভ কাটলেন কৃষ্ণাঙ্গী বধূ - Anandabazar"anandabazar.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৩ 
  4. Rajadhyaksha, Ashish; Willemen, Paul (২০১৪-০৭-১০)। Encyclopedia of Indian Cinema (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। পৃষ্ঠা ৬১৭। আইএসবিএন 978-1-135-94318-9