আকি কিতি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আকি কিতি
অন্য যে নামে পরিচিতসুমি কিক ফাইটিং
লক্ষ্যলাথি মারা, ব্লকিং
কঠোরতাআধা-যোগাযোগ
উৎপত্তির দেশভারত
উদ্ভাবকসুমি নাগা মানুষ
অলিম্পিক খেলানা
অর্থকিক মারামারি

আকি কিতি হল একটি আধা-সংযুক্ত যুদ্ধ ক্রীড়া যা পা দিয়ে লাথি মারা এবং পায়ের তলা দিয়ে প্রতিপক্ষকে মারার আটকানোর ওপর নির্ভর করে। এটি ভারতের নাগাল্যান্ডের সুমি নাগা জনগণের ঐতিহ্যবাহী খেলা। মাটিতে তৈরি একটি বৃত্তাকার রিংয়ের মধ্যে খেলা হয়, সাধারণত দুইজন খেলোয়াড়ের মধ্যে খেলা হয়। খেলায় জয়লাভের লক্ষ্য হল প্রতিপক্ষকে ফেলে দেওয়া বা হাত দিয়ে মাটি স্পর্শ করানো অথবা খেলার অঞ্চলের বাইরে পা রাখতে বাধ্য করা।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য নাগাল্যান্ডের সুমি নাগাদের মধ্যে একটি খেলা হিসাবে আকি কিটির উদ্ভব হয়।এটি মূলত শুধুমাত্র একটি ক্রীড়া অনুষ্ঠান হিসাবে উদ্দেশ্য করে হয় যা সহিংসতার আশ্রয় না নিয়ে উপজাতি ও তাদের মানুষদের মধ্যে ভুল সংশোধন, সম্মান পুনরুদ্ধার বা "স্কোর নিষ্পত্তি" করার উদ্দেশ্যে কাজ করেছিল। উপজাতি অনুষ্ঠানের সময় এটি অনুশীলন করা হতো।[১] আকি কিতি মানে "লাথি লড়াই" [২] ২০২২ সালে প্রকাশিত নৃতত্ত্ববিদ জন হেনরি হাটন রচিত দ্য সেমা নাগাস বইয়ে আকি কিতি নিয়ে লেখা হয়েছে।[৩]

খেলা[সম্পাদনা]

আকি কিতিতে, প্রতিপক্ষকে আঘাত করা ও বাধা দেওয়ার জন্য শুধুমাত্র পায়ের তলদেশ ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি মাটিতে টানা একটি রিংয়ের ভিতরে খেলা হয়। সেমি-কন্ট্যাক্ট গেমের উদ্দেশ্য হল প্রতিপক্ষকে নতজানু হতে বাধ্য করা অথবা তাকে রিং থেকে বের করে দেওয়া। সামনের দিকে লাথি বা লাফ দিয়ে সামনের দিকে লাথিগুলি প্রতিপক্ষের কোমর, পাশ বা বুকে নির্দেশিত হয়। খেলাধুলার জন্য কোনও নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণের পাঠ্যক্রম নেই, যে কোনও অনুশীলন যা যোদ্ধাদের জন্য সহনশীলতা, শক্তি এবং নমনীয়তা অর্জনে সহায়তা করতে পারে তা প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার অংশ।[১] সাধারণত এটি দুই ব্যক্তির খেলা, তবে একজন বিশেষজ্ঞ চাইলে দুইজন জুনিয়রকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিপক্ষ নিচে পড়ার পরে তাকে লাথি মারা যাবেনা। এমনকি একটি আঙুল দিয়ে মাটি স্পর্শ করলেও খেলাতে পরাজয় হতে পারে।[৩]

আধুনিক যুগের অনুশীলন[সম্পাদনা]

২০১৪ সালে শিল্পের প্রচার ও পুনরুজ্জীবনের উদ্দেশ্যে আফুয়েমি আকিকিতি অ্যাসোসিয়েশন গঠিত হয়েছিল। তারা এই খেলাকে অ্যাথলেটিক্স হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছিল। তারপর থেকে, নভেম্বর মাসে পুঘোবতোতে বার্ষিক থুয়ুনি উৎসবে অনুষ্ঠিত থুয়ুনি আকিকিতি চ্যাম্পিয়নশিপে আকি কিতি প্রতি বছর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছে। এটি তিন রাউন্ড সহ তিন থেকে চার মিনিট ধরে খেলা হয়। হাত ব্যবহার করাটা একটা ভুল। ২০১৮ সালে সমিতিটি কিসামা হেরিটেজ ভিলেজের হর্নবিল উৎসবে আকি কিতির প্রদর্শন করে।[৪][২]

মিডিয়ায়[সম্পাদনা]

২০০৮ সালে এটি বিবিসি থ্রি রিয়েলিটি টিভি শো লাস্ট ম্যান স্ট্যান্ডিংয়ের সিরিজ ১-এর চতুর্থ পর্বে দেখানো হয়ছে। সুমি কিক ফাইটিং শিরোনামে পর্বটিতে যুক্তরাজ্যমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছয়জন ক্রীড়াবিদ উপজাতি চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে শেষ ব্যক্তি হয়ে ওঠেন।[৫] [৬]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Crudelli, Chris (অক্টোবর ২০০৮)। The Way of the WarriorDorling Kindersley Limited। পৃষ্ঠা 23। আইএসবিএন 978-1-4053-3750-2 
  2. NT Online (৫ ডিসেম্বর ২০১৮)। "Akikiti : The last man standing"Nagaland Today। ২৫ জুলাই ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০২০ 
  3. Kohima Bureau (৮ ডিসেম্বর ২০১৭)। "Way of the Hornbill: Tribes represent the Naga lore in a single event"Eastern Mirror Nagaland। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০২০ 
  4. Correspondent Kohima (৬ ডিসেম্বর ২০১৮)। "Sumimartial art demonstration"Nagaland Post। ৬ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০২০ 
  5. "Sumi Kick Fighting"BBC। ২৪ মে ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০২০ 
  6. Newsome, Brad (২৬ জানুয়ারি ২০১২)। "Last Man Standing: Nagaland India, Saturday, January 27"The Sydney Morning Herald। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০২০