আইয়ামুল বিজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আইয়ামুল বিজ (বাংলা: উজ্জ্বল দিবস) প্রতিটি মাসের নির্দিষ্ট কয়েকটি দিন। এই দিনগুলোর মাহাত্ম্যে নবি মুহাম্মাদ (সাঃ) থেকে কিছু হাদিস বর্ণিত আছে। এই দিনগুলি হিজরী বছরের প্রতিটি মাসের ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখ। এই তারিখের রাতগুলোয় চাঁদের আলোয় বেশি উজ্জ্বল থাকে; তাই এই নামে নামকরণ। কেননা এই রাতগুলোতে চাঁদ পরিপূর্ণ পূর্ণিমা পায়। ফলে এই রাতগুলোতে চাঁদকে দেখা যায় খালি চোখে, প্রচ্ছন্ন অবয়বে। এই দিনগুলোকে "আইয়ামুল গুর" (আলোকিত দিন)-ও বলা হয়। [১]

আইয়ামুল বিজের রোজা[সম্পাদনা]

প্রতি চন্দ্র মাসে তিনটি রোজা রাখা মুস্তাহাব। এর জন্য উত্তম হলো আইয়ামুল বিজ তথা প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫তম দিন নির্বাচন করা। এই দিবসগুলোর রাত পূর্ণ চাঁদে উদ্ভাসিত থাকে এবং রাতগুলো হয় আলোময়; তাই এই নামে নামকরণ। এই রোজার সওয়াব হচ্ছে পূর্ণ বছর অর্থাৎ বছরের প্রতিটি দিন রোজা রাখার সওয়াব। কেননা “একটি কর্মে দশগুণ পূণ্য” এই নীতির ভিত্তিতে প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখার দ্বারা পূর্ণ মাস রোজা রাখার সওয়াব লাভ হচ্ছে এবং এই পূর্ণ মাসের রোজায় ভাঙা বা বিনষ্ট হওয়ার প্রতিবন্ধকতাও নেই। এর প্রমাণ আল-গিফারির হাদিস। তিনি বর্ণনা করেন: মুহাম্মাদ (সাঃ) তাকে বলেছেন:

তুমি যদি মাসে তিনটি রোজা রাখতে চাও, তাহলে তারিখের তেরোতম, চৌদ্দতম এবং পনেরোতম দিনে রোজা রাখবে। [২]

এই রোজার পুরষ্কারে মুহাম্মাদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন:

মাসে তিন দিন রোজা রাখ। প্রতিটি নেক আমলে দশগুণ সওয়াব; ফলে পূর্ণ বছর রোজার সওয়াব পাবে।[৩]

এটাও বর্ণিত যে, নবি মুহাম্মাদ প্রতি মাসে তিনদিন রোজা রাখতেন।[৪] মুহাম্মাদ থেকে আরো হাদিস রয়েছে। যেগুলি দ্বারা আইয়ামে বিজে রোজা রাখার উপকারিতা নিশ্চিত হয়। ইবনে আব্বাস নবি মুহাম্মাদের কথা বলেন: তিনি (মুহাম্মাদ) ঘরে কিংবা সফরে কখনো আইয়ামে বিজের রোজা ছাড়তেন না।

মুহাম্মাদ (সাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

তুমি রোজা রাখতে চাইলে মাসের ১৩তম, ১৪তম এবং ১৫তম দিনে রাখবে।[৫]

মুহাম্মাদ আইয়ামে বিজে রোজা রাখার বিষয়ে সাহাবিগণকে উদ্বুদ্ধ করেন। এবং বলেন:

আইয়ামে বিজে রোজা রাখা সারা বছরই রোজা।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস থেকে বর্ণিত : নবি মুহাম্মাদ (সাঃ) তাকে বলেছেন:

তুমি প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখবে-এটা তোমার জন্য ভালো। কেননা তোমার একটি সৎকাজ দশগুণ সমান; ফলে তুমি যেন পুরা বৎসরই রোজা রাখছ। [৬]

আল-গিফারি হতে বর্ণিত, নবি মুহাম্মাদ (সাঃ) আমাকে বলেছেন:

যদি তুমি রোজা রাখো, তাহলে মাসের ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখে রোজা রাখ। [৭]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "www.amrkhalid.com عمرو خالد:فضل صيام الأيام البيض-إطلع عليه بتاريخ 5 أبريل 2019-"। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০২০ 
  2. رواه الترمذي وحسنه، والنسائي وابن حبان في صحيحه، وأحمد (نيل الأوطار: 252/4 وما بعدها، سبل السلام: 168/2).
  3. متفق عليه - رواه البخاري ومسلم في صحيحيهما
  4. رواه أصحاب السنن وصححه ابن خزيمة من حديث ابن مسعود، وأخرج مسلم من حديث عائشة «كان رسول الله صلّى الله عليه وسلم يصوم من كل شهر ثلاثة أيام، ما يبالي في أي الشهر صام» (سبل السلام: 168/2).
  5. wwww.library.islamweb.com-سنن النسائي الصغرى/كتاب الصيام ( رقم الحديث: 2394)-إطلع عليه بتاريخ 5 أبريل 2019 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৭-০৩-০৮ তারিখে
  6. "صيــام الأيـــام البــيـــض كصيام الدهر كله - البوابة الدينية"। ২৩ জুলাই ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০২০ 
  7. "www.islam.library.com_سنن النسائي الصغرى/كتاب الصيام (رقم الحديث:2391)_إطلع عليه بتاريخ 5 أبريل 2019"। ৮ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০২০