অর্ণব রাই চৌধুরী
অর্ণব রাই চৌধুরী | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | প্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান কানপুর শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় হাই অল্টিটিউড অবজারভেটরি |
পরিচিতির কারণ | সৌর গতিবিদ্যা তত্ত্বে অবদানের জন্য |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | পদার্থবিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থা, বেঙ্গালুরু |
অভিসন্দর্ভের শিরোনাম | The dynamics of magnetically trapped fluids: implications for umbral dots and penumbtal grains (১৯৮৫) |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | ইউজেন নিউম্যান পার্কার |
ডক্টরেট শিক্ষার্থী | মৌসুমী দিকপতি, দিবেন্দু নন্দি |
অর্ণব রাই চৌধুরি (জন্ম: ৯ নভেম্বর ১৯৫৬) হলেন একজন ভারতীয় বিজ্ঞানী ও বেঙ্গালুরুস্থিত ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থার অধ্যাপক। তিনি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল ম্যাগনেটোহাইড্রোডায়নামিক্স ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করে থাকেন, বিশেষ করে, সৌর চৌম্বক চক্রের প্রেক্ষাপটে গবেষণা করেন।
জন্ম[সম্পাদনা]
অর্ণব রাই চৌধুরি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতায় ১৯৫৬ সালের ৯ নভেম্বর তারিখে জন্মগ্রহন করেন।
শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]
অর্ণব রাই চৌধুরী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯৭৮ সালে পদার্থবিজ্ঞানে সন্মানসহ বিএসসি ডিগ্রি এবং আইআইটি কানপুর থেকে ১৯৮০ সালে পদার্থবিদ্যায় এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।[১][২] এরপর তিনি শার্লি ফার ফেলোশিপ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে যান এবং অধ্যাপক ইউজেন নিউম্যান পার্কারের তত্ত্বাবধানে ১৯৮৫ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।[১][২] পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি বোল্ডারের হাই অল্টিটিউড অবজারভেটরিতে ১৯৮৫ সাল হতে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা করেন।[১]
কর্মজীবন[সম্পাদনা]
পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করে ১৯৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র হতে ভারতে ফিরে এসে তিনি বেঙ্গালুরুস্থিত ভারতীয় বিজ্ঞান সংস্থায় (আইআইএসসি) পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন। সেই সময় থেকেই উক্ত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন,এবং প্রতিষ্ঠাটিতে ২০০২ সাল হতে অধ্যাপক পদে নিযুক্ত আছেন।[১][২] তার এই মেয়াদকালে তিনি ১৯৮৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১৯৯১ সালে স্কটল্যান্ডের সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১৯৯৪-৯৫ সালে জার্মানির ফ্রেইবার্গের কেপেনহুয়ার ইন্সটিটিউটে (আলেকজান্ডার ভন হামবোল্ট ফেলো হিসাবে), ২০০০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে, ২০০২ সালে জার্মানির লিন্ডাউয়ের ম্যাক্স-প্ল্যাঙ্ক-ইনস্টিটিউটে, ২০০৪ সালে যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে, ২০০৪ সালে হাঙ্গেরির ইওটভোস ইউনিভার্সিটিতে, ২০০৬ সালে চীনের বেইজিংয়ের চীনের জাতীয় জ্যোতির্বিদ্যা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে এবং ২০১২ সালে জাপানের টোকিওর জাপানের জাতীয় জ্যোতির্বিদ্যা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে পরিদর্শক অধ্যাপক পদে যুক্ত ছিলেন।[১] তিনি ২০০৯ সাল থেকে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে যুক্ত আছেন।[১]
অবদান[সম্পাদনা]
অর্ণব রাই চৌধুরির গবেষণার দক্ষতা হল অ্যাস্ট্রোফিজিক্সে ম্যাগনেটোহাইড্রোডাইনামিক প্রক্রিয়াগুলির তাত্ত্বিক অধ্যয়ন - প্রাথমিকভাবে সূর্যের সাথে সম্পর্কিত, যদিও তিনি সক্রিয় ছায়াপথ, এক্সট্রা গ্যালাকটিক জেট, নিউট্রন তারা এবং পালসার নিয়েও কাজ করেছেন।[১][২] তার বেশিরভাগ গবেষণাপত্রগুলি সূর্যের চৌম্বকীয় ফ্লাক্স টিউবের উচ্ছ্বসিত উত্থান এবং ডায়নামো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সৌর চৌম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরির জন্য সৌরকলঙ্ক বা সূর্যের দাগ তৈরি বিষয় সম্পর্কিত। তিনি ফ্লাক্স ট্রান্সপোর্ট ডায়নামো মডেলের একজন স্রষ্টা, ১১ বছরের সানস্পট চক্রের বর্তমানে পছন্দের তাত্ত্বিক মডেল এবং শেষ সৌরকলঙ্ক (সানস্পট) চক্রের শক্তির ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য এই মডেলটি সফলভাবে প্রয়োগ করেছেন।[১] তার দুটি বই দ্য ফিজিক্স অব ফ্লুইডস অ্যান্ড প্লাজমা (১৯৯৮, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস) এবং অস্ট্রোফিজিক্স ফর ফিজিসিস্টস (২০১০, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস) বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যপুস্তক হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।[১] ভারতে জ্যোতির্পদার্থবিদ্যার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্নাতক প্রোগ্রাম জয়েন্ট অ্যাস্ট্রোনমি প্রোগ্রাম পরিচালনায় চৌধুরী বহু বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ২০০০ হতে ২০০৭ সময়কালে এই কর্মসূচির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১১ সালের প্রথম এশিয়া-প্যাসিফিক সোলার ফিজিক্স মিটিংয়ের অন্যতম প্রধান সংগঠক ছিলেন এবং এর কার্যপ্রণালী সম্পাদনা করেন। তিনি ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জ্যোতির্বিদ্যা এবং জ্যোতির্পদার্থবিদ্যায় গবেষণা জার্নালের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদকীয় বোর্ডের সদস্য ছিলেন।[১]
পুরস্কার এবং সম্মাননা[সম্পাদনা]
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন স্নাতক ছাত্র হিসাবে তিনি ১৯৮১ সালের পদার্থবিদ্যা প্রার্থীতা পরীক্ষায় অসামান্য কৃতিত্বের জন্য ভ্যালেন্টাইন টেলিগদি পুরস্কার জিতেন।[১] অর্ণব রাই চৌধুরী ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমি এবং ভারতের ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস-এর নির্বাচিত সভ্য।[১] তিনি ১৯৯৪ সালে আলেকজান্ডার ভন হামবোল্ট ফেলোশিপ এবং ২০১০ সালে জেসি বোস ফেলোশিপ লাভ করেন।[১] আমেরিকান লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশনের ম্যাগাজিন চয়েস কর্তৃক পদার্থবিদদের জন্য তার লিখিত অ্যাস্ট্রোফিজিক্স বইটি ২০১০ সালের অসামান্য একাডেমিক শিরোনাম হিসাবে নির্বাচিত হয়।[১]