বিষয়বস্তুতে চলুন

প্রসোবত্তর সংক্রমণ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
প্রসবোত্তর সংক্রমণ
প্রতিশব্দপারপেরাল সংক্রমণ, প্রসবোত্তর সংক্রমণ, পারপেরাল ফিভার বা চাইল্ডবেড ফিভার
বিশেষত্বধাত্রীবিদ্যা
লক্ষণজ্বর, তলপেটে ব্যথা, দুর্গন্ধযুক্ত যোনিস্রাব[]
কারণবিভিন্ন প্রকারের ব্যাকটেরিয়া[]
ঝুঁকির কারণসিজারিয়ান সেকশন, মেমব্রেনের অকাল ফাটা, দীর্ঘ শ্রম, অপুষ্টি, বহুমুত্ররোগ[][]
চিকিৎসাঅ্যান্টিবায়োটিক[]
সংঘটনের হার১.১৮ কোটি[]
মৃতের সংখ্যা১৭,৯০০[]

পারপেরাল সংক্রমণ, যা প্রসবোত্তর সংক্রমণ, পারপেরাল ফিভার বা চাইল্ডবেড ফিভার (ইংরেজি: postpartum infections) নামেও পরিচিত, সেটি হলো বাচ্চার জন্ম বা গর্ভপাতের পর নারী প্রজননতন্ত্রের যেকোনো ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রমণ । লক্ষণ ও উপসর্গসমূহের মধ্যে রয়েছে এমন জ্বর যা ৩৮.০ °সে (১০০.৪ °ফা) হালকা জ্বরের চেয়ে বেশি, কাঁপুনি, তলপেটে ব্যথা, এবং যোনি থেকে বের হয়ে আসা তরল পদার্থের সম্ভাব্য দুর্গন্ধ।[] এটি সাধারণত প্রসবের ২৪ ঘণ্টা পরে এবং প্রথম দশ দিনের মধ্যে ঘটে থাকে।[]

সবচেয়ে কমন সংক্রমণ হলো গর্ভাশয় এবং এর চারপাশের টিস্যুর সংক্রমণ যা পারপেরাল সেপসিস বা পোস্টপার্টাম মেট্রিটিস নামে পরিচিত। ঝুঁকির নিয়ামকগুলোর অন্যগুলোর মধ্যে রয়েছে সিজারিয়ান সেকশন, যোনিপথে নির্দিষ্ট কিছু ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি যেমন: গ্রুপ বি স্ট্রেপ্টোকক্কাস, সময়ের আগেই ঝিল্লি ছিঁড়ে যাওয়া এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রসব বেদনা । বেশিরভাগ সংক্রমণের সাথে বিভিন্ন ধরনের অনেকগুলো ব্যাকটেরিয়া জড়িত। যোনিপথ বা রক্তের কালচার পরীক্ষা দ্বারা রোগ নির্ণয়ে খুব কমই সহায়তা পাওয়া যায়৷ যাদের উন্নতি ঘটে না তাদের জন্য মেডিকেল ইমেজিং এর দরকার হতে পারে। প্রসবোত্তর জ্বরের অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে: স্তন প্রদাহ, মুত্রনালীর সংক্রমণ, তলপেটের কাটা জায়গা বা এপিসিওটমি-তে সংক্রমণ এবং অ্যাটেলেক্টাসিস []

সি-সেকশন পরবর্তী ঝুঁকিসমূহের কারণে অস্ত্রোপচারের সময়কালে সব মহিলাদের জন্য এম্পিসিলিন এর মত অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধক ডোজ গ্রহণের সুপরিশ করা হয়। এযাবত জ্ঞাত সংক্রমণগুলোর চিকিৎসা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েই করা হয় যেখানে বেশিরভাগ রোগীই দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সেরে ওঠেন। হালকা রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য মুখে খাওয়ার অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হতে পারে, অন্যথায় শিরায় গ্রহণের অ্যান্টিবায়োটিক সুপারিশ করা হয়ে থাকে। সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিকের মধ্যে রয়েছে, যোনিপথে প্রসবের ক্ষেত্রে এম্পিসিলিনজেন্টামাইসিন এর সমন্বয় অথবা যাদের সি-সেকশন করা হয়েছে তাদের জন্য ক্লিন্ডামাইসিন ও জেন্টামাইসিন। যথাযথ চিকিৎসায় সেরে উঠছেন এমন ব্যক্তিদের ফোঁড়ার মত অন্য কোনো জটিলতা থাকলে তা বিবেচনায় নেয়া উচিত।[]

উন্নত বিশ্বে প্রায় এক থেকে দুই শতাংশের মধ্যে যোনিপথে প্রসবের পর গর্ভাশয়ের সংক্রমণ দেখা যায়। প্রতিরোধক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের আগে, যাদের আরও বেশি প্রসবকালীন জটিলতা ছিল তাদের ক্ষেত্রে এটি পাঁচ থেকে তের শতাংশ এবং সি-সিজারিয়ান করা হয়েছে এমন মহিলাদের ক্ষেত্রে পঞ্চাশ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।[] ২০১৩ সালে এই সংক্রমণ ২৪,০০০ মৃত্যুর কারণ ঘটিয়েছিল যা ১৯৯০ সালের ৩৪,০০০ মৃত্যুর চেয়ে কম ছিল। [] অবস্থাটির সর্বপ্রথম জ্ঞাত বিবরণ পাওয়া যায় কমপক্ষে খৃষ্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীতে হিপোক্রেটসের লেখা থেকে।[] এই সংক্রমণগুলোই ছিল শিশু জন্মদানের সময়কালব্যাপী মৃত্যুর অতি সাধারণ কারণ যা কমপক্ষে ১৮ শতাব্দীতে শুরু হয়ে ১৯৩০ এর দশক পর্যন্ত চলেছে, অ্যান্টিবায়োটিকের প্রচলন হওয়ার আগ পর্যন্ত৷[] ১৮৪৭ সালে অস্ট্রিয়াতে ইগনাজ সেমেলউইস ক্লোরিন দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা চালু করে এই রোগজনিত মৃত্যুর হার প্রায় বিশ শতাংশ থেকে দুই শতাংশে নামিয়ে এনেছিলেন।[][১০]

লক্ষণ ও উপসর্গ

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "37"। Williams obstetrics (24th সংস্করণ)। McGraw-Hill Professional। ২০১৪। পৃষ্ঠা Chapter 37। আইএসবিএন 9780071798938 
  2. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; WHOBook2015 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  3. GBD 2015 Disease and Injury Incidence and Prevalence, Collaborators. (৮ অক্টোবর ২০১৬)। "Global, regional, and national incidence, prevalence, and years lived with disability for 310 diseases and injuries, 1990-2015: a systematic analysis for the Global Burden of Disease Study 2015."Lancet388 (10053): 1545–1602। ডিওআই:10.1016/S0140-6736(16)31678-6পিএমআইডি 27733282পিএমসি 5055577অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  4. GBD 2015 Mortality and Causes of Death, Collaborators. (৮ অক্টোবর ২০১৬)। "Global, regional, and national life expectancy, all-cause mortality, and cause-specific mortality for 249 causes of death, 1980-2015: a systematic analysis for the Global Burden of Disease Study 2015."Lancet388 (10053): 1459–1544। ডিওআই:10.1016/s0140-6736(16)31012-1পিএমআইডি 27733281পিএমসি 5388903অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  5. Hiralal Konar (২০১৪)। DC Dutta's Textbook of Obstetrics। JP Medical Ltd। পৃষ্ঠা 432। আইএসবিএন 9789351520672 
  6. GBD 2013 Mortality and Causes of Death, Collaborators (১৭ ডিসেম্বর ২০১৪)। "Global, regional, and national age-sex specific all-cause and cause-specific mortality for 240 causes of death, 1990-2013: a systematic analysis for the Global Burden of Disease Study 2013."। Lancetডিওআই:10.1016/S0140-6736(14)61682-2পিএমআইডি 25530442 
  7. Walvekar, Vandana (২০০৫)। Manual of perinatal infections। New Delhi: Jaypee Bros.। পৃষ্ঠা 153। আইএসবিএন 9788180614729। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৭ 
  8. Magner, Lois N. (১৯৯২)। A history of medicine। New York: Dekker। পৃষ্ঠা 257–258। আইএসবিএন 9780824786731 
  9. Anderson, BL (এপ্রিল ২০১৪)। "Puerperal group A streptococcal infection: beyond Semmelweis."। Obstetrics and gynecology123 (4): 874–82। পিএমআইডি 24785617 
  10. Ataman, AD; Vatanoglu-Lutz, EE; Yildirim, G (২০১৩)। "Medicine in stamps-Ignaz Semmelweis and Puerperal Fever."। Journal of the Turkish German Gynecological Association14 (1): 35–9। পিএমআইডি 24592068 

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]
  • চিম ডব্লিউ, বার্সটিন ই (আগস্ট ২০০৩)। "Postpartum infection treatments: a review"। ফারমাকোথেরাপির উপর বিশেষজ্ঞ মতামত (পর্যালোচনা)। (৮): ১২৯৭–৩১৩। ডিওআই:10.1517/14656566.4.8.1297পিএমআইডি 12877638  ভ্যানকুভার শৈলীতে ত্রুটি: initials (সাহায্য)
  • ফ্রেঞ্চ এল (আগস্ট ২০০৩)। "Prevention and treatment of postpartum endometritis"। বর্তমান নারীদের স্বাস্থ্য প্রতিবেদন (পর্যালোচনা)। (৪): ২৭৪–৯। পিএমআইডি 12844449 
  • ক্যালহুন বিসি, ব্রোস্ট বি (জুন ১৯৯৫)। "Emergency management of sudden puerperal fever"। উত্তর আমেরিকার প্রজনন ও গাইনোকোলজি ক্লিনিক (পর্যালোচনা)। ২২ (২): ৩৫৭–৬৭। পিএমআইডি 7651676  ভ্যানকুভার শৈলীতে ত্রুটি: initials (সাহায্য)