বানৌজা এলসিটি-১
ইতিহাস | |
---|---|
বাংলাদেশ | |
নাম: | বানৌজা এলসিটি-১ |
নির্মাতা: |
|
নির্মাণের সময়: | ১৫ জুন, ২০২২ |
শনাক্তকরণ: | হাল নং: এনবি-৭৯৮ |
অবস্থা: | নির্মাণাধীন |
সাধারণ বৈশিষ্ট্য | |
প্রকার ও শ্রেণী: | ভার্ড ৭ ৫০৭-শ্রেণীর ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাংক |
প্রকার: | ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাংক |
ওজন: | ≥১,০০০ টন |
দৈর্ঘ্য: | ৭০ মিটার (২৩০ ফু) |
প্রস্থ: | ১৩ মিটার (৪৩ ফু) |
গভীরতা: | ১.০ মিটার (৩.৩ ফু) সম্মুখ, ২.২ মিটার (৭.২ ফু) পশ্চাৎ |
প্রচালনশক্তি: |
|
গতিবেগ: | ১৫ নট (২৮ কিমি/ঘ; ১৭ মা/ঘ) |
সীমা: | ১,৫০০ নটিক্যাল মাইল (১,৭০০ মা; ২,৮০০ কিমি) |
নৌকা ও অবতরণ নৈপুণ্য বহন করে: | ১টি |
লোকবল: | ৬০ জন |
যান্ত্রিক যুদ্ধাস্ত্র ও ফাঁদ: |
|
রণসজ্জা: |
|
টীকা: | ১ × ২.৫ টন ডেক ক্রেন (ইতালি) |
বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (সংক্ষেপেঃ বানৌজা) এলসিটি-১ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ভার্ড ৭ ৫০৭-শ্রেণীর একটি ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাংক জাহাজ। এই জাহাজটি ভার্ড মেরিন কোম্পানি, কানাডা এর প্রযুক্তিগত সহায়তায় খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মাণ করা হচ্ছে। ভার্ড ৭ ৫০৭ ল্যান্ডিং ক্র্যাফট সিরিজের উপর ভিত্তি করে নির্মাণাধীন জাহাজটি সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় অঞ্চলে উভচর অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি সেনাসদস্য, রসদ, অস্ত্র ও গোলাবারুদ, ট্যাংক, সামরিক যানবাহন এবং বিভিন্ন প্রকার সামরিক সরঞ্জাম পরিবহনে সক্ষম হবে। এছাড়াও জাহাজগুলি দুর্যোগ কালীন সময়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা ও দুর্যোগ পরবর্তী ত্রাণ তৎপরতা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে।[১][২][৩][৪][৫][৬][৭][৮][৯]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]সশস্ত্র বাহিনীর জন্য গৃহীত দীর্ঘমেয়াদী আধুনিকায়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার দেশীয় ও বৈদেশিক উৎস থেকে সমরাস্ত্র সংগ্রহ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এছাড়াও উপকূলবর্তী নৌঘাঁটিতে চলাচল করার জন্য এসব উভচর জাহাজের প্রয়োজন ছিলো। যুদ্ধ ও শান্তি কালীন সময়ে চট্টগ্রাম, মোংলা, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ এবং তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় উভচর অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি ল্যান্ডিং ফোর্স, ট্যাংক, অস্ত্র, গোলাবারুদ ও রসদ সরবরাহের জন্য উক্ত জাহাজের প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায়, অক্টোবর, ২০২২ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অধীনস্থ খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড এবং ভার্ড মেরিন কোম্পানি, কানাডা এর মধ্যে প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে ল্যান্ডিং ক্রাফট ট্যাংক জাহাজ নির্মাণ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৫ জুন, ২০২২ সালে তৎকালীন খুলনা নেভাল এরিয়া কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল মোহম্মদ আনোয়ার হোসেন-এনজিপি, পিসিজিএম, এনডিসি, পিএসসি মহোদয় খুলনা শিপইয়ার্ড প্রাঙ্গনে এক অনুষ্ঠানে কিল লেয়িং এর মাধ্যমে নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। খুলনা শিপইয়ার্ডের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর এম শামসুল আজিজ-এনজিপি, পিএসসি-বিএন, এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির জিএমবৃন্দ ছাড়াও উর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি লয়েডস রেজিস্ট্রার এর নীতিমালা অনুসরণ করে জাহাজটি নির্মিত হয়।
বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো
[সম্পাদনা]বানৌজা এলসিটি-১ জাহাজটির প্রস্তাবিত দৈর্ঘ্য ৭০ মিটার (২৩০ ফু), প্রস্থ ১৩ মিটার (৪৩ ফু), গভীরতা ১.০ মিটার (৩.৩ ফু) সম্মুখ, ২.২ মিটার (৭.২ ফু) পশ্চাৎ এবং সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৫ নট (২৮ কিমি/ঘ; ১৭ মা/ঘ)। নির্মাণাধীন জাহাজটি ২টি ৩,০০৪ অশ্বশক্তি (২,২৪০ কিওয়াট) ক্যাটারপিলার ডিজেল ইঞ্জিন সজ্জিত হবে। এছাড়াও ২টি ৩৪০ কিলোওয়াট বাউদুইন জেনারেটর (ফ্রান্স), ১টি ১৬৫ কিলোওয়াট বাউদুইন জেনারেটর (ফ্রান্স) (সাপোর্ট), জেডএফ গিয়ারবক্স (জার্মানি) এবং ২টি শ্যাফট যুক্ত থাকবে। জাহাজটি ৬০ জন জনবল নিয়ে একনাগাড়ে ৭ দিন অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি ৩৫০ টন কার্গো বহন করতে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটি এমবিটি-২০০০ সামরিক ট্যাংক, ৩৫০ জন সেনাসদস্য এবং ৬টি সামরিক ট্রাক পরিবহন করতে সক্ষম হবে। সেন্সর এবং কার্যপদ্ধতি হিসেবে জাহাজটিতে থাকবে:
- ১টি র্যাডার;
- ১টি হাল মাউনন্টেড মাল্টি-বিম ইকো সাউন্ডার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
- ১টি হাল মাউনন্টেড সিঙ্গেল-বিম ইকো সাউন্ডার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
- ১টি ডিজিপিএস রিসিভার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র);
- ১টি সাউন্ড ভেলোসিটি প্রোফাইলার (যুক্তরাজ্য);
- ১টি মাল্টিরোল ডিসপ্লে সহ নেভিগেশন র্যাডার (জাপান);
- ১টি চৌম্বকীয় কম্পাস (জাপান);
- ১টি জিপিএস রিসিভার (ফুরুনো);
- ১টি ইকো সাউন্ডার (কোডেন);
- ১টি রাডার অ্যাঙ্গেল ইন্ডিকেটর;
- ১টি ভিএইচএফ সেট (আইকম);
- ২০টি ভিএইচএফ ওয়াকিটকি সেট (আইকম/মটোরোলা)।
নৌবহরে যুক্ত হওয়ার পর জাহাজটি ৫টি মিডিয়াম আর্টিলারি গান, ৬টি সামরিক ট্যাংক, ১২টি সাঁজোয়া যান, ১৮টি সামরিক ট্রাক, ৩৫০ জন সেনাসদস্য এবং ৩৫০ টন কার্গো পরিবহনে সক্ষম হবে।
রণসজ্জা
[সম্পাদনা]দুর্যোগ ও শান্তি কালীন সময়ে সহায়ক ভূমিকায় নিয়োজিত এই জাহাজটিতে রয়েছে:
- ২টি ২০ মিমি বিমান-বিধ্বংসী কামান;
- ৪টি এসটিকে-৫০এমজি ১২.৭ মিমি বিমান-বিধ্বংসী মেশিনগান;
- এছাড়াও যুদ্ধকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে জাহাজটিতে ৬টি ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র কিউডব্লিউ-২ ম্যানপ্যাড মোতায়েন করা যায়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ""২০০৯-২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাফল্য ও অগ্রগতি"" (পিডিএফ)। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ২০২২-১০-০৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-১৪।
- ↑ "Landing Craft Tank (LCT) specification. Bangladesh Navy" (পিডিএফ)। Directorate General Defence Purchase, Ministry of Defence (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০২১।
- ↑ "3 x Landing Craft Tank, BN – Khulna Shipyard Ltd" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-১১-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-৩০।
- ↑ "খুলনা শিপইয়ার্ড এ নির্মাণাধীন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য ০৩ টি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ট্যাংক এর কিল লেয়িং অনুষ্ঠান"। www.facebook.com। ২০২৩-০৭-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-১৬।
- ↑ আলম, নাছিম উল। "দেশে প্রথমবারের মত 'ল্যান্ডিং ক্রাফট টাংক' নির্মান করছে খুলনা শিপইয়ার্ড"। DailyInqilabOnline (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৬-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-১৬।
- ↑ Pratidin, Bangladesh (২০২২-০৬-১৬)। "নতুন মাইলফলকে খুলনা শিপইয়ার্ড"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২০২২-০৬-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৬-১৬।
- ↑ "নৌ-বাহিনীর জন্য নতুন ৩টি জাহাজ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন | Khulna Shipyard | Bangladesh Navy | Somoy TV"। ৮ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২৩।
- ↑ "দেশের সর্ববৃহৎ ৩টি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট ট্যাংক -এলসিটি তৈরি করলো খুলনা শিপইয়ার্ড News24"। ৩০ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২৩।
- ↑ Christine (২০২২-১১-২৯)। "Vard Marine is pleased to announce a new contract for the design of a Landing Craft Tank for the Bangladesh Navy to be built by Khulna Shipyard Ltd."। Vard Marine (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-১১-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-৩০।