প্রতীক চৌধুরী
প্রতীক চৌধুরী | |
---|---|
জন্ম | কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত | ১ ডিসেম্বর ১৯৬৪
মৃত্যু | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ কলকাতা পশ্চিমবঙ্গ ভারত | (বয়স ৫৪)
ধরন | গজল |
পেশা | কণ্ঠশিল্পী |
কার্যকাল | ১৯৯৪ – ২০১৯ |
ওয়েবসাইট | www |
প্রতীক চৌধুরী (১ ডিসেম্বর ১৯৬৪ - ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী। তিনি টেলিভিশনে বিজ্ঞাপনের জিঙ্গল ও বাংলা চলচ্চিত্রে নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।[১]
জীবনী
[সম্পাদনা]প্রতীক চৌধুরীর জন্ম ও পড়াশোনা কলকাতায়। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের প্রতি তার আগ্রহ ও ভালবাসা জন্মে মাতা পূর্ণিমা চৌধুরীর কারণে।[১]তার সংস্কৃতি- মনস্ক মাতা ছিলেন রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী। মা'র কাছ থেকে সঙ্গীতের প্রাথমিক জ্ঞান লাভের পর প্রতীকের গজল শিক্ষার আসক্তি আসে। তিনি উত্তর ভারতের ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের পণ্ডিত তারাপদ চক্রবর্তীর শিষ্য শীতল মুখোপাধ্যায়ের কাছে গজলের তালিম নেন। বিজ্ঞাপনী গান দিয়ে সঙ্গীত জীবন শুরু করেছিলেন তিনি। কুকমি, অজন্তা হাওয়াই, খাদিম, টাটা স্টিল, আনমোল, বোরো ক্যালেন্ডুলা, বাবুল, স্টিলাক্সের মতো বিজ্ঞাপনে কালজয়ী হয়ে আছে প্রতীকের কণ্ঠস্বর। দুই বাংলাকে সুরের মায়াজালে বেধেছিলেন তিনিই। ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর সমসাময়িক সঙ্গীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়। তাঁরই সহযোগিতায় তিনি বাংলা টিভি সিরিয়াল ও বাংলা চলচ্চিত্রে নেপথ্য সঙ্গীত শিল্পী হিসাবে পরিচিতি পান। স্বপন সাহা, প্রভাত রায়, অনুপ সেনগুপ্ত, অঞ্জন চৌধুরী, হরনাথ চক্রবর্তী, মিলন ভৌমিক, সুব্রত সেন প্রমুখ চলচ্চিত্র পরিচালকের ছবিতে নেপথ্য কণ্ঠদান করেছেন। উল্লেখযোগ্য বাংলা সিরিয়াল ও চলচ্চিত্রগুলি হল-
- বাংলা সিরিয়াল-
- শ্রীমতী
- একাকী অরণ্যে
- তৃতীয় পুরুষ (জী বাংলা)
- সোজা সাপ্টা (২০০৩)
- সিলেবাসে নেই
- এতো নয় শুধু গান
- বাংলা গানের চমক
চলচ্চিত্র সমূহ
[সম্পাদনা]বছর | চলচ্চিত্র | পরিচালক | সঙ্গীত পরিচালক |
---|---|---|---|
১৯৯৬ | সখী তুমি কার | স্বপন সাহা | |
১৯৯৭ | মায়ার বাঁধন | স্বপন সাহা | দেবজ্যোতি মিশ্র |
১৯৯৭ | বিদ্রোহ | হরনাথ চক্রবর্তী | |
১৯৯৯ | তুমি এলে তাই | প্রভাত রায় | |
২০০১ | এক যে আছে কন্যা | সুব্রত সেন | দেবজ্যোতি মিশ্র |
২০০১ | পাতালঘর | অভিজিৎ চৌধুরী | দেবজ্যোতি মিশ্র |
২০০২ | বাঙালিবাবু | অঞ্জন চৌধুরী |
তার রবীন্দ্র সংগীতের 'প্রাণের ঠাকুর' নামের এক অ্যালবামসহ জনপ্রিয় বাংলা গানের অ্যালবামগুলি হল- 'মুখোশ', 'ভূষণ্ডির মাঠে', 'এবার প্রতীকের পাল্লায়', 'স্বপ্ন বিক্রি আছে'। তার কণ্ঠের জনপ্রিয় গানগুলির মধ্যে অন্যতম হল-
- মোরা মন বাঁওরা
- দূরে বহুদূরে
এছাড়াও প্রতীক চৌধুরী তাঁর অনতিমন্দ্র কণ্ঠস্বরে তথা ব্যারিটোন ভয়েসে পূর্বভারতের অন্যতম গজল গায়ক হিসাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, সঙ্গীত সম্মেলনে অংশ নেন এবং সফল হন। ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে মুম্বাই-এ 'সুরশৃঙ্গার সংসদ' আয়োজিত 'জয়দেব ফিল্ম সঙ্গীত সম্মেলনে' গজল গায়ক হিসাবে "লতা মঙ্গেশকর" পুরস্কার লাভ করেন।
জীবনাবসান
[সম্পাদনা]প্রতীক চৌধুরী ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে অনিকেত চক্রবর্তীর এক ছবি ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’ র জন্য গান রেকর্ড করেন, কিন্তু মাত্র সাত দিন পরই ১৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার তাঁর নিজের অফিসের নিচে হঠাৎই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হন এবং সামনের রাস্তায় পড়ে যান। কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। মাত্র ৫৫ বৎসর বয়সেই তিনি পরলোক গমন করেন।[২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ "Singer Pratik Choudhury passes away"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২২।
- ↑ "হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী প্রতীক চৌধুরী"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-১৯।