চড়ারহাট বধ্যভূমি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

চড়ারহাট বধ্যভূমি বা চড়ারহাট গণকবর দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার পুটিমারা ইউনিয়নে অবস্থিত। ১৯৭১ সালে এই পুটিমারা ইউনিয়নের প্রাণকৃষ্ণপুর, আন্দোলগ্রাম, সারাইপাড়া ও খয়েরগুনি এই ৪ টি গ্রামের শতাধিক যুবককে চড়ারহাট বাজারে হত্যা করা হয়। বর্তমানে এটি চড়ারহাট বধ্যভূমি নামে পরিচিত এবং সেখানে একটি স্মৃতি স্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

নবাবগঞ্জ উপজেলার চড়ারহাট ও আন্দোল গ্রামে এক নৃশংস গণহত্যা সংঘটিত হয় ১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নির্বিচার গুলি করে দুটি গ্রামে ১৫৭ জনকে হত্যা করে। ৯ অক্টোবর রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী চড়ারহাট ও আন্দোল গ্রাম ঘেরাও করে। অস্ত্রের মুখে দুটি গ্রামের সব পুরুষকে একত্র করে। গ্রামবাসীদের বলা হয় পার্শ্ববর্তী বাজার দলার দরগায় ভেঙে যাওয়া কালভার্ট মেরামত করার জন্য জনবল প্রয়োজন। কিন্তু তাদের দলার দরগায় না নিয়ে গিয়ে বর্তমান চড়ারহাট কলেজের পার্শ্ববর্তী মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা সবাইকে একে একে করে লাইনে দাঁড়াতে বলেন। এ কথা শোনার পর গ্রামবাসী ভয়ে আতঙ্ক হয়ে পড়ে। দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করলে অবিরাম গুলিবর্ষণ করে। এই হত্যাকান্ডে ১৫৭জন গ্রামবাসী নিহত হন।[২] এ হত্যাযজ্ঞে প্রাণকৃঞ্চপুর (চড়ারহাট) ৫৭ জন, আন্দলগ্রাম (সারাইপাড়া) ৩১ জন, বেড়ামলিয়া ১ জন, আহম্মদ নগর ৩ জন, নওদা পাড়া ১ জন, শিবরামপুর ১ জন, চৌঘরিয়া ১ জন, আমতলার ১ জন, দুইজন মহিলাসহ নাম ও ঠিকানাবিহীন অনেক নিরীহ মানুষ সেদিন শহীদ হন।এসব শহীদের মধ্যে ৯৮ জনের লাশ সনাক্ত করা যায়। বাকি লাশগুলো সনাক্তকরণ ছাড়াই দাফন করা হয়।[৩]

স্মৃতি মিনার[সম্পাদনা]

চড়ার হাট বধ্যভূমি

স্বাধীনতার ৪০ বছর পর সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম দিনাজপুরের উদ্যোগে চড়ারহাট বধ্যভূমি স্মৃতি মিনার স্থাপন করা হয়। ৭১‘এর ১০ অক্টোবর এই দিনে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ চড়ারহাটে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী প্রায় শতাধিক ঘুমন্ত নিরীহ গ্রামবাসীকে ভোর রাতে বাংকার খোড়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে আসে। পরে তাদের এই জায়গায় একত্রিত করে ব্রাশ ফায়ার করে নির্মম ভাবে হত্যা করে। পরে পার্শ্ববতী গ্রামবাসীরা মৃত্যু ব্যাক্তিদের পার্শ্বের জমিতে কবর খুড়ে তাদের গণকবর দেয়। সেই স্মৃতিকে একটি স্মৃতি মিনার স্থাপন করা হয় স্থাপনাটির উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ. আ. ম. শ. আরিফিন সিদ্দিক।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "চড়ারহাট বধ্যভূমি" 
  2. "চড়ারহাট গণকবর"। দৈনিক প্রথম আলো|আর্কাইভের-ইউআরএল= এর |আর্কাইভের-তারিখ= প্রয়োজন (সাহায্য) তারিখে মূল|আর্কাইভের-ইউআরএল= এর |ইউআরএল= প্রয়োজন (সাহায্য) থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. https://www.jagonews24.com/amp/56518
  4. "নবাবগঞ্জ উপজেলার অফিশিয়াল সাইটে বিবরণ"। ২৫ জুন ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০২১