দিয়া (প্রদীপ)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মাটির জ্বলন্ত প্রদীপ

একটা দিয়া, দিয়, দীপ,[১] দিভা, দীপা, দীপম, দেইওর অথবা দীপক হল সচরাচর মাটি দিয়ে তৈরি একটা তেলের প্রদীপ, এর মধ্যে থাকে তুলোর শলতে যেটা ঘি বা বনস্পতি তেলে ডোবানো থাকে। প্রদীপগুলো ভারতীয় উপমহাদেশের স্থানীয় জিনিস, যেগুলো সাধারণত হিন্দু, শিখ, জৈন এবং জোরোস্ট্রিয়ান ধর্মীয় উৎসবসমূহ যেমন দীপাবলি [২] অথবা কুষ্টি জাতীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

ঐতিহ্যপূর্ণ ব্যবহার[সম্পাদনা]

মাটি দিয়ে তৈরি প্রদীপ অস্থায়ীভাবে কোনো কোনো আচার-অনুষ্ঠানে জ্বালাবার জন্যে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, অন্যদিকে পিতল দিয়ে তৈরি প্রদীপ স্থায়ীভাবে বাড়ি এবং মন্দিরে জায়গা করে নিয়েছে। বিশেষ করে দীপাবলিতে প্রদীপ অথবা মোমবাতি আলোকসম্পাত, জ্ঞান অথবা ইচ্ছাশক্তির প্রতিনিধিত্ব করে।

উৎসবসমূহ[সম্পাদনা]

  • দীপাবলি: উৎসবের আচার-অনুষ্ঠান এবং উদ্‌যাপনের অংশ হিসেবে প্রদীপ জ্বালানো হয়। প্রবেশদ্বার এবং পরিসীমায় ছোটো ছোটো প্রদীপ জ্বালিয়ে বাড়িগুলোকে আলোকিত করা হয়।[৩] আসলে দিওয়ালি নামটা সংস্কৃত শব্দ দীপাবলি থেকে এসেছে, যার অর্থ হল আলোর সারি ('দীপ' অর্থে দিয়া এবং 'আবলি' অর্থে সারি)।[৪]
  • কার্তিকাই দীপম: তামিলনাডুতে দিয়াকে দীপম বলা হয়, যাকে জ্বালানো যাবে, বিশেষ করে কার্তিকাই দীপম উদ্‌যাপনের সময়।

পূজা ও প্রার্থনা[সম্পাদনা]

একটা প্রদীপ মন্দিরে জ্বালিয়ে আরতি করার মাধ্যমে দেবতার উদ্দেশ্যে পূজা প্রার্থনা করা হয়ে থাকে।

একটা একই ধরনের প্রদীপ তিব্বতীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নৈবেদ্য দিতে যেমন ব্যবহার করা হয় তাকে বলে মাখন প্রদীপ

হিন্দু আচার-অনুষ্ঠান[সম্পাদনা]

জন্ম: হিন্দু ধর্মের জন্ম সম্পর্কিত নানা আচার-অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে প্রদীপ জ্বালানোর প্রথা আছে।[৫][৬][৭]

প্রকারভেদ[সম্পাদনা]

তামিলনাডুর নাচিয়ারকইল অথবা আন্নাম আলঙ্কারিক প্রদীপের উপরিভাগ

প্রদীপ তৈরির উপাদান হিসেবে চুল্লিতে পড়ানো মাটির প্রদীপের পর বহুমুখী শলতে লাগাবার ধাতুনির্মিত প্রদীপ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে অতি সাধারণ পিতলের প্রদীপ, যদিও অন্যান্য উপাদানও ব্যবহৃত হয় যেমন পাতার তৈরি ভাসমান প্রদীপ পত্রাবলি অথবা পাথর দিয়ে তৈরি স্থায়ী প্রদীপ।

শলতের নকশার দিক থেকে এক শলতেওয়ালা প্রদীপই খুব সাধারণভাবে ব্যবহার হয়, এর পর শলতের রকমফের বলতে দুই, পাঁচ অথবা সাত শলতের প্রদীপও তৈরি করা হয়ে থাকে।

সর্বোপরি প্রদীপের নকশার কথা বলতে গেলে, আলঙ্কারিক প্রদীপের বিভিন্ন নকশা উদ্ভাবন হয়েছে। প্রতিমূর্তি সম্পর্কিত নাচিয়ারকইল প্রদীপ, যেটা 'আন্নাম প্রদীপ' নামেও পরিচিত, যেটা তৈরি করেন তামিলনাড়ু রাজ্যের নাচিয়ার কইল অঞ্চলের কেবলমাত্র পাথের (কাম্মালার) সম্প্রদায়ের মানুষ।[৮][৯]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Sacred Places of a Lifetime। National Geographic Society। ২০০৮। পৃষ্ঠা 270আইএসবিএন 978-1-4262-0336-7 
  2. "Diwali: Significance of a Diya"। Zee Media Corporation Ltd। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১৯, ২০১৩ 
  3. The Asiatic Journal and Monthly Register for British and Foreign India, China, and Australia Front Cover Parbury, Allen, and Company, 1834, page 346
  4. Tej K. Bhatia and Naresh Sharma "The Routledge Intermediate Hindi Reader", Routledge, 2015 আইএসবিএন ১৩১৭৯৬২৮৫০, 9781317962854
  5. "Rituals after death as per Hinduism"। Hindu Janajagruti Samiti। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৫, ২০১৮ 
  6. "Introduction to death & dying"। srimatham.com। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৫, ২০১৮ 
  7. "Hindu Death Rites"। Asian Cremation USA। এপ্রিল ২৩, ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৫, ২০১৮ 
  8. Makarand Shantaram Karandikar - Collected 1000+ Diya Set a World Record, World Records India, 09 november 2020.
  9. PM Narendra Modi gifts Xi Jinping Annam lamp, Times of India, 11 october 2019.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]