বর্ণালীবীক্ষণিক লম্বন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
একটি দৃষ্টিভঙ্গি শিফটের কারণে কোনও দূরবর্তী পটভূমির বিরুদ্ধে কোনও সামগ্রীর প্যারাল্যাক্সের সরলিকৃত চিত্রণ।

বর্ণালীবীক্ষণিক লম্বন (ইংরেজি: Spectroscopic parallax) তারার দূরত্ব পরিমাপের একটি পদ্ধতি। নাম এমন হলেও এর সাথে প্রকৃতপক্ষে লম্বনের কোন সম্পর্ক নেই। কোন তারার আপাত মান এবং বর্ণালী ধরন জানা থাকলে তা থেকে দূরত্ব বের করা সম্ভব। বোঝাই যাচ্ছে, এজন্য তারাটিকে এমন হতে হবে যাতে তার বর্ণালি ধরন নির্ণয় করা যায়। নিকটবর্তী তারাগুলোর বর্ণালি ধরনই কেবল বর্ণালীবীক্ষণের মাধ্যমে নির্ণয় করা সম্ভব। এজন্য এই পদ্ধতি আমাদের সূর্য থেকে আনুমানিক ১০ কিলোপারসেক দূরত্ব পর্যন্ত প্রয়োগ করা যায়।

প্রক্রিয়াটি বেশ সাধারণ। তারার বর্ণালি ধরন জানা থাকলে হের্ডসব্রং-রাসেল চিত্র থেকে তার পরম প্রভা বের করা যায়, আর প্রভা থেকে পাওয়া যায় পরম মান। পরম মান এবং আপাত মান থেকে দূরত্ব মাপাঙ্ক ব্যবহার করে দূরত্ব নির্ণয় করা যায়। সমীকরণ হচ্ছে:

  • যেখানে: এবং হচ্ছে আর্কসেকেন্ডে লম্বন।

সমীকরণটিকে এভাবেও লেখা যায়:

প্রধান ধারার সব তারার জন্যই এটি দূরত্ব নির্ণয়ের খুব উপযোগী পদ্ধতি। কিন্তু দানবীয় তারাদের জন্য এটি খুব বেশি কার্যকরী নয়। কারণ লোহিত দানব সহ অন্যান্য দানবদের ক্ষেত্রে এইচআর চিত্র প্রায় উল্লম্ব হয়ে যায় এবং সেক্ষেত্রে উজ্জ্বলতা পরিমাপের অনিশ্চয়তা অনেক বেড়ে যায়।

আকাশগঙ্গার সমতল থেকে লম্বালম্বিভাবে উপরে বা নিচে তাকালে যেসব তারা দেখতে পাওয়া তাদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম খুব উপযোগী। কারণ, ধূলিকণা কম থাকায় এসব তারার বর্ণালি ধরন সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায়। এই তারাগুলোর দূরত্ব নির্ণয়ের পর একটি সমীকরণ ব্যবহার করে আকাশগঙ্গার এই অঞ্চলে তারার স্থানিক বিন্যাস বের করা যায়। স্থানিক বিন্যাসের এই সমীকরণটি হচ্ছে,

যেখানে বর্ণালী ধরন, স্কেল দৈর্ঘ্য এবং স্কেল উচ্চতা