উরফিদাঁড়া

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

উরফিদাঁড়া
Blackvein sergeant
ডানা বন্ধ অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণীজগৎ
পর্ব: সন্ধিপদী
শ্রেণী: পতঙ্গ
বর্গ: লেপিডোপ্টেরা
পরিবার: Nymphalidae
গণ: Athyma
প্রজাতি: A. ranga
দ্বিপদী নাম
Athyma ranga
Moore, 1857
প্রতিশব্দ
  • Athyma mahesa
  • Pantoporia ranga

উরফিদাঁড়া (বৈজ্ঞানিক নাম: Athyma ranga (Moore))এক প্রজাতির মাঝারী আকারের প্রজাপতি। এরা নিমফ্যালিডি পরিবার এবং 'লিমেনিটিডিনি' (Limenitidinae) উপগোত্রের সদস্য।[১]

আকার[সম্পাদনা]

উরফিদাঁড়া এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৬০-৭০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[২]

উপপ্রজাতি[সম্পাদনা]

ভারতে প্রাপ্ত কৃষ্ণা পিকক এর উপপ্রজাতি হল-[৩]

  • Athyma ranga ranga Moore, [1858] – Himalayan Blackvein Sergeant
  • Athyma ranga karwara Fruhstorfer, 1906 – Karwar Blackvein Sergeant

বিস্তার[সম্পাদনা]

ভারতে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা (দক্ষিণ কর্ণাটক), সিকিম থেকে অরুণাচল প্রদেশ ও উত্তর -পূর্ব ভারত[৪], নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, মায়ানমার এ এদের দেখা যায়।[৫]

বর্ণনা[সম্পাদনা]

প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিশদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-

ডানার উপরিতল: পুরুষ নমুনার উপরিতল ভেলভেটের ন্যায় কালো। স্ত্রী নমুনায় উপরিপৃষ্ঠ ঘন কালচে বাদামি এবং নির্দিষ্ট আলোকপাতে হালকা নীলের ছোঁয়া দেখা যায়।

সামনের ডানা: সেল (cell)এর মধ্যভাগে ও শেষপ্রান্তে একটি করে বড় ফ্যাক্যাশে সাদা ছোপ এবং সেল-এর বেসাল অংশে একটি ছোট সাদা ছোপ বর্তমান। কোস্টার মধ্যভাগের সামান্য নিচে ৩ টি সারিবদ্ধ লম্বাটে বড় সাদা ছোপ দেখা যায় ও এদের ঠিক নিচ থেকেই লম্বাটে সাদা একসারি ডিসকাল ছোপ ডর্সাম (dorsam) অবধি তির্যকভাবে নেমে গেছে। সেলের নিম্নভাগে বেসাল অংশে অস্পষ্ট কিছু ফ্যাক্যাশে নীল্ ছোপ চোখে পরে ১ নং ইন্টারস্পেসে। ২ নং ইন্টারস্পেসের ডিসকাল ছোপটি সর্বাপেক্ষা বৃহৎ এবং ইহার বাইরের দিকের অগ্রভাগ ছাঁটা। ৩ নং ইন্টারস্পেসের ডিসকাল ছোপটি লম্বাটে। ডিসকাল ছোপগুলির খানিক দূরে তেরছাভাবে অবস্থিত সাদা সাবটার্মিনাল ছোপের দুটি সারি পাশাপাশি প্রায় সমান্তরাল ভাবে বিদ্যমান। ভিতরের দিকের সাবটার্মিনাল ছোপের সারিটি কোস্টাল প্রান্তরেখা থেকে প্রায় টর্নাস (tornus) পর্যন্ত বিস্তৃত এবং ভিতরের দিকের ছোপগুলি বাইরের দিকের ছোপগুলি অপেক্ষা বড় ও স্পষ্ট। বাইরের দিকের সাবটার্মিনাল ছোপের সারিটি তুলনামূলক অস্পষ্ট।

পিছনের ডানা: সাব-বেসাল অংশে লম্বাটে ও ঘনীভূত সাদা ছোপগুলি একটি বন্ধনী সৃষ্টি করেছে। বন্ধনীর গোড়ার দিকের ছোপগুলি অতি ঘনীভূত বা সংলগ্ন এবং বাইরের দিকের ছোপগুলি অপেক্ষাকৃত পৃথক। পোস্ট-ডিসকাল সাদা ছোপের সারিতে ছোপগুলি লম্বাটে ও শঙ্কু আকৃতি বিশিষ্ট এবং ইহাদের উভয় প্রান্ত কালো ফ্যাকাশে আঁশে ছাওয়া। স্ত্রী নমুনায় পোস্ট ডিসকাল ছোপগুলি পুরুষ নমুনা অপেক্ষা অধিকতর চওড়া ও সুস্পষ্ট। সাব -টার্মিনাল ছোপের সারিটি অস্পষ্ট বা ফ্যাকাশে।

ডানার নিম্নতল: ডানার নিম্নতল ঘন কালচে বাদামি এবং সাদা দাগ-ছোপ গুলি কালো আঁশে ছাওয়া। সাদা দাগ-ছোপগুলি উপরিতলের অনুরূপ, তবে বিশুদ্ধ সাদা, অপেক্ষাকৃত বড় ও সুস্পষ্ট। পিছনের ডানার ডর্সাল (dorsal) প্রান্তরেখা ফ্যাকাশে নীল।

সামনের ও পিছনের উভয় ডানার সিলিয়া (eillia) বা প্রান্তরোঁয়া পর্যায়ক্রমে সাদা ও কালো। শুঁঙ্গ, মাথা ,বুক ও উদর কালো। বক্ষদেশ (thorux) এর অগ্রভাগে অস্পষ্ট চকচকে নীলের ছোঁয়া এবং উদরদেশে পাশাপাশি অবস্থিত সাদা বিন্দু বর্তমান।[২][৬]

আচরণ[সম্পাদনা]

এই প্রজাতির উড়ান খুব দ্রুত। জঙ্গলের পরিষ্কার ফাঁকা জায়গা, জঙ্গলের পায়ে হাঁটা পথ ও যদি বা ঝর্ণার ধারে এদের দর্শন মেলে। চিরহরিৎ অরণ্যভূমি এদের দারুন পছন্দের বাসস্থান, তবে আর্দ্র পর্ণমোচী জঙ্গল পরিবেশেও এদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এই প্রজাতির প্রজাপতিদের ভিজে মাটি বা ভিজে ছোপে বসতে দেখা যায়। দক্ষিণ ভারতে পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ১৫০০ মি. উচ্চতা পর্যন্ত এবং উত্তর ভারতে ৩০০ থেকে ১০৩০ মি.উচ্চতা পর্যন্ত এদের গতিবিধি নথিভুক্ত রয়েছে। অনুকূল বাসভুমিতে মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এদের দেখা মেলে।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Kunte, Krushnamegh (২০১৩)। Butterflies of The Garo Hills। Dehradun: Samrakshan Trust, Titli Trust and Indian Foundation of Butterflies। পৃষ্ঠা ৯১। 
  2. Isaac, Kehimkar (২০১৬)। BHNS Field Guides Butterflies of India। Mumbai: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 410। আইএসবিএন 9789384678012 
  3. "Athyma ranga Moore, [1858] - Blackvein Sergeant"Butterflies of India। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০২৪ 
  4. R.K., Varshney; Smetacek, Peter (২০১৫)। A Synoptic Catalogue of the Butterflies of India। New Delhi: Butterfly Research Centre, Bhimtal & Indinov Publishing, New Delhi। পৃষ্ঠা 197। আইএসবিএন 978-81-929826-4-9ডিওআই:10.13140/RG.2.1.3966.2164 
  5. Markku Savela (মার্চ ৯, ২০০৭)। "Athyma"Lepidoptera and some other life forms। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ৮, ২০০৭ 
  6. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (ইংরেজি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। নতুন দিল্লি: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ৩৬৯। আইএসবিএন 978 019569620 2