মালাবার বিবাহ আইন, ১৮৯৬

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

১৮৯৬ সালে, মাদ্রাজ সরকার ১৮৯১ সালের মালাবার বিবাহ কমিশনের সুপারিশ করা মালাবার বিবাহ আইন পাস করে। এই আইনের বলে, মালাবারে, যে কোন সম্প্রদায়, যাঁরা মরুমাক্কাতায়ম (মাতৃতান্ত্রিকতা) পালন করেন, তারা সম্বন্ধম করে বিবাহ নিবন্ধন করতে পারবেন।[১] এটি নিষিদ্ধ করণ আইন না হয়ে একটি অনুমতিসূচক আইন ছিল: একটি সম্পর্ক নিবন্ধিত কিনা, তা সম্পূর্ণরূপে সম্পর্কের সাথে যুক্ত মানুষদের সিদ্ধান্ত ছিল।[২]

স্যার সি. শঙ্করণ নায়ার দ্বারা শুরু করা কাজটি, মূলত ব্যর্থ ছিল। পানিক্কর লক্ষ্য করেন, এই আইন প্রবর্তনের ২০ বছর পরেও মাত্র ছয়টি সম্পর্ক নিবন্ধিত হয়েছে এবং সবগুলিতেই স্বয়ং নায়ার পরিবারের সদস্যরাই জড়িত ছিল।[১]

সম্বন্ধম এবং মরুমাক্কাতায়ম[সম্পাদনা]

নায়ার সম্প্রদায় দ্বারা অনুশীলন করা, সম্পর্কের একটি ধরন ছিল সম্বন্ধম। নৃতত্ত্ববিদ ক্রিস্টোফার ফুলার বলেছেন, "নায়ারদের বিবাহ পদ্ধতি, তাদের নৃতাত্ত্বিক বৃত্তের সব সম্প্রদায়ের মধ্যে, সবচেয়ে বিখ্যাত"।[৩] থমাস নসিটার মন্তব্য করেছেন, তাদের সমাজে, যার মধ্যে আছে প্রাক-বয়ঃসন্ধিতে থালিকেট্টু কল্যাণম অনুষ্ঠান এবং সমান ঘরে অথবা উচ্চ শ্রেণী বা জাতিতে বিবাহ এবং একধরনের বহুভর্তৃকত্ব উভয়েই অনুমোদিত, "এতট অলস ব্যবস্থা ছিল যে 'বিবাহের' অস্তিত্ব আদৌ ছিল কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ হয়।"[৪] পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই বিভিন্ন সঙ্গী থাকতে পারত। তারা উভয়েই সম্পর্ক ভেঙে বেরিয়ে যেতে পারত এবং সামান্য চেষ্টাতেই অন্য সঙ্গী পেয়ে যেত।[৫]

সম্বন্ধম ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকার দ্বারা স্বীকৃত ছিল না, তারা বলতেন এটি আসলে বিবাহিতা না হয়েও স্ত্রীরূপে ব্যবহৃত হত্তয়া। সিভিল কোর্ট এই বিষয়টি তাদের এক্তিয়ারে নয় বলে জানায়, এর প্রধান কারণ, সম্পর্কটি সহজেই উভয় পক্ষের দ্বারা মীমাংসিত হতে পারত এবং এটিতে সম্পত্তির অধিকার সংক্রান্ত কিছু ছিল না। [২] এই অঞ্চলের জমি জায়গার ওপর নাম্বুদিরি ব্রাহ্মণদের পরিপূর্ণ দখলের কারণে, তারা খুবই প্রভাবশালী ছিলেন। এই সম্প্রদায়ের বাইরের মানুষেরা মনে করতেন, নিম্ন সম্প্রদায়ের নায়ার মহিলাদের ওপর যৌন প্রবেশাধিকার লাভের জন্য নাম্বুদিরি পুরুষরা এই প্রভাব কাজে লাগাতেন। [৬]

মরুমাক্কাতায়ম ও ঔপনিবেশিক প্রশাসকদের কাছে একটি উদ্বেগের বিষয় ছিল।

পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন[সম্পাদনা]

মরুমাক্কাতায়ম নিয়ে অসন্তুষ্টির প্রকাশ ১৮৭০ ও ১৮৮০র পত্র পত্রিকায় বিশেষভাবে প্রকাশ হয়, এবং ঔপনিবেশিক প্রশাসক উইলিয়াম লোগান সেই সময়ের একটি সরকারী রিপোর্টে এর বিরুদ্ধে কথা বলেন। মাদ্রাজ বিধান সভায়, এই প্রথাকে বৈধতা দিতে নায়ার একটি বিল চালু করতে গেলে, ১৮৯০ সালে মামলা শুরু হয়। এর ফলে ১৮৯১ সালে প্রশাসন মালাবার বিবাহ কমিশন প্রতিষ্ঠা করে। মাতৃতান্ত্রিকতা প্রথার তদন্তের উদ্দেশ্যে এটি শুরু হয় এবং বিবাহ, পরিবার প্রতিষ্ঠান এবং উত্তরাধিকারের মত ঐতিহ্যগত প্রথায় পরিবর্তনগুলি কার্যকর করার জন্য আইনি ব্যবস্থাগুলি ব্যবহার করা উচিত কিনা তা সুপারিশের সাথেও অভিযুক্ত করা হয়েছিল। [৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Panikkar, K. M. (জুলাই–ডিসেম্বর ১৯১৮)। "Some Aspects of Nayar Life"Journal of the Royal Anthropological Institute48: 271। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৬-২৪ 
  2. Kodoth, Praveena (মে ২০০১)। "Courting Legitimacy or Delegitimizing Custom? Sexuality, Sambandham and Marriage Reform in Late Nineteenth-Century Malabar"। Modern Asian Studies35 (2): 350। জেস্টোর 313121ডিওআই:10.1017/s0026749x01002037 (সদস্যতা প্রয়োজনীয়)
  3. Fuller, C. J. (Winter ১৯৭৫)। "The Internal Structure of the Nayar Caste"Journal of Anthropological Research31 (4): 283। জেস্টোর 3629883 (সদস্যতা প্রয়োজনীয়)
  4. Nossiter, Thomas Johnson (১৯৮২)। "Kerala's identity: unity and diversity"। Communism in Kerala: a study in political adaptation। University of California Press। পৃষ্ঠা 27। আইএসবিএন 978-0-520-04667-2। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৬-২৪ 
  5. Fuller, C. J. (Winter ১৯৭৫)। "The Internal Structure of the Nayar Caste"Journal of Anthropological Research31 (4): 296। জেস্টোর 3629883 (সদস্যতা প্রয়োজনীয়)
  6. Kodoth, Praveena (মে ২০০১)। "Courting Legitimacy or Delegitimizing Custom? Sexuality, Sambandham and Marriage Reform in Late Nineteenth-Century Malabar"। Modern Asian Studies35 (2): 351। জেস্টোর 313121ডিওআই:10.1017/s0026749x01002037 (সদস্যতা প্রয়োজনীয়)