অ্যান্টার্কটিকার জীববৈচিত্র্য
অ্যান্টার্কটিকা জীববৈচিত্র্যের মাঝে সেসব উদ্ভিদ ও প্রাণীরাই আছে যেগুলো অ্যান্টার্কটিকার শুষ্কতা, প্রবল শৈত্য এবং উচ্চভাবে উন্মুক্ত পরিবেশের সাথে অভিযোজিত হতে পেরেছে। অ্যান্টার্কটিকার অভ্যন্তরের চরম আবহাওয়ার তুলনায় অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের এবং অ্যান্টার্কটিকার দ্বীপগুলোর আবহাওয়া অপেক্ষাকৃত সহনীয়, যেখানে উষ্ণতর তাপমাত্রা ও অধিকতর জল পাওয়া যায়। মূল ভূখণ্ডের চারপাশের সাগরগুলো বাশিরভাগই সামুদ্রিক বরফে ঢাকা। অ্যান্টার্কটিকার পাখি এবং সীল সচরাচর সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে বাস করে। সমুদ্রই এখানে জীবন ধারণের জন্য বেশি উপযোগী - সমুদ্রের জল ও তলদেশ উভয়ই।
বাকি পৃথিবীর তুলনায় অ্যান্টার্কটিকাতে জীববৈচিত্র্য অনেক কম। উড্ডয়নক্ষম পাখিরা অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপে বা অ্যান্টার্কটিকার দ্বীপগুলোর সহনীয় সমুদ্রতটে বাসা বাঁধে। কুমেরু এবং এর পারিপার্শিক দ্বীপগুলোতে ৮ রকম পেঙ্গুইন বসবাস করে। এখানে ৭ রকম প্রজাতির সীল এরও দেখা পাওয়া যায়। অ্যান্টার্কটিকার চারপাশের দক্ষিণ মহাসাগরে ১০ প্রজাতির তিমির আবাস, যার মাঝে অনেক গুলো প্রজাতিই ভ্রমণশীল। মূল ভূখণ্ডে খুব কমই স্থলজ অমেরুদণ্ডী প্রাণী পাওয়া যায়, অবশ্য তদ্রূপ প্রানীদের সংখ্যা ঘনত্ব বেশ উচ্চ হয়ে থাকে। উচ্চ সংখ্যা ঘনত্ব বিশিষ্ট অমেরুদণ্ডী প্রাণী মহাসাগরেও বসবাস করে। গ্রীষ্মকালে সামুদ্রিক কুমেরু চিংড়ি ঘন ও বিস্তীর্ণ ঝাঁক সৃষ্টি করে। এছাড়াও মহাদেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে জলাধার তলদেশের প্রাণী, যেমন চিংড়িজাতিয় ও কৃমিজাতিয় প্রাণীর অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
১০০০ এরও অধিক প্রজাতির ছত্রাক কুমেরু এবং এর পার্শ্ববর্তী দ্বীপগুলিতে পাওয়া গেছে। বড় আকৃতির ছত্রাকগুলো উপঅ্যান্টার্কটিকার দ্বীপগুলোতে সীমাবদ্ধ এবং বেশিরভাগ আবিষ্কৃত প্রজাতিই স্থলজ। একইভাবে, উদ্ভিদও অ্যান্টার্কটিকার দ্বীপগুলিতে, এবং কুমেরু উপদ্বীপের পশ্চিম তীরে (পূর্ব তীরের চেয়ে উষ্ণতর বলে) সীমাবদ্ধ। কিছু শ্যাওলা এবং মিথোজীবী ভুঁইফোঁড় অবশ্য অ্যান্টার্কটিকার শুষ্ক অভ্যন্তরেও পাওয়া যায়। অ্যান্টার্কটিকার চারপাশে অনেক শৈবাল, বিশেষ করে উদ্ভিদাণুজীব জন্মায়, যা অ্যান্টার্কটিকার খাদ্যচক্রের ভিত্তিস্বরূপ।
মানব কর্মকাণ্ডের ফলে অনেক নতুন প্রজাতির জীবের অ্যান্টার্কটিকাতে আগমন ও প্রকৃতিতে প্রতিষ্ঠা লাভের ঘটনা ঘটছে, যেগুলো অ্যান্টার্কটিকার আদি বাসিন্দা জীবগুলোর জন্য অনেক সময় বিপদের কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে মাছ ও পশু শিকারের ফলে অনেক প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা এখন কমে গেছে। এছাড়া দূষণ, পশুর আবাস ধ্বংস এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অ্যান্টার্কটিকার পরিবেশ আজ ঝুঁকির সম্মুখীন। অ্যান্টার্কটিকাতে মানুষের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য অ্যান্টার্কটিক চুক্তি ব্যবস্থা নামে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, এ চুক্তি অনুসারে অ্যান্টার্কটিকাতে কর্মকাণ্ড প্রধানত গবেষণাতেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে।
পরিবেশগত অবস্থা
[সম্পাদনা]অ্যান্টার্কটিকা মূল ভূখণ্ডের প্রায় ৯৮% বরফে আচ্ছাদিত, যার পুরুত্ব সর্বোচ্চ ৪.৭ কিলোমিটার (২.৯ মা) পর্যন্ত। অ্যান্টার্কটিকার বরফ মরুভূমিগুলোতে অত্যন্ত নিম্ন তাপমাত্রা, উচ্চ সৌর বিকিরণ ও তীব্র শুষ্কতা বিদ্যমান। বৃষ্টিপাত যেটুকু হয়, তাও সাধারণত তুষার হিসেবেই হয়, এবং তাও উপকূল হতে ৩০০ কিলোমিটার (১৮৬ মা) ভেতর পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। কিছু কিছু এলাকায় বাৎসরিক তুষারপাত মাত্র ৫০ মিমি পর্যন্ত। পৃথিবীতে নথিভুক্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল −৮৯.৪ °সে (−১২৮.৯ °ফা) যা, ১৯৮৩ সালে কুমেরু মালভূমিতে অবস্থিত ভস্তক স্টেশনে নথিভুক্ত হয়। অ্যান্টার্কটিকাতে টিকে থাকতে তাই এখানকার জীবগুলোকে এমন তীব্র আবহাওয়ার সাথে অভিযোজিত হতে হয়েছে।
অ্যান্টার্কটিকার শুষ্ক অভ্যন্তর আবহাওয়াগত দিক দিয়ে, পশ্চিম অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপ ও অ্যান্টার্কটিকার দ্বীপসমূহ থেকে আলাদা। বসবাসের জন্য উপদ্বীপ ও দ্বীপসমূহ অপেক্ষাকৃত বেশি উপযোগী, উপদ্বীপের কিছু কিছু এলাকায় বছরে ৯০০ মিমি তুষারপাত হতে পারে এবং বৃষ্টিও হতে পারে। উপদ্বীপের উত্তর অংশ মূল ভূখণ্ডের একমাত্র অঞ্চল যেখানে গ্রীষ্মে তাপমাত্রা ০ °সে (৩২ °ফা) এর অধিক হওয়া প্রত্যাশিত। অ্যান্টার্কটিকার দ্বীপসমূহে আরও সহনীয় তাপমাত্রা এবং আরও বেশি জল আছে, যা জীবন ধারণের জন্য বেশি উপযোগী।
প্রাণীসমূহ
[সম্পাদনা]পাখি
[সম্পাদনা]এখানে আলব্রাটস দেখা যায়।
===মাছ=== এখানে তিমি মাছ প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। সীল মাছও আছে। যা তেলের জন্য বিখ্যাত।