তিলকা মাঝি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
তিলকা মাঝি
তিলকা মুরমুর মুর্তি, দুমকা, ঝাড়খণ্ড
জন্ম১১ ফেব্রুয়ারি, ১৭৫০
বিহার রাজ্যের ভাগলপুর জেলার সুলতানগঞ্জ থানার অধীন তিলকপুর গ্রামে(ব্রিটিশ ভারত)
মৃত্যু১৩ জানুয়ারি ১৭৮৫
ভাগলপুর
জাতীয়তাভারতীয় বিপ্লবী
আন্দোলনসাঁওতাল বিদ্রোহ

তিলকা মাঝি বা তিলকা মুরমু (১১ ফেব্রুয়ারি, ১৭৫০ ― ১৩ জানুয়ারি,১৭৮৫) আদিবাসী বিদ্রোহের প্রথম যুগের নেতা ও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্ৰামের শহীদ। তাঁর বাবা সুন্দরা মুর্মু ছিলেন গ্রাম প্রধান মাতা পানী মুর্মু।

বিদ্রোহের নেতৃত্ব[সম্পাদনা]

ভাগলপুরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে যে 'খেরওয়াড় বিদ্রোহ' হয় তার নেতা ও ভারতের প্রথম সাঁওতাল বিদ্রোহের শহীদ। ১৭৮১-৮৪ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি জমি লুঠ ও বলপূর্বক খাজনা আদায়ের নির্মম পন্থা অবলম্বন করে তার বিরুদ্ধে গরীব সাঁওতালদের মধ্যে যে তীব্র ক্ষোভের সূচনা হয় তাকে গণ বিদ্রোহের আকার দেন তিলকা। তাকে বাবা তিলকা মাঝি বলা হতো। এই দীর্ঘ আন্দোলনে বহু সাঁওতাল শহীদ হন। ১৭৭৮ সালে ১৩০০ জন সাঁওতাল বিদ্রোহী নিয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রামগড় ব্যাটালিয়ন কব্জা করে নেন এবং কোম্পানির ট্রেজারি কুঠি লুঠ করে জনগণের মধ্যে বিলিয়ে দেন তিনি। ১৭৮৪ জানুয়ারি মাসে ভাগলপুরের ইংরেজ কালেক্টর অগাস্ট ক্লিভল্যান্ড তিলকা মুরমু(মাঝি) মারা গেলে তিলকপুরের জঙ্গলে ইংরেজ সেনাবাহিনী তিলকা ও তার সাথীদের ঘেরাও করে।[১] এই সংগ্রামে আহত অবস্থায় তিলকা মাঝি ধরা পড়েন।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

বিদ্রোহের শাস্তিস্বরূপ তাকে ছুটন্ত ঘোড়ার পেছনে বেঁধে দেওয়া হয়। এই নৃশংস পদ্ধতিতেও তার মৃত্যু না হলে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় ভাগলপুর শহরে। তিলকা মাঝি ভারতের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম শহীদ হিসেবে পরিগণিত।[২][৩]

স্মৃতি[সম্পাদনা]

ভাগলপুর শহরে, তাকে যেখানে হত্যা করা হয় সেই স্থানে তার একটি মুর্তি স্থাপিত আছে। তার সম্মানে ভাগলপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হয় তিলকা মাঝি ভাগলপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সাঁওতাল পরগনার সদর শহর দুমকাতে তার মূর্তি প্রতিষ্ঠিত আছে।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Baba Tilka Majhi। "A portal for santhal freedom struggle"। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  2. অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, দ্বিতীয় খন্ড (২০০৪)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ১২২–১২৩। আইএসবিএন 81-86806-99-7 
  3. Prohor। "তীর-ধনুক নিয়েই ব্রিটিশ সেনাদের সঙ্গে ১৪ বছর লড়াই, ইতিহাসে উপেক্ষিত তিলকা মাঝি - Prohor"তীর-ধনুক নিয়েই ব্রিটিশ সেনাদের সঙ্গে ১৪ বছর লড়াই, ইতিহাসে উপেক্ষিত তিলকা মাঝি - Prohor (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৪-১৫ 
  4. "Identity crisis for freedom fighter"। দি টেলিগ্রাফ। ১৫ আগস্ট ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৭