বুরখান খাল্ডুন
বুরখান খাল্ডুন | |
---|---|
সর্বোচ্চ বিন্দু | |
উচ্চতা | ২,৪৫০ মি (৮,০৪০ ফু) |
ভূগোল | |
মূল পরিসীমা | খেন্টাই পর্বত |
প্রাতিষ্ঠানিক নাম | মহান বুরখান খাল্ডুন পৰ্বত এবং চারপাশের পবিত্ৰ পরিবেশ |
ধরন | সাংস্কৃতিক |
মানদণ্ড | iv, vi |
মনোনীত | ২০১৫(39th session) |
সূত্র নং | 1440 |
State Party | মঙ্গোলিয়া |
অঞ্চল | Asia-Pacific |
বুরখান খাল্ডুন (সিরিলিক ভাষায়: Бурхан Халдун) উত্তর-পূর্ব মঙ্গোলিয়ার খেন্টাই অঞ্চলের একটি খেন্টাই পর্বত। পর্বতটিকে বা এই স্থানকে চেঙ্গিস খানের জন্মস্থান বলে ধারণা করা হয় এবং এখানেই তার সমাধিস্থল অবস্থিত। এই স্থানে অন্য একজন বিখ্যাত বীর সাবুতাইয়ের জন্মস্থান। পর্বতটি ১৯৯২ সালে প্ৰতিষ্ঠিত ১২,০০০ বর্গকিলোমিটার (৪,৬০০ মা২) এলাকাটি খান খেন্টাই কঠোরভাবে সুরক্ষিত অঞ্চলের একটি অংশ। যদিও চেঙ্গিস খানের পূৰ্বেও পর্বতটিকে পবিত্ৰ মনে করা হত, চেঙ্গিস খান এই পর্বতটিকে মঙ্গোলিয়ার সবথেকে পবিত্ৰ পৰ্বত আখ্যা দেয়ার পর এর গুরুত্ব বেড়ে যায়। ৪ জুলাই ২০১৫ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে এই পৰ্বতকে "মহান বুরখান খাল্ডুন পৰ্বত এবং চারপাশের পবিত্ৰ পরিবেশ" উপাধিতে ঘোষণা করে। ১৯৫৫ সালে পর্বতটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পূজা করা হয় এবং সেই সাথে পর্বতটিকে রাষ্ট্ৰীয় স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই স্থানের অনন্য জৈববৈচিত্র্য মধ্য এশিয়া প্রান্তের উদ্ভিদজগতের সাথে মিশ্রিত। এমনকি ৫০ প্ৰজাতির প্রাণী এবং ২৫৩ প্ৰজাতির পাখি নিয়ে অনন্য।
অবস্থান
[সম্পাদনা]বুরখান খাল্ডুন উত্তর-পূর্ব মঙ্গোলিয়ার খেন্টাই পর্বতমালার মধ্যে অবস্থিত। পর্বতটি ১৯৯২ সালে প্ৰতিষ্ঠিত ১২,০০০ বর্গকিলোমিটার (৪,৬০০ মা২) এলাকাটি খান খেন্টাই কঠোরভাবে সুরক্ষিত অঞ্চলের একটি অংশ।[১]
ভূগোল
[সম্পাদনা]বুরখান খাল্ডুন অৰ্থ ঈশ্বর পৰ্বত (সিরিলিক ভাষায়) [২] এবং এই পৰ্বতকে খেন্টাই পর্বত খান (অৰ্থাৎ খেন্টাই পর্বতশৃঙ্গের রাজা) ও বলা হয়।[৩]:১২ এটি উত্তর-পূর্ব মঙ্গোলিয়ার খেন্টাই অঞ্চলের একটি খেন্টাই পর্বতের অন্যতম।[৩] এই অঞ্চলটি সর্বোচ্চ পৰ্বতসমূহের অন্যতম, যার উচ্চতা ২,৩৬২ মিটার (৭,৭৪৯ ফু), এবং পৰ্বতটির আকার বাঁকানো। এই পৰ্বত থেকে অনেক নদী বয়ে গেছেঃ অনন এবং খেরলেন নদী আমুরে পতিত হয়, যা গিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে পড়েছে; এবং টূল, খারা এবং ইয়েরু নদী উত্তরমুখী হয়ে [[সেলেংগে নদী|সেলেংগেতে মিশেছে, যা পরবর্তীতে গিয়ে আর্কটিক মহাসাগরে নিঃশেষ হয়েছে। এই স্থানের অনন্য জীববৈচিত্র্যর কারণে এই অঞ্চলকে "সাইবেরিয়ান চিরহিমায়িত ভূমি থেকে বৃহৎ তৃণভূমি পর্যন্ত পরিবৰ্তন অঞ্চল" হিসেবে সঙ্গায়িত করা হয়।[২][৩]:৮
ইতিহাস
[সম্পাদনা]চেঙ্গিস খান মেরকিট (মঙ্গোলদের একটা প্রধান উপজাতীয় সংঘ (খাংলিং))এর সাথে যুদ্ধে পরাজিত হন এবং বুরখান খাল্ডুন পৰ্বতের পবিত্ৰ পরিপার্শ্বের মধ্যে আশ্রয় নিয়ে মৃত্যু থেকে রক্কা পান। একজন বৃদ্ধ মহিলা এবং আরো কয়েক জন তাকে রক্ষা করে।
বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান
[সম্পাদনা]৪ জুলাই ২০১৫ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে এই পৰ্বতকে "মহান বুরখান খাল্ডুন পৰ্বত এবং চারপাশের পবিত্ৰ পরিবেশ" নামে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৩৯তম অধিবেশনে ঘোষণা করা হয়, যা ৪,৪৩,৭৩৯ হেক্টর (১০,৯৬,৫০০ একর) এলাকা জুড়ে ছিল এবং অতিরিক্ত ২,৭১,৬৫১ হেক্টর (৬,৭১,২৬০ একর) তার সাথে অন্তর্ভুক্ত ছিল, বিগত কয়েক সহস্রাব্দ ধরে চলে আসা অনন্য পৰ্বত পূজা এবং প্ৰকৃতি পূজার সাংস্কৃতিক পরম্পরার জন্য চতুৰ্থ শ্রেণীতে এবং ঐতিহাসিক এবং সাহিত্যিক মহাকাব্যে বিশাল গুরুত্বের পরিচিতির জন্যে ষষ্ঠ শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। [৪]
ধর্মীয় তাৎপর্য
[সম্পাদনা]এই পর্বতটির একটি আধ্যাত্মিক গুরুত্ব রয়েছে যা মঙ্গোলিয়ার অন্য কোন পর্বতের ক্ষেত্রে দেখা যায় না, এবং "মঙ্গোলিয়ার যাযাবর লোকদের জীবন যাত্রার ঐতিহ্য এবং প্রথাগত পদ্ধতি"কে পূর্ণভাবে প্রতিনিধিত্ব করে মঙ্গোলিয়ার জাতিসত্বার “দোলনা” প্রতীকে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
উদ্ভিদজগত
[সম্পাদনা]এই পর্বতে যেসব উদ্ভিদ পাওয়া যায় তামধ্য এশিয়া তৃনভূমির অন্তর্গত এবং তাইগা সরলবর্গীয় বনাঞ্চলের দ্বারা গঠিত।[৪] মঙ্গোলিয়ান লাল বইয়ে ২৮ টি উদ্ভিদ প্রজাতি লিপিবদ্ধ হয়েছে, ১৫ টি খুবই বিরল প্রজাতি, এবং ২৮ টি বিরল প্রজাতি। আইইউসিএন লাল তালিকায় যেসব উদ্ভিদ লিপিবদ্ধ হয়েছে সেগুলো ও এখানে পাওয়া যায়, সেগুলো হচ্ছে: ২ টি মারাত্মকভাবে বিপন্ন প্রজাতি, ৪টি বিপন্ন প্রজাতি এবং ৮টি ক্ষতির সম্মুখীন প্রজাতি।[৩]:১৮
প্রাণীজগত
[সম্পাদনা]খেন্টাই জেলার বুরখান খাল্ডুন পর্বতের প্রাণী ভৌগোলিক অঞ্চলে "ছয়টি বর্গের ২৭ টি গণের ৫০ প্রজাতির বেশি স্তন্যপায়ী/পতঙ্গভুক রয়েছে, ৪ প্রজাতির হাইমেনপেট্রা, চার প্রজাতির ল্যাগোমরফা, ১৯ প্রজাতির তীক্ষ্ণদন্ত প্রাণী, ১৩ প্রজাতির শিকারি, পাঁচ প্রজাতির খরওয়ালা প্রাণী, এক প্রজাতির সরীসৃপ, এবং ২৫৩ প্রজাতির পাখি বিদ্যমান।[৩]:২০
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Burkhan Khaldun"। CNN। ৪ নভেম্বর ২০১২। ১৯ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ ক খ Weatherford 2005, পৃ. 33।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "Great Burkhan Khaldun Mountain and its surrounding sacred landscape: Nomination (Amended text)" (pdf)। UNESCO organization। ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ ক খ "Great Burkhan Khaldun Mountain and its surrounding sacred landscape"। UNESCO Organization। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০১৫।
পাঠ্যপুস্তক
[সম্পাদনা]- Weatherford, Jack (২২ মার্চ ২০০৫)। Genghis Khan and the Making of the Modern World। Crown/Archetype। আইএসবিএন 978-0-307-23781-1।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Doncroner.com ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে
- Unesco.org