নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়
নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয় | |
---|---|
অবস্থান | |
তথ্য | |
ধরন | মাধ্যমিক বিদ্যালয় |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮৫৬ |
বিদ্যালয় জেলা | নড়াইল জেলা |
শিক্ষা ব্যবস্থা | জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড |
অন্তর্ভুক্তি | মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, যশোর |
নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয় নড়াইলের জমিদার রতন রায় ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দ প্রতিষ্ঠা করেন। নড়াইল শহরের রুপগঞ্জ বাজারে জমিদার ব্যরিষ্টার চন্দ্রকান্ত রায় কর্তৃক নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্টিত হয়। এটি নড়াইল পৌরসভার অন্যতম গতিশীল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]পাক ভারত ও উপমহাদেশের ইতিহাসে আগ্নেয় জাগরন শুরু হওয়ার গোড়ার দিকে প্রখ্যাত জমিদার রাম রতন রায়ের নাম অনুসারে প্রতিষ্ঠিত রতনগঞ্জ ডাকঘর সংলগ্ন বর্তমান সরকারী ফুড গোডাউন চত্বরে নড়াইলে শিক্ষা বিপ্লব ঘটানোর প্রত্যয়ে জমিদার ব্যরিষ্টার চন্দ্রকান্ত রায় কর্তৃক নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্টিত হয়। উক্ত জমিদার কর্তৃক ১০.৫০ শতক জমি দান করা হয় বিদ্যালয়ের নামে এবং পূর্বের স্থান পরিবর্তন করে উক্ত জমির উপর বর্তমান ভবন গুলি নির্মিত হয়। ০১/০১/১৮৫৭ খ্রী: হতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয় স্থায়ী স্বীকৃতি লাভ করে। এই বিদ্যালয়টি এ জেলার প্রথম উচ্চ বিদ্যালয় এবং বাংলাদেশের প্রাচীনতম কয়েকটি বিদ্যালয়ের একটি নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করার প্রথম পর্যায়ে ৪০ জন ছাত্রের আবাসিক সুবিধা জন্য একটি ছাত্রাবাস ভবন নির্মিত হয়েছিল। যাহা বর্তমানে জরাজীর্ন। ইহা ছাড়া অন্য ০২টি ভবনও জরাজীর্ন। বাংলাদেশ সরকার ১৯৮০ সালে তদকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রকাশ্যে সরকারি করনের ঘোষণা দেওয়া সত্বেও নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়টিকে সরকারি করন করা হয় নাই। এ সময়ে ড: শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায় এসেছিলেন নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে। লাল মিয়া তার একটা পোট্রেট একে অতিথি সহ সবাইকে মুগ্ধ করেছিলেন। অসংখ্য গুণী ও মেধাবী ছাত্র নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহণান্তে সর্বত্র ছড়িয়ে আছেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে পাক সেনাবাহিনী কর্তৃক নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্যাম্প করা হয়। প্রশাসনিক ভবন সহ অন্যান্য ভবন সমূহ তাদের দখলে রাখে এবং তাদের পতনের পর অনেক পুরাতন ও গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ড নষ্ট হয়ে যায়। বিধায় সকল বিষয়ে পুংখানুপুংখ চিত্র দেওয়া সম্ভব নয়। উল্লেখ্য যে, ১৮৮৬ সালে এফ, এ (আই,এ) ষ্টান্ডার্ড ক্লাস খোলার মাধ্যমে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ খোলা হয়। তার পর থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত স্কুল ও কলেজ একই কমিটির অধীনে পরিচালিত হয়। ১৯৫৪ সাল থেকে কলেজ পৃথক ভাবে পরিচালিত হয়। ০১/০১/১৮৫৭ খ্রী: হতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয় স্থায়ী স্বীকৃতি লাভ করে।
নড়াইল শহরের প্রাণকেন্দ্রে চিত্রা নদী তীরে পুরাতন ভবন নিয়ে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়টি অবস্থিত।১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের স্মরণীয় এক মুহুর্তে স্বনামধন্য বিদ্যোৎসাহী জমিদার রতন রায় কর্তৃক “নড়াইল ভিক্টোরিয়া স্কুল” নামে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। স্কুলটি সম্ভবতঃ প্রথম অবস্থায় রূপগঞ্জ বাজারের বর্তমান যেখানে কিরণ কুণ্ডুর বাড়ী সেখানে স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে হাসপাতাল র্নিমাণের জন্য যে ভবনটি নির্মিত হয় (হাসপাতালটি চালু না হওয়ায়) সেখানে স্কুলটিকে স্থানান্তরিত করে (বর্তমান পুরাতন কলেজ ভবন) স্থায়ীভাবে পরিচালিত করা হয়। স্কুলটি ইংল্যাণ্ডের তদানিন্তন রানী ভিক্টোরিয়ার নামে নামকরণ করা হয়। বিদ্যালয়টি ১৮৫৭ সালে এইচ, ই (উচ্চ ইংরাজী) স্কুল হিসেবে স্থায়ীভাবে সরকারী অনুমোদন লাভ করে। পূর্বে স্কুলটি জমিদারগণ কর্তৃক পরিচালিত হত এবং জমিদারগণই ছিলের এর সম্পাদক। প্রাচীন এই বিদ্যালয়ে বহু প্রখ্যাত শিক্ষকগণ শিক্ষকতা করেছেন। যেসব প্রধান শিক্ষকগণ শিক্ষকতা করেছেন তাদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হলেন অমৃত রায়, রমেশ ব্যানার্জী, সত্য রায়, গোপেশ্বর লাহিড়ী, নিশি দত্ত, অনুকূল বকসী, সরেন ভট্টাচার্য্য বিশেষ স্বরণীয়। দীর্ঘদিন যাবৎ বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন মোঃ মোসলেম উদ্দিন আহম্মদ।
১৮৮৬ সালে জমিদার রতন রায়ের পুত্র চন্দ্রকান্ত রায় কর্তৃক নড়াইল কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হবার পর স্কুল ও কলেজ উভয় প্রতিষ্ঠান দুটি যুক্তভাবে একই ভবনে একই শিক্ষকগণ দ্বারা পরিচালিত হতে থাকে। এই জন্য এই সময় প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয়। “নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল”। ১৯৬০ সালের দিকে প্রতিষ্ঠানটি দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। এ সময় বিদ্যালয়টির উন্নয়নে জন্য ব্যাপক ভূমিকা রাখেন তৎকালীন এম এন এ আলতাফ হোসেন। একশত ষাট বৎসরের ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়টি নড়াইল জেলার একটি আদর্শ বিদ্যাপীঠ।[১]
কৃতি শিক্ষার্থী
[সম্পাদনা]এ শিক্ষাঙ্গন থেকে শিক্ষা গ্রহণের পর বহু কৃতি সন্তান বিশ্বের গুরুত্ব পূর্ন পদে অধিষ্ঠিত হয়েছন।
- রায় বাহাদুর খগেন্দ্রনাথ মিত্র - শিক্ষক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান
- কে, এল, মিত্র একাউন্ট্যান্ড জেনারেল
- বি ডাবলু মিত্র অবিভক্ত বাংলার গভর্নর
- এস এম সুলতান
- অসীম কুমার মিত্র
- ডঃ অরুন কুমার দাশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল
- ডাঃ আব্দুল ওহাব বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হাসপাতালের নিওরোলজি বিভাগের প্রধান
- সরোজ দত্ত, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক