মগৌক

স্থানাঙ্ক: ২২°৫৫′ উত্তর ৯৬°৩০′ পূর্ব / ২২.৯১৭° উত্তর ৯৬.৫০০° পূর্ব / 22.917; 96.500
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মগৌক
မိုးကုတ်
Mogoke[১]
শহর
মগৌক মিয়ানমার-এ অবস্থিত
মগৌক
মগৌক
মান্দালয়, বার্মা এর অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২°৫৫′ উত্তর ৯৬°৩০′ পূর্ব / ২২.৯১৭° উত্তর ৯৬.৫০০° পূর্ব / 22.917; 96.500
রাষ্ট্র মায়ানমার
অঞ্চলটেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত শান প্রদেশ
জেলাপিয়িন উ-লয়িন
পৌরসভামগৌক
জনসংখ্যা (২০১৪)
 • মোট১,৬৭,১৪৯
 • ধর্মTheravada Buddhism
সময় অঞ্চলMST (ইউটিসি+৬.৩০)

মগৌক (বর্মী: မိုးကုတ်မြို့; এমএলসিটিএস: mui: kut mrui.; উচ্চারিত: [móɡoʊʔ]) হচ্ছে মায়ানমারের শান প্রদেশের পিয়িন উ-লয়িন (Pyin Oo Lwin) জেলায় অবস্থিত একটি শহর, যা মান্দালয় হতে ২০০ কিলোমিটার (১২০ মা) উত্তরে, এবং শোয়েবো হতে ১৪৮ কিলোমিটার (৯২ মা) উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। ইয়াঙ্গুন থেকে উত্তরে প্রায় ৮২০ কিলোমিটার (৫১০ মাইল) দূরে অবস্থিত এই শহরটি।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ধারণা করা হয়, ১২১৭ সালে তিনজন পথহারা শিকারী একটি ধসে পড়া পাহাড়ের গোড়ায় তিনটি চুনি (ruby) আবিষ্কার করার পর, মগৌক প্রতিষ্ঠিত হয়।[২] কল্পকাহিনী অনুসারে, ঐ শিকারীরা মোমেক (Momeik) এ তাদের বাড়িতে ফিরে গিয়ে সেই মূল্যবান রত্ন স্থানীয় সাওফা (saopha) কে উপহার দেয়, যে ঐখানে একটি গ্রাম প্রতিষ্ঠা করে যেখানে আধুনিক কালের মগৌক শহরটি অবস্থিত।

সামরিক জান্তার শাসনামলে মগৌকে বিদেশি পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। ১৯৯৫-৯৬ এ এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও বছরখানেকের মধ্যেই তা আবার পুনর্বহাল করা হয়। ২০০৩ সাল থেকে আবার বিদেশি পর্যটকদের বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে এখানে ভ্রমণের বিধান চালু হয়।[৩]

২০১৮ সালে, মগৌক শহর এর ৮০০-তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন করে।[৪]

ভূগোল[সম্পাদনা]

১,১৭০ মিটার (৩,৮৪০ ফু) উচ্চতায় অবস্থিত মগৌক শহরে সারা বছরই মোটামুটি নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু বিরাজ করে। শহরটিতে বামা (Bamar), শান (Shan), লিসু (Lisu), পালাউঁ (Palaung), এবং কারেন (Karen) জনগোষ্ঠী ছাড়াও চীনা, ভারতীয় ও গুর্খাদেরও বাস রয়েছে। এই শহর (city) আবার দুটি নগরে (town) বিভক্ত – মগৌক এবং ক্যাৎ পিন (Kyat Pyin)। মগৌক চার মাইল দীর্ঘ এবং দুই মাইল চওড়া। অনেকগুলো পর্বতবেষ্টিত একটি উপত্যকায় এটা অবস্থিত। মগৌকের প্রায় ৭ মাইল দক্ষিণ–পশ্চিমে ক্যাৎ পিন (Kyat Pyin) অবস্থিত। এই এলাকায় বেড়াতে যাওয়ার জন্য পর্যটকদের বিশেষ অনুমতি এবং ভ্রমণপথ প্রদর্শক থাকা বাধ্যতামূলক।[৫]

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

মগৌক এবং আশপাশের গ্রামগুলো প্রাচীনকাল থেকেই মূল্যবান রত্নপাথর, বিশেষত চুনি (ruby) ও নীলমণির (sapphire) জন্য বিখ্যাত, তবে এখানে স্পিনেল (spinel), লাপিস লাজুলি (lapis lazuli), তামড়ি (garnet), চন্দ্রমণি (moonstone), পেরিডট (peridot) এবং ক্রিসোবেরিল বা বৈদুর্য (chrysoberyl) সহ অনেক আধা-মূল্যবান পাথরও (semi-precious stones) পাওয়া যায়। এসব পাথর পাললিক মর্মরের নুড়ির মধ্যে পাওয়া যায়, যা খনি খনন (panning), সুড়ঙ্গকরণ (tunneling), স্বহস্তে কূপ খনন ইত্যাদি উপায়ে উত্তোলন করা হয়ে থাকে। খনন প্রক্রিয়ার যান্ত্রিকীকরণ হয়েছে খুব সামান্যই। নুড়ি পাথরগুলো আসে মগৌক রূপান্তর বলয় (Mogok metamorphic belt) থেকে প্রাপ্ত রূপান্তরিত চুনাপাথর (মর্মর) হতে।[৬][৭]

এসব রত্ন মগৌকের বাজারে বিক্রি করা হয়। তবে বিদেশিদেরকে এই শহর ভ্রমণ করতে বিশেষ অনুমতি নিতে হয় এবং অসরকারি লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ীদের সাথে রত্ন ক্রয় বা রপ্তানি করা নিষিদ্ধ।

নির্দিষ্ট কয়েক ধরনের চুনি'র শতকরা ৯০ শতাংশই আসে মায়ানমার থেকে। শ্রীলঙ্কা এবং আফ্রিকার কয়েকটি জায়গাসহ পৃথিবীর অনেক স্থানেই চুনি পাওয়া যায়। তবে গুণগত মানে মগৌকের চুনিই বিশ্বসেরা। এই লোহিত পাথরগুলো এদের বিশুদ্ধতা ও আভা'র (hue) জন্যই এত মহার্ঘ্য। মায়ানমারের রত্নপাথরের সিংহভাগের ক্রেতা হচ্ছে থাইল্যান্ডমান্দালয় থেকে ২০০ কিমি (১২০ মা) উত্তরে অবস্থিত পর্বতময় মগৌকের "চুনির উপত্যকা" (Valley of Rubies)- কে বলা হয় চুনির আদি উৎস, যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট পিজিওন'স ব্লাড (pigeon's blood) চুনি এবং বিশ্বের সুন্দরতম "রাজকীয় নীল" রঙের নীলমণি পাথর।

স্বাস্থ্যসেবা[সম্পাদনা]

  • মগৌক জেনারেল হাসপাতাল
  • ক্যাৎপিন জেনারেল হাসপাতাল

জলবায়ু[সম্পাদনা]

মগৌক (১৯৮২-২০১০)-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাস জানু ফেব্রু মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টে অক্টো নভে ডিসে বছর
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) ২২.৮
(৭৩.০)
২৪.৮
(৭৬.৬)
২৭.৯
(৮২.২)
২৯.৬
(৮৫.৩)
২৭.৫
(৮১.৫)
২৫.৪
(৭৭.৭)
২৪.৪
(৭৫.৯)
২৫.০
(৭৭.০)
২৬.১
(৭৯.০)
২৬.২
(৭৯.২)
২৪.৯
(৭৬.৮)
২২.৮
(৭৩.০)
২৫.৬
(৭৮.১)
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) ৫.০
(৪১.০)
৭.২
(৪৫.০)
১০.৮
(৫১.৪)
১৫.১
(৫৯.২)
১৭.৯
(৬৪.২)
১৯.৮
(৬৭.৬)
১৯.৮
(৬৭.৬)
১৯.৭
(৬৭.৫)
১৮.৯
(৬৬.০)
১৬.৬
(৬১.৯)
১১.৪
(৫২.৫)
৬.৮
(৪৪.২)
১৪.১
(৫৭.৪)
বৃষ্টিপাতের গড় মিমি (ইঞ্চি) ৬.৮
(০.২৭)
১১.৮
(০.৪৬)
২২.০
(০.৮৭)
৭৭.৪
(৩.০৫)
৩৬২.৭
(১৪.২৮)
৪৯৩.৩
(১৯.৪২)
৫১১.৩
(২০.১৩)
৪৭৯.৬
(১৮.৮৮)
৩৩৭.৩
(১৩.২৮)
২৮৬.১
(১১.২৬)
৮৫.৮
(৩.৩৮)
১৭.০
(০.৬৭)
২,৬৯১.১
(১০৫.৯৫)
উৎস: নরওয়েজীয় আবহাওয়াবিদ্যা ইনস্টিটিউট[৮]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Pyin Oo Lwin / Mogoke Map"[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] Myanmar Information Management Unit (MIMU)
  2. "Ruby Land's 800th Anniversary showcases peaceful coexistence"The Myanmar Times। ২০১৮-০৩-২৩। ২০২০-০৬-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৪ 
  3. "After 10 years, Mogok set to open up"The Myanmar Times। ২০১৩-০৯-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-১১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "Mogok prepares to party for 800th birthday"The Myanmar Times। ২০১৮-০২-২৩। ২০২০-০৬-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-০৪ 
  5. "Archived copy"। ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  6. Searle, D. L.; Ba Than Haq (1964) "The Mogok belt of Burma and its relationship to the Himalayan orogeny" Proceedings of the 22nd International Geological Conference, Delhi 11: pp. 132–161
  7. Iyer, Lakshinarayanpuran Anantkrishna Narayana (1953) The geology and gem-stones of the Mogok Stone Tract, Burma Geological Survey of India Memoir 82, Government of India Press, Calcutta, OCLC 6526679 ; reprinted in 2007 by White Lotus, Bangkok, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৭৪-৪৮০-১২৩-৪
  8. "Myanmar Climate Report" (পিডিএফ)। Norwegian Meteorological Institute। পৃষ্ঠা 23–36। ৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০১৮