ব্যবহারকারী:Shiham~bnwiki/বিবর্তনবাদ সম্পর্কে আহমদীয়া মুসলিম জামা'তের দৃষ্টিভঙ্গি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আহমদীয়া মুসলিম জামাত বিক্ষিপ্ত বিচ্ছিন্ন ও অনিয়ন্ত্রিত বিবর্তনবাদে বিশ্বাসী নয়। বরং এরা ঐশী পরিকল্পনাধীন নিয়ন্ত্রিত বিবর্তনবাদে আর একথা এরা সর্বস্তরে প্রচারও করে থাকে। বিগত কয়েক দশক ধরে এই জামাত, বিবর্তনের প্রক্রিয়ার নেপথ্যে থাকা বৈজ্ঞানিক ধারণাগুলোকে সমর্থন করে বিভিন্ন বই-পত্র প্রকাশ করেছে এবং বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ যে এই মতবাদ সমর্থন করে তা তুলে ধরার কর্মযজ্ঞে নিজেদের জড়িত রেখেছে।

সৃষ্টিতত্ত্ব এবং বুদ্ধিদীপ্ত অনুকল্পের ধারণা

কুরআন শরীফ এবং বাইবেলে সৃষ্টিতত্ত্ব বিষয়ে যে সকল ঘটনা বা কাহিনী বর্ণিত আছে তার সবকিছুকে আক্ষরিকভাবে আহমদীয়া বিশ্বাসী মুসলমানরা গ্রহণ করেনা, বরং তারা এর বেশ কিছু বর্ণনা রুপকঅর্থে গ্রহণ করে। আধুনিক ধর্মতাত্ত্বিকদের গবেষণালব্ধ ইসলামিক সৃর্ষ্টিতত্ত্ব, ডারউইনের  বিবর্তনবাদ এবং বুদ্ধিদীপ্ত অনুকল্পের নির্দিষ্ট কিছু দিককে তারা প্রত্যাখান করে। এর পরিবর্তে তারা যে মতবাদ তুলে ধরে সেটি হচ্ছে "পরিকল্পিত ও নিয়ন্ত্রিত বিবর্তনবাদ" (মুক্তমনা খ্রিস্টান এবং অন্যান্যরা যে বিবর্তনমূলক সৃষ্টিতত্ত্বে বিশ্বাসী তার সমধর্মী) যা বিবর্তনবাদের ধর্মীয় ও বৈজ্ঞানিক উভয় তত্ত্বকেই সমর্থন করে।

আহমদীরা দৃষ্টিভঙ্গী হল, মানবজাতি এক সুদীর্ঘ সময় ধরে পৃথিবীতে বিবর্তিত হয়েছে।  কুরআন আমাদের শিক্ষা দেয় মানুষকে ক্রমান্বয় বিবর্তন প্রক্রিয়ায় মাধ্যমেই এই পৃথিবীতে সৃষ্টি করা হয়েছে, যা নিম্নলিখিত আয়াতে বর্ণিত হয়েছে:

অথচ নিশ্চয় তিনি বিভিন্ন পর্যায়ে তোমাদের সৃষ্টি

করেছেন। ... আর আল্লাহ্ উদ্ভিদের ন্যায় মাটি থেকে তোমাদের

উদ্গ‌ত করেছেন।
— কুরআন ৭১: ১৪,১৭

এই আয়াতগুলো প্রমাণ করে, মানবজাতির সৃষ্টি একটি ক্রমাগত বিবর্তন প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পরিণতি এবং এটি বলা ভুল, মানুষকে সৃষ্টিকর্তা এক মূহুর্তেই সৃর্ষ্টি করেছেন।[১] সুতরাং আহমদীরা বিবর্তনের ধারণা নীতিগতভাবে সমর্থন করলেও ডারউইনের বিবর্তনবাদ এবং এ সংক্রান্ত তার অন্যান্য বিশ্লেষণকে সমর্থন করে না।

আদম এবং হাওয়া[সম্পাদনা]

আহমদী মুসলিমরা সেই সৃষ্টিতত্ত্বকে প্রত্যাখ্যান করে যা বলে আদম পৃথিবীতে প্রথম মানুষ ছিলেন এবং ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি আল্লাহর প্রথম নবী হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন। এটি কুরআনের নিম্নলিখিত আয়াত সমর্থন করে যেখানে মানুষকে একটি নতুন প্রজাতি হিসেবে সৃষ্টির পরিবর্তে পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ করা করার কথা বলা হয়েছে:

[সূরা বাকারা ২:৩০] আর (স্মরণ কর) তোমার প্রভু-প্রতিপালক যখন ফিরিশতাদের বললেন, 'নিশ্চয় আমি পৃথিবীতে এ খলীফা নিযুক্ত করতে যাচ্ছি' তারা বললো, 'তুমি কি এতে এমন কাউকে নিযুক্ত করবে, যে এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে, যে এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে এবং এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরাই তোমার প্রশংসাসহ মহিমা কীর্তন করি এবং তোমার পবিত্রতা ঘোষণা করি।' তিনি বললেন, 'নিশ্চয় আমি তা জানি যা তোমরা জান না।'

আহমদীরা যুক্তি দেখায়, ফিরিশতারা একজন মানুষের নবী হিসেবে মনোনয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছিল কারণ তারা ইতোমধ্যে জীবিত মানুষের মাঝে নৈরাজ্য ও রক্তপাত প্রত্যক্ষ করেছিল।

আহমদীদের দৃষ্টিতে বাইবেলে বর্ণিত আদম এবং হাওয়ার কাহিনীটি বস্তুতপক্ষে সমগ্র মানবজাতির ইতিহাসের চাইতে একটি ধর্মীয় ইতিহাসের আখ্যান। 

বেলাল খালেদ নামক একজন আহমদী বুদ্ধিজীবি তার “Original Sin” বইয়ে লিখেছেন:

মানুষ যখন তার মানসিক পরিপক্কতার সবগুলো পর্যায় অতিক্রম করল, সৃষ্টিকর্তা তখন সেই প্রজন্মের সবচেয়ে পরিপূর্ণ মানুষকে তার বাণী পাঠালেন, যার নাম ছিল হযরত আদম (আ.)।<o:p></o:p> সংক্ষেপে, পবিত্র কুরআনের শিক্ষানুসারে মানুষের দৈহিক সৃষ্টি এবং উন্নতি বিবর্তন প্রক্রিয়ার ফসল এবং একইভাবে তার মানসিক উন্নতিও বিবর্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়েছে হযরত আদম (আ.) পৃথিবীতে সৃষ্ট প্রথম মানুষ ছিলেন নাবরং ঐশীবাণী গ্রহণ এবং ঐশী দায়িত্ব বহনে সক্ষম প্রথম মানুষ ছিলেন

নির্দেশিত বিবর্তন[সম্পাদনা]

[[বিষয়শ্রেণী:ইসলাম ও বিজ্ঞান]]