নেওয়ার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নেওয়ার

কাঠমান্ডু দরবার স্কোয়ার
এক দেবার মহিলা
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
নেপাল, ভারত, ভুটান, তিব্বত
ভাষা
নেপাল ভাষা
ধর্ম
বৌদ্ধ ধর্ম, হিন্দুধর্ম
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী
ইন্দো-আর্য (পাহাড়ি রাজপুত, মাইথিল) এবং সিনো-তিব্বতি (e.g. কিরান্ট, তিব্বতি, মাগার, গুরুং) তে এবং নেপালের চারপাশে

নেওয়ার (নেপাল ভাষা: नेवा Newā(h), আধুনিক নেপালী ভাষায়: नेवार Newār অথবা नेवाल Newāl) নেপাল উপত্যকার এক অতি প্রাচীন জাতি। এই মানব জাতির উত্‍স সম্পর্কে সঠিকভাবে কিছু বলা যায়না। আর্য, মোঙ্গল এবং দ্রাবিড় সব ধারার মানুষ মিলেমিশে নেপাল উপত্যকায় যে জনগোষ্ঠী তৈরি হয়েছিলো তারই সাধারণ নাম ছিলো নেওয়ার।

ঐতিহাসিক সূত্র থেকে জানা যায় যে, কিরাতদের পরাজিত করে নেপাল উপত্যকা দখল করেছিলো লিচ্ছবিরা। প্রাচীন ভাষা বিজ্ঞান ও প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ থেকে একথা বলা যায় যে, লিচ্ছবিদের আগমনের পূর্ব থেকেই নেওয়ার-রা নেপাল উপত্যকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে এক প্রাচীন ও উচ্চমানের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিলো ।[১]

পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য অঞ্চলে, নেওয়ারদের আগমন ঘটেছে পূর্ব নেপাল থেকে। দার্জিলিং জেলার তিনটি পার্বত্য মহকুমায় তাদের বাস। তবে, শিলিগুড়ি মহকুমায় এবং জলপাইগুড়ি জেলাতেও নেওয়ার সম্প্রদায়ের মানুষ বিভিন্ন জীবিকার প্রয়োজনে বসবাস করেন। পশ্চিমবঙ্গে তাদের পদবী প্রধান। অনেকে শ্রেষ্ঠী ব্যবহার করেন। এ রাজ্যে তাদের পরিচয় নেপালী ভাষী ব্যবসাহী সম্প্রদায় হিসেবে। সিকিম রাজ্যে ও নেওয়ার সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন।[২]

নেওয়ারদের নিজস্ব ভাষা নেওয়ারি। নেওয়ারি ভাষা ভোট-বর্মা ভাষা গোষ্ঠীর অন্তর্গত। তবে নেওয়ারি ভাষায় সংস্কৃত এবং অন্যান্য ভারতীয় ভাষার প্রভাব সুস্পষ্ট। একসময় প্রাচীন নেওয়ারি ভাষায় অনূদিত হয়েছিলো প্রচুর মহাযান বৌদ্ধশাস্ত্র। এছাড়া, নেওয়ারি ভাষায় রচিত সাহিত্যের এক অপূর্ব নিদর্শন পাওয়া গেছে। অষ্টাদশ শতকে গোর্খা শাসনের পত্তনের পর নেওয়ারি সাহিত্যকর্মে বাঁধা পড়ে। বিংশ শতকের দ্বিতিয়ার্ধে, নেওয়ারি ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যয়্ণ নেপালে পুনরায় শুরু হয়।[৩]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

পাদটীকা[সম্পাদনা]

  1. Regmi, D.R. (1960), "Ancient Nepal", Calcutta: Firma K.L.M.
  2. বিশ্বাস, রতন (২০০১) উত্তরবঙ্গের জাতি ও উপজাতি, কলকাতা: পুনশ্চ
  3. ঘোষ, হরেন (১৯৯৯) নেপালি ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি, কলকাতা: সাহিত্যশ্রী