জানালা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ঊনবিংশ শতাব্দীতে তৈরী খড়খড়িযুক্ত কাঠের জানালা। সাহেব কোয়াটার্স, ময়মনসিংহ
পাশাপাশি দুইটি জানালা। ওল্ড শিপ চার্চ, হিঙহাম, ম্যাসাচুসেটস, যুক্তরাষ্ট্র

জানালা (আঞ্চলিক: জাল্‌না, জানেলা) হলো দেয়াল বা ছাদের মধ্যে এমন কোন ফোকর যার মধ্য দিয়ে আলো, বাতাস ও শব্দ গমন করতে পারে। ব্যবহার বিশেষে এটি সম্পূর্ণ বা আংশিক খোলার উপযোগী অস্বচ্ছ, স্বচ্ছ বা আংশিক আলোকভেদী বস্তু দ্বারা তৈরি হয়। বাংলাদেশের জানালাগুলো সাধারণত কাঠ, এ্যালুমিনিয়াম, মাইল্ড স্টিল (এম.এস) এবং কাচ ব্যবহার হচ্ছে।

জানালার ইতিহাস[সম্পাদনা]

বাংলা ভাষায় জানালা শব্দের উৎপত্তির পর্তুগিজ শব্দ "জানেলা (Janela)" থেকে। জানালার প্রচলিত কিছু প্রতিশব্দ হলো গবাক্ষ, বাতায়ন, খিড়কি[১]

জানালার গঠন[সম্পাদনা]

জানালায় চৌকাঠ এবং পাল্লা প্রধান দুইটি অংশ থাকে। চৌকাঠের সাথে পাল্লাকে যুক্ত করতে ধাতব কব্জা ব্যবহার করা হয়। খোলা-বন্ধ করার সুবিধার জন্য পাল্লার সাথে হাতল লাগানো হয়।

জানালার ধরন[সম্পাদনা]

ফিক্সড বা বদ্ধ জানালা[সম্পাদনা]

এই ধরনের জানালা কখনই খোলার ব্যবস্থা থাকেনা। শুধু আলোর জন্য এই ধরনের জানালা ব্যবহার করা হয়। এই জানালায় বাতাস চলাচলের কোন সুবিধা থাকেনা। সাধারণত উঁচু হলরুম বা লবি স্পেসের দেয়ালের উপরের অংশে এই ধরনের জানালা ব্যবহার করা হয়।

কেজমেন্ট বা পাল্লা জানালা[সম্পাদনা]

কেজমেন্ট বা পাল্লা জানালা

এই ধরনের জানালায় একটি ফ্রেমের সাথে এক বা একাধিক পাল্লা উলম্ব ভাবে কব্জার মধ্যমে আটকানো থাকে। পাল্লাগুলোকে কব্জার মাধ্যমে ঘোরানো যায়। পাল্লাগুলো ভেতর বা বাহিরে, ক্ষেত্রবিশেষে উভয় দিকেই খোলার ব্যবস্থা থাকে। এধরনের জানালা বাংলা অঞ্চলের সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়।

অনিঙ বা আনুভূমিক পাল্লা[সম্পাদনা]

এটি কেজমেন্ট বা পাল্লা জানালার মতই তবে এ ক্ষেত্রে পাল্লাগুলো আনুভূমিক বরাবর ঘুরানো বা উঠানামা করা যায়। সাধারণত দোকান বা কাউন্টারে এই ধরনের জনালা ব্যবহার দেখা যায়।

বর্গা বা আড়কাঠের জানালা[সম্পাদনা]

বর্গা বা আড়কাঠের জানালা

দরজার আড়কাঠের উপরে এই ধরনের জানালা ব্যবহার করা হয়। এটি দরজা বন্ধ থাকলেও উপর দিয়ে আলো আসতে সাহায্য করে। অনেক ক্ষেত্রে বাড়ির প্রধান দরজার উপরে এই জানালা ব্যবহার করা হয়।

লুভার বা খড়খড়ি জানালা[সম্পাদনা]

এই ধরনের জানালা অনেকগুলো উলম্ব বা আনুভূমিক পরস্পর সমান্তরাল খড়খড়ি বা ঝিল্লি দিয়ে তৈরি করা হয়। ক্র্যাংক বা কীলকের মাধ্যমে খড়খড়িগুলোকে ঘুরিয়ে বাতাসের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ক্রান্তিয় গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে এই ধরনের জানালার ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়।

ছাদ বা চন্দ্র জানালা[সম্পাদনা]

Hexagonal external cladding panels of roof in Eden Project Biomes (Cornwall, England,)

সূর্য বা চাঁদের আলো ভবনের ভেতরে আনতে ছাদ বা চালে এই ধরনের জানালা ব্যবহার করা হয়।

কুলুঙ্গি জানালা[সম্পাদনা]

কুলুঙ্গি জানালা, মেহরানগড় দূর্গ, ভারত

তিন বা ততোধিক প্যানেল দিয়ে তৈরি এই ধরনের জানালা মূল ভবন থেকে কিছুটা বেরিয়ে থাকে।

চিত্রমালা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ব্যবহারিক বাংলা অভিধানবাংলা একাডেমী। পঞ্চদশ পুনর্মুদ্রণ: মাঘ ১৪১৮।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]