জয়নাব বিনতে মাজউন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জয়নাব বিনতে মাজউন
زينب بنت مظعون
জন্ম
মৃত্যুআনু. ৬৪১ খৃ. এর পূর্বে
অন্যান্য নামবিনতে মাজউন
পরিচিতির কারণ
দাম্পত্য সঙ্গীউমর
সন্তান
পিতা-মাতামাজউন(বাবা)
আত্মীয়উসমান ইবনে মাজউন (ভাই)

জয়নাব বিনতে মাজউন ( আরবি : زينب بنت مظعون) ছিলেন উমরের প্রথম স্ত্রী।

জীবনী[সম্পাদনা]

তিনি মক্কায় কুরাইশদের জুমাহ বংশের মাজউন ইবনে হাবিবের কন্যা ছিলেন;[১]:২০৪ তিনি ছিলেন উসমান ইবনে মাজউনের বোন।[১]:৩০৭

তিনি কৃষ্ণাঙ্গ ছিলেন, এই বৈশিষ্ট্যটি তার ছেলে আবদুল্লাহর মধ্যেও ছিল।[১]:২৫২

তিনি ৬০৫ সালের আগে উমরের সাথে তার বিয়ে হয়[২]:৫৬এবং তাঁর তিনটি সন্তানের জন্ম হয়: হাফসা, আবদুল্লাহ এবং আবদ আল-রহমান। পরবর্তীতে উমর তার পরিবারে আরও দুটি স্ত্রী যোগ করেন: উম্মে কুলসুম বিনতে জারওয়াল, যিনি তার দুটি পুত্রের জন্ম দেন,[১] :২০৩–২০৪এবং কুরাইবা বিনতে আবি উমাইয়া, শক্তিশালী মাখজুম বংশের ছিল, যিনি নিঃসন্তান ছিলেন।[৩]:৫১০ উমর বলেছিলেন যে সেই সময়ে কুরাইশ পুরুষরা "তাদের স্ত্রীদের উপর আধিপত্য বজায় রাখত" এবং "মহিলাদের প্রতি মনোযোগ দিত না"।[৪]

ইসলামের প্রতি জয়নাবের মনোভাব অজানা এবং তার চূড়ান্ত ধর্মান্তরিত হওয়ার তারিখ লিপিবদ্ধ করা হয়নি। তার ভাই উসমান ছিলেন প্রথম দিকে ধর্মান্তরিতদের একজন;[১] :৩০৮[৩]:১১৬ এবং অন্য দুই ভাই, আবদুল্লাহ এবং কুদামাহ, "আল্লাহর রসূল আল-আরকামের বাড়িতে প্রবেশের আগে" ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন।[১] :৩১৩ এদিকে, তার স্বামী উমর ইসলামের বিদ্বেষী ছিলেন এবং তিনি সক্রিয়ভাবে মুসলিম ক্রীতদাসদের উপর অত্যাচার করতেন।[৩] :১৪৪, ১৫৪–১৫৫ উমর ৬১৬ সালে মুসলিম হন,[১]:২০৫–২০৭[৩]:১৫৫–১৫৯ কিন্তু উম্মে কুলসুম ও কুরায়বা মুশরিক রয়ে গেলেন।[৩]:৫১০

উমর ৬২২ সালে মদিনায় হিজরত করেন । তার সঙ্গে থাকা পরিবারের সদস্যদের তালিকায় কোনো নারীর নাম নেই।[৩]:২১৮ একটি রেওয়ায়েত দাবি করে যে জয়নব ততক্ষণে মারা গেছে; যাইহোক, তার ছেলে আবদুল্লাহ বলেছেন যে তিনি তার পিতামাতা উভয়ের সাথে মদিনায় হিজরত করেছিলেন।[৫]

জয়নাবের কন্যা হাফসা ৬২৫ সালে মুহাম্মদকে বিয়ে করেন।[২]:৫৮

উমর উল্লেখ করেছেন যে মদিনার মহিলারা "তাদের পুরুষদের উপর শীর্ষস্থানীয় ছিল" এবং মক্কার মহিলারা যারা মদিনায় হিজরত করেছিল তারা তাদের আচরণ অনুকরণ করতে শুরু করে।[৬] উমরকে বিবাদ মিমাংসার সিদ্ধান্ত নিতে একবার তার স্ত্রী তাকে পরামর্শ দেন। উমর তার নিজের ব্যাপারে তাকে হস্তক্ষেপ করতে বারণ করেন। স্ত্রী প্রতি জবাব দিলেন এবং তিনি বিরক্তি প্রকাশ করলেন। স্ত্রী বললেন, 'তুমি কত অদ্ভুত! তোমরা তর্ক করতে চাও না, অথচ তোমার মেয়ে হাফসা আল্লাহর রাসূলের সাথে এত তর্ক করে যে, সে সারাদিন রাগান্বিত থাকে।[৪][৬] তবে এই স্ত্রীকে সরাসরি জয়নাব হিসেবে চিহ্নিত করা যায়নি।

৬২৮ সালে উমর উম্মে কুলসুম এবং কুরাইবাকে তালাক দেন কারণ মুহাম্মদের নতুন নির্দেশ ছিল যে একজন মুসলমান একজন মুশরিকের সাথে বিয়ে করতে পারবে না।[৩]:৫১০[৭] তিনি জয়নাবকে তালাক দেননি, তাই, যদি তিনি বেঁচে থাকতেন, তাহলে অবশ্যই তিনি মুসলিম হয়ে যেতেন। যাইহোক, জয়নাব সম্ভবত ৬৪১ সালের আগে মারা গিয়েছিলেন, কারণ সেই তারিখে উমরের স্ত্রী হিসাবে আরও চারজন মহিলা তালিকাভুক্ত হয়।[১]:২০৪[২]:১৮৬–১৮৭[৮][৯]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Muhammad ibn Saad. Kitab al-Tabaqat al-Kabir vol. 3. Translated by Bewley, A. (2013). The Companions of Badr. London: Ta-Ha Publishers.
  2. Muhammad ibn Saad. Kitab al-Tabaqat al-Kabir vol. 8. Translated by Bewley, A. (1995). The Women of Madina. London: Ta-Ha Publishers.
  3. Muhammad ibn Ishaq. Sirat Rasul Allah. Translated by Guillaume, A. (1955). The Life of Muhammad. Oxford: Oxford University Press.
  4. Bukhari 6:60:435.
  5. Ibn Hajar al-Asqalani. Al-Isaba fi tamyiz al-Sahaba, vol. 7 #11250.
  6. Bukhari 7:62:119.
  7. Bukhari 3:50:891.
  8. Juynboll, Gautier H.A., সম্পাদক (১৯৮৯)। The History of al-Ṭabarī, Volume XIII: The Conquest of Iraq, Southwestern Persia, and Egypt: The Middle Years of ʿUmar's Caliphate, A.D. 636–642/A.H. 15–21। SUNY Series in Near Eastern Studies.। Albany, New York: State University of New York Press। পৃষ্ঠা 109–110। আইএসবিএন 978-0-88706-876-8 
  9. Muhammad ibn Saad. Kitab al-Tabaqat al-Kabir vol. 5. Translated by Bewley, A. (2000). The Men of Madina Volume II, p. 1. London: Ta-Ha Publishers.