জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা
প্রতীক বা লোগো
ধরন
ধরন
এককক্ষবিশিষ্ট
মেয়াদসীমা৫ বছর
ইতিহাস
শুরু১৯৫৭
নেতৃত্ব
স্পিকার
পদশুন্য
৫ আগস্ট ২০১৯ থেকে
সংসদ প্রধান
(মুখ্যমন্ত্রী)
পদশুন্য
১৯ জুন ২০১৮ থেকে
বিরোধীদলীয় প্রধান
পদশুন্য
১৯ জুন ২০১৮ থেকে
আসনআলোচনার প্রেক্ষিতে
নির্বাচন
এক ব্যক্তি এক ভোটের ভিত্তিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অনুযায়ী
সর্বশেষ নির্বাচন
২৫ নভেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর, ২০১৪
পরবর্তী নির্বাচন
আলোচনার প্রেক্ষিতে [১]
ওয়েবসাইট
http://www.jklegislativeassembly.nic.in/

জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা হলো জম্মু ও কাশ্মীরের আইনসভা।

জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে ২০১৯ সালের আগে বিধানসভা (নিম্নকক্ষ) এবং আইনসভা পরিষদ (উচ্চকক্ষ) নিয়ে দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা বিদ্যমান ছিল। ২০১৯ সালের আগস্টে ভারতীয় সংসদ কর্তৃক গৃহীত জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন, ২০১৯ অনুযায়ী এটিকে এক-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভায় পরিণত করা হয় এবং রাজ্যটিকে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে পুনর্গঠন করা হয়।

রাজ্যপাল ২১ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে জম্মু ও কাশ্মীরের আইনপরিষদকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। তার ৬ মাসের মাথায় নতুন নির্বাচন হবে এমনটাই ধারণা করা হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীকালে নতুন নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ করা হবে এমনটি বলে তা মুলতবি করা হয়েছে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

প্রজা সভা[সম্পাদনা]

জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের প্রথম আইনসভা যা প্রজা সভা নামে অধিক পরিচিত মহারাজা হরি সিং এর মন্ত্রিসভা কর্তৃক ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[২] এতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির জন্য ৩৩ টি আসন, ৩০ জন মনোনীত সদস্য এবং ১২ জন উপ-আধিকারিক সদস্য ছিলেন। [৩]

১৯৩৪ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে পণ্ডিত রাম চন্দর দ্যুবে নেতৃত্বাধীন লিবারেল গ্রুপ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং মুসলিম কনফারেন্স দ্বিতীয় বৃহত্তম (১৪ টি আসন সহ) হিসাবে আবির্ভূত হয়।[৪] পরবর্তী নির্বাচনসমূহ যথাক্রমে ১৯৩৮ এবং ১৯৪৭ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

১৯৩৯ সালে, মুসলিম কনফারেন্স দলটি শেখ আবদুল্লাহর নেতৃত্বে নিজেদের নাম পরিবর্তন করে জাতীয় কনফারেন্স রাখে এবং সকল ধর্মের মানুষের কাছে দলটিকে উন্মুক্ত করে দেয়। ১৯৪৬ সালে এটি "কাশ্মীর ছেড়ে দিন" আন্দোলনের সূচনা করে এবং ১৯৪৭ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে বয়কট করে।[৫]

পরবর্তী পথচলা[সম্পাদনা]

১৯৪৭ সালে জম্মু ও কাশ্মীর নামক রাজ্যটি ভারত ইউনিয়নে যোগদান করার পর মহারাজা হরি সিং শেখ আবদুল্লাহর নেতৃত্বাধীন জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। ১৯৫১ সালে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে গণপরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে আবদুল্লাহর জাতীয় কনফারেন্স ৭৫ টি আসনের সবকয়টিই জিতেছিল।

১৯৫৭ সালে গণপরিষদ কর্তৃক একটি নতুন সংবিধান গৃহীত হয়েছিল। উক্ত সংবিধান অনুযায়ী জম্মু ও কাশ্মীর আইন পরিষদ নামক একটি উচ্চকক্ষ এবং জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা নামক একটি নিম্নকক্ষের সমন্বয়ে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।[২]

আগস্ট ২০১৯ এ, ভারতীয় সংসদ একটি পুনর্গঠন আইন পাস করে।২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর এই আইনটির ভিত্তিতে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যটিকে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পুনর্গঠিত করা হয়েছে। বর্তমানে জম্মু ও কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিতে একটি এককক্ষবিশিষ্ট বিধানসভা রয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর আইন পরিষদ ১৬ই অক্টোবর ২০১৯ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। [৬][৭]

গঠন[সম্পাদনা]

বিধানসভাটি প্রথমে ১০০ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল। পরে ১৯৮৮ সালে তৎকালীন জম্মু ও কাশ্মীরের সংবিধান (বিংশ সংশোধন) এর আইন দ্বারা সদস্যসংখ্যা ১১১-তে উন্নীত করা হয়। [২] এর মধ্যে ১৯৪৭ সালে রাজ্যটির যেসকল এলাকা পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল সেগুলোর জন্য ২৪টি আসন নির্দিষ্ট করা হয়।[২][২][৮] এই আসনগুলি তৎকালীন রাজ্য সংবিধানের ৪৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ফাঁকা ছিল এবং বর্তমানে ভারতের সংবিধান অনুযায়ীও আনুষ্ঠানিকভাবে ফাঁকা রয়েছে।[২][৮] এই আসনগুলি বিধানসভার মোট সদস্যপদ গণনা করার ক্ষেত্রে (বিশেষত কোরাম (সভার যে কোন অধিবেশনে সর্বনিম্ন যে সংখ্যক সদস্যকে উপস্থিত থাকতে হয়) নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য, আইন গ্রহণের ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতা গণনায় এবং সরকার গঠনের ক্ষেত্রে ভোট গণনার জন্য) বিবেচনা করা হয় না।[২][৮] সুতরাং বর্তমানে বিধানসভার মোট প্রতিযোগিতামূলক ও পূর্ণ আসনসংখ্যা ৮৫টি। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে পৃথক করার পরে লাদাখের জন্য ৪টি আসন নির্ধারিত করা হয়েছে। আর কাশ্মীর উপত্যকার জন্য ৪৬টি আসন ও জম্মু অঞ্চলের জন্য ৩৭টি আসন রয়েছে।

দলীয় সদস্যপদ[সম্পাদনা]

জুন, ২০১৮ এর সংযোজন

বিধানসভাটি বর্তমানে বিলুপ্ত।

বিলুপ্তির পূর্বে বিধানসভার বিন্যাসটি ছিল নিম্নরূপঃ

মেয়াদ ও কার্যাবলী[সম্পাদনা]

বিধানসভার সদস্যগণ ছয় বছরের মেয়াদে ২০১৯ পর্যন্ত এবং পরবর্তীতে আরো পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। আসনগুলিতে মূলত এক ব্যক্তি এক ভোটের ভিত্তিতে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে প্রত্যেক সদস্য নির্বাচিত হন। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে লেফটেন্যান্ট গভর্নর সংসদটিকে পূর্ণ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বাতিল করতে পারেন। লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনও ডাকতে পারেন।

কর্মকর্তাবৃন্দ[সম্পাদনা]

স্পিকারের অধীনে অধিবেশন ডাকা হয় ও পরিচালিত হয়। সাধারণত মুখ্যমন্ত্রী সংসদের সভাপতি হন। তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের দল (বা জোট) এর নেতা। বিরোধীদলীয় নেতা বিরোধীদল (বা জোট) কে প্রতিনিধিত্ব করেন যারা দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনের অধিকারী।

  • স্পিকার:
  • সভাপতি:

রাজ্যের বিধানসভা ভবনে হামলা[সম্পাদনা]

১ অক্টোবর ২০০১ পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ এর কতিপয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গাড়ি বোমা ও তিনজন আত্মহত্যাকারী বোম্বারকে ব্যবহার করে শ্রীনগরে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের বিধানসভা কমপ্লেক্সের ওপর হামলা চালায় । [৯][১০]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. https://www.livemint.com/news/india/new-dawn-for-j-k-begins-two-new-federal-units-take-shape-11572493040564.html
  2. "Jammu and Kashmir Legislative Assembly"। National Informatics Centre। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৮-২৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. Rai, Mridu (২০০৪), Hindu Rulers, Muslim Subjects: Islam, Rights, and the History of Kashmir, C. Hurst & Co, পৃষ্ঠা 274, আইএসবিএন 1850656614 
  4. Islam and Political Mobilization in Kashmir, 1931-34 (2) 
  5. Choudhary, Dipti, "The Constitutional Development in the State of Jammu and Kashmir" (পিডিএফ), State autonomy under indian constitution a study with reference to the state of jammu and kashmir, Kurukhsetra University/Shodhganga, পৃষ্ঠা 60, 69 
  6. https://www.financialexpress.com/india-news/jk-administration-orders-abolition-of-legislative-council-asks-its-staff-to-report-to-gad/1738394/
  7. https://jkgad.nic.in/common/showOrder.aspx?actCode=O32993
  8. "Delimitation adds seats to PoK quota"Times of India। ৭ জুলাই ২০০৬। ৩ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  9. Fidayeen storm J&K House, kill 29, The Tribune, 2001-10-02
  10. AN AUDACIOUS STRIKE ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ ডিসেম্বর ২০০৪ তারিখে, Frontline (magazine), 2001-10-13

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]