কে ওমানাকুট্টি

কে ওমানাকুট্টি
জন্ম	(1943-06-08) ৮ জুন ১৯৪৩
মাতৃশিক্ষায়তন	স্বাতী থিরুনাল কলেজ অফ মিউজিক, তিরুবনন্তপুরম
পেশা	গায়ক কলেজের অধ্যাপক
আত্মীয়	এম. জি. রাধাকৃষ্ণন (ভাই) এম. জি. শ্রীকুমার (ভাই) এম. আর. রাজাকৃষ্ণন (ভাইপো) কে. এস. হরিশংকর (নাতি)
সঙ্গীত কর্মজীবন
ধরন	ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত কর্নাটকী সঙ্গীত
বাদ্যযন্ত্র	কণ্ঠ্য

কমলাক্ষী ওমানাকুট্টি হলেন একজন শিক্ষাবিদ, সঙ্গীত শিক্ষক এবং কর্নাটকী কণ্ঠশিল্পী। তিনি সঙ্গীত ক্ষেত্রে তাঁর গবেষণা এবং প্রকাশনার জন্য বিখ্যাত। কথাকলি সঙ্গীতের উপর তাঁর গবেষণার জন্য তিনি ডক্টরেট লাভ করেছেন। তিনি বর্তমানে কেরালা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের অধ্যাপক এবং প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। তিনি সঙ্গীতা ভারতী নামে একটি বেসরকারি সংস্থার সভাপতিত্ব করেন।

তিরুবনন্তপুরমের কাত্তাকাদায় পঙ্কজা কস্তুরি আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজে সঙ্গীত চিকিৎসা বিভাগের বরিষ্ঠ অনুষদ হিসেবেও কে ওমানাকুট্টি কাজ করছেন। তিনি তিরুবনন্তপুরম-ভিত্তিক সঙ্গীতা ভারতীর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং সেক্রেটারিও। তাঁর শিষ্যদের মধ্যে আছেন কে এস চিত্রা, বি অরুন্ধতী, কে এস হরিশঙ্কর, মঞ্জরি, কে এস রেশমি প্রমুখ।

তাঁর বড় ভাই, এম জি রাধাকৃষ্ণন মালয়ালম চলচ্চিত্র শিল্পে একজন সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন এবং তাঁর ছোট ভাই, এম জি শ্রীকুমার একজন নেপথ্য গায়ক।

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা

কে ওমানাকুট্টি ১৯৪৩ সালে কেরালার হরিপাড়ের কাছে, সঙ্গীতশিল্পীদের একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা, মালাবার গোপালন নায়ার, একজন হারমোনিয়াম বাদক এবং কর্নাটকী সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন, যিনি দক্ষিণ ভারত জুড়ে মঞ্চ অনুষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত থাকতেন। তাঁর মা মেদায়িল কমলাক্ষী আম্মাও একজন কর্নাটকী সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন।

গ্রামের একটি স্কুলে কে ওমানাকুট্টির প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা হয়েছিল। পরে ১৯৬৩ সালে, তিনি কেরালা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি ডিগ্রি কলেজ থেকে প্রাণিবিদ্যায় স্নাতক সম্পন্ন করেন। সঙ্গীতের প্রতি তাঁর আগ্রহের কারণে, তিনি তিরুবনন্তপুরম-ভিত্তিক মিউজিক একাডেমিতে সঙ্গীতে গণ প্রবীণা কোর্স করার জন্য যোগদান করেন। এরপর, ওমানাকুট্টি তিরুবনন্তপুরমের সরকারি মহারাজা কলেজ ফর উইমেনের সঙ্গীত বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কাজ শুরু করেন। কলেজের সঙ্গীত বিভাগে কাজ করার সময়, তিনি সঙ্গীতে তাঁর খণ্ডকালীন ডিগ্রি কোর্স সম্পন্ন করেন। এই যোগ্যতা অর্জন করার পর, ওমানাকুট্টি কলেজের একই বিভাগে দ্বিতীয় শ্রেণীর অধ্যাপক হন। এই পদে তিনি ৬ বছর ধরে ছিলেন।

শিক্ষাবিদ এবং সঙ্গীত ক্ষেত্রে তাঁর দ্বারা প্রদত্ত মানসম্পন্ন পরিষেবার স্বীকৃতিস্বরূপ, ওমানাকুট্টি একই বিভাগে সঙ্গীতের প্রথম শ্রেণীর অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। এই সময়ের মধ্যে, আজকের অনেক স্বনামধন্য সঙ্গীতশিল্পী এই কোর্সে যোগদান করেন এবং বিভাগ থেকে সঙ্গীত বিষয়ে তাঁদের আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন করেন। পরবর্তীকালে, তিনি সফলভাবে একই বিভাগ থেকে সঙ্গীত ক্ষেত্রে তাঁর স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরাল প্রোগ্রাম করেছেন। তাঁর ডক্টরেট ডিগ্রি প্রোগ্রামের জন্য, তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল কেরালায় কথাকলি সঙ্গীতের উৎপত্তি এবং বিবর্তন।

ডিগ্রী:

• পিএইচ.ডি. (কথাকলি সঙ্গীতের উৎপত্তি এবং বিবর্তন), কেরালা বিশ্ববিদ্যালয়
• এমএ (সঙ্গীত), কেরালা বিশ্ববিদ্যালয়, ১ম স্থান
• বিএ (সংগীত), কেরালা বিশ্ববিদ্যালয়, ১ম স্থান
• গণপ্রবীণা, স্বাতী তিরুনাল কলেজ অফ মিউজিক, তিরুবনন্তপুরম, কেরালা
• বি.এসসি (প্রাণীবিদ্যা), কেরালা বিশ্ববিদ্যালয়।

কর্মজীবন

সঙ্গীতজ্ঞ

গভর্নমেন্ট কলেজ ফর উইমেন-এ সঙ্গীতের বরিষ্ঠ অনুষদ হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন এই শিল্পী নিয়মিতভাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সঙ্গীতানুষ্ঠানে অংশ নিতেন। এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময়, ওমানাকুট্টি সুরকার-সংগীতশিল্পী রাজা স্বাতী থিরুনালের কাজগুলি দেখতে পান। সেই সময়ে, রাজার অনেক কাজ বিস্মৃতিতে পড়ে ছিল। শিষ্যদের সাহায্য নিয়ে, ওমানাকুট্টি রাজার কাজগুলি বিশ্লেষণ করেছিলেন এবং সেগুলিকে বর্তমান সময়ের দর্শকদের কাছে উপস্থাপনযোগ্য করার জন্য রেখেছিলেন। পরে, তিনি এবং তাঁর শিষ্যরা তাঁদের অনুষ্ঠানে স্বাতী থিরুনালের রচনাগুলিকে জনপ্রিয় করার জন্য ব্যবহার করতে শুরু করেন। এই সময়ের মধ্যে এমন একটি আবিষ্কার করা হয়েছিল যা ছিল তিল্লানার (দক্ষিণ ভারতীয় কর্নাটকী সঙ্গীতের ছন্দময় অংশ যা সাধারণত একটি সঙ্গীতানুষ্ঠানের শেষে পরিবেশিত হয়) উপর একটি কাজ, যা স্বাতী থিরুনালের একটি রচনা।

সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে তাঁর পরবর্তী বছরগুলিতে, তিনি মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীদের মানসিকতার উপর সঙ্গীতের প্রভাব উপলব্ধি করেছিলেন। এই বিষয়ে উপলব্ধ সংস্থানগুলি পড়ার পরে, তিনি সঙ্গীতের এই অনাবিষ্কৃত ক্ষেত্রে তাঁর অবশিষ্ট সময় ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি সঙ্গীতা ভারতী নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। সঙ্গীত চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা করার পাশাপাশি, এটি রাজ্যের উদীয়মান সঙ্গীতশিল্পীদের সঙ্গীত প্রশিক্ষণ দেয়। তিরুবনন্তপুরমের পঙ্কজা কস্তুরি আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের কর্তৃপক্ষ সঙ্গীতের মাধ্যমে চিকিৎসা নিরাময়ে সহায়তা করার জন্য তাঁকে সংগঠনের বরিষ্ঠ অনুষদের মর্যাদা দিয়েছে।

কে ওমানাকুট্টি বিশ্বজুড়ে স্বাতী থিরুনালের রচনাগুলিকে জনপ্রিয় করার অংশ হিসাবে ৩০০টিরও বেশি সঙ্গীতানুষ্ঠান করেছেন, বিশেষত স্বাতী থিরুনাল কৃতিস।

এখন, কেরালা সরকারের সামাজিক বিচার বিভাগের অধীনে, প্রতি মাসে সেখানে থাকা বন্দীদের মানসিক শান্তির জন্য পূজাপুরা এবং পুলায়নারকোট্টা বৃদ্ধাশ্রমের বন্দীদের জন্য সঙ্গীত চিকিৎসা প্রয়োগ করা হচ্ছে।

কর্ম পরিবেশ

ওমানাকুট্টির সঙ্গীতে প্রভাষক এবং অধ্যাপক হিসাবে ৩৭ বছর শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি ২০০৩ সালে কেরালা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগ থেকে অধ্যাপক এবং সঙ্গীত বিভাগের প্রধান হিসাবে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

ব্যক্তিগত জীবন

ওমানাকুট্টির স্বামী সাংসদ গোপিনাথন নায়ার ছিলেন অল ইণ্ডিয়া রেডিওর প্রধান প্রকৌশলী। তাঁর একমাত্র মেয়ে কমলা লক্ষ্মী এবং জামাতা কে এস শ্রীকুমারও সঙ্গীতশিল্পী। ওমানাকুট্টির নাতি-নাতনি, কে এস হরিশঙ্কর একজন নেপথ্য গায়ক এবং কে এস রবিশঙ্কর একজন বেহালাবাদক।

পুরস্কার

• ১৯৯৭ – কেরালা সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার (শাস্ত্রীয় সঙ্গীত)
• ২০১২ – কেরালা সঙ্গীত নাটক আকাদেমি ফেলোশিপ (শাস্ত্রীয় সঙ্গীত)
• ২০১৩ – সুব্বুলক্ষ্মী পুরস্কার
• ২০২০ – স্বাতী সঙ্গীতা পুরস্কার