বিষয়বস্তুতে চলুন

পানি দূষণ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সবুজাভ (আলাপ)-এর সম্পাদিত 4988083 নম্বর সংশোধনটি বাতিল করা হয়েছে ; OR (mobileUndo)
ট্যাগ: পূর্বাবস্থায় ফেরত মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{কাজ চলছে/২০২১}}[[চিত্র:Nrborderborderentrythreecolorsmay05-1-.JPG|thumb|right|300px|মেক্সিকো থেকে [[নিউ রিভার]] দ্বারা বাহিত হয়ে [[শিল্প বর্জ্য|শিল্প বর্জ্যের]] আমেরিকায় প্রবেশ ]]সাধারণত মানুষের কার্যকলাপের ফলে জলাশয় দূষিত হয়ে পড়লে তাকে পানি দূষণ বা জল দূষণ বলে। উদাহরণস্বরূপ, জলাশয় বলতে হ্রদ, নদী, সমুদ্র, ভূগর্ভস্থ সিক্ত শিলাস্তর এবং ভৌমজলকেই বোঝায়। স্বাভাবিক পরিবেশে দূষণকারী পদার্থ উপস্থিত হলে জলদূষণ হয়। উদাহরণস্বরূপ, অপর্যাপ্তভাবে পরিশোধিত বর্জ্যজল যদি স্বাভাবিক জলাশয়ে জমা হয়, তবে তা জলজ বাস্তুতন্ত্রের পরিবেশগত অবনতি ঘটাতে পারে। এর ফলে, ভাটির দিকে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে জনস্বাস্থ্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তারা এই দূষিত জল পান করার কাজে, স্নানের কাজে অথবা সেচের কাজে ব্যবহার করতে পারে। জলবাহিত রোগের প্রকোপে সারা বিশ্বে যত মানুষ আক্রান্ত হয় বা মারা যায়, তাদের সিংহভাগই ঘটে জল দূষণের কারণে।
{{কাজ চলছে/২০২১}}[[চিত্র:Nrborderborderentrythreecolorsmay05-1-.JPG|thumb|right|300px|মেক্সিকো থেকে [[নিউ রিভার]] দ্বারা বাহিত হয়ে [[শিল্প বর্জ্য|শিল্প বর্জ্যের]] আমেরিকায় প্রবেশ ]]


জলদূষণকে ভূ-পৃষ্ঠতলীয় জল বা ভৌমজল দূষণ – এই দুইভাগে বিভক্ত করা যায়। সামুদ্রিক দূষণ এবং পুষ্টি দূষণ – জল দূষণের এই দুটি উপসেট। জল দূষণের উৎস দুটি হতে পারে - হয় বিন্দু উৎস নতুবা অ-বিন্দু উৎস। বিন্দু উৎসে দূষণের একটিমাত্র চিহ্নিতযোগ্য কারণ থাকে, যেমন বেনো জল বা বর্জ্যজল পরিশোধক কারখানা। অ-বিন্দু উৎস হল আরো বেশি বিস্তৃত, যেমন কৃষিজ জল। বহু সময় ধরে ক্রমবর্দ্ধিত কাজের ফলেই দূষণ সৃষ্টি হয়। দূষিত জলাশয়ে থাকা অথবা এর সংস্পর্শে আসা সমস্ত গাছ এবং জীবই এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দূষণের ফলে একক প্রজাতিগুলো ধ্বংস হতে পারে এবং এরা যে স্বাভাবিক জৈব সংগঠনের অন্তর্গত তারও ক্ষতি হতে পারে।
'''পানি দূষণ''' বা '''জলদূষণ''' বলতে পানিতে বা জলে কোন বিষাক্ত দ্রব্য অথবা দূষিত বর্জ্য পদার্থ মিশ্রণের ফলে মানব ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকে বোঝায়।


জল দূষণের কারণ হিসেবে প্রচুর রাসায়নিক এবং রোগজীবাণুর কথা বলা যেতে পারে; তাছাড়া অনেক ভৌত স্থিতিমাপও রয়েছে। দূষকগুলো জৈব অথবা অজৈব পদার্থের হতে পারে। উচ্চ তাপমাত্রাও দূষিত জলের কারণ হতে পারে। তাপীয় দূষণের একটি সাধারণ কারণ হল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং শিল্পোৎপাদন কেন্দ্রে কুল্যান্ট হিসেবে জলের ব্যবহার। উচ্চ জলীয় তাপমাত্রা অক্সিজেনের মাত্রা কমিয়ে দেয় যার ফলে মাছ মারা যায় এবং খাদ্যশৃঙ্খলের উপাদানও পরিবর্তিত হয়, প্রজাতির বাস্তুতন্ত্র কমে আসে, এবং এর ফলে তাপের ফলে সৃষ্ট ব্যাকটিরিয়ার নতুন প্রজাতির উদ্ভব হয়।
'''পানি দূষণ''' বা '''জলদূষণ''' হল জলাশয়ের দূষণ (উদ্যান, নদী, মহাসাগর, জলজ এবং ভূগর্ভস্থ জল)। পরিবেশগত অবনতি এই ফর্ম যখন দূষণকারী সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ক্ষতিকারক যৌগ '''পানিতে''' বা '''জলে''' অপসারণ হয় তখন তা '''পানি''' বা '''জলে''' মিশ্রণের ফলে মানব ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে উঠে, আর এটাকেই বলে '''পানি দূষণ''' বা '''জলদূষণ'''।


জলের নমুনা বিশ্লেষণ করে জল দূষণ পরিমাপ করা হয়। ভৌত, রাসায়নিক এবং জৈব পরীক্ষা করা হতে পারে। সঠিক পরিকাঠামো এবং পরিচালনা পরিকল্পনার দ্বারাই জল দূষণকে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। পরিকাঠামোর মধ্যে থাকতে পারে বর্জ্যজল পরিশোধক কারখানা। বর্জ্যনিকাশী পরিশোধক কারখানা এবং শিল্পজাত বর্জ্যজলের পরিশোধক কারখানা অশোধিত বর্জ্যজলের হাত থেকে জলাশয়গুলোকে রক্ষা করতে পারে। কৃষিখামারের ক্ষেত্রে কৃষিজ বর্জ্যজল পরিশোধন এবং নির্মাণ স্থানে ভূমিক্ষয় রোধের ব্যবস্থাও জলদূষণ প্রতিরোধ করতে পারে। জল দূষণ রোধের আরেকটি উপায় হল প্রকৃতি-কেন্দ্রিক সমাধান। স্রোতের গতি এবং এর পরিমাণ কমিয়ে শহরের নিকাশী ব্যবস্থার কার্যকরী নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মার্কিং যুক্তরাষ্ট্রে, ''জল দূষণের জন্য সেরা পরিচালনা ব্যবস্থা'' হিসেবে জলের পরিমাণ কমানো এবং জলের মান উন্নত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
পানি দূষণ পুরো জীববৈচিত্রকে প্রভাবিত করে।এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জীবিত জীব ও উদ্ভিদ। প্রায় সব ক্ষেত্রেই এই প্রভাবটি কেবলমাত্র পৃথক প্রজাতি এবং জনসংখ্যার জন্যই যে ক্ষতিগ্রস্থ তা নয়, বরং প্রাকৃতিক অন্যান্য উপাদানসমূহ ও প্রভাবিত হচ্ছে।
'''জল দূষণ''' একটি প্রধান বৈশ্বিক সমস্যার কারণ যা চলমান মূল্যায়ন এবং পানি সম্পদের নীতিমালার সমস্ত স্তরের (আন্তর্জাতিক জলাধার এবং আন্তর্জাতিক কুয়োগুলি থেকে নিচে) পর্যায়ক্রমিকতার প্রয়োজন। এটি প্রমাণিত হয়েছে যে পানি দূষণ বিশ্বজুড়ে মৃত্যু এবং রোগের প্রধান কারণ। শুধুমাএ পানি দূষণের কারণেই প্রতিদিনই বিশ্বে প্রায় '''১৪০০''' এরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়।বাংলাদেশে আনুমানিক '''৮০ জন''' মানুষ পানি দূষণ সম্পর্কিত অসুস্থতা প্রতিদিনই মারা যায়।চীন শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ জল দূষিত হয়। ২০০৭ সালের হিসাবে, আধা-বিশ্বে চীনাদের নিরাপদ পানীয় জলের ব্যবহার ছিল না।বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো পানি দূষণ তীব্র সমস্যা ছাড়াও, উন্নত দেশগুলিও দূষণ সমস্যাগুলির সাথে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পানির গুণমানের সবচেয়ে সাম্প্রতিক জাতীয় প্রতিবেদনে ৪৪% মূল্যায়নকৃত স্ট্রিম মাইল, ৬৪% মূল্যায়নকৃত হ্রদ একর এবং ৩০% মূল্যায়ন ব্যাস এবং এস্তুয়ারাইন বর্গ মাইলগুলি দূষিত হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়।


== ভূমিকা ==
'''পানি দূষকের শ্রেণিবিভাগ''' (Classification of Water Pollutants)
জল যদি মানুষবাহিত দূষক দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে সেই জলকে দূষিত বলা হয়। এইসকল দূষকের ফলে এই জল হয় মানুষের ব্যবহারের যোগ্য হতে পারে না, যেমন জলপানের অযোগ্য হয়ে যায়, অথবা এই জলের জীবগোষ্ঠী ধারণের ক্ষমতাই নষ্ট হয়ে যায়, যেমন মাছ। আগ্নেয়গিরি, শৈবাল পুষ্প, ঝড়, ভূমিকম্প ইত্যাদি প্রাকৃতিক ঘটনার ফলেও জলের গুণাগুণে এবং এর বাস্তুতান্ত্রিক অবস্থায় প্রভূত পরিবর্তন দেখা দেয়।


জল দূষণ একটি বিশ্বব্যাপী গুরুতর সমস্যা। এর জন্য সর্বস্তরে (আন্তর্জাতিক স্তর থেকে ব্যক্তিগত ভূগর্ভস্থ সিক্ত শিলাস্তর এবং কুয়ো) জলসম্পদ নীতির মূল্যায়ন এবং পুনর্মূল্যায়ন জরুরী। মনে করা হয়, বিশ্বে যত রোগ ও মৃত্যু হয়, তার মুখ্য কারণ হল জল দূষণ। ২০১৫ সালে ১৮ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী ছিল জল দূষণ।
পানি যার দ্বারা দূষিত হয়, তাকে দূষক বলে। প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে দুষককে দু’ভাগে ভাগ করা যায়; যথা-


বৈশ্বিক সামুদ্রিক পরিবেশগত সমীক্ষা নামক সংস্থার মতে জল দূষণ হল অন্যতম প্রধান একটি পরিবেশগত সমস্যা যেটা পরবর্তী দশকগুলোতে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্বকে সংকটে ফেলে দিতে পারে। ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন যেগুলো ৭০% অক্সিজেন উৎপন্ন করে এবং পৃথিবীর কার্বন-ডাই-অক্সাইডের একটি বড়ো অংশ শোষণ করে, জল দূষণ তাদের জন্য একটি অন্যতম সমস্যা। এই পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য সংস্থা থেকে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, কিন্তু সেগুলো কার্যকরী হতে দশ বছর সময় লাগবে।
(১) তরল বর্জ্য পদার্থ (যেমন- মূত্র, বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক, এসিড, পারদ ইত্যাদি) ও


ভারত এবং চীন এই দুই দেশে জল দূষণের মাত্রা অত্যন্ত বেশি। ভারতে প্রতিদিন আনুমানিক ৫৮০জন মানুষ জল দূষণজনিত রোগে (জলবাহিত রোগসমেত) মারা যায়। চীনের শহরের জলের প্রায় ৯০ শতাংশই দূষিত। ২০০৭ সালের হিসেবানুযায়ী, চীনের পাঁচ লক্ষ মানুষ নিরাপদ পানীয় জলের থেকে বঞ্চিত।
(২) কঠিন বর্জ্য পদার্থ্ (যেমন- বিভিন্ন প্রকার লবণ, ধাতব পদার্থ, বিভিন্ন প্রকার সার ইত্যাদি)।


উন্নয়নশীল দেশের এই চূড়ান্ত জল দূষণের পাশাপাশি, উন্নত দেশগুলোও কিন্তু দূষণজনিত সমস্যা নিয়ে লড়াই করে চলেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৯ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জলের মান রিপোর্টে বলা হয়েছে যে যত মাইল প্রবাহের মূল্যায়ন করা হয়েছে তার ৪৪ শতাংশ, মূল্যায়িত হ্রদের একরের ৬৪ শতাংশ এবং উপসাগর ও মোহনার স্কোয়্যার মাইলের ৩০ শতাংশকে দূষিত বলে জানানো হয়েছে।
আবার, পচন ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে দূষককে দুভাগে ভাগ করা যায়; যথা-


== প্রকারভেদ ==
(১) পচনশীল বর্জ্য (যেগুলো বিয়োজক দ্বারা বিয়োজিত হয়ে পরিবেশে ফিরে যেতে পারে, যেমন- উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃত দেহ, প্রাণীর মলমূত্র ইত্যাদি) এবং


=== ভূ-পৃষ্ঠতলীয় জল দূষণ ===
(২) অপনশীল বর্জ্য (যেগুলো বিয়োজক দ্বারা বিয়োজিত হয়ে পরিবেশে ফিরে যেতে পারে না, যেমন- ডিডিটি)।
{{Bar chart|title=বিভিন্ন ধরনের খাদ্যে প্রতি ১০০ গ্রাম প্রোটিনের [[ইউট্রোফিকেশন|ইউট্রোফাইং নির্গমনের]] (জল দূষণ) মধ্যমান <ref name="Nemecek 987–992">{{Cite journal |last1=Nemecek |first1=T. |last2=Poore |first2=J. |date=2018-06-01 |title=Reducing food's environmental impacts through producers and consumers |url=https://science.sciencemag.org/content/360/6392/987 |journal=Science |volume=360 |issue=6392 |pages=987–992 |doi=10.1126/science.aaq0216|issn=0036-8075|pmid=29853680|doi-access=free |bibcode=2018Sci...360..987P }}</ref>|label6=[[শুয়োরের মাংস]]|label13=|data12=|label12=|data11=6.2|label11=[[তোফু]]|data10=7.5|label10=[[মটরশুঁটি]]|data9=14.1|label9=[[ফাবয়ডিয়|চীনাবাদাম]]|data8=21.8|label8=[[খাদ্য হিসেবে ডিম|ডিম]]|data7=48.7|label7=[[মুরগী খামার]]|data6=76.4|data5=97.1|float=right|label5=[[ভেড়া ও ভেড়ার মাংস|ভেড়া ও ভেড়ার মাংস]]|data4=98.4|label4=[[পনীর]]|data3=227.2|label3=[[জলজ চাষ|চাষ করা ক্রাস্টাসিয়ানস]]|data2=235.1|label2=[[জলজ চাষ|চাষ করা মাছ]]|data1=365.3|label1=[[গরুর মাংস]]|data_max=360|width_units=em|bar_width=20|data_type=ইউট্রোফিকেশন নির্গমন (প্রতি ১০০ গ্রাম প্রোটিনে গ্রাঃ PO<sub>4</sub><sup>3-</sup>eq)|label_type=খাদ্য প্রকৃতি|data13=}}
ভূপৃষ্ঠতলীয় জল দূষণের মধ্যে রয়েছে নদী, হ্রদ এবং সমুদ্রের দূষণ। ভূপৃষ্ঠতলীয় জল দূষণের একটি বিভাগ হল সামুদ্রিক দূষণ।


=== সামুদ্রিক দূষণ ===
এছাড়া দুষকের উৎসের উপর ভিত্তি করে দুষককে দু’ভাগে ভাগ করা যায়; যথা-
সমুদ্রে দূষিত পদার্থের আগমনের একটি সাধারণ পথ হল নদীর জল। এর একটি উদাহরণ হল, নর্দমার জল এবং কারখানার বর্জ্য সরাসরি সমুদ্রে গিয়ে ফেলা। উন্নয়নশীল দেশগুলোতেই বিশেষ করে এই ধরনের দূষণ দেখা যায়। বাস্তবিক, সারা বিশ্বের ১০টি সর্ববৃহৎ সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণকারী দেশকে বেশি থেকে কম এই ক্রমে সাজালে হয় – চীন, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনস্‌, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, মিশর, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া এবং বাংলাদেশ; যেসকল নদীগুলোর মাধ্যমে সমুদ্র দূষিত হয় তারা হল ইয়াঙ্গটজে, সিন্ধু, পীতনদী, হাই, নীল, গঙ্গা, পার্ল, আমুর, নাইজের ও মেকং এবং “পৃথিবীতে সমুদ্রে যত প্লাস্টিক জমা হয়, তার ৯০শতাংশ এইসকল নদীগুলো দ্বারা বাহিত হয়”।


প্লাস্টিক আবর্জনা সমুদ্রের বড় বড় বলয়ের (ঘুর্ণি) মধ্যে আটকে পড়ে। প্লাস্টিক আবর্জনাগুলো সামুদ্রিক দূষণে সৃষ্ট বিষাক্ত পদার্থগুলোকে শোষণ করে নেয় যার ফলে সামুদ্রিক জীব এগুলো খেয়ে ফেললে তাদের শরীরেও বিষ প্রবেশ করতে পারে। এইসকল দীর্ঘজীবী পদার্থগুলো অনেক সময়েই শেষমেশ সামুদ্রিক পাখি এবং প্রাণীদের পেটে চলে যায়। এর ফলে তাদের হজমের পথ আটকে যায়, যার ফলে তাদের খিদে কমে যায় অথবা এর থেকে তারা অনাহারেও ভুগতে পারে।
(১) প্রাকৃতিক দুষক ও


মূল দূষক ছাড়াও, তার লব্ধ পরিস্থিতিরও অনেক ধরনের অপ্রত্যক্ষ প্রভাব থাকে। যেমন ভূপৃষ্ঠে জলের স্রোতে পলি ভেসে থাকলে জলস্তম্ভের মধ্যে দিয়ে সূর্যরশ্মি প্রবেশ করতে পারে না এবং এর ফলে জলজ উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। {{পানি}}
(২) মনুষ্যসৃষ্ট দূষক।

দুষকের উৎস, স্বভাব, প্রকৃতিতে এদের প্রভাব ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে পানি দূষককে নিম্নলিখিতভাবে ভাগ করা যায় :
{| class="wikitable sortable mw-collapsible mw-collapsed"
|+
|ক্রমিক
|পানি দূষকের শ্রেণী
|উদাহরণ
|-
|১
|পরিপোষক
|জৈব : মানুষ ও প্রাণীর বর্জ্য, লিটার, তলানি।

অজৈব : নাইট্রোজেন, ফসফরাস, ডিটারজেন্ট।
|-
|২
|রোগজীবাণু
|রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, প্রোটোজোয়া, প্যারাসাইট ইত্যাদি।
|-
|৩
|বিষাক্ত জৈব দূষক
|কীটপতঙ্গনাশক, পলিক্লোরিনেটেড বাইফিনাইল, পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক, হাইড্রোকার্বন, পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি।
|-
|৪
|বিষাক্ত অজৈব দূষক
|ধাতব লবণ, পারদ, সীসা, তামা, ক্যাডিয়াম, ক্রোমিয়াম, আর্সেনিক, নাইট্রেট, নাইট্রাইট ইত্যাদি।
|-
|৫
|তলানি বা গাদ
|
|-
|৬
|তাপ
|
|}

== ফলাফল ==

== কারন ==
১. শিল্প-কারখানার পরিত্যক্ত বর্জ্য পানিতে মিশে পানি দূষিত করে।



২. পেট্রোলিয়াম জাতীয় রাসায়নিক শিল্প, খনিজ তেল পরিশোধন শিল্প ও বিভিন্ন রাসায়নিক শিল্পে প্রচুর পরিমাণে দূষিত রাসায়নিক পদার্থ যেমন অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড, সায়ানাইড, পারদ, সিসা ইত্যাদি পানিতে মিশে পানিকে দূষিত করে।

৩.  বাসাবাড়ির পরিত্যক্ত ময়লা-আবর্জনা (যেমন দৈনন্দিন রান্নার কাজে ব্যবহৃত পানি,গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত পানি দৈনন্দিন রান্না বস্তু, গৃহস্থলীর কাজে ব্যবহৃত পানি, গবাদিপশুর স্নান জামা কাপড় কাচার পানি এবং হোটেল-রেস্তোরাঁর ব্যবহৃত পানি প্রভৃতি । খাদ্যদ্রব্যে ও শাকসবজিরফেলে দেওয়া অংশ পঁচা অংশ এবং হোটেল-রেস্তোরাঁর পানি হৃদ, পুকুর,নদী ও সাগরের পানিতে মিশে পানি দূষিত করে।

৪.তেলবাহী জাহাজ থেকে তেল পানির সাথে মিশে অথবা সমুদ্রে অবস্থিত তেলের খনি থেকে তেল আহরণের সময় পানির সাথে তেল মিশে পানিকে দূষিত করে।

৫. কৃষিক্ষেত্রে পানিদূষন( যেমন চাষের ক্ষেতে বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক সার কীটনাশক বালাইনাশক আগাছানাশক প্রভৃতি জমিতে প্রয়োগ করার ফলে সেগুলো পানিতে মিশিয়ে পানি দূষণ ঘটায়

৬.তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বিভিন্ন কলকারখানায় ব্যবহৃত উঞ্চ বর্জ্য পানিতে পানির সাথে মিশে অক্সিজেনের ঘাটতির সৃষ্টি করে এবং পানি দূষিত করে।



5. পারমাণবিক চুল্লি , বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় পদার্থ গুলো সমুদ্র বা নদীর পানিতে ফেলা হয় যার ফলে পানি দূষিত হয়।




৬.তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত উষ্ণ দূষিত পানি,ও বর্জ্য পদার্থ পরিশোধন না করেই পানিতে ফেলা হয় যার ফলে পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় এবং পানি দূষিত হয়।



৭. মাটির নিচের স্তর হতে প্রবল চাপে অধিক পানি উত্তোলণের ফলে মাটির নিচে ফাঁকা জায়গার সৃষ্টি হয়। এই ফাঁকা জায়গায় আর্সেনিকের সাথে বাতাসের বিক্রিয়ায় শক্ত ধাতব যৌগ তৈরি করে পানিকে দূষিত করে।

৮. পারমাণবিক চুল্লিএবং বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার তেজস্ক্রিয় পদার্থ নদী বা সাগরের পানিতে ফেলা হয়। যার ফলে পানি দূষিত হয়।

==জলবাহিত রোগ ==
দূষিত&nbsp;[[জল]]&nbsp;বা পানি পান করার মাধ্যমে অথবা সেই জল রান্না বা অন্যান্য কার্যে ব্যবহার করার ফলে বিভিন্ন ধরনের ব্যাধি সংক্রামিত হয়ে থাকে। এই ধরনের অসুখ সাধারণত জলে বিচরণশীল রোগসৃষ্টিকারী&nbsp;জীবাণুদের&nbsp;দ্বারা সংঘটিত হয়।&nbsp;[[বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা|বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার]]&nbsp;পরিসংখ্যান অনুসারে প্রত্যেক বছর পৃথিবীতে প্রায় দশ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হল&nbsp;'''[[জলবাহিত রোগ]]'''। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে এই রোগ সংক্রমণের মূল কারণ হল উন্নয়নশীল দেশগুলিতে অপরিশুদ্ধ জল সরবরাহ এবং পরিচ্ছনতার অভাব। এর ফলে আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাধিক্য লক্ষ্যণীয়। কেবল তাই নয়, ভারতীয় উপমহাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সকল উন্নয়নশীল দেশের গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যসচেতনতার প্রভূত অভাব পরিলক্ষিত হয়। সাধারণত উক্ত অঞ্চলসমূহের মানুষ বিভিন্ন জলাশয়ের জল পান করে থাকে এবং রন্ধনকার্যেও তা ব্যবহার করে। আবার স্নান, কাপড় কাচা এবং গবাদি পশুর স্নানাদিও সেই একই জলাশয়ে সম্পন্ন হয়ে থাকে। ফলত জলাশয়ের জল দূষিত হয় এবং সেই জল মানবশরীরে প্রবেশ করার ফলে বিবিধ প্রকার জলবাহিত রোগও দূষিত জলের মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রামিত হয়। এইভাবে এইসমস্ত অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে আন্ত্রিক, ইত্যাদি রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়।বাংলাদেশে পানিবাহিত যে সকল রোগ লক্ষ্যনীয় তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ
* ডায়রিয়া,
* আমাশয়,
* পোলিও,
* হিপাটাইটিস এ ও ই,
* টাইফয়েড,
* প্যারাটাইপয়েড ইত্যাদি
{{পানি}}
{{অসম্পূর্ণ}}
{{অসম্পূর্ণ}}



১৭:১৮, ৫ এপ্রিল ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

মেক্সিকো থেকে নিউ রিভার দ্বারা বাহিত হয়ে শিল্প বর্জ্যের আমেরিকায় প্রবেশ

সাধারণত মানুষের কার্যকলাপের ফলে জলাশয় দূষিত হয়ে পড়লে তাকে পানি দূষণ বা জল দূষণ বলে। উদাহরণস্বরূপ, জলাশয় বলতে হ্রদ, নদী, সমুদ্র, ভূগর্ভস্থ সিক্ত শিলাস্তর এবং ভৌমজলকেই বোঝায়। স্বাভাবিক পরিবেশে দূষণকারী পদার্থ উপস্থিত হলে জলদূষণ হয়। উদাহরণস্বরূপ, অপর্যাপ্তভাবে পরিশোধিত বর্জ্যজল যদি স্বাভাবিক জলাশয়ে জমা হয়, তবে তা জলজ বাস্তুতন্ত্রের পরিবেশগত অবনতি ঘটাতে পারে। এর ফলে, ভাটির দিকে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে জনস্বাস্থ্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তারা এই দূষিত জল পান করার কাজে, স্নানের কাজে অথবা সেচের কাজে ব্যবহার করতে পারে। জলবাহিত রোগের প্রকোপে সারা বিশ্বে যত মানুষ আক্রান্ত হয় বা মারা যায়, তাদের সিংহভাগই ঘটে জল দূষণের কারণে।

জলদূষণকে ভূ-পৃষ্ঠতলীয় জল বা ভৌমজল দূষণ – এই দুইভাগে বিভক্ত করা যায়। সামুদ্রিক দূষণ এবং পুষ্টি দূষণ – জল দূষণের এই দুটি উপসেট। জল দূষণের উৎস দুটি হতে পারে - হয় বিন্দু উৎস নতুবা অ-বিন্দু উৎস। বিন্দু উৎসে দূষণের একটিমাত্র চিহ্নিতযোগ্য কারণ থাকে, যেমন বেনো জল বা বর্জ্যজল পরিশোধক কারখানা। অ-বিন্দু উৎস হল আরো বেশি বিস্তৃত, যেমন কৃষিজ জল। বহু সময় ধরে ক্রমবর্দ্ধিত কাজের ফলেই দূষণ সৃষ্টি হয়। দূষিত জলাশয়ে থাকা অথবা এর সংস্পর্শে আসা সমস্ত গাছ এবং জীবই এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দূষণের ফলে একক প্রজাতিগুলো ধ্বংস হতে পারে এবং এরা যে স্বাভাবিক জৈব সংগঠনের অন্তর্গত তারও ক্ষতি হতে পারে।

জল দূষণের কারণ হিসেবে প্রচুর রাসায়নিক এবং রোগজীবাণুর কথা বলা যেতে পারে; তাছাড়া অনেক ভৌত স্থিতিমাপও রয়েছে। দূষকগুলো জৈব অথবা অজৈব পদার্থের হতে পারে। উচ্চ তাপমাত্রাও দূষিত জলের কারণ হতে পারে। তাপীয় দূষণের একটি সাধারণ কারণ হল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং শিল্পোৎপাদন কেন্দ্রে কুল্যান্ট হিসেবে জলের ব্যবহার। উচ্চ জলীয় তাপমাত্রা অক্সিজেনের মাত্রা কমিয়ে দেয় যার ফলে মাছ মারা যায় এবং খাদ্যশৃঙ্খলের উপাদানও পরিবর্তিত হয়, প্রজাতির বাস্তুতন্ত্র কমে আসে, এবং এর ফলে তাপের ফলে সৃষ্ট ব্যাকটিরিয়ার নতুন প্রজাতির উদ্ভব হয়।

জলের নমুনা বিশ্লেষণ করে জল দূষণ পরিমাপ করা হয়। ভৌত, রাসায়নিক এবং জৈব পরীক্ষা করা হতে পারে। সঠিক পরিকাঠামো এবং পরিচালনা পরিকল্পনার দ্বারাই জল দূষণকে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। পরিকাঠামোর মধ্যে থাকতে পারে বর্জ্যজল পরিশোধক কারখানা। বর্জ্যনিকাশী পরিশোধক কারখানা এবং শিল্পজাত বর্জ্যজলের পরিশোধক কারখানা অশোধিত বর্জ্যজলের হাত থেকে জলাশয়গুলোকে রক্ষা করতে পারে। কৃষিখামারের ক্ষেত্রে কৃষিজ বর্জ্যজল পরিশোধন এবং নির্মাণ স্থানে ভূমিক্ষয় রোধের ব্যবস্থাও জলদূষণ প্রতিরোধ করতে পারে। জল দূষণ রোধের আরেকটি উপায় হল প্রকৃতি-কেন্দ্রিক সমাধান। স্রোতের গতি এবং এর পরিমাণ কমিয়ে শহরের নিকাশী ব্যবস্থার কার্যকরী নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মার্কিং যুক্তরাষ্ট্রে, জল দূষণের জন্য সেরা পরিচালনা ব্যবস্থা হিসেবে জলের পরিমাণ কমানো এবং জলের মান উন্নত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ভূমিকা

জল যদি মানুষবাহিত দূষক দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে সেই জলকে দূষিত বলা হয়। এইসকল দূষকের ফলে এই জল হয় মানুষের ব্যবহারের যোগ্য হতে পারে না, যেমন জলপানের অযোগ্য হয়ে যায়, অথবা এই জলের জীবগোষ্ঠী ধারণের ক্ষমতাই নষ্ট হয়ে যায়, যেমন মাছ। আগ্নেয়গিরি, শৈবাল পুষ্প, ঝড়, ভূমিকম্প ইত্যাদি প্রাকৃতিক ঘটনার ফলেও জলের গুণাগুণে এবং এর বাস্তুতান্ত্রিক অবস্থায় প্রভূত পরিবর্তন দেখা দেয়।

জল দূষণ একটি বিশ্বব্যাপী গুরুতর সমস্যা। এর জন্য সর্বস্তরে (আন্তর্জাতিক স্তর থেকে ব্যক্তিগত ভূগর্ভস্থ সিক্ত শিলাস্তর এবং কুয়ো) জলসম্পদ নীতির মূল্যায়ন এবং পুনর্মূল্যায়ন জরুরী। মনে করা হয়, বিশ্বে যত রোগ ও মৃত্যু হয়, তার মুখ্য কারণ হল জল দূষণ। ২০১৫ সালে ১৮ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী ছিল জল দূষণ।

বৈশ্বিক সামুদ্রিক পরিবেশগত সমীক্ষা নামক সংস্থার মতে জল দূষণ হল অন্যতম প্রধান একটি পরিবেশগত সমস্যা যেটা পরবর্তী দশকগুলোতে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্বকে সংকটে ফেলে দিতে পারে। ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন যেগুলো ৭০% অক্সিজেন উৎপন্ন করে এবং পৃথিবীর কার্বন-ডাই-অক্সাইডের একটি বড়ো অংশ শোষণ করে, জল দূষণ তাদের জন্য একটি অন্যতম সমস্যা। এই পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য সংস্থা থেকে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, কিন্তু সেগুলো কার্যকরী হতে দশ বছর সময় লাগবে।

ভারত এবং চীন এই দুই দেশে জল দূষণের মাত্রা অত্যন্ত বেশি। ভারতে প্রতিদিন আনুমানিক ৫৮০জন মানুষ জল দূষণজনিত রোগে (জলবাহিত রোগসমেত) মারা যায়। চীনের শহরের জলের প্রায় ৯০ শতাংশই দূষিত। ২০০৭ সালের হিসেবানুযায়ী, চীনের পাঁচ লক্ষ মানুষ নিরাপদ পানীয় জলের থেকে বঞ্চিত।

উন্নয়নশীল দেশের এই চূড়ান্ত জল দূষণের পাশাপাশি, উন্নত দেশগুলোও কিন্তু দূষণজনিত সমস্যা নিয়ে লড়াই করে চলেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৯ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জলের মান রিপোর্টে বলা হয়েছে যে যত মাইল প্রবাহের মূল্যায়ন করা হয়েছে তার ৪৪ শতাংশ, মূল্যায়িত হ্রদের একরের ৬৪ শতাংশ এবং উপসাগর ও মোহনার স্কোয়্যার মাইলের ৩০ শতাংশকে দূষিত বলে জানানো হয়েছে।

প্রকারভেদ

ভূ-পৃষ্ঠতলীয় জল দূষণ

বিভিন্ন ধরনের খাদ্যে প্রতি ১০০ গ্রাম প্রোটিনের ইউট্রোফাইং নির্গমনের (জল দূষণ) মধ্যমান [১]
খাদ্য প্রকৃতি ইউট্রোফিকেশন নির্গমন (প্রতি ১০০ গ্রাম প্রোটিনে গ্রাঃ PO43-eq)
গরুর মাংস
৩৬৫.৩
চাষ করা মাছ
২৩৫.১
চাষ করা ক্রাস্টাসিয়ানস
২২৭.২
পনীর
৯৮.৪
ভেড়া ও ভেড়ার মাংস
৯৭.১
শুয়োরের মাংস
৭৬.৪
মুরগী খামার
৪৮.৭
ডিম
২১.৮
চীনাবাদাম
১৪.১
মটরশুঁটি
৭.৫
তোফু
৬.২

ভূপৃষ্ঠতলীয় জল দূষণের মধ্যে রয়েছে নদী, হ্রদ এবং সমুদ্রের দূষণ। ভূপৃষ্ঠতলীয় জল দূষণের একটি বিভাগ হল সামুদ্রিক দূষণ।

সামুদ্রিক দূষণ

সমুদ্রে দূষিত পদার্থের আগমনের একটি সাধারণ পথ হল নদীর জল। এর একটি উদাহরণ হল, নর্দমার জল এবং কারখানার বর্জ্য সরাসরি সমুদ্রে গিয়ে ফেলা। উন্নয়নশীল দেশগুলোতেই বিশেষ করে এই ধরনের দূষণ দেখা যায়। বাস্তবিক, সারা বিশ্বের ১০টি সর্ববৃহৎ সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণকারী দেশকে বেশি থেকে কম এই ক্রমে সাজালে হয় – চীন, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনস্‌, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, মিশর, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া এবং বাংলাদেশ; যেসকল নদীগুলোর মাধ্যমে সমুদ্র দূষিত হয় তারা হল ইয়াঙ্গটজে, সিন্ধু, পীতনদী, হাই, নীল, গঙ্গা, পার্ল, আমুর, নাইজের ও মেকং এবং “পৃথিবীতে সমুদ্রে যত প্লাস্টিক জমা হয়, তার ৯০শতাংশ এইসকল নদীগুলো দ্বারা বাহিত হয়”।

প্লাস্টিক আবর্জনা সমুদ্রের বড় বড় বলয়ের (ঘুর্ণি) মধ্যে আটকে পড়ে। প্লাস্টিক আবর্জনাগুলো সামুদ্রিক দূষণে সৃষ্ট বিষাক্ত পদার্থগুলোকে শোষণ করে নেয় যার ফলে সামুদ্রিক জীব এগুলো খেয়ে ফেললে তাদের শরীরেও বিষ প্রবেশ করতে পারে। এইসকল দীর্ঘজীবী পদার্থগুলো অনেক সময়েই শেষমেশ সামুদ্রিক পাখি এবং প্রাণীদের পেটে চলে যায়। এর ফলে তাদের হজমের পথ আটকে যায়, যার ফলে তাদের খিদে কমে যায় অথবা এর থেকে তারা অনাহারেও ভুগতে পারে।

মূল দূষক ছাড়াও, তার লব্ধ পরিস্থিতিরও অনেক ধরনের অপ্রত্যক্ষ প্রভাব থাকে। যেমন ভূপৃষ্ঠে জলের স্রোতে পলি ভেসে থাকলে জলস্তম্ভের মধ্যে দিয়ে সূর্যরশ্মি প্রবেশ করতে পারে না এবং এর ফলে জলজ উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।

  1. Nemecek, T.; Poore, J. (২০১৮-০৬-০১)। "Reducing food's environmental impacts through producers and consumers"Science360 (6392): 987–992। আইএসএসএন 0036-8075ডিওআই:10.1126/science.aaq0216অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 29853680বিবকোড:2018Sci...360..987P 

বহিঃসংযোগ