কার্বন সিঙ্ক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কার্বন সিঙ্ক (ডানদিকে সবুজ রঙ দ্বারা চিহ্নিত) বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন অপসারণ করে, যেখানে কার্বন উৎস (গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন) (বাম দিকে ধূসর রঙ দ্বারা চিহ্নিত) কার্বন যোগ করে। এই দুই একসাথে কার্বন বাজেটের অংশ। ১৮৫০ এর দশক থেকে এর ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যার ফলে বায়ুমণ্ডলীয় কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা প্রায় শতকরা ৫০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।[১]

কার্বন সিঙ্ক হলো এমন কোনো প্রাকৃতিক স্থান বা অন্য পদার্থকে বোঝায় যা অনির্দিষ্টকালের জন্য কোনো কার্বনযুক্ত রাসায়নিক যৌগ জমা করে এবং সঞ্চয় করে। এর ফলে বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড সরিয়ে দেওয়া যায়।[২] এই সিঙ্কগুলি প্রাকৃতিক কার্বন চক্রের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ গঠন করে। কার্বন পুল হলো এমন সমস্ত স্থান যেখানে কার্বন থাকতে পারে। কার্বন পুলকে বলা হয় কার্বনের একটি আধার। এটি একটি সিস্টেম অর্থাৎ ব্যবস্থা যা কার্বন জমা বা ছেড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। বায়ুমন্ডল, মহাসাগর, মাটি, গাছপালা প্রভৃতি কার্বন পুলের উদাহরণ। তাই বলা যায় একটি কার্বন সিঙ্ক হলো এক ধরনের কার্বন পুল যা বায়ুমণ্ডলে যতটা পরিমাণ কার্বন ছাড়ে তার থেকে বেশি কার্বন গ্রহণ করার ক্ষমতা রাখে।

বিশ্বের সবচেয়ে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কার্বন সিঙ্ক হলো গাছপালা এবং মহাসাগর[৩] মাটি হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্বন সঞ্চয়ের মাধ্যম। খুব বেশি চাষাবাদের কারণে কৃষি এলাকার মাটিতে ধরে রাখা জৈব কার্বনের বেশিরভাগই ক্ষয় হয়ে গেছে। " ব্লু কার্বন " বা নীল কার্বন হলো উপকূলীয় এবং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রে সঞ্চিত কার্বন। উপকূলীয় নীল কার্বনের মধ্যে রয়েছে ম্যানগ্রোভ, লবণাক্ত জলাভূমি এবং সমুদ্রিক ঘাস যা সমুদ্রের উদ্ভিদের জীবনের বেশিরভাগ অংশ তৈরি করে। এগুলি প্রচুর পরিমাণে কার্বন সঞ্চয় করে। গভীর নীল কার্বন উচ্চ সাগরেগুলিতে অবস্থিত। গভীর-সমুদ্রের জল এবং তার নিচে সমুদ্রের তলদেশে থাকা কার্বন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। মহাসাগর একটি প্রধান কার্বন সিঙ্ক হিসাবে কাজ করে। তাই মহাসাগর অতিরিক্ত গ্রীনহাউস গ্যাসের তাপ ও শক্তি সরিয়ে দেয়।[৪]

জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমিত করার জন্য প্রাকৃতিক কার্বন সিঙ্কগুলি যেমন মৃত্তিকা, বনাঞ্চল প্রভৃতির উন্নয়ন ঘটিয়ে কার্বন সিঙ্ক উন্নয়ন করার জন্য অনেক প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। তবে অরণ্যবিনাশ এবং অতিরিক্ত শিল্প-কৃষির প্রবণতা কার্বন সিঙ্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টাগুলিকে প্রতিরোধ করে। এই সব কারণে আবার প্রাকৃতিক কার্বন সিঙ্কের ভাণ্ডার কমে আসে। ঐতিহাসিকভাবে ভূমি ব্যবহার, ভূমি-ব্যবহারে পরিবর্তন, বনায়ন প্রভৃতি কর্মকাণ্ডগুলি জলবায়ু পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ মানব অবদান। প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া বাড়ানোর পাশাপাশি কৃত্রিমভাবে নির্মাণ সামগ্রী বা গভীর ভূগর্ভে কার্বন সংরক্ষণের প্রচেষ্টা চলছে। এইসব উদ্যোগে বিনিয়োগও করা হচ্ছে।[৫][৬]

সংজ্ঞা[সম্পাদনা]

ভূমণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে এবং বিশেষভাবে জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনের ক্ষেত্রে, একটি সিঙ্ক-এর সংজ্ঞা হলো "যে কোনো প্রক্রিয়া, কার্যকলাপ বা প্রক্রিয়া যা বায়ুমণ্ডল থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস, অ্যারোসল বা গ্রিনহাউস গ্যাসের অগ্রদূতকে সরিয়ে দেয়"।[৭] :২২৪৯

গ্রিনহাউস গ্যাসের মধ্যে কার্বন ডাই অক্সাইডের উপস্থিতি যদি না থাকে তবে সিঙ্কগুলিতে গ্যাস সংরক্ষণের প্রয়োজন হয় না। এর পরিবর্তে এটিকে এমন পদার্থে ভেঙ্গে ফেলতে পারে যা ভূমণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধির উপর কম প্রভাব ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, গ্রিনহাউস গ্যাস নাইট্রাস অক্সাইডকে ক্ষতিহীন নাইট্রোজেনে এ পরিবর্তন করে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ হ্রাস করা যায়।[৮][৯]

কার্বন সিঙ্ক সম্পর্কিত শব্দবন্ধনগুলি হলো, কার্বন পুল, জলাধার, কার্বন সিকোয়েস্টেশন, গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন অর্থাৎ উৎস এবং গ্রহণ।[৭] :২২৪৯ কার্বন পুলকে পৃথিবীর একটি আধার হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় যেখানে কার্বনের মতো উপাদান নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ হিসাবে ঐ আধারে থাকে।[৭] :২২৪৪

কার্বন পুল এবং কার্বন সিঙ্ক এই দুয়ের ধারণা কার্বন চক্র প্রক্রিয়া বোঝার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এগুলি সামান্য ভিন্ন জিনিস উল্লেখ করে। কার্বন পুলকে সাধারণত ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করা হয়। কার্বন সিঙ্ক হলো একটি নির্দিষ্ট ধরণের কার্বন পুল। একটি কার্বন পুল হলো সেই সমস্ত স্থান যেখানে কার্বন থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বায়ুমণ্ডল, মহাসাগর, মাটি, গাছপালা এবং জীবাশ্ম জ্বালানী।[৭]:২২৪৪

প্রকারভেদ[সম্পাদনা]

ভূমিতে উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণের সাথে কার্বন ডাই অক্সাইডের গতিশীল ভারসাম্যের পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই পরিবর্তিত হয়। প্রাকৃতিক কার্বন সিঙ্কগুলি হলো:

  • মাটি একটি কার্বনের ভাণ্ডার এবং সক্রিয় কার্বন সিঙ্ক।[১০]
  • ক্রমবর্ধমান ঋতুতে ঘাস এবং গাছের সাথে স্থলজ উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ কার্বন সিঙ্ক হিসাবে কাজ করা।
  • দ্রবণীয়তা এবং জৈবিক পাম্পের মাধ্যমে মহাসাগর দ্বারা কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ।

কৃত্রিম কার্বন সিঙ্কগুলি হলো যেগুলি নির্মাণ সামগ্রী বা গভীর ভূগর্ভে কার্বন সঞ্চয় করে। একে ভূতাত্ত্বিক কার্বন সিকোয়েস্ট্রেশন বলে।[৫][৬] কোনো বড় কৃত্রিম সিস্টেম এখনও বড় আকারে বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন অপসারণ করে না[১১]

১৯৯৭ কিয়োটো প্রোটোকল হওয়ার পর থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড সিঙ্কের তাৎপর্য সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই-অক্সাইডকে কার্বন আকারে মাটিতে ফিরিয়ে এনে সংরক্ষণ করা যায়। এটি মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্যও কাজ করে। অর্থাৎ কার্বন সিকোয়েস্ট্রেশন করার মাধ্যমে কার্বন অফসেট করা হয়। কিয়োটো প্রোটোকলেও কার্বন অফসেটের বিষয়ে তাদের অবস্থান প্রচার করা হয়।[১২]

প্রাকৃতিক কার্বন সিঙ্ক[সম্পাদনা]

কার্বন চক্রের এই চিত্রটিতে প্রতি বছর কয়েক লক্ষ টন কার্বনে ভূমি, বায়ুমণ্ডল, মাটি এবং মহাসাগরের মধ্যে কার্বনের গতিবিধি কেমন থাকে সেটি দেখায়। হলুদ সংখ্যাগুলি প্রাকৃতিক প্রবাহ, লাল হলো প্রতি বছর কয়েক লক্ষ টন কার্বনে মানুষের অবদান। সাদা সংখ্যা সংরক্ষিত কার্বন নির্দেশ করে।

মৃত্তিকা[সম্পাদনা]

মাটি কার্বন সঞ্চয়ের একটি মাধ্যম। মাটি স্বল্পমেয়াদ থেকে দীর্ঘমেয়াদে কার্বন সঞ্চয় করতে পারে। স্থলজ গাছপালা এবং বায়ুমণ্ডলের সম্মিলিত কার্বনের চেয়ে মাটিতে বেশি কার্বন থাকে।[১৩][১৪][১৫] উদ্ভিদজাত আবর্জনা, কাঠকয়লা, অন্যান্য জৈববস্তু মাটিতে জৈব পদার্থ হিসাবে জমা হয়। এগুলি রাসায়নিক এবং জৈব বিয়োজনের মাধ্যমে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। সেলুলোজ, হেমি-সেলুলোজ, লিগনিন, অ্যালিফ্যাটিক যৌগ, মোম, টারপিন যৌগ প্রভৃতি পদার্থগুলির মধ্যে থাকা জটিল জৈব কার্বন পলিমারগুলি সম্মিলিতভাবে হিউমাস হিসাবে মাটি ধরে রাখে। [১৬]

২০২০ সালে বনাঞ্চলের কার্বন পুলে কার্বন মজুদ ভাণ্ডারের অনুপাত।[১৭]

উত্তর আমেরিকার বোরিয়াল বনাঞ্চলে এবং রাশিয়ার তৈগার মতো শীতল অঞ্চলের আবর্জনা এবং মাটিতে জৈব পদার্থ জমা হতে থাকে। উপ-গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলবায়ুতে উচ্চ তাপমাত্রা কারণে এবং বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে পাতার লিটার এবং হিউমাস দ্রুত জারিত হয়ে লিচিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাটি থেকে ধুয়ে বেরিয়ে যায়। গাছের পতিত পাতা দিয়ে তৈরি আবর্জনাকে পাতার লিটার বলা হয়। অন্যদিকে লিচিং হলো একটি কঠিন পদার্থকে তরলে দ্রবীভূত করে প্রাকৃতিকভাবে বের করার প্রক্রিয়া।

যেসব এলাকায় স্থানান্তরিত চাষ এবং 'স্ল্যাশ এবং বার্ন' কৃষি পদ্ধতিতে চাষ করা হয়, সেগুলি পরিত্যক্ত হওয়ার আগে সাধারণত দুই থেকে তিন বছরের জন্য উর্বর থাকে। 'স্ল্যাশ এবং বার্ন' কৃষি পদ্ধতি হলো কৃষিকার্যের একটি পদ্ধতি যেখানে একটি কৃষিক্ষেত্র তৈরি করার জন্য একটি বনের গাছপালা কেটে সেগুলিকে পুড়িয়ে কৃষিক্ষেত্রের জন্য জায়গা তৈরি করা হয়। এই গ্রীষ্মমন্ডলীয় জঙ্গলগুলি অনেকটা প্রবাল প্রাচীরের মতো। জঙ্গলগুলি প্রয়োজনীয় পুষ্টি সংরক্ষণ এবং সঞ্চালনে অত্যন্ত দক্ষ।[১৮]

তৃণভূমি মাটির জৈব পদার্থ ধরে রাখতে পারে। প্রধানত তাদের বিস্তৃত আঁশযুক্ত মূলগুলিতে মাটির জৈব পদার্থ ধরে রেখে সংরক্ষণ করে। শীতল তাপমাত্রা এবং আধা-শুষ্ক থেকে শুষ্ক অবস্থার জলবায়ুর কারণে তৃণভূমি অঞ্চলের মাটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে জৈব পদার্থ জমা করতে পারে। তবে এটি বৃষ্টিপাত এবং শীতের ঋতুর স্থায়িত্বের কারণে পরিবর্তিত হতে পারে। তাছাড়া প্রাকৃতিকভাবে ঘটতে থাকা বজ্রপাতের ফলে ঘাসে আগুন লেগে দাবানল সৃষ্টি প্রভৃতির কারণে পরিবর্তিত হয়। যদিও এই দাবানলের আগুন কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ করে তবুও এটি তৃণভূমির মাটির গুণমানকে সামগ্রিকভাবে উন্নত করে থাকে। যার ফলে মাটির হিউমিক উপাদানে কার্বনের পরিমাণ বৃদ্ধি হয়। এক্ষেত্রে বায়োচার হিসাবে মাটিতে সরাসরি কার্বন হিসাবে জমা হয়। এই অবস্থায় এটি উল্লেখযোগ্যভাবে কার্বন ডাই অক্সাইড হয়ে পুনরায় বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসে না।[১৯] বায়োচার হলো এক ধরনের কাঠকয়লা মতো পদার্থ যার মধ্যে ৩৫ শতাংশ থেকে ৫৫ শতাংশ কার্বন থাকে।

পিট বগের মধ্যে থাকা জৈব পদার্থ ভূপৃষ্ঠের নিচে ধীরে ধীরে অবয়বীয় বিয়োজনের মধ্য দিয়ে যায়। এই প্রক্রিয়াটি যথেষ্ট ধীরে হয়। তাই অনেক ক্ষেত্রে বগ উদ্ভিদগুলি দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এগুলি বায়ুমণ্ডলের থেকে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে। কার্বন নির্গত হওয়ার চেয়ে বেশি কার্বন ধরে রাখতে পারে। সময়ের সাথে সাথে পিট বগের জন্মানোর হার আরও বেশি হয়। জমির গাছপালা এবং মাটিতে সঞ্চিত কার্বনের প্রায় এক-চতুর্থাংশ পিট বোগগুলি ধরে রাখতে পারে।[২০]

মাটির কার্বন সিঙ্ক বাড়ানো[সম্পাদনা]

নিবিড় চাষাবাদের কারণে বিশ্বব্যাপী অনেক কৃষিক্ষেত্রে ধরে রাখা জৈব কার্বনের পরিমাণ মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে।[২১] ১৮৫০ এর দশক থেকে বিশ্বের তৃণভূমির একটি বড় অংশে চাষ আবাদ করা হয়। এর ফলে তৃণভূমিগুলি ফসলের জমিতে রূপান্তরিত হয়ে যায়। যার ফলে প্রচুর পরিমাণে মাটির জৈব কার্বনের দ্রুত জারণ হয়ে কার্বন ডাই অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়েছে। যে কৃষি পদ্ধতি বা কৌশলগুলি মাটিতে কার্বন পৃথকীকরণ উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করে তার মধ্যে রয়েছে নো-টিল ফার্মিং, রেসিডিউ মালচিং, কভার ক্রপিং, এবং শস্যাবর্তন বা ক্রপ রোটেশন। এগুলি সবই প্রচলিত চাষের তুলনায় জৈব খামার ব্যবস্থায় বেশি ব্যবহৃত হয়।[২২][২৩]

বন[সম্পাদনা]

যেভাবে একটি নীল কার্বন আবাসস্থল একটি পার্শ্ববর্তী আবাসস্থলের কার্বন প্রক্রিয়াকরণকে প্রভাবিত করতে পারে[২৪]

অনুকূল কারণ এবং বনাঞ্চলে কার্বন সিঙ্ক সম্পৃক্তি[সম্পাদনা]

অরণ্য যখন ঘন বা অনেকখানি জুড়ে হয় তখন এটি সাধারণত কার্বন ডাই অক্সাইডের সিঙ্ক হিসাবে ব্যবহার করে। তবে অরণ্য আবার কার্বন উৎসও হয়ে যেতে পারে, যদি অরণ্য ধ্বংস করে এর আয়তন কমানো হয় বা জলবায়ু পরিবর্তনে এটি নষ্ট হয়ে যায়। অরণ্যকে দাবানল গ্রাস করলে বা অরণ্যে রোগের প্রকোপ বাড়লে এর বৈচিত্র্য, ঘনত্ব বা এলাকা হ্রাস হয়। তখনও এটি কার্বন উৎস হতে পারে।[২৫][২৬][২৭] ২০২০ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা যায় যে, আমাজন অঞ্চল নয় এমন ৩২টি ব্রাজিলীয় মৌসুমী ক্রান্তীয় বনাঞ্চল ২০১৩ সালে কার্বন সিঙ্ক থেকে কার্বন উৎসে নেমে এসেছে। এর থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, "গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন প্রশমিত করতে এবং গ্রীষ্মমন্ডলীয় মৌসুমী বন পুনরুদ্ধার ও সুরক্ষার জন্য নীতিমালা প্রয়োজন"। [২৮][২৯] উচ্চ তাপমাত্রা, খরা এবং বনাঞ্চল কেটে নেওয়ার কারণে ২০১৯ সালে বনগুলি ১৯৯০-এর তুলনায় এক তৃতীয়াংশ কম কার্বন গ্রহণ করে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন সাধারণ গ্রীষ্মমন্ডলীয় বন ২০৬০ সাল নাগাদ কার্বনের উৎসে পরিণত হতে পারে।[৩০]

ইউরোপীয় বনের একটি মূল্যায়ন থেকে জানা যায় এটি কয়েক দশক ধরে শক্তি বৃদ্ধির পর এতে কার্বন সিঙ্ক সম্পৃক্তির প্রাথমিক লক্ষণ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।[৩১] জলবায়ু পরিবর্তনের আন্তঃসরকারি প্যানেল (আইপিসিসি) এই উপসংহারে পৌঁছেছে যে, বনের কার্বনের ভাণ্ডার বাড়ানোর লক্ষ্যে মিশ্র পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। টেকসই কাঠের উত্তোলন সবচেয়ে বড় কার্বন সিকোয়েস্টেশন সুবিধা তৈরি করে।[৩২]

বৃক্ষের প্রজাতি, বনাঞ্চলের অবস্থা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ধরন বনের আয়ুষ্কালকে প্রভাবিত করে। এইসব অবস্থা বিশ্বজুড়ে পরিবর্তিত হয়। কিছু বনাঞ্চলে কার্বন শতাব্দী ধরে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। আবার অনেক বনাঞ্চলে ঘন ঘন আগুন লাগার কারণে কার্বন নির্গত হয়ে যায়।[৩৩] বনাঞ্চল থেকে কাটা কাঠের সঙ্গে কার্বনও অপসারিত হয়। তবে যেহেতু কাঠের শুধুমাত্র একটি অংশ টেকসই পণ্য এবং ভবন নির্মাণে ব্যবহৃত হয় তাই ঐ অংশে কার্বন থেকে যায়। বনাঞ্চল থেকে কাটা কাঠের বাকি অংশ কাগজ এবং অস্থায়ী উপ-পণ্য তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়। এগুলি আবার ব্যবহারের শেষে পোড়ানোও হয়ে থাকে। যার ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড হিসাবে কার্বন নির্গত হয়ে কাঠের আয়ু শেষ হয়। উদাহরণস্বরূপ, ১৯০০ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত আমেরিকার ওরেগন এবং ওয়াশিংটনের বনাঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা ১,৬৯২ মেগাটন কার্বনের মধ্যে শতকরা ২৩ ভাগ মাত্র বনজ পণ্যের দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয় হিসাবে অর্থাৎ টেকসই পণ্য এবং ভবন নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে।[৩৪]

খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) একটি রিপোর্টে জানিয়েছে যে: "বনে মোট কার্বন মজুদ ভাণ্ডার ১৯৯০ সালে ৬৬৮ গিগাটন থেকে ২০২০ সালে ৬৬২ গিগাটনে নেমে এসেছে"।[১৭] :১১ আবার, অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ১৯৮১ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী লিফ এরিয়া ইনডেক্স (এলএআই) বৃদ্ধি পেয়েছে। যা ১৯৮১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত জমে থাকা স্থলজ কার্বন সিঙ্কের শতকরা ১২.৪ ভাগের জন্য দায়ী। অন্যদিকে, কার্বন ডাই অক্সাইড নিষিক্তকরণ প্রভাব শতকরা ৪৭ ভাগ কার্বন সিঙ্কের জন্য দায়ী, সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য শতকরা ২৮.৬ ভাগ কার্বন সিঙ্ক হ্রাস হয়েছে।[৩৫] কানাডার বোরিয়াল বনাঞ্চলে মোট কার্বনের শতকরা ৮০ ভাগ, মৃত জৈব পদার্থ হিসাবে মৃত্তিকাতে জমা হয়।[৩৬]

কার্বন অফসেট প্রোগ্রামগুলিতে ক্রান্তীয় ভূমি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ দ্রুত বর্ধনশীল গাছ রোপণ করা হয়। প্রতি গাছের মৃল্য ০.১০ ডলারের মতো। দ্রুত বর্ধনশীল গাছগুলির আয়ু ৪০ বছর ধরে নিয়ে গননা করে দেখা গিয়েছে যে, ১০ লক্ষ গাছ বায়ুমণ্ডল থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টন পর্যন্ত কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করতে পারে।[৩৭][৩৮]

অ্যালবেডো প্রভাবের পরিবর্তন[সম্পাদনা]

প্রায় শতকরা ৫৮ ভাগ কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন কার্বন সিঙ্ক দ্বারা শোষিত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে উদ্ভিদের বৃদ্ধি, মাটি গ্রহণ, এবং সমুদ্র গ্রহণ (২০২০ গ্লোবাল কার্বন বাজেট)।

পৃথিবীতে আগত সৌররশ্মির প্রায় ৩৪% মেঘপুঞ্জ, ধুলিকণা দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে মহাশূন্যে ফিরে যায়। এই রশ্মি পৃথিবী ও বায়ুমণ্ডলকে সরাসরি উত্তপ্ত করে না। পৃথিবী থেকে সূর্যরশ্মির এই প্রত্যাবর্তনের প্রাকৃতিক ঘটনাকে অ্যালবেডো বলে। পৃথিবীর গড় অ্যালবেডো হল ৩৪%। বনাঞ্চলে সাধারণত কম অ্যালবেডো থাকে কারণ অতিবেগুনী এবং দৃশ্যমান বর্ণালীর অধিকাংশই সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে শোষিত হয়। এই কারণে, গাছ অনেক তাপ শোষণ করে বনায়নের কিছু কার্বন সুবিধাকে অফসেট করতে পারে। গাছ লাগিয়ে বনাঞ্চল সৃষ্টি করলে সূর্যালোকের প্রতিফলন হ্রাস (আলবেডো) করতে পারা যায়।[৩৯]

মৌসুমী তুষার আচ্ছাদন সহ চিরহরিৎ বনের ক্ষেত্রে, অ্যালবেডো হ্রাস যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এখানে বনাঞ্চল হ্রাস হলে শীতল প্রভাব সৃষ্টি হয়।[৪০]

গাছ বাষ্পীভবনের মাধ্যমে অত্যন্ত জটিল উপায়ে জলবায়ুকেও প্রভাবিত করে। জলীয় বাষ্প ভূমি পৃষ্ঠে শীতলতা সৃষ্টি করে। যেখানে এটি ঘনীভূত হয় সেগানে গরম সৃষ্টি হয়। জলীয় বাষ্প মেঘে পরিণত হলে অ্যালবেডো বৃদ্ধি করতে পারে।[৪১] বিজ্ঞানীরা সাধারণত বাষ্পীয়-বাষ্পমোচনকে সামগ্রিকভাবে শীতল প্রভাব হিসাবে বিবেচনা করেন। বন উজাড়ের ফলে অ্যালবেডো, বাষ্পীভবনের পরিবর্তন প্রভৃতি অনেকটাই স্থানীয় জলবায়ুর উপর নির্ভর করে।[৪২]

মধ্য থেকে উচ্চ-অক্ষাংশের বনে তুষার ঋতুতে সমতল ভূমির তুলনায় অনেক কম অ্যালবেডো থাকে, তাই উষ্ণায়ন হয়। বন এবং তৃণভূমির মধ্যে অ্যালবেডো পার্থক্যের প্রভাব তুলনা করে দেখা গিয়েছে যে, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে বনভূমির সম্প্রসারণ শুধুমাত্র একটি অস্থায়ী প্রশমন সুবিধা প্রদান করে।[৪৩][৪৪][৪৫][৪৬]

গভীর সমুদ্র, জোয়ারের জলাভূমি, ম্যানগ্রোভ এবং সাগর ঘাস[সম্পাদনা]

সুরক্ষার অধীনে প্রতিটি দেশের মোট শতাংশ সহ বিশ্ব সুরক্ষিত এলাকার মানচিত্র, যেখানে হালকা রঙের দেশগুলির আরও সুরক্ষিত ভূমি রয়েছে

ব্লু কার্বন হল জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন প্রসঙ্গে ব্যবহৃত একটি শব্দ যা "জৈবিকভাবে চালিত কার্বন প্রবাহ এবং সামুদ্রিক সিস্টেমে সঞ্চয় ব্যবস্থার জন্য উপযুক্ত।"[২৪] সাধারণত, এটি জোয়ারের জলাভূমি, ম্যানগ্রোভ এবং সামুদ্রিক ঘাস কার্বন সিকোয়েস্টেশনে যে ভূমিকা পালন করতে পারে তা বোঝায়। সবচেয়ে বড় কার্বন আধার এবং কার্বন সিঙ্ক হল মহাসাগর, যা বিভিন্ন রূপে কার্বন সঞ্চয় করে। দ্রবীভূত অজৈব কার্বন হিসেবে সর্বাধিক হারে মহাসাগরে কার্বন সঞ্চিত হয়। কার্বন ডাই অক্সাইড সাধারণত সমুদ্রের জলে দ্রবীভূত হয়, যেখানে এটি কার্বন ডাই অক্সাইড, বাইকার্বনেট আয়ন এবং কার্বনেট আয়ন হিসেবে বিদ্যমান থাকে।

প্রাকৃতিক কার্বন সিঙ্ক উন্নত করা[সম্পাদনা]

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে উদ্দেশ্য[সম্পাদনা]

মেজসটারনেট (Mjøstårnet) সবচেয়ে লম্বা কাঠের ভবনগুলির মধ্যে একটি। ২০১৯ সালে এর উদ্বোধন হয়। এটি নরওয়ের ব্রুমুন্ডডাল শহরে অবস্থিত

একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশমন পরিমাপ হল "কার্বন সিঙ্ক সংরক্ষণ এবং বৃদ্ধি করা"।[৪৭] এটি এমনভাবে পৃথিবীর প্রাকৃতিক কার্বন সিঙ্কের ব্যবস্থাপনাকে বোঝায় যা বায়ুমণ্ডল থেকে CO2 অপসারণ করতে এবং এটিকে টেকসইভাবে সংরক্ষণ করার ক্ষমতা সংরক্ষণ বা বৃদ্ধি করে। বিজ্ঞানীরা এই প্রক্রিয়াটিকে কার্বন সিকোস্ট্রেশনও বলেন। জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনের প্রেক্ষাপটে, আইপিসিসি একটি সিঙ্ককে "যে কোনো প্রক্রিয়া, কার্যকলাপ বা প্রক্রিয়া যা বায়ুমণ্ডল থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস, অ্যারোসল বা গ্রিনহাউস গ্যাসের অগ্রদূতকে সরিয়ে দেয়" হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে।[৭]:২২৪৯ বিশ্বব্যাপী, দুটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কার্বন সিঙ্ক হল গাছপালা এবং মহাসাগর।[৪৮]

মহাসাগরে কার্বন সিকোয়েস্টেশন কৌশল[সম্পাদনা]

মহাসাগরে কার্বন সিকোয়েস্টেশন প্রক্রিয়া বাড়ানোর জন্য কয়েকটি প্রযুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো প্রযুক্তি বৃহৎ আকারে প্রয়োগ করা সম্ভব হয়নি। এই প্রযুক্তিগুলির মধ্যে রয়েছে সামুদ্রিক শৈবাল চাষ, সমুদ্রের নিষিক্তকরণ, বেসাল্ট সংরক্ষণ, খনিজকরণ এবং গভীর সমুদ্রের পলি, অ্যাসিড নিরপেক্ষ করার জন্য ক্ষার যুক্ত করা প্রভৃতি। সরাসরি গভীর সমুদ্রে কার্বন ডাই অক্সাইড ইনজেকশনের ধারণা আপাতত পরিত্যাগ করা হয়েছে।[৪৯]

কৃত্রিম কার্বন সিঙ্ক[সম্পাদনা]

ভূতাত্ত্বিক কার্বন সিকোয়েস্ট্রেশন[সম্পাদনা]

এখানে কার্বন ডাই অক্সাইড ভূগর্ভস্থ ভূতাত্ত্বিক গঠনে যেমন পাথরে সংরক্ষণ করা হয়।

কাঠের ভবন[সম্পাদনা]

নির্মাণ প্রকল্পে ইস্পাত ও কংক্রিটের বদলে কাঠের তৈরি ভবনগুলিকে কার্বন সিঙ্কে পরিণত করার সম্ভাবনা রয়েছে। কাঠ সংরক্ষণ কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন কমাতে সাহায্য করে। কারণ কাঠ বনাঞ্চলে বেড়ে ওঠার সময় বায়ু থেকে নেওয়া কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে সংরক্ষণ করে। গাছগুলি কেটে ভর কাঠ হিসাবে কাঠের ভবন নির্মাণে ব্যবহার করা যায়।[৫] এর ফলে সর্বনিম্ন পরিস্থিতিতে প্রতি বছর ১০ মিলিয়ন টন কার্বন এবং সর্বোচ্চ পরিস্থিতিতে ৭০ কোটি টন কার্বন সংরক্ষণ করা যেতে পারে। তবে এর জন্য, বনাঞ্চলের কাটা গাছের থেকে পাওয়া কাঠগুলিকে টেকসইভাবে পরিচালনা করতে হবে এবং ভেঙ্গে যাওয়া কাঠের বিল্ডিং থেকে কাঠকে বিভিন্ন আকারে জমিতে পুনরায় ব্যবহার বা সংরক্ষণ করতে হবে।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Global Carbon Budget 2021" (পিডিএফ)Global Carbon Project। ৪ নভেম্বর ২০২১। পৃষ্ঠা 57। ১১ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। The cumulative contributions to the global carbon budget from 1850. The carbon imbalance represents the gap in our current understanding of sources & sinks. ... Source: Friedlingstein et al 2021; Global Carbon Project 2021 
  2. "What is a carbon sink?"www.clientearth.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-১৮ 
  3. "Carbon Sources and Sinks"National Geographic Society (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৩-২৬। ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-১৮ 
  4. Nations, United। "The ocean – the world's greatest ally against climate change"United Nations (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-২৭ 
  5. Churkina, Galina; Organschi, Alan (২০২০)। "Buildings as a global carbon sink" (ইংরেজি ভাষায়): 269–276। আইএসএসএন 2398-9629ডিওআই:10.1038/s41893-019-0462-4 
  6. "carbon sequestration | Definition, Methods, & Climate Change"Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-১৮ 
  7. IPCC, 2021: Annex VII: Glossary [Matthews, J.B.R., V. Möller, R. van Diemen, J.S. Fuglestvedt, V. Masson-Delmotte, C.  Méndez, S. Semenov, A. Reisinger (eds.)]. In Climate Change 2021: The Physical Science Basis. Contribution of Working Group I to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [Masson-Delmotte, V., P. Zhai, A. Pirani, S.L. Connors, C. Péan, S. Berger, N. Caud, Y. Chen, L. Goldfarb, M.I. Gomis, M. Huang, K. Leitzell, E. Lonnoy, J.B.R. Matthews, T.K. Maycock, T. Waterfield, O. Yelekçi, R. Yu, and B. Zhou (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, United Kingdom and New York, NY, USA, pp. 2215–2256, doi:10.1017/9781009157896.022.
  8. CHAPUIS-LARDY L, WRAGE N, CHOTTE J, BERNOUX M (২০০৭)। "Soils, a sink for N2O? A review": 1–17। ডিওআই:10.1111/j.1365-2486.2006.01280.x 
  9. Cobo S, Negri V, Valente A, Reiner D, Hamelin L, Dowell N, Guillén-Gosálbez G (২০২৩)। "Sustainable scale-up of negative emissions technologies and practices: where to focus": 023001। ডিওআই:10.1088/1748-9326/acacb3 
  10. Blakemore, R.J. (২০১৮)। "Non-Flat Earth Recalibrated for Terrain and Topsoil": 64। ডিওআই:10.3390/soilsystems2040064অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  11. "Carbon Sinks: A Brief Review"Earth.Org - Past | Present | Future (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-০২ 
  12. "carbon sink — European Environment Agency"www.eea.europa.eu (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-১৮ 
  13. Swift, Roger S. (নভেম্বর ২০০১)। "Sequestration of Carbon by soil": 858–71। ডিওআই:10.1097/00010694-200111000-00010 
  14. Batjes, N.H. (১৯৯৬)। "Total carbon and nitrogen in the soils of the world" (ইংরেজি ভাষায়): 151–163। আইএসএসএন 1351-0754ডিওআই:10.1111/j.1365-2389.1996.tb01386.x 
  15. Batjes, N.H. (২০১৬)। "Harmonized soil property values for broad-scale modelling (WISE30sec) with estimates of global soil carbon stocks" (ইংরেজি ভাষায়): 61–68। ডিওআই:10.1016/j.geoderma.2016.01.034 
  16. Klaus Lorenza; Rattan Lala (১৫ নভেম্বর ২০০৭)। "Strengthening the soil organic carbon pool by increasing contributions from recalcitrant aliphatic bio(macro)molecules": 1–10। ডিওআই:10.1016/j.geoderma.2007.07.013 
  17. Global Forest Resources Assessment 2020 (ইংরেজি ভাষায়)। FAO। ২০২০। আইএসবিএন 978-92-5-132581-0ডিওআই:10.4060/ca8753en 
  18. "Coral Reefs Biome "Underwater Rainforests""। সংগ্রহের তারিখ ১৯ সেপ্টে ২০২১ 
  19. Woolf, Dominic; Amonette, James E. (২০১০-০৮-১০)। "Sustainable biochar to mitigate global climate change" (ইংরেজি ভাষায়): 56। আইএসএসএন 2041-1723ডিওআই:10.1038/ncomms1053পিএমআইডি 20975722পিএমসি 2964457অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  20. Chester, Bronwyn (২০ এপ্রিল ২০০০)। "The case of the missing sink"। McGill Reporter। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০২২ 
  21. "Organic Farming Can Cool the World that Chemical Farming Overheated"। ১৭ অক্টোবর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টে ২০২১ 
  22. Susan S. Lang (১৩ জুলাই ২০০৫)। "Organic farming produces same corn and soybean yields as conventional farms, but consumes less energy and no pesticides, study finds"। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০০৮ 
  23. Pimentel, David; Hepperly, Paul (২০০৫)। "Environmental, Energetic, and Economic Comparisons of Organic and Conventional Farming Systems": 573–82। ডিওআই:10.1641/0006-3568(2005)055[0573:EEAECO]2.0.CO;2অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  24. Huxham, M.; Whitlock, D.; Githaiga, M.; Dencer-Brown, A. (২০১৮)। "Carbon in the Coastal Seascape: How Interactions Between Mangrove Forests, Seagrass Meadows and Tidal Marshes Influence Carbon Storage"। Current Forestry Reports4 (2): 101–110। এসটুসিআইডি 135243725ডিওআই:10.1007/s40725-018-0077-4অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  25. Carolyn Gramling (২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭)। "Tropical forests have flipped from sponges to sources of carbon dioxide; A closer look at the world's trees reveals a loss of density in the tropics": 230–234। ডিওআই:10.1126/science.aam5962অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 28971966। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৭ 
  26. Baccini A, Walker W, Carvalho L, Farina M, Sulla-Menashe D, Houghton RA (১৩ অক্টোবর ২০১৭)। "Tropical forests are a net carbon source based on aboveground measurements of gain and loss": 230–234। ডিওআই:10.1126/science.aam5962অবাধে প্রবেশযোগ্যপিএমআইডি 28971966 
  27. Spawn, Seth A.; Sullivan, Clare C. (ডিসেম্বর ২০২০)। "Harmonized global maps of above and belowground biomass carbon density in the year 2010": 112। ডিওআই:10.1038/s41597-020-0444-4 
  28. "Brazilian forests found to be transitioning from carbon sinks to carbon sources"phys.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০২১ 
  29. Maia, Vinícius Andrade; Santos, Alisson Borges Miranda (১ ডিসেম্বর ২০২০)। "The carbon sink of tropical seasonal forests in southeastern Brazil can be under threat" (ইংরেজি ভাষায়): eabd4548। আইএসএসএন 2375-2548ডিওআই:10.1126/sciadv.abd4548অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  30. Harvey, Fiona (২০২০-০৩-০৪)। "Tropical forests losing their ability to absorb carbon, study finds"The Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0261-3077। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-০৫ 
  31. Nabuurs, Gert-Jan; Lindner, Marcus (সেপ্টেম্বর ২০১৩)। "First signs of carbon sink saturation in European forest biomass" (ইংরেজি ভাষায়): 792–796। আইএসএসএন 1758-678Xডিওআই:10.1038/nclimate1853 
  32. Intergovernmental Panel on Climate Change (২০০৭), "Forestry", Climate Change 2007, Cambridge: Cambridge University Press, পৃষ্ঠা 541–584, আইএসবিএন 978-0-511-54601-3, ডিওআই:10.1017/cbo9780511546013.013, সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-০৫ 
  33. J. Chatellier (জানুয়ারি ২০১০)। The Role of Forest Products in the Global Carbon Cycle: From In-Use to End-of-Life (পিডিএফ)। Yale School of Forestry and Environmental Studies। ৫ জুলাই ২০১০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  34. Harmon, M. E.; Harmon, J. M. (১৯৯৬)। "Modeling carbon stores in Oregon and Washington forest products: 1900?1992": 521। ডিওআই:10.1007/BF00141703 
  35. Chen, JM; Ciais, Philippe (১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯)। "Vegetation structural change since 1981 significantly enhanced the terrestrial carbon sink": 4259। ডিওআই:10.1038/s41467-019-12257-8পিএমআইডি 31534135পিএমসি 6751163অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  36. "Does harvesting in Canada's forests contribute to climate change?" (পিডিএফ)Canadian Forest Service Science-Policy Notes। Natural Resources Canada। মে ২০০৭। ২০১৩-০৭-৩০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  37. "This Is The Impact Of 1 Million Trees"। ২৬ নভেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টে ২০২১ 
  38. Grant M. Domke; Sonja N. Oswalt (৬ অক্টো ২০২০)। "Tree planting has the potential to increase carbon sequestration capacity of forests in the United States" (পিডিএফ): 24649–24651। ডিওআই:10.1073/pnas.2010840117অবাধে প্রবেশযোগ্য। ২০২০-১০-২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  39. Zhao, Kaiguang; Jackson, Robert B (২০১৪)। "Biophysical forcings of land-use changes from potential forestry activities in North America" (পিডিএফ)Ecological Monographs84 (2): 329–353। এসটুসিআইডি 56059160ডিওআই:10.1890/12-1705.1 
  40. Betts, Richard A. (২০০০)। "Offset of the potential carbon sink from boreal forestation by decreases in surface albedo"। Nature408 (6809): 187–190। এসটুসিআইডি 4405762ডিওআই:10.1038/35041545পিএমআইডি 11089969বিবকোড:2000Natur.408..187B 
  41. Boucher; ও অন্যান্য (২০০৪)। "Direct human influence of irrigation on atmospheric water vapour and climate"Climate Dynamics22 (6–7): 597–603। এসটুসিআইডি 129640195ডিওআই:10.1007/s00382-004-0402-4বিবকোড:2004ClDy...22..597B 
  42. Bonan, GB (২০০৮)। "Forests and Climate Change: Forcings, Feedbacks, and the Climate Benefits of Forests"Science320 (5882): 1444–1449। এসটুসিআইডি 45466312ডিওআই:10.1126/science.1155121পিএমআইডি 18556546বিবকোড:2008Sci...320.1444B 
  43. Jonathan Amos (১৫ ডিসেম্বর ২০০৬)। "Care needed with carbon offsets"। BBC। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০০৮ 
  44. "Models show growing more forests in temperate regions could contribute to global warming"। Lawrence Livermore National Laboratory। ৫ ডিসেম্বর ২০০৫। ২৭ মে ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০০৮ 
  45. S. Gibbard; K. Caldeira; G. Bala; T. J. Phillips; M. Wickett (ডিসেম্বর ২০০৫)। "Climate effects of global land cover change"Geophysical Research Letters32 (23): L23705। ডিওআই:10.1029/2005GL024550অবাধে প্রবেশযোগ্যবিবকোড:2005GeoRL..3223705G 
  46. Malhi, Yadvinder; Meir, Patrick; Brown, Sandra (২০০২)। "Forests, carbon and global climate"। Philosophical Transactions of the Royal Society A: Mathematical, Physical and Engineering Sciences360 (1797): 1567–91। এসটুসিআইডি 1864078ডিওআই:10.1098/rsta.2002.1020পিএমআইডি 12460485বিবকোড:2002RSPTA.360.1567M 
  47. IPCC (2022) Summary for policy makers in Climate Change 2022: Mitigation of Climate Change. Contribution of Working Group III to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change, Cambridge University Press, Cambridge, United Kingdom and New York, NY, United States
  48. "Carbon Sources and Sinks"National Geographic Society (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৩-২৬। ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-১৮ 
  49. Benson, S.M.; Surles, T. (২০০৬-১০-০১)। "Carbon Dioxide Capture and Storage: An Overview With Emphasis on Capture and Storage in Deep Geological Formations": 1795–1805। আইএসএসএন 0018-9219ডিওআই:10.1109/JPROC.2006.883718। জুন ১১, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৯