পাশুপত
হিন্দু পৌরানিক কাহিনী অনুযায়ী পাশুপতাস্ত্র (IAST: Pāśupatāstra, সংস্কৃত: पाशुपतास्त्र) একটা অর্ধচন্দ্রাকৃতি বিধংসী অস্ত্র, যেটি মন, চোখ, কথা অথবা ধনুকের দ্বারা নিক্ষেপ করা যায়। এটি কালী এবং শিবের ব্যক্তিগত অস্ত্র। এটি বাংলায় পশুপত অস্ত্র নামেও পরিচিত। একমাত্র মহারথীরাই মহারথীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছিলেন পাশুপতাস্ত্র। কখনো কোনো নিম্ন বর্গীয় সেনা বা যোদ্ধা এই অস্ত্র হানেননি, এমন কি কোনো নিম্ন বর্গীয় সেনা বা যোদ্ধার বিরুদ্ধেও পাশুপতাস্ত্র নিক্ষেপিত হয়নি। পাশুপতাস্ত্র নিক্ষেপিত হলে সমস্তকিছু ধ্বংস করে বিপক্ষের পরাজয় অবসম্ভাবী করে। নেপালের কাঠমান্ডু-তে পশুপতিনাথ মন্দির বলে একটি শিবমন্দির আছে। পাশুপতাস্ত্র এই পশুপতিনাথের-ই অস্ত্র।
ব্যবহারের ইতিহাস
[সম্পাদনা]মহাভারত-এ পাশুপত অস্ত্রের প্রয়োগ দেখা যায়,অর্জুন সিন্ধুরাজ জয়দ্রথের বধ করার জন্য প্রয়োগ করেছিল। কোনো কোনো কাহিনী অনুযায়ী, রামায়ণ-এ রাম রাবনের যুদ্ধের সময় ইন্দ্রজিত ওরফে মেঘনাদ পাশুপতাস্ত্র নিক্ষপ করেন লক্ষ্মণের প্রতি। তবে বাল্মিকি-রামায়ণ-এ বিষয়ে উল্লেখ্য শ্লোকটি অনেকটা নিম্নরূপ।
स संरब्धस्तु सौमित्रिरस्त्रं वारुणमाददे || रौद्रं महेंद्रजिद्युद्धे व्यसृजद्युधि विष्ठितः |
স সংরব্ধস্তু সৌমিত্রিরস্ত্রং বারুণমাদেদ।। রৌদ্রং মহেন্দ্রজিদ্যুদ্ধে ব্যসৃজদ্যুধি বিষ্ঠিতঃ।
অর্থাত, উত্তেজিত হয়ে সৌমিত্রী(লক্ষ্মণ) বরুণ প্রদত্ত অস্ত্র যোজনা করলেন। যুদ্ধবিশারদ মহেন্দ্রজিত রৌদ্রং (রুদ্রদেব প্রদত্ত অস্ত্র) যোজনা করলেন।।
কূর্ম পুরাণ অনুসারে পুরুষ ও দৈত্যদের যুদ্ধের সময় নৃসিংহ অবতার পাশুপতাস্ত্র থেকে এড়িয়ে যেতে পেরেছিলেন[১]। তারকাসুরের তিন পুত্র তারকাক্ষ, কমলাক্ষ ও বিদ্যুন্মালী, যারা এক সঙ্গে ত্রিপুরাসুর বলে পরিচিত, তাদের মহাদেব পাশুপতাস্ত্র নিক্ষেপ করে ধ্বংস করেন। তবে পাশুপত অস্ত্র ধর্মের বিরুদ্ধে নিক্ষেপিত হলে কোনরকম ক্ষতি করেনা। কারণ, এটি ধর্মের রক্ষার জন্যই ব্যবহৃত হতে পারে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Soifer, Deborahof Narasiṁha and Vāmana: two avatars in cosmological perspective (১৯৯১)। Albany, N.Y: State University of New York Press। আইএসবিএন 0-7914-0799-3।
|শিরোনাম=
অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)p.85: K.P.1.15.70