পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন (১৯৩৫) জার্মান কবি বের্টোল্ট ব্রেশ্‌ট (১৮৯৮-১৯৫৬) এর একটি কবিতা। কবিতাটি বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। মূল কবিতাটির নাম ছিল "Fragen eines lesenden Arbeiters"।

পাঠ[সম্পাদনা]

কে বানিয়ে ছিল সাত দরজাওয়ালা থিবস? বইয়ে লেখে রাজার নাম।
রাজারা কি পাথর ঘাড়ে করে আনত?
আর বেবিলন এতবার গুঁড়ো হলো, কে আবার গড়ে তুলল এতবার?
সোনা ঝকঝকে লিমা যারা বানিয়েছিল তারা থাকতো কোন বাসায়?
চীনের প্রাচীর যখন শেষ হল সেই সন্ধ্যায় কোথায় গেল রাজমিস্ত্রিরা?
জয়তোরণে ঠাসা মোহনীয় রোম।
বানালো কে? কাদের জয় করল সিজার?
এত যে শুনি বাইজেনটিয়াম , সেখানে কি সবাই প্রাসাদেই থাকতো?
এমনকি উপকথার আটলান্টিস , যখন সমুদ্র তাকে খেল
ডুবতে ডুবতে সেই রাত্রে চিৎকার করে উঠেছিল ক্রীতদাসের জন্য।
ভারত জয় করেছিল তরুণ আলেকজান্ডার।
একলাই না কি?
গলদের নিপাত করেছিল সিজার। নিদেন একটা রাঁধুনী তো ছিল?
বিরাট আর্মাডা যখন ডুবল, স্পেনের ফিলিপ কেঁদেছিল খুব।
আর কেউ কাদেনি?
সাত বছরের যুদ্ধ জিতে ছিল দ্বিতীয় ফ্রেডারিক।
কে জিতেছিল? একলা সে?
পাতায় পাতায় জয়
জয়োৎসবের ভোজ বানাত কারা?
দশ দশ বছরে এক একজন মহামানব
খরচ মেটাতো কে?
কত সব খবর!
কত সব প্রশ্ন!

কবিতার বিষয়বস্তু[সম্পাদনা]

সমস্ত শ্রমিক মজুরশ্রেণির পক্ষ থেকে কবিতাটিতে কবি কিছু প্রশ্ন তুলেছেন। আসলে সেই প্রশ্নগুলোর মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে উত্তর। কবি মজুর বলতে এখানে স্থাপত্যশিল্পী, রাজমিস্ত্রী, দাস, সাধারণ শ্রমিক এমনকি সৈন্যদেরও বুঝিয়েছেন,যারা রাজাকে জেতানোর জন্য যুদ্ধ করেন। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় এদের কারো নাম লেখা থাকে না।সমস্ত মহান কর্মকান্ডের কৃতিত্ব লাভ করেন রাজা। মানবসভ্যতার অগ্রগতির পিছনে থাকা মূল কান্ডারি এই শ্রমিকশ্রেণি কখনই তাদের উপযুক্ত মর্যাদা পান না। প্রশ্নগুলো তুলে কবি এই বিতর্কটাকেই উসকে দিয়েছেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]