টুয়েলভথ ফেল
টুয়েলভথ ফেল | |
---|---|
পরিচালক | বিধু বিনোদ চোপড়া |
প্রযোজক |
|
রচয়িতা | বিধু বিনোদ চোপড়া |
কাহিনিকার | অনুরাগ পাঠক |
শ্রেষ্ঠাংশে |
|
সুরকার | শান্তনু মৈত্র |
চিত্রগ্রাহক | রঙ্গরাজন রামবদন |
সম্পাদক |
|
প্রযোজনা কোম্পানি | ভিনোদ চোপড়া ফিল্মস |
পরিবেশক | জি স্টুডিওস |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৪৬ মিনিট[১] |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
নির্মাণব্যয় | ₹২০ কোটি |
আয় | প্রা.₹৬৬.৫৮ কোটি[২] |
টুয়েলভ্থ ফেইল হলো ২০২৩ সালের ভারতীয় হিন্দি ভাষার একটি জীবনীমূলক নাট্য চলচ্চিত্র। এটি বিধু বিনোদ চোপড়া রচনা ও পরিচালনা করেছেন। এটি মনোজ কুমার শর্মার বাস্তব জীবনের গল্প সম্পর্কে অনুরাগ পাঠকের একটি উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। চলচ্চিত্রে মনোজ কুমার কিভাবে চরম দারিদ্রতা কাটিয়ে একজন ভারতীয় পুলিশ সার্ভিস (আইপিএস) অফিসার হয়েছেন তা চিত্রায়ণ করা হয়েছে। এতে মূখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বিক্রান্ত ম্যাসি, মেধা শঙ্কর, সঞ্জয় বিষ্ণোই এবং প্রিয়াংশু চ্যাটার্জি।[৩]
চলচ্চিত্রটি ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। এটি মুক্তির পরেই ভারতীয় সমালোচকদের ভূয়সী প্রশংসা লাভ করার পাশাপাশি বানিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্রের তকমা পেয়েছে।[৪][৫] ৬৯তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে, এটি সেরা চলচ্চিত্র, সেরা পরিচালক এবং সেরা অভিনেতা - সমালোচক সহ পাঁচটি পুরস্কার জিতেছে।[৬]
অভিনয়শিল্পী
[সম্পাদনা]- মনোজ কুমার শর্মার চরিত্রে বিক্রান্ত ম্যাসি
- শ্রদ্ধা জোশী চরিত্রে মেধা শঙ্কর
- প্রীতম পান্ডে চরিত্রে অনন্ত ভি জোশী
- তুতুল চরিত্রে অভিষেক সেনগুপ্ত
- গৌরী ভাইয়ার চরিত্রে আংশুমান পুষ্কর
- দ্বীপ মোহন চরিত্রে সাম মোহন
- ডিএসপি দুষ্যন্ত সিং চরিত্রে প্রিয়াংশু চ্যাটার্জি
- মনোজের মায়ের ভূমিকায় গীতা আগরওয়াল শর্মা
- মনোজের বাবার চরিত্রে হরিশ খান্না
- দাদির চরিত্রে সরিতা জোশী
- ড.বিকাশ দিব্যকীর্তি চরিত্রে নিজেই অভিনয় করেছেন
- নাভাল চরিত্রে সঞ্জয় বিষ্ণোই
- সুন্দর চরিত্রে বিজয় কুমার ডোগরা
- রজনীর চরিত্রে পেরি ছাবরা
- মিস্টার সোলাঙ্কির চরিত্রে দারিয়াস চিনয়
- তানিয়া চরিত্রে রাধিকা জোশি
- কিষানের চরিত্রে ফাসি খান, শ্রদ্ধা বাড়ির কর্মচারী
- ইন্টারভিউ বোর্ড প্রধানের চরিত্রে রাহুল দেব শেট্টি
সিনেমার কাহিনী
[সম্পাদনা]ডাকাত-আক্রান্ত চম্বল উপত্যকায় জন্মগ্রহণ করেন মনোজ কুমার শর্মা। সে মেয়রের জন্য কাজ করা একজন ন্যায়পরায়ণ কেরানির ছেলে এবং একজন সুবেদারের নাতি যিনি অ্যাকশনে মারা গিয়েছিলেন। তার বাবা এবং দাদী উভয়েই তাদের পথে অত্যন্ত সৎ এবং দুর্নীতিতে বিশ্বাস করেন না। এই দৃঢ় বিশ্বাসের কারণে, একজন দুর্নীতিবাজ অফিসারকে আঘাত করার জন্য মনোজের বাবাকে বরখাস্ত করা হয়। মনোজ তার দ্বাদশ ক্লাসের চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য তার সমস্ত ব্যাচ সঙ্গীদের মতো চিট স্লিপ (নকল) প্রস্তুত করে। নকলের ব্যবস্থা স্থানীয় এমএলএ-এর প্রভাবের অধীনে ছিল, যিনি নির্দেশ দেন যে সব ছাত্রদের অবশ্যই পাস করতে হবে। যাইহোক, সদ্য বদলি হওয়া ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (ডিএসপি) অফিসার দুষ্যন্ত সিং, স্কুলে এমএলএ এর কথা উপেক্ষা করেন এবং প্রধান শিক্ষক পরবর্তীতে তাকে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি তাকে গ্রেপ্তার করেন। ফলে মনোজসহ সকল ছাত্রই পরীক্ষায় ফেল করে। এদিকে তার বাবা তার বরখাস্তকে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করতে যান, পরিবারের ভার মনোজ ও তার বড় ভাইয়ের ওপর ছেড়ে দেন। ভাইয়েরা একটি ট্রাভেলিং রিকশা একসাথে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় এবং পারিশ্রমিক নেয়, যাতে করে বাড়িতে সাহায্য করা যায়।
মেয়রের স্থানীয় দোসরকে আঘাত করার জন্য মনোজের ভাইকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়, যখন সে তার যাত্রীদের বাসে যাতায়াত করার চেষ্টা করে। দুর্নীতিবাজ পুলিশ অফিসাররা তাদেরও ফাঁসানোর চেষ্টা করে। স্টেশন হাউজ অফিসার দ্বারা তার ভাইকে গুলি করা থেকে বাঁচাতে তার দাদার রাইফেল আনার জন্য তাকে প্ররোচিত করে। কিন্তু মনোজ রাইফেল আনার পরিবর্তে দুষ্যন্তের বাড়িতে ছুটে যান, যিনি তার ভাইকে জামিন দেন। মনোজ যখন দুষ্যন্তের মতো একজন উচ্চপদস্থ অফিসার কিভাবে হওয়া যায় জানাতে অনুরোধ করে, তখন দুষ্যন্ত তাকে "শুধু প্রতারণা বন্ধ করতে হবে" এমন পরামর্শ দেয়।
এক বছর পরে, মনোজ তার দ্বাদশ পরীক্ষায় প্রতারণা ছাড়াই পাস করে, যদিও তৃতীয় বিভাগে। ডিএসপি হওয়ার জন্য ইতিহাস এবং হিন্দি সাহিত্যে স্নাতক করার সিদ্ধান্ত নেয়। গোয়ালিয়র শহরের একটি সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা করার জন্য তার দাদী তাকে তার সমস্ত সঞ্চয় দেন, কিন্তু সে বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ার কারণে তার সব জিনিসপত্র হারিয়ে ফেলে। সে ক্ষুধার্ত পেটে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে শুরু করে, তখন অন্য একটি খবর তাকে আঘাত করে: মধ্যপ্রদেশ সরকার আগামী তিন বছরের জন্য মধ্যপ্রদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ-১ পরীক্ষা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কারণ নতুন কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য সরকারের কাছে তহবিল কম। এতে তার সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ (ডিএসপি) হওয়ার স্বপ্ন ভেস্তে যায়। সে ক্ষুধার তাড়নায় অজ্ঞান হওয়ার আগ পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করে। কিন্তু স্থানীয় রেলওয়ে স্টেশনের কাছে, একটি স্থানীয় হোটেলে কাজের বিনিময়ে খাবার দিতে বলায় হোটেল মালিক তাকে ফ্রিতে খাবার দেয়।
হোটেলে তার প্রীতম পান্ডের (সিনেমার গল্পকথক) সাথে দেখা হয়, যে পিএসসি পরীক্ষার জন্য পড়তে এসেছিলো। পান্ডের ধনী কন্ট্রাক্টর বাবা তাকে বলেন, দিল্লিতে ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে। মনোজ তার কাছে ইউপিএসসি পরীক্ষা সম্বন্ধে জানতে পারে। প্রীতমের সাথে দিল্লীতে অধ্যয়ন করতে এবং আইপিএস অফিসার হওয়ার জন্য ভ্রমণ করে। সেখানে তুতুল নামে একজন তাদেরকে গৌরী ভাইয়ার সাথে পরিচয় করে দেন, যিনি ইউপিএসসি পরীক্ষা পাস করার জন্য ষষ্ঠ বারের মতো তার শেষ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। গৌরি ভাইয়ার সময়ে ছয় বার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকলেও বর্তমানে চারবার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকে। তিনি মনোজকে লাইব্রেরীতে চাকরির সুযোগ এবং অধ্যয়নের জন্য একটি জায়গা প্রদান করেন। যাইহোক, গৌরী ভাইয়া তার চূড়ান্ত প্রচেষ্টায় ভাইভায় উত্তীর্ণ হতে অক্ষম হয়। এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে, গৌরী ভাইয়া রিস্টার্ট নামে একটি কোচিং ইনস্টিটিউট ও একটি চায়ের স্টল খোলেন এবং বিনামূল্যে তার পরিষেবা প্রদান করেন।
পরের বছর, মনোজ ইউপিএসসির প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় চেষ্টা করে, কিন্তু ব্যর্থ হয়। গৌরী ভাইয়ার সাহায্যে, মনোজ আবার পরীক্ষা দেয় এবং প্রিলিমানারি পরীক্ষায় পাঁশ করে। লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য A to Z নামে একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়ার সময়, মনোজের সাথে মুসৌরির শ্রদ্ধা জোশীর সাক্ষাৎ হয়। সেই কোচিং সেন্টার, সেবছর ইউপিএসসি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া ইংরেজি মিডিয়ামের ছাত্র দ্বীপ মোহন দেড় লাখ রুপির বিনিময়ে এ-টু-জেড কোচিং সেন্টারে পড়েছে বলে চুক্তি করে। দ্বীপ মোহন এই কোচিংয়ে পড়েনি বলে মনোজ প্রতিবাদ করে, ফলে মনোজ-শদ্ধা কেউই আর এই কোচিং-এ ভর্তি হয়নি। পরে তারা ড.বিকাশ দিব্যকীর্তি স্যারের কোচিংয়ে ভর্তি হয়। শ্রদ্ধা ইউপিএসসি এবং উত্তরাখণ্ড পাবলিক সার্ভিস কমিশনের জন্য লক্ষ্য করে দিল্লিতে এসেছিলো। একদিন শদ্ধা লাইব্রেরীতে মনোজের সাথে সাক্ষাৎ করতে আসে এবং এভাবে একসময় তারা প্রেমে পড়ে। মনোজ তার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, সে বছরও তার লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি। নতুন প্রেমের কারণে অমনোযোগী হওয়ায় সে ইংরেজি পরীক্ষায় টুরিজম ইন ইন্ডিয়া রচনার পরিবর্তে টেরোরিজম ইন ইন্ডিয়া রচনা লিখে এসেছিলো। শ্রদ্ধার সাথে তার প্রাথমিকভাবে উদীয়মান সম্পর্কটি একটি সংক্ষিপ্ত অবরোধে আঘাত করে যখন সে তার প্রকৃত পরিচয় একজন সাহিত্য স্নাতক না হয়ে একজন বৈমানিক প্রকৌশলী হিসাবে জানতে পারে। তারপর মনোজ আরও কঠোর পরিশ্রম করার সিদ্ধান্ত নেয়, যদিও এটি একই ফলাফল দেয়। মনোজ বাড়ি ফিরে দেখে যে, তার দাদি মারা গেছেন। তার প্রস্তুতিতে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, তাই মনোজের দাদী তার মৃত্যুর খবর মনোজকে জানাতে নিষেধ করেছিলো।
আটার মিলে কাজ করার পাশাপাশি লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ায় মনোজ তৃতীয়বারেও লিখিত পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হয়। চতুর্থবার (সর্বশেষ) পরীক্ষার জন্য প্রীতম-শ্রদ্ধা উভয়েই মনোজকে অনুপ্রাণিত করে। মনোজ দ্বীপ মোহনের কাছে গিয়ে লিখিত প্রস্তুতির পরামর্শ নেয়। পরবর্তীতে গৌরী ভাইয়া মনোজকে তার নিজের রুমে থাকার জায়গা করে দেয় এবং তাকে বলে যে, "লাইব্রেরীতে কাজ করা, আটার দোকানে কাজ করা ছেড়ে দিতে এবং তার পড়াশোনায় পুরোপুরি মনোযোগ দিতে হবে। বাস-ট্রেনে করে বিভিন্ন শহর থেকে দিল্লিতে আসা ভেড়ার দলের মধ্যে যদি একটা ভেড়াও জিতে যায়, তাহলে পুরো ভেড়ার পাল জিতে যাবে।" গৌরি ভাইয়া মনোজের পরিবারের জন্য চম্বলে রুপি পাঠায়। মনোজ পড়াশোনা করতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত মূল রিটেন পরীক্ষাতেও পাশ করে। শ্রদ্ধা এই সময়ের মধ্যে ডেপুটি কালেক্টর হওয়ার জন্য তার ইউকেপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। এই সময়ে, প্রীতম তার পরীক্ষায় বারবার ব্যর্থ হওয়ায় মনোজের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়। ফলে মনোজ এবং শ্রদ্ধাকে অপমান করার জন্য শ্রদ্ধার বাবার সাথে ফোনালাপে দাবি করে যে, শ্রদ্ধা মনোজের সাথে ঘুমিয়েছে। এটি তাদের সম্পর্কের মধ্যে একটি দূরত্ব সৃষ্টি করে। যদিও মনোজ প্রীতমের উপর খুব রেগে যায় কিন্তু অবশেষে এটি সমাধান হয়ে যায়। মনোজ আগেই বুঝতে পেরেছিলো যে, প্রীতম একজন রিপোর্টার হিসাবে কাজ করতে চেয়েছিলো, যদিও তার বাবা তাকে ইউপিএসসি-এর জন্য বাধ্য করছেন এবং সে প্রীতমকে তার বাবার কথার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নিজের প্যাশনকে বেঁছে নেওয়ার পরামর্শ দেয়।
মনোজ তার ইউপিএসসি পরীক্ষার ইন্টারভিউ দেয় এবং সততার সাথে সব প্রশ্নের উত্তর দেয়। শ্রদ্ধা তাকে বিয়ে করার জন্য নিজের লেখা একটি চিঠি মনোজকে দেয়। দ্বাদশে ফেইল করায় ইউপিএসসি ভাইভায় তাকে নানাবিধ কথা শুনতে হয়। যদিও মনোজ আনন্দের সাথে সাক্ষাৎকার দেয় এবং হাসিমুখে বেরিয়ে আসেন। দুই মাস পরে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। মনোজ যখন বুঝতে পারে যে, সে আইপিএস অফিসার হওয়ার পদ পেয়েছে, তখন সে আবেগে কান্নায় ভেঙে পড়ে। এক বছর পরে, মনোজ শ্রদ্ধার সাথে থাকার জন্য উত্তরাকাণ্ডের একজন উচ্চ-পদস্থ আইপিএস অফিসার হন এবং মধ্যপ্রদেশের মান্দসৌর থানায় ডিএসপি দুশ্যন্ত সিংয়ের সাথে দেখা করতে যায় এবং তাকে প্রতারণা ত্যাগ করতে উৎসাহিত করার জন্য ডিএসপিকে ধন্যবাদ জানায় এবং মনোজ-শ্রদ্ধার বিবাহের আমন্ত্রণ কার্ড দেয়। দুষ্যন্ত প্রথমে মনোজকে চিনতে পারেনি, কিন্তু পরে পুরোপুরি মনে পড়ায় তার সাফল্যের জন্য আনন্দে মনোজকে আলিঙ্গন করে। চলচ্চিত্রটি শেষ হয় যখন মনোজ তার বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে তার বিবাহ উদযাপন করে। নিষ্ঠুর এবং প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থার জোয়ারের বিপরীতে গিয়ে প্রীতম রিপোর্টার হিসাবে উপস্থিত হয়। মূলত পুরো সিনেমাটিই যেনো প্রীতমের একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম। এই গল্পের ন্যারেটর (কথক) প্রীতম অবশেষে তার স্বপ্নকেই অনুসরণ করে।
মনোজ কুমার শর্মা
[সম্পাদনা]সিনেমায় মনোজ কুমার শর্মার ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দেখানো হয়েছে। সিনেমাটি অনুরাগ পাঠকের ২০১৯ সালের "টুয়েলভথ ফেইল: হারা ওহি, যো লাড়া নেহি" উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে।
মনোজ কুমার শর্মা ২০০৫ সালে ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ভারতীয় পুলিশ সার্ভিসে (আইপিএস) যোগ দেন। দৃঢ় সংকল্পের সাথে, তিনি তার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেছিলেন। চতুর্থ প্রচেষ্টায় তিনি সারা ভারতে ১২১ তম রেঙ্কের সাথে আইপিএস হয়েছিলেন।
উৎপাদন
[সম্পাদনা]উন্নয়ন
[সম্পাদনা]২০২২ সালের নভেম্বরে, চলচ্চিত্র নির্মাতা বিধু বিনোদ চোপড়া অনুরাগ পাঠকের "টুয়েলভথ ফেইল: হারা ওহি, যো লাড়া নেহি" উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করবেন বলে ঘোষণা করেন। তিনি আরও বলেন যে, সিনেমার প্রধান চরিত্র বিক্রান্ত ম্যাসির সাথে প্রথমবারের মতো কাজ করতে যাচ্ছেন। বিক্রান্ত ম্যাসি বলেন, সিনেমাটি প্রাণবন্ত করতে অনেক ইউপিএসসি প্রত্যাশীদের সিনেমায় রাখা হয়েছে। ইউপিএসসি কোচ ড.বিকাশ দিব্যকীর্তি সিনেমার ক্যামিও চরিত্রে ছিলেন। সিনেমায় আইপিএস মনোজ কুমার শর্মা ও আইআরএস শ্রদ্ধা জোশির ক্যামিও দৃশ্যও রাখা হয়েছে।
চিত্রগ্রহণ
[সম্পাদনা]চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছে মূলত আগ্রা, চম্বল, দিল্লি, মুসৌরি এবং মুম্বাইয়ের বিভিন্ন লোকেশনে। চলচ্চিত্রের একটি বড় অংশের শুটিং করা হয়েছে সরকারি চাকরি প্রত্যাশীদের জন্য দুটি শিক্ষা কেন্দ্র, রাজেন্দ্র নগর এবং মুখার্জি নগরে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে চিত্রগ্রহণ শেষ হয়।
সংগীত
[সম্পাদনা]ফিল্মটির মিউজিক করেছেন শান্তনু মৈত্র এবং গান লিখেছেন স্বানন্দ কিরকিরে এবং রাফতার। সেতার ও বাঁশির ব্যবহারসহ শান্তনু মৈত্র ফিল্মের ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরটি পন্ডিত রবিশঙ্করের বাংলা ছবি পথের পাঁচালী (১৯৫৫) স্কোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল। সিনেমায় রিস্টার্ট নামে একটি রেপ গান ও বলো না শিরোনামে আরও একটি গান রয়েছে। শান ও শ্রেয়া ঘোষাল এর কন্ঠে বলো না গানের প্রোমোশনাল গান ইউটিউবে রিলিজ হয়েছিলো। তবে মূল সিনেমায় শ্রদ্ধা জোশী চরিত্রে অভিনয় করা মেধা শঙ্কর নিজেই গানটি গেয়েছিলো। অন্যদিকে, রিস্টার্ট রেপ গানটি গেয়েছেন স্বানন্দ কিরকিরে, শান, বিধু বিনোদ চোপড়া, রাফতার ও শান্তনু মৈত্র।
মুক্তি
[সম্পাদনা]নাট্য
[সম্পাদনা]চলচ্চিত্রের টিজারটি ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট মুক্তি পায়। ট্রেইলারটি একই বছর ৩ অক্টোবর মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটি ২৭ অক্টোবর ২০২৩-এ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।[৭][৮] হিন্দিতে সাফল্যের পর, নির্মাতারা ঘোষণা করেন যে, ছবিটি তামিল এবং তেলুগু ভাষায় ডাব করা হবে। যেটি ২০২৩ সালের ৩ নভেম্বর মুক্তি পায়।[৯][১০]
হোম মিডিয়া
[সম্পাদনা]চলচ্চিত্রটি ডিজনি+ হটস্টারে ২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর থেকে স্ট্রিমিং শুরু হয়।[১১]
প্রশংসা
[সম্পাদনা]পুরস্কার | অনুষ্ঠানের তারিখ | বিভাগ | প্রাপক | ফলাফল | সূত্র |
---|---|---|---|---|---|
ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | ২৮ জানুয়ারী ২০২৪ | সেরা চলচ্চিত্র | বিনোদ চোপড়া ফিল্মস, জি স্টুডিওস | বিজয়ী | [১২][১৩] |
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র (সমালোচক) | বিধু বিনোদ চোপড়া | মনোনীত | |||
সেরা পরিচালক | বিজয়ী | ||||
সেরা চিত্রনাট্য | বিজয়ী | ||||
সেরা সংলাপ | মনোনীত | ||||
সেরা অভিনেতা (সমালোচক) | বিক্রান্ত ম্যাসি | বিজয়ী | |||
সেরা সম্পাদনা | জুসকুনওয়ার কোহলি, বিধু বিনোদ চোপড়া | বিজয়ী | |||
সেরা উৎপাদন ডিজাইন | প্রশান্ত বিডকর | মনোনীত | |||
সেরা সিনেমাটোগ্রাফি | রন্দরাজন রামবদ্রন | মনোনীত | |||
সেরা সাউন্ড ডিজাইন | মানব শ্রোত্রিয় | মনোনীত | |||
সেরা ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর | শান্তনু মৈত্র | মনোনীত | |||
সেরা কস্টিউম ডিজাইন | মালবিকা বাজাজ | মনোনীত |
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "12th Fail(12A)"। ব্রিটিশ বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন। ২০২৩-১১-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-০১।
- ↑ "12th Fail Box Office"। বলিউড হাঙ্গামা (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-১১-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-০২।
- ↑ "Vikrant Massey and Vidhu Vinod Chopra on 12th Fail: 'It is an homage to bureaucrats of the country"। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। ২০২২-১১-১৪। ২০২৩-১০-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-০১।
- ↑ "Tejas box office collection Day 2: Kangana Ranaut gets toppled by 12th Fail, earns Rs 2.50 crore"। ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস। ২০২৩-১০-২৯। ২০২৩-১০-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-৩০।
- ↑ "12th Fail' box office collection Day 2: Vikrant Massey's film gets a thumbs up"। ইন্ডিয়া টুডে। ২০২৩-১০-২৯। ২০২৩-১০-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-০১।
- ↑ "69th Hyundai Filmfare Awards 2024 : Winners List!"। filmfare.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০১-২৯।
- ↑ "https://www.filmfare.com"। filmfare.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-১২-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-২৯।
|title=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য) - ↑ "Know Manoj Kumar Sharma's Real-Life Story, Played by Vikrant Massey in Vidhu Vinod Chopra's 12th Fail"। News18 (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-১০-০৯। ২০২৩-১০-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-২৯।
- ↑ Hungama, Bollywood (২০২৩-১১-০২)। "Vikrant Massey starrer 12th Fail to release in Tamil and Telugu tomorrow 12 : Bollywood News - Bollywood Hungama" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-১১-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-২৯।
- ↑ "After surprise success at box office, Vidhu Vinod Chopra's Vikrant Massey-starrer 12th Fail to release in Tamil, Telugu"। DNA India (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-১১-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-২৯।
- ↑ Hungama, Bollywood (২০২৩-১২-২৪)। "Vikrant Massey starrer 12th Fail to release on THIS OTT platform 12 : Bollywood News - Bollywood Hungama" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-১২-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-২৯।
- ↑ "Winners of the 69th Filmfare Awards 2024"। Filmfare। ২৮ জানুয়ারি ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০২৪।
- ↑ "Nominations for the 69th Hyundai Filmfare Awards 2024 with Gujarat Tourism: Full list out"। Filmfare। ১৫ জানুয়ারি ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২৪।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে টুয়েলভথ ফেল (ইংরেজি)
- বলিউড হাঙ্গামায় টুয়েলভথ ফেল (ইংরেজি)