গাওয়া
গাওয়া বা উদগাতা বলতে গলার সাহায্যে শব্দ সৃষ্ট করার কর্মকে এবং সুর ও ছন্দের সাহায্যে কথাকে নিয়মিতভাবে আগানোকে বোঝায়। যে ব্যক্তি গান গায় তাকে গায়ক বা ভোকালিস্ট বলে। গায়ক যে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন তা এককভাবে কোন সাহায্য ছাড়া অথবা বিভিন্ন সঙ্গীতজ্ঞদের এবং বাদ্যযন্ত্রের সমন্বয়ে গাওয়া যেতে পারে এমনকি একটা পূর্ণাঙ্গ সিম্ফোনি অর্কেস্ট্রা বা বড় সঙ্গীত দলের মাধ্যমে। গান গাওয়া আসলে হতে পারে অনেক লোক মিলে কোরাসে বা নানা বাদ্যযন্ত্রের সমন্বয়ে যেমন রক ব্যান্ডে যেভাবে গাওয়া হয়। গান গাওয়াটা সাধারণভাবেও হতে পারে আনন্দের জন্য যেমন শাওয়ারে গান গাওয়া বা কারাওকেতে গান করা; আবার এটা প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও হতে পারে যেমন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বা পেশাদারভাবে মঞ্চে বা রেকর্ডিং স্টুডিওতে। শৌখিন বা পেশাদারভাবে গান গাওয়াতে দরকার হয় বিভিন্ন নির্দেশনা এবং নিয়মিত অনুশীলন।[১] পেশাদার গায়করা তাদের সঙ্গীত জীবন গড়ে তোলে সাধারণত একটা নির্দিষ্ট ধারার সঙ্গীতে যেমন ক্ল্যাসিক্যাল বা রক এবং তারা সঙ্গীতের চর্চা করে তাদের সারা সঙ্গীত জীবন জুড়ে গানের গুরুর মাধ্যমে।
মানুষ ব্যতীত অন্যান্য প্রাণীর গান
[সম্পাদনা]পন্ডিতরা বলেন যে মানুষ ছাড়াও নানা ধরনের প্রাণীরা গান গেয়ে থাকে।[২][৩] বিভিন্ন জাতের প্রাণীদের মাঝে এই স্বাধীনভাবে গান গাওয়ার অভ্যাসটা আছে যেমন-পাখি,তিমি,মানুষ। বর্তমানে প্রায় ৫৪০০ জাতের প্রাণী গান করে থাকে।কমপক্ষে কিছু প্রাণীরা গান গাওয়াতে দক্ষতার বৃদ্ধি ঘটাতে পারে যেমন গানের উন্নতি করা ও নতুন সুর তৈরি করা।[৪] কিছু কিছু প্রাণীরা আবার দলবেঁধে গান গায় যেমন গিবনের দল।[৫] তবে মানুষই একমাত্র প্রাণী যাদের ছন্দ জ্ঞান আছে এবং যারা সুরের মাধ্যমে গান গাইতে পারে।
স্বাস্থ্যগত সুবিধা
[সম্পাদনা]বৈজ্ঞানিক গবেষণা আমাদের বলে যে গান গাওয়ার স্বাস্থ্যগত সুবিধা আছে। একটি প্রাথমিক গবেষণাতে দেখা যায় যেখানে জরিপে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের তথ্য সরবরাহ করেছে; কোরাস গানে অংশ গ্রহণ করা ছাত্ররা ফুসফুসে বাড়তি সুবিধা, চনমনে অনুভূতি, চাপমুক্ত অবস্থা এবং নানা ধরনের সামাজিক ও ধর্মীয় সুবিধা লাভ করে।[৬] যাইহোক আরেকটা পুরানো গবেষণাতে দেখা যায় যে যাদের পেশাগত গলার চর্চা করে তাদের ফুসফুসের ক্ষমতা আস্তে আস্তে কমতে থাকে যারা পেশাদার ভাবে গান করে না তাদের চেয়ে।[৭] গান গাওয়া ভালোভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি চাপমুক্তির মাধ্যমে। আরেকটা সমীক্ষায় দেখা যায় যারা কোরাসে গান গায় এবং যারা শোনে তাদের উভয়েরই চাপ সৃষ্টিকারী হরমোন কমে যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি পায়।[৮] একটি বহুজাতিক গবেষণা হয় ২০০৯ সালে সঙ্গীত এবং স্বাস্থ্যের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে যা অ্যাডাভন্সিং ইন্টার ডিসিপ্লিনারী রিসার্চ ইন সিঙ্গিং নামে পরিচিত।[৯]
সংগীতের ধারা
[সম্পাদনা]বিভিন্ন ধরনে ও স্টাইলের গান গাওয়া হয়ে থাকে। এসব গানের ধারাগুলো হলোঃ শৈল্পিক সঙ্গীত, জনপ্রিয় সঙ্গীত,জাতীয় এবং স্থানীয় সঙ্গীত, ফিউশন ও অন্যান্য ধরনের সঙ্গীত। বড় সঙ্গীত ধারার আবার উপধারাও থাকে। যেমন জনপ্রিয় সঙ্গীতের ধারার মধ্যে আছে ব্লুজ, জ্যাজ সঙ্গীত, কান্ট্রি সঙ্গীত, ইজি লিসেনিং, হিপহপ, রক সঙ্গীত এবং অন্যান্য সঙ্গীত ধারা।আবার উপধারাও উপধারা থাকতে পারে, যেমন জ্যাজ সঙ্গীতে আছে ভোকালিজ এবং স্ক্যাট সিংগিং উপধারা।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Falkner, Keith, ed (1983). Voice. Yehudi Menuhin music guides. London: MacDonald Young. pp. 26. আইএসবিএন ০-৩৫৬-০৯০৯৯-X. OCLC 10418423
- ↑ Marler, Peter (1970). Birdsong and speech development: Could there be parallels? American Scientist 58:669-73
- ↑ Wallin, Nils, Bjorn Merker, Steven Brown. (Editors) (2000). The origins of music. Cambridge, MA: MIT
- ↑ Payne, Katherine (2000). “The progressively changing songs of humpback whales: a window on the creative process in a wild animal.” In The Origins of Music. Edited by N. L. Wallin, B. Merker and S. Brown, pp. 135-150. Cambridge, MA:MIT
- ↑ Geissmann, Thomas. 2000. “Gibbon songs and human music from an evolutionary perspective.” In The origins of Music. Edited by N. Wallin, B. Merker and S. Brown, pp. 103-124. Cambridge, MA:MIT
- ↑ Clift, SM; Hancox, G (2001). "The perceived benefits of singing". The Journal of the Royal Society for the Promotion of Health 121 (4): 248–256. doi:10.1177/146642400112100409. PMID 11811096
- ↑ Heller, Stanley S; Hicks, William R; Root, Walter S (1960). "Lung volumes of singers". J Appl Physiol 15 (1): 40–42. PMID 14400875
- ↑ Kreutz, Gunter; Bongard, Stephan; Rohrmann, Sonja; Hodapp, Volker; Grebe, Dorothee (December 2004). "Effects of choir singing or listening on secretory immunoglobulin A, cortisol, and emotional state". Journal of Behavioral Medicine 27 (6): 623–635
- ↑ Mick, Hayley (19 June 2009). "Doctor's prescription: 2 arias + a chorus". The Globe and Mail http://www.theglobeandmail.com/life/health/doctors-prescription-2-arias-a-chorus/article1186101/ আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ১২ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে