এল সিদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রড্রিগো ডায়াজ দ্য বিবর
ভ্যালেন্সিয়ার রাজপুত্র
আন্না হায়াত হান্টিংটন কর্তৃক এল সিদের ভাস্কর্য
ভ্যালেন্সিয়ার রাজপুত্র
রাজত্ব১০৯৪-১০৯৯
রাজ্যাভিষেক১০৯৪
উত্তরসূরিজিমেনা ডায়াজ
জন্মআনুমানিক ১০৪০
বিবর, বার্গোস
মৃত্যু১০৯৯
ভ্যালেন্সিয়া
সমাধি
দাম্পত্য সঙ্গীজিমেনা ডায়াজ
বংশধরদিয়েগো রড্রিগুয়েজ
ক্রিস্টিনা রড্রিগুয়েজ
মারিয়া রড্রিগুয়েজ
পিতাদিয়েগো লাইনেজ
স্বাক্ষরএল সিদ স্বাক্ষর

রড্রিগো ডায়াজ দ্য বিবর (স্পেনীয়: El Cid; জন্ম: ১০৪৩ - মৃত্যু: ১০ জুলাই, ১০৯৯) মধ্যযুগীয় স্পেনের বিবরে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত স্পেনীয় জেনারেল ছিলেন। আদালত থেকে নির্বাসন দণ্ড পেয়ে এল সিদ (স্পেনীয়: [el ˈθið]) ক্যাম্পিয়াদোর মুরিস বাহিনী পরিচালনা করেন। খ্রিস্টানদেরকে পরাজিত করে তিনি পুনরায় স্বীয় দায়িত্বে ফিরে আসেন। খ্রিস্টান ও মুরিস সেনাবাহিনীর যৌথ দলের নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। অসম সাহসী এ জেনারেলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ফলে তার দেশ জয়লাভ করে।

কাস্তিলোনা দ্য বিবর নামেও পরিচিত ছিলেন এল সিদ। মুসলিম অধিবাসীরা তাকে আদর করে এল সিদ ডাকনাম প্রদান করেন। স্পেনীয় আরবি শব্দ এল সিদের অর্থ হচ্ছে প্রভু। তার মৃত্যুর পর কাস্তাইলে তাকে জাতীয় বীর হিসেবে আখ্যায়িত করে। এছাড়াও, মধ্যযুগীয় স্পেনীয় কবিতা এল কান্টর দ্য মাইও সিদের প্রধান চরিত্রে ছিলেন।[১]

শৈশবকাল[সম্পাদনা]

১০৫৮ সালে তার বাবা দিয়াগো লাইনেজ নিহত হলে তিনি অনাথ হন। এরফলে তাকে কাস্তিলের রাজা প্রথম ফার্দিনান্দের আদালতে হাজির করা হলে রাজার পুত্র দ্বিতীয় সাঞ্চোজের তত্ত্বাবধানে দায়িত্ব দেয়া হয়। দ্বিতীয় সাঞ্চোজের পুত্র তৃতীয় সাঞ্চোজের সাথে এল সিদও পড়াশোনা করতে থাকেন। এরফলে তারা খুব দ্রুত একে-অপরের বন্ধু হন। তারপর এল সিদ নিজেকে পরীক্ষিত যোদ্ধা হিসেবে প্রমাণ করেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

১০৬৫ সালে ক্যাসেলের রাজা ফার্দিনান্দের (স্পেনের ষষ্ঠ ফার্দিনান্দ) দেহাবসান ঘটে। ফলে, রাজ্যটি সাঞ্চোর ক্যাসল, আলফন্সোর লিওন এবং গার্সিয়ার গ্যালিসিয়া - এ তিন অংশে বিভক্ত হয়ে যায়। এল সিদ আলফন্সোর আদর্শ বাহক হন। এছাড়াও, তার সেনাবাহিনীর জেনারেল মনোনীত হন।

কিন্তু রাজা সাঞ্চো তার লোকান্তরিত বাবার তিন অংশে বিভক্ত হয়ে যাওয়া অংশগুলোকে পুনরায় একত্রিত করে রাজত্বকে শক্তিশালী করতে চাচ্ছিলেন। ফলশ্রুতিতে ১০৬৮ সালে লান্তাদায় তিনি তার বড় ভাই আলফন্সো ও তার সেনাবাহিনীর উপর আক্রমণ করে পরাজিত করেন। ১০৭২ সালে গলপেজারায় এল সিডের সহায়তা নিয়ে সাঞ্চো পুনরায় আলফন্সোকে পরাজিত করেছিলেন। রাজা আলফন্সোকে তার ভাই নির্বাসন দণ্ড প্রদান করেন। অক্টোবরে সাঞ্চো জামোরা নাইট উপাধিপ্রাপ্ত হন।

ভাইয়ের মৃত্যুর পর আলফন্সো নির্বাসন থেকে ফিরে আসেন ও মৃত ভাইয়ের সিংহাসন দাবী করেন। এল সিদ আলফন্সোকে মুকুট পড়ান ও তাকে রাজা ঘোষণা করেন। তাস্বত্ত্বেও আলফন্সো ভীত ছিলেন। এল সিদের কাছ থেকে বিশ্বস্ততার কোন প্রমাণ পাননি।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

১০৭৪ সালে আলফন্সোর ভাতিজি জিমেনাকে বিয়ে করেন এল সিদ। কেউ কেউ মনে করেন যে, আলফন্সো নিজেই এ বিয়ে পরিচালনা করেছেন। এরফলে এল সিদ তার নজরদারীতে থাকতে পারবেন। আলফন্সো কখনো এল সিদকে সেনাবাহিনীতে ভালো অবস্থানে নিয়ে যাননি ও তাকে জনপ্রিয় হতে বাঁধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।

নির্বাসন[সম্পাদনা]

এল সিদ খুব শীঘ্রই অসহিষ্ণু হয়ে পড়েন। আলফন্সোর অনুমতি ব্যাতিরেকেই তোলেদো শহর দখল করে বসেন। এরফলে আলফন্সো অত্যন্ত উন্মাদের ন্যায় আচরণ করতে থাকেন। তার মন্ত্রণাদাতারা বলতে থাকেন যে, তার অনুমতি ছাড়াই শহর আক্রমণ করে এল সিদ বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন ও ভুল তথ্য পরিবেশন করেছেন। তারপর ১০৮১ সালে আলফন্সো কাস্তিলো শহর থেকে তাকে বিতাড়িত করেন।[২]

বেতনভূক্ত ও পেশাদার সৈনিক হিসেবে মুসলিম বাদশাহ সারাগোসার অধীনে কাজ করেন। এ সময়ে এল সিদ খ্রিস্টানদের আক্রমণ প্রতিহত করে পরাজিত করেন ও নিজেকে আরও দক্ষ এবং জেনারেল হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন। এরফলে অন্যান্য রাজা ও জেনারেলগণ ভীতসন্ত্রস্ত হন এই ভেবে যে, এল সিদ তাদেরকে অতিক্রম করে হয়তোবা ক্ষমতায় আরোহণ করে ফেলবেন।

দেহাবসান[সম্পাদনা]

১০ জুলাই, ১০৯৯ সালে ভ্যালেন্সিয়ায় তার দেহাবসান ঘটে। মৃত্যুর পূর্বে তিনি অনেকগুলো শহর দখল করেন। তার মৃত্যুর পর জিমেনা ডায়াজ উত্তরাধিকারী হিসেবে ভ্যালেন্সিয়ার শাসক মনোনীত হন। কিন্তু, ১১০২ সালে তিনিও আলমোরাভিদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

এল সিদের জীবনী অনেক নাট্যকার ও কবি হৃদয়কে উৎসাহিত করছে।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Barton, Simon and Richard Fletcher (২০০০)। The World of El Cid: Chronicles of the Spanish Reconquest। Manchester, UK: Manchester University Press। আইএসবিএন 9780719052262 
  2. Fee, Christopher R. (২০১১)। Mythology in the Middle Ages: Heroic Tales of Monsters, Magic, and Might। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 161। আইএসবিএন 9780275984069 
  3. Watts, Tim. "El Cid." World History: Ancient and Medieval Eras. ABC-CLIO, 2013. Web. 27 Feb. 2013

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জী[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

  • উইকিমিডিয়া কমন্সে এল সিদ সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।