কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার
কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার | |
---|---|
জন্ম | [১] সেনহাটি, খুলনা | ৩১ মে ১৮৩৭
মৃত্যু | ১৩ জানুয়ারি ১৯০৭[১] সেনহাটি, খুলনা | (বয়স ৬৯)
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারতীয় |
পেশা | লেখক |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | সদ্ভাব শতক |
কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার (৩১ মে,১৮৩৪ - ১৩ জানুয়ারি,১৯০৭) হলেন একজন স্বনামধন্য বাঙালি কবি ও পত্রিকা সম্পাদক। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তার পক্ষে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। মূলত কীর্তিপাশার জমিদারের অর্থানুকূল্যে তিনি জীবনযাপন করেন।[২] কবির স্মৃতির উদ্দেশ্যে দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি গ্রামে ১৯১৪ সালে কবি কৃষ্ণ চন্দ্র ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।[৩]
জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি
[সম্পাদনা]কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার অধুনা বাংলাদেশের খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটিতে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মাণিক্যচন্দ্র মজুমদার। পিতৃহীন হয়ে ঢাকায় অপরের আশ্রয়ে প্রতাপাদিত্যের হন এবং ফরাসি ভাষা শিক্ষা করেন। কৃষ্ণচন্দ্র ১৮৫৪ সালে বরিশালের কীর্তিপাশা বাংলা বিদ্যালয়ের প্রধান পন্ডিতপদে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি ঢাকার নর্মাল স্কুলে যোগদান করেন, কিন্তু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায় চাকরি ছেড়ে তিনি মডেল স্কুলে (১৮৬০) যোগ দেন। এভাবে তিনি বিভিন্ন স্কুলে দীর্ঘ উনিশ বছর শিক্ষকতা করেন।[২] সবশেষে যশোর জেলা স্কুলে প্রধান পণ্ডিতের কাজ করে অবসর নেন। শেষ জীবনে কৃষ্ণচন্দ্র সেনহাটিতে বসবাস করেন এবং বিভিন্ন সঙ্গীত রচনা করে অবসর জীবন কাটান। ১৯০৭ সালের ১৩ জানুয়ারি তার মৃত্যু হয়।
রচনাবলী
[সম্পাদনা]তার প্রথম ও শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ "সদ্ভাব শতক" (ঢাকা, ১৮৬১)| এই বইটির অধিকাংশ কবিতা নীতিমূলক, যা সুফী এবং হাফিজের ফার্সি কবিতার অনুসরণে রচিত।
ছেলেবেলা তার ছদ্মনাম ছিল রামচন্দ্র দাস, সংক্ষেপে রাম। তাই পরিণত বয়সে তিনি রামের ইতিবৃত্ত (১৮৬৮) নামে একটি আত্মচরিত রচনা করেন। মহাভারতের ‘বাসব-নহুষ-সংবাদ’ অবলম্বনে রচিত তার আরেকটি গ্রন্থ হলো মোহভোগ (১৮৭১)। কৈবল্যতত্ত্ব (১৮৮৩) নামে তিনি একটি দর্শনবিষয়ক গ্রন্থ লেখেন। নাটক রাবণবধ মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়। তার অপ্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা পনেরো। তার রচনা প্রসাদগুণসম্পন্ন এবং তার কবিতার অনেক পঙ্ক্তি প্রবাদবাক্যস্বরূপ, যেমন: ‘চিরসুখী জন ভ্রমে কি কখন ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে’ ইত্যাদি। এ পঙ্ক্তিধারী কবিতাটি এক সময় স্কুলপাঠ্য বইয়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
সম্পাদিত পত্রিকা
[সম্পাদনা]১৮৬০ সালে মাসিক মনোরঞ্জিকা ও কবিতাকুসুমাবলী নামক পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৮৬১ সালে ঢাকা প্রকাশ প্রকাশিত হলে তিনি তার সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর মালিকের সঙ্গে মতানৈক্য হলে তিনি পদত্যাগ করেন এবং ১৮৬৫ সালে বিজ্ঞাপনী নামক পত্রিকার সম্পাদক হন। দেড় বছর পর তিনি আবার ঢাকা প্রকাশ পত্রিকার সম্পাদক পদে প্রত্যাবর্তন করেন। অসুস্থতার কারণে সাংবাদিকতা ছেড়ে তিনি কিছুদিন শিক্ষকতা করেন।
১৮৮৬ সালে যশোর থেকে তিনি সংস্কৃত ও বাংলা ভাষায় দ্বৈভাষিকী নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন। কবিতাকুসুমাবলী ছিল পদ্যবহুল মাসিক পত্রিকা। তার সদ্ভাবশতক কাব্যের অধিকাংশ কবিতাই এ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬, পৃষ্ঠা ১৪৯, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
- ↑ ক খ "কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার"। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুন ২০১৭।
- ↑ "ইট-বালু গিলছে কবি কৃষ্ণ চন্দ্র মজুমদারের স্মৃতি"। ২৮ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুন ২০১৭।