হিরোস (টিভি সিরিজ)
হিরোস | |
---|---|
ধরন | নাটক বিজ্ঞান কল্পকাহিনী |
নির্মাতা | টিম ক্রিং |
অভিনয়ে | ডেভিড অ্যান্ডার্স ক্রিস্টেন বেল সান্টিয়াগো ক্যাবরেরা জ্যাক কোলম্যান টউনি সাইপ্রেস ডানা ডেভিস নোয়াহ-গ্রে কেভি গ্রেগ গানবার্গ আলি লারটার জেমস কাইসন লি মাসি ওকা হেইডেন প্যানেটিয়ের অ্যাড্রিয়ান পাসডার জ্যাকারি কুইন্টো সন্ধিল রামমূর্তি ড্যানিয়া রমিরেজ লিওনার্ড রবার্টস মিলো ভেন্টিমিগলিয়া |
মূল দেশ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
মৌসুমের সংখ্যা | ৪ |
পর্বের সংখ্যা | ৭৭ (পর্বের তালিকা) |
নির্মাণ | |
ব্যাপ্তিকাল | ৪২ মিনিট |
মুক্তি | |
মূল নেটওয়ার্ক | এনবিসি |
ছবির ফরম্যাট | এনটিএসসি (৪৮০আই) পাল (৫৭৬আই) এইচডিটিভি (১০৮০আই) |
মূল মুক্তির তারিখ | সেপ্টেম্বর ২৫, ২০০৬ – ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১০ |
বহিঃসংযোগ | |
ওয়েবসাইট |
হিরোস (Heroes) একটি মার্কিন বিজ্ঞান কল্পকাহিনীমূলক নাট্যধারার টেলিভিশন ধারাবাহিক। এর নির্মাতা হলেন টিম ক্রিং। ২০০৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মার্কিন টিভি চ্যানেল এনবিসিতে এর প্রিমিয়ার প্রদর্শিত হয়। এমন কিছু ব্যক্তির জীবনকে কেন্দ্র করে এর কাহিনী আবর্তিত যারা নিজেদেরকে অন্যদের মত সাধারণ মনে করলেও আসলে তারা তা নয়। অচিরেই তারা বুঝতে পারে যে তাদের মধ্যে অস্বভাবিক সব ক্ষমতা রয়েছে। এবং তারা জানতে পারে, একটি ভাবি বিপর্যয় ঠেকিয়ে মানবতাকে রক্ষার জন্য তাদের কাজ করতে হবে। নৈসর্গিক এবং গল্প বর্ণনার দিক দিয়ে এতে মার্কিন কমিক বইয়ের স্টাইল অনুসরণ করা হয়েছে (যেমন এর সংক্ষিপ্ত, বহু পর্ববিশিষ্ট গল্পের ব্যাঞ্জনা যার সবগুলো পর্ব একটি বড় ধারণার মাধ্যমে একীভূত হয়)। ক্রিং বলেছেন, এই ধারাবাহিকের পাঁচটি মৌসুম সম্প্রচারের ব্যাপারে তারা ইতিমধ্যে কথা বলে ফেলেছেন।
প্রিমিয়ার প্রচারের পর এটি ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৮-৪৯ বছর বয়সী দর্শকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় রাত্রিকালীন টেলিভিশন প্রোগ্রাম। প্রথম থেকেই এটি ১৪.৩ মিলিয়ন দর্শক আকর্ষণ করতে সমর্থ হয় এবং এনবিসি'র প্রচারের ইতিহাসে এর আগের পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেটিং লাভ করে। প্রথম মৌসুমের ২৩টি পর্ব প্রদর্শিত হয়েছে এবং দ্বিতী মৌসুমের জন্য ২৪টি পর্বের অর্ডার দেয়া হয়েছে। এর পর "হিরোস: অরিজিন্স" নামে আরও ৬ পর্বের একটি স্পিন-অফ প্রচারিত হবে। হিরোসের দ্বিতীয় মৌসুমের প্রিমিয়ার প্রদর্শিত হয় ২০০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর। বর্তমানে এর ২৪টি পর্বের মধ্যে ১১টি প্রস্তুত করা আছে। সে হিসেবে এই বছরের ৩ ডিসেম্বর প্রদর্শিত হবে এই মৌসুমের শেষ পর্ব যার নাম "পাওয়ারলেস"। হিরোস: অরিজিন্স-এর প্রচারিত হবার তারিখেও তাই পরিবর্তন এসেছে। এর ২০০৮ সালের এপ্রিল বা মে মাসে প্রদর্শিত হবার কথা ছিল।
চরিত্রসমূহ
[সম্পাদনা]প্রথর্ম মৌসুমে সিরিজটিতে মোট ১২টি মূল চরিত্র দেখা গেছে। অবশ্য এনবিসির চরিত্র পৃষ্ঠায় মাত্র ১০টি মূল চরিত্রের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। "লিওনার্ড হকিন্স" (ডি এল হকি্ন্স) পুরো সম্প্রচারে একটি সহযোগী চরিত্র হিসেবে ছিল। সে ৫ম পর্বে আত্মপ্রকাশ করে। তাকে প্রথমে মূল চরিত্র হিসেবে দেখানো হয়নি। পরবর্তিতে "জ্যাক কোলম্যান" (নোয়াহ্ বার্নেট) মূল চরিত্রে যুক্ত হয় এবং এভাবে মোট ১২ জনে দাড়ায়। জ্যাক কোলম্যান মূল চরিত্রে আসে "ফলআউট" নামক পর্বে। এতে অনেক অতিথি এবং সহকারী চরিত্র রয়েছে যাদের আবির্ভাব ঘটে পারিবারিক বা শত্রুতামূলক প্রেক্ষাপটে। অধিকাংশ চরিত্রেরই অস্বাভাবিক ক্ষমতা রয়েছে।
"জ্যাকারি কুইন্টো" ও "জেমস কাইসন লি" প্রথম মৌসুমে সহকারী চরিত্র থাকলেও দ্বিতীয় মৌসুমে মূল চরিত্র তালিকায় যুক্ত হয়। দ্বিতীয় মৌসুমে প্রথম মৌসুমের অনেকগুলো চরিত্রকে মূল চরিত্রের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। বাদ পড়া চরিত্রগুলোতে অভিনয় করছিলেন ডেভিড অ্যান্ডার্স, ক্রিস্টেন বেল, ডানা ডেভিস, ডানিয়া রমিরেজ, সান্টিয়াগো ক্যাবরেরা, টউনি সাইপ্রেস এবং লিওনিড রবার্টস।[১]
প্রধান চরিত্রসমূহ
[সম্পাদনা]- ক্লেয়ার বেনেট (হেইডেন প্যানেটিয়ার) - টেক্সাসের ওডেসাতে বসবাসকারী স্কুল চিয়ারলিডার। পরবর্তীতে ক্যালিফোর্নিয়ার কোস্টা ভার্দেতে চলে যায়। তার প্রকৃত বাবা "ন্যাথান পেট্রেলি" আর পালক বাবা "নোয়াহ্ বেনেট"। তার "spontaneous regenerative ability" রয়েছে, অর্থাৎ দেহের কোন অঙ্গ ভেঙে বা কেটে গেলে সেখান থেকে নতুন অঙ্গের সৃষ্টি হয়।
- নোয়াহ্ বেনেট (জ্যাক কোলম্যান) - মূলত মিস্টার বেনেট নামে পরিচিত। টেক্সাসের ওডেসাতে "প্রিমাটেক পেপার কোম্পানি" পরিচালনা করতেন। এই পেপার কোম্পানির আড়ালে তিনি মূলত অতিমানবিক ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষের সামর্থ্য নিয়ে গবেষণা করতেন। পরবর্তীতে ক্যালিফোর্নিয়ার কপি কিংডম নামক কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন।
- মনিকা ডসন (ডানা ডেভিস) - নিউ অরলিয়ান্সের বার্গার বোনানজা রেস্তোঁরায় কর্মরত একটি মেয়ে। সে ডি এল হকিন্সের ভাতিজি এবং মাইকার প্রথম চাচাতো বোন। তার মাস্ল মেমোরি তথা পেশীকেন্দ্রিক স্মৃতি রয়েছে। মস্তিষ্ককে না জানিয়েই তার পেশী কাজ করে ফেলে। যে কোন কিছু একবার দেখেই সে হুবহু অনুকরণ করতে পারে।
- সিমোন দেভক্স (টউনি সাইপ্রেস) - আর্ট ডিলার। আইজ্যাক মেন্ডেজ ও পিটার পেট্রেলির সাথে তার প্রেম হয়। ঠিককার সাথে বেশি সঠিক বোঝা যায়নি।
- এলি বিশপ (ক্রিস্টেন বেল) - বব বিশপের মেয়ে। বয়স ২৪ বছর। সে হাত থেকে তড়িৎ শক্তি উৎপন্ন করে নিক্ষেপ করতে পারে। কোম্পানির পক্ষ থেকে সে পিটার পিট্রেলিকে খুঁজছে।
- ডিএল হকিন্স (লিওনার্ড রবার্টাস) - প্রাক্তন নির্মাণ শ্রমিক ও গ্যাং-এর নেতা। নিকির স্বামী ও মাইকাহ্'র বাবা। যেকোন কঠিন বস্তুর মধ্য দিয়ে চলাচলের ক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া দেহের যেকোন অংশ কঠিন বস্তুর মধ্য দিয়ে ঢুকাতে পারে।
- মাযা হেরেরা (ডানিয়া রমিরেজ) - হন্ডুরাসের মেয়ে। পুলিশ তাকে খুনের দায়ে অভিযুক্ত হিসেবে খুঁজছে। কষ্টে থাকা অবস্থায় মাযা কাঁদলে তার আশেপাশের সবাই মারা যায়। কিন্তু তার ভাই পাশে থাকলে একই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবার সবাইকে জীবিত করে তোলা যায়।
- আন্ডো মাসাহাশি (জেমস কাইসন লি) - হিরো নাকামুরার বন্ধু, সহকর্মী ও ভ্রমণে তার সহযোগী। জানা মতে তার কোন অতিমানবিক ক্ষমতা নেই।
- আইজ্যাক মেন্ডেজ (সান্টিয়াগো ক্যাবরেরা) - নিউ ইয়র্কে বসবাসকারী চিত্রশিল্পী যে ভবিষ্যৎ আঁকতে পারে। সে "দ্য নাইন্থ ওয়ান্ডার্স!" নামক কমিক সাময়িকী লিখে। এই সাময়িকীটিও ভবিষ্যৎ প্রকাশ করে।
- অ্যাডাম মনরো/তাকেজো কেনসেই (ডেভিড অ্যানড্রেস) - তার স্বতঃস্ফূর্ত পুনরুৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। এজন্য সে কখনই মারা যাবেনা। মধ্যযুগীয় জাপানে সে কিংবদন্তির নায়ক তাকেজো কেনসেই হিসেবে পরিচিত ছিল। বর্তমানে সে অ্যাডাম মনরো।
- হিরো নাকামুরা (মাসি ওকা) - একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার যে স্থান-কাল পরম্পরাকে বাঁকিয়ে ফেলতে পারে যার মাধ্যমে অতীত বা ভবিষ্যতে যেতে পারে; সময় থামিয়ে দিতে পারে এবং এভাবে নিজের টেলিপোর্টেশন করতে পারে। সে নিজেকে একজন হিরো মনে করে এবং অন্যদের সাথে পৃথিবী পরিবর্তন করতে বদ্ধপরিকর।
- ম্যাট পার্কম্যান (গ্রেগ গ্রানবার্গ) - লস অ্যাঞ্জেল্সের প্রাক্তন পুলিশ কর্মকর্তা। অন্যদের মন বুঝতে পারে। বব তাকে বলে, সে অন্য যে কারও মনকে নিয়ন্ত্রণও করতে পারে। তার বাবা স্বপ্নের মাধ্যমে অন্যকে ফাঁদে ফেলতে পারে। পার্কম্যান এই ক্ষমতাটি শিখে যায়। সে "মলি ওয়াকার"-এর অবিভাবক।
- ন্যাথান পেট্রেলি (অ্যাড্রিয়ান পাসডার) - নিউ ইয়র্কের প্রাক্তন কংগ্রেসম্যান। নিজের প্রচলনের সাহায্যে আকাশে প্রবল বেগে উড়তে পারে।
- পিটার পেট্রেলি (মিলো ভেন্টিমিগলিয়া) - প্রাক্তন পুরুষ নার্স। তার সাথে থাকা অবস্থায় কেউ নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করলে সে তা শিখে যায়। এভাবে অন্য যে কারও ক্ষমতা তার মধ্যে এসে যায়। আবার তার সাথে এলে বা তার সেই ক্ষমতা ব্যবহারের কথা মনোযগ সহকারে চি্তা করলে সে নিজে নিজেই তা করতে পারে। এ হিসেবে তাকে সবচেয়ে শক্তিশালী বলা যায়।
- মাইকাহ্ স্যান্ডার্স (নোয়াহ্ গ্রে-ক্যাবি) - ডিএল ও নিকির ছেলে। সে টেকনোপ্যাথ। যে কোন যন্ত্রের সাথে মনের মাধ্যমে কথা বলতে পারে, ঠিক করতে পারে যে কোন যন্ত্র।
- নিকি স্যান্ডার্স (অ্যালি ল্যারটার) - লাস ভেগাসের প্রাক্তন ইন্টারনেট স্ট্রিপার। তার মধ্যে বহু সত্তার সমাবেশ ঘটে। জেসিকা নামক একটি চরিত্র তার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী। জেসিকা বিধ্বংসী। তার মধ্যকার অন্য একটি চরিত্রের নাম গিনা।
- মোহিন্দর সুরেশ (সন্ধিল রামামূর্তি) - জীনত্ত্বের অধ্যাপক এবং ভারতীয় গবেষক। মাদ্রাস থেকে নিউ ইয়র্কে আসে তার বাবা চন্দ্র সুরেশের হত্যা তদন্তের জন্য। সে অতিমানবিক ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের তালিকা খুঁজে পায় এবং তা বর্ধিত করে তাদের খুঁজে বের করতে থাকে। তার রক্তে এমন একটি এন্টিবডি রয়েছে যা কেবল অতিমানবিক ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষকে আক্রমণ করে এমন একটি ভাইরাসকে ধ্বংস করতে পারে। অবশ্য তার রক্ত নিকিকে রক্ষা করতে পারেনি।
- সাইলার (জ্যাকারি কুইন্টো) - মূল নাম গ্যাব্রিয়েল গ্রে। প্রাক্তন ঘড়ি মেরামতকারী। সে যেকোন কিছু ঠিক করতে পারে বা তার কর্মপদ্ধতি বুঝতে পারে। সে সিরিয়াল কিলার। ক্ষমতাসম্পন্ন বিশেষ ব্যক্তিদের খুন করে তাদের মাথা কেটে সে তাদের ক্ষমতাটি নিয়ে নিতে পারে। যথারীতি তার মধ্যে পিটারের মত অনেক ক্ষমতা এসে গেছে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "NBC press release"। NBC Universal। ২০০৭-০৮-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-৩১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- এনবিসিতে হিরোস - হিরোস-এর অফিসিয়াল সাইট
- নানিন্থ ওয়ান্ডার্স - টিম ক্রিং নির্মিত আধা-অফিসিয়াল সাইট
- বিবিসিতে হিরোস -হিরোসের জন্য অফিসিয়াল বিবিসি সাইট
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে Heroes (ইংরেজি)