বিষয়বস্তুতে চলুন

২০২৪ ভারতের জনগণনা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
১৬তম ভারতীয় জনগণনা

← ২০১১ ঘোষণা করা হবে ২০৩১ →

সাধারণ তথ্য
দেশভারত
কর্তৃপক্ষভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
ওয়েবসাইটcensusindia.gov.in

ভারতের ২০২১ সালের জনগণনা, যা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিলম্বিত হয়েছে, অবশেষে ২০২৪ সালে শুরু হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।[] ২০২১ সালে নির্ধারিত এই জনগণনা কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বারবার পিছিয়ে গেছে।[] বর্তমানে এটি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে প্রায় ১৮ মাস সময় লাগতে পারে। এই জনগণনার ফলাফল ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে প্রকাশ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।[]

২০১১ সালের জনগণনার পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত ভারতের জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩ সালের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত জনসংখ্যার দিক থেকে চীনকে ছাড়িয়ে বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল দেশ হয়ে উঠেছে।[] ২০২৪ সালের এই জনগণনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি জনসংখ্যা, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ শিক্ষা আবাসন ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করবে। যা সরকারের পরিকল্পনা ও নীতিনির্ধারণে সহায়ক হবে।

এই জনগণনার বিলম্বের কারণে সরকারকে পুরানো ২০১১ সালের তথ্যের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে, যা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যানিক জরিপের নির্ভুলতাকে প্রভাবিত করেছে। তাছাড়া, ২০২৪ সালের আদমশুমারিতে জাতিভিত্তিক গণনার দাবি উত্থাপিত হয়েছে, যা বিশেষ করে বিরোধী দলগুলির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল।

ভারতের প্রেক্ষাপটে, এই জনগণনা কেবল জনসংখ্যা গণনার একটি মাধ্যম নয়, এটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। তাই এর সুষ্ঠু ও সময়মতো সম্পন্ন হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তথ্য সংগ্রহ

[সম্পাদনা]

গৃহ-তালিকা

[সম্পাদনা]

বাড়ি-তালিকার প্রশ্ন সূচিতে ৩১ টি প্রশ্ন রয়েছে[][]

নং তথ্য
গৃহ নম্বর (মিউনিসিপ্যাল, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা গণনা নম্বর)
গণনা গৃহ নম্বর
গণনা গৃহের মেঝে, প্রাচীর এবং ছাদের প্রধান উপাদান
গণনা গৃহের ব্যবহার নির্ধারণ
গণনা গৃহের অবস্থা
পরিবারের নম্বর
পরিবারে সাধারণ বসবাসকারী মোট ব্যক্তির সংখ্যা
পরিবারের প্রধানের নাম
পরিবারের প্রধানের লিঙ্গ
১০ পরিবারের প্রধান তফসিলি জাতি/তফসিল উপজাতি/অন্যান্য এর অন্তর্ভুক্ত কিনা
১১ গণনা গৃহের মালিকানার অবস্থা
১২ পরিবারের একান্ত অধিকারে থাকা বাসগৃহের সংখ্যা
১৩ পরিবারে বসবাসরত বিবাহিত দম্পতির সংখ্যা
১৪ প্রধান পানীয় জলের উৎস
১৫ পানীয় জলের উৎসের প্রাপ্যতা
১৬ প্রধান আলো সরবরাহের উৎস
১৭ শৌচালয় সুবিধা
১৮ শৌচালয়ের ধরন
১৯ জল নিষ্কাশনের পথ
২০ স্নানের সুবিধা
২১ রান্নাঘর ও এলপিজি/পিএনজি সংযোগের প্রাপ্যতা
২২ রান্নার প্রধান জ্বালানী
২৩ রেডিও/ট্রানজিস্টর
২৪ টেলিভিশন
২৫ ইন্টারনেট সংযোগ
২৬ ল্যাপটপ/কম্পিউটার
২৭ টেলিফোন/মোবাইল ফোন/স্মার্টফোন
২৮ সাইকেল/স্কুটার/মোটরসাইকেল/মোপেড
২৯ গাড়ি/জিপ/ভ্যান
৩০ পরিবারে প্রধানত ব্যবহৃত শস্য
৩১ মোবাইল নম্বর

জনসংখ্যা গণনা

[সম্পাদনা]

জনসংখ্যা গণনা সাধারণত গৃহগণনার ছয় থেকে আট মাস পর অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ের জনগণনায়, প্রতিটি ব্যক্তির গণনা করা হয় এবং তার বয়স, বৈবাহিক অবস্থা, ধর্ম, তফসিলি জাতি/তফসিলি জনজাতি, মাতৃভাষা, শিক্ষার স্তর, অক্ষমতা, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ, স্থানান্তর, প্রজননক্ষমতা (মহিলাদের ক্ষেত্রে) সহ ব্যক্তিগত বিবরণ সংগ্রহ করা হয়।[]

ডিজিটাল গণনা

[সম্পাদনা]

ভারতের ১৬তম জনগণনা, যা ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর অনুষ্ঠিত হবে, দেশের প্রথম ডিজিটাল জনগণনা হতে চলেছে। এই উদ্যোগটি ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রণীত হয়েছে এবং এটি ঐতিহ্যবাহী কলম-কাগজ পদ্ধতি থেকে সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিবর্তিত হবে।[][]

স্ব-গণনা
প্রথমবারের মতো, নাগরিকরা একটি স্ব-গণনা পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে তাদের জনগণনার তথ্য পূরণ করতে পারবেন। নাগরিকরা তাদের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে লগইন করে সরাসরি তাদের বিবরণ জমা দিতে পারবেন।[১০]
সংগ্রাহকের জন্য মোবাইল অ্যাপ
জনগণনার তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রধানত একটি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করা হবে। সংগ্রাহকেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই অ্যাপের মাধ্যমে ডিজিটালি তথ্য ইনপুট করবেন, যা ম্যানুয়াল ত্রুটি কমাবে এবং তথ্য প্রক্রিয়াকরণকে ত্বরান্বিত করবে।[১১]
কেন্দ্রীভূত জনগণনা পোর্টাল
একটি বিশেষ পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে যা সমস্ত জনগণনা সম্পর্কিত কার্যক্রম পরিচালনা এবং পর্যবেক্ষণ করবে। এতে স্ব-গণনার তথ্য এবং সংগ্রাহকের দ্বারা সংগৃহীত তথ্য সিঙ্ক্রোনাইজ করা হবে।
ত্রিস্তরীয় প্রক্রিয়া
(ক) এমন এলাকাগুলির জন্য যেখানে ডিজিটাল টুল প্রয়োগ করা সম্ভব নয়, সেখানে ঐতিহ্যবাহী কাগজের ফর্ম ব্যবহার করা হবে।
(খ) সংগ্রাহকের দ্বারা ডিজিটাল তথ্য এন্ট্রি।
(গ) নাগরিকদের স্ব-গণনা।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "India Set to Begin Long-Delayed Population Census in September: Report"thewire.in (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ আগস্ট ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০২৪ 
  2. "India census NPR status: করোনা অতিমারীর জেরে পিছিয়ে গেল সেনসাস এনপিআরের কাজ, সংসদে জানাল কেন্দ্র"এবিপি আনন্দ। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০২৪ 
  3. Mandal, Subhajit (২১ আগস্ট ২০২৪)। "মোদি জমানায় প্রথমবার, আগামী মাসেই দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে জনগণনা!"সংবাদ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০২৪ 
  4. "UN DESA Policy Brief No. 153: India overtakes China as the world's most populous country" (ইংরেজি ভাষায়)। জাতিসংঘ। ২৪ এপ্রিল ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০২৪ 
  5. "Census 2021: 31 Questions You Will be Asked in First Phase"India News, Breaking News | India.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০১-১৬। ১৬ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-২২ 
  6. "India - ORGI Gazette Notification:2020 (Period of Houselisting Operation and Questions in Houselisting & Housing Census)"censusindia.gov.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-০৪ 
  7. "CENSUS DIVISION"censusindia.gov.in (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-২২ 
  8. "From 'pen-paper to digital': How India's first digital census will be conducted"লাইভমিন্ট (ইংরেজি ভাষায়)। ১০ আগস্ট ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০২৪ 
  9. Sen, Shampa, সম্পাদক (৩ আগস্ট ২০২১)। "DNA Explainer: First Digital Census for India - what it means and how it will be conducted"ডিএনএ। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০২৪ 
  10. SINGH, VIJAITA (২৮ মে ২০২৩)। "Explained: How can citizens file Census details online?"দ্য হিন্দু। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০২৪ 
  11. TV9 Bangla Digital (১০ মে ২০২২)। Lahiri, Amartya, সম্পাদক। "e-census: এবার ট্যাব-স্মার্টফোনেই ভারতের জনগণনা! কীভাবে হবে ই-শুমারি"টিভি৯ বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০২৪