হাজি-মির্জা হাসান রুশদিহ্‌

স্থানাঙ্ক: ৩৮°০৪′১৯.৬১″ উত্তর ৪৬°১৭′৪৮.১৩″ পূর্ব / ৩৮.০৭২১১৩৯° উত্তর ৪৬.২৯৬৭০২৮° পূর্ব / 38.0721139; 46.2967028
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

Coordinates: 38°04′19.61″N 46°17′48.13″E / 38.0721139°N 46.2967028°E / 38.0721139; 46.2967028হাজি মির্জা হাসান তাবরিজি  (میرزا حسن تبریزی; ৪ জুলাই ১৮৫১, তাবরিজ – ১২ ডিসেম্বার,১৯৪৪, ক্বম), হাসান রুশদি  (حسن رشدیه) নামে বেশি পরিচিত, ছিলেন একজন এরানি যাজক, শিক্ষক, রাজনৈতিক এবং সাংবাদিক। তিনি ইরানকে কিছু আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতির সাথে পরিচিত করান, বিশেষত বর্ণমালা শিক্ষা পদ্ধতিতে। ইরানের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এগুলো এখনো ব্যবহৃত হয়। 

হাসান রুশদিহ্‌'র একটি ছবি 

হাসান রুশদি ছিলেন একজন ইরানি-আজারবাইজানি জাতির মানুষ এবং টুয়েল্ভার শিয়া যাজকংক্রান্ত শিক্ষা সেখানে লাভ করেন। রুশদিহ নাজাফে গিয়ে ধর্ম শিক্ষার সিদ্ধান্ত বাতিল করেন যখন আখতার সংবাদ পত্রে সেখানে পার্সিয়ান ভাষায় পড়ার জন্য কঠোর পরিশ্রমের একটি নিবন্ধন পড়েন। ১৯৮০ সালে তিনি বেইরুত ত্যাগ করেন এবং দার উল-মু'আল্লিমিন (শিক্ষক বিদ্যালয়) এ দুই বছর পড়াশুনা করেন। এবং পরবর্তীতে তার ইস্তানবুল এবং ইজিপ্ট পরিদর্শনের পাশাপাশি পড়াশুনা চালিয়ে যান। ১৮৮৩ সালে তিনি ইয়েরেভান এর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন এবং সেখানে মুসলিমদের জন্য একটি আধুনিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।  তার নতুন শিক্ষা পদ্ধতিতে, পার্সিয়ান এবং আজেরি ভাষা'র শিক্ষাদানের জন্য তিনি বর্ণমালার পরিবর্তে শব্দের প্রচল করেন। যাতে আরবি লিপি ব্যবহৃত হতো। ইয়েরেভান এ চার বছর বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার সময়, রুশদি আজারবাইজানি ভাষায় ভাতান দিলি ( মাতৃ ভাষা )  রচনা করেন, যা ককেসাস এর কিছু বিদ্যালয় এ ব্যবহৃত হতো এবং তা অক্টোবর বিপ্লব পর্যন্ত চলতে থাকে।  

ইয়েরেভান এ থাকাকালীন সময় নাসের-আল-দিন শাহ এর সাথে পরিচিত হন, যিনি তাকে নাখিছেভান এ নিয়ে যান। পরবর্তীতে রুশদিহ্‌ আবার তার  মাতৃভূমি ইরানের তাবরিজ এ চলে আসেন যেখানে তিনি ১৮৮৬ বা ১৮৮৭ সালে প্রথম প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। আহমদ কাসরাভি তার বইতে দাবী করেছিলেন যে আলি খান আমিন উদ-দৌলা ( তৎকালীন ইরানের প্রধানমন্ত্রী) এর সাহায্যে  প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু মির্জা হাসানের ছেলে ফকরুদ্দিন রুশদিহ্‌ এর নথি অনুসারে এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়না। 

উক্ত বিদ্যালয়টি তখনকার রক্ষনশীল তাবরিজিদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল, বিশেষভাবে ধর্মীয় যাজকদের দ্বারা। তার এই যুক্তি দেখান যে উক্ত বিদ্যালয়টি গীর্জা'র ঘণ্টার মতো এবং রুশদিহ ছাত্রদেরকে ইসলাম ত্যাগ করানোর চেষ্টা চালচ্ছিল। এর ফলে এক দাঙ্গা লেগে যায় এবং তার অনেক বিদ্যালয়কে ধ্বংস করা হয়। এর কারণে অনেক শিক্ষার্থী আহত-নিহত হয়। এটি ছিল গুলি নিয়ে একটি হত্যাকাণ্ড, এবং পরবর্তীতে এই আধুনিক বিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করা হয় যার ফলে শেষ পর্যন্ত তিনি তাবরিজ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। 

হাসান রুশদিহ্‌'র ছাত্রদের সাথে তাঁর ছবি। 

তেহরানে, মোজাফফার-আল-দিন শাহ এর শাসনামলে এবং আমিন উদ-দৌলা এর প্রধানমন্ত্রীত্বকালীন সময়ে, সরকারের সহায়তায় রুশদিহ্‌ রুশদিহ্‌ স্কুল পরিচালনা শুরু করেন। তিনি রাজনৈতিক সংগঠন মা'রেফ এসোসিয়েশন এর সদস্য ছিলেন এবং ইরানের সাংবিধানিক বিপ্লবের সময় স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেন, যা তাকে কয়েকবার ইরান ছেড়ে পালাতে বাধ্য করে। 

সর্বশেষবার ইরানে ফেরার পর, ১৯০৪ সালে একটি ম্যাগাজিন এবং একটি নতুন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন, দুটোর নামই ছিল মাক্তাব । ১৯২৭ সালে তিনি তার রাজনৈতিক এবং শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করেন এবং ক্বম এ  চলে আসেন, যেখানে তিনি ১৯৪৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন এবং সমাহিত হন। 

রুশদিহ্‌ প্রথম আজারবাইজানি যিনি শিশুদের জন্য কবিতা লেখেন।  তিনি অন্ধদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থার পরিকল্পনা করেন এবং ইরানে একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপনে সহায়তা করেন। তিনি আজারবাইজানি এবং পার্সিয়ান ভাষায় কিছু বই এবং নিবন্ধন রচনা করেন। তখনকার অটোমান সম্রাজ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম রুশিদিঈ হবার পর থেকে সবাই তাকে রুশদিহ্‌ নামে ডাকা, কারণ তিনিই প্রথম ইরানে এইরকম বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।   

নিমা ইউশিজ এর বিখ্যাত কবিতা yād-e ba’zi nafarāt (কিছু মানুষের স্মৃতিতে) রুশদিহ্‌'র নাম উল্লেখ করা হয়।  

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  • The Memory of Some People, an article in Iran about Roshdieh and his legacy
  • The Persian Encyclopedia's article on Roshdieh, Volume 1, pages 1085 and 1086.