হাকাম ইবনে আমর ইবনুল গিফারী
আল-হাকাম ইবনে আমর আল-গিফারী (মৃত্যু: ৭১ হিজরি/৬৭০ খ্রিস্টাব্দ) মুহাম্মদের একজন সাহাবি ছিলেন এবং খোরাসানের উমাইয়া গভর্নর এবং ৬৬৫ সাল থেকে মার্ভেতে তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ট্রান্সঅক্সানিয়ায় (মধ্য এশিয়া) আরব অভিযানের কমান্ডার ছিলেন।
জীবন
[সম্পাদনা]আল-হাকাম ইবনে আমর কিনানা গোত্র বংশীয় বানু গিফার গোত্রের মুজাদ্দাহ ইবনে হিদাইয়াম ইবনে আল-হারিথ ইবনে নুয়ায়লার পুত্র ছিলেন।[১][২] আল-হাকাম ছিলেন ইসলামের নবী মুহাম্মদের একজন সাহাবি এবং যুদ্ধে তার অন্যতম পতাকা বহনকারী।[৩][৪] তিনি আরব গ্যারিসন শহর বসরায় স্থায়ী হন এবং ৬৩৬ সালে সাসানীয় সাম্রাজ্যে মুসলিম বিজয়ের সূচনা করেন।[৫][৬] বসরায় গিফার গোত্রের লোকদের পাতলাভাবে বিক্ষিপ্ত উপস্থিতি ছিল।[৭] তার ভাই রাফি মুহাম্মদের কাছ থেকে হাদীস বর্ণনাকারী ছিলেন।[২]
আল-তাবারি এবং আল বালাযুরির মতে, ৬৬৫ সালে ইরাক এবং পূর্বাঞ্চলের উমাইয়া খিলাফতের কার্যকর প্রতিনিধি যিয়াদ ইবনে আবিহি খোরাসানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে (ইরানের পূর্বদিকের এবং আমু দরিয়ার পশ্চিম দিক) আল-হাকামের গভর্নরশিপের অধীনে মার্ভ-ভিত্তিক একক প্রাদেশিক প্রশাসনে কেন্দ্রিভূত করেন।[৮][১][৯] উভয় ঐতিহাসিক দ্বারা উদ্ধৃত একটি কাহিনী অনুসারে,যিয়াদ অভিজ্ঞ কমান্ডার আল-হাকাম ইবনে আবি আল-আস তাকাফিকে উক্ত পদে নিয়োগের পরিকল্পনা করেছিলেন, কিন্তু যখন তার রাজ-গৃহাধ্যক্ষ ভুল করে আল-হাকাম ইবনে আমরকে তার দরবারে নিয়ে আসে তখন তিনি তাকেই নিয়োগ দেন এই বলে যে আল-হাকাম মুহাম্মদের সাহাবী এবং "খাঁটি সহচর" বা "অভিজাত বংশের লোক"।[১০][১১] অন্য একটি ঐতিহ্যবাহী মুসলিম বিবরণে বলা হয়েছে যে যিয়াদ ৬৬৪ সালে আল-হাকামকে নিযুক্ত করেছিলেন।[১২] আল-তাবারি মন্তব্য করেছেন যে যিয়াদ আল-হাকামের অধীনে খারাজ (ভূমি কর এবং/অথবা সম্ভবত মাথাপিছু ধার্য করা কর) সংগ্রহের জন্য ছয় জন প্রতিনিধিও নিয়োগ করেছিলেন।[১৩][১৪]
আল-হাকাম মৃত্যুবরণ করেন এবং তাকে মার্ভে সমাধিস্থ করা হয়। তার নিযুক্ত উত্তরাধিকারী আনাস ইবনে আবি ইউনুস কে জিয়াদ তৎক্ষণাৎ বরখাস্ত করেন, তিনি তার জানাজার নামাজ আদায় করেছিলেন।[১৫] আব্বাসীয় খলিফা আল-মা'মুন (রাজত্বকাল: ৮১৩-৮৩৩ খ্রিস্টাব্দ) এর রাজত্বকালের শেষদিকে সূত্র ধরে তার সমাধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।[১৬]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ Morony 1987, পৃ. 86।
- ↑ ক খ Landau-Tasseron 1998, পৃ. 122, note 560।
- ↑ Rtveladze 2000, পৃ. 12।
- ↑ Hasan 1970, পৃ. 166।
- ↑ Lecker 2000, পৃ. 47।
- ↑ [[#CITEREF|]], পৃ. 895, note 1649।
- ↑ Crone 1980, পৃ. 227, note 234।
- ↑ Gibb 1923, পৃ. 16।
- ↑ Murgotten 1924, পৃ. 170।
- ↑ Morony 1987, পৃ. ৮৬।
- ↑ Murgotten 1924, পৃ. 170–171।
- ↑ Fariq 1966, পৃ. ৬৭।
- ↑ Hasan 1970, পৃ. ১৬৬।
- ↑ Morony 1987, পৃ. ৮৬–৮৭।
- ↑ Morony 1987, পৃ. ১৬৩।
- ↑ Lecker 2000, পৃ. ৪৭।
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- প্যাট্রিসিয়া ক্রোন (১৯৮০)। স্ল্যাভস অন হর্স: ইসলামিক রাষ্ট্রের বিবর্তন। কেমব্রিজ: কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। আইএসবিএন 0-521-52940-9।
- ফারিক, কে. এ. (১৯৬৬)। যিয়াদ বিন আবিহি। লন্ডন: এশিয়া পাবলিশিং হাউস। ওসিএলসি 581630755।
- গিব, এইচ. এ. আর. (১৯২৩) মধ্য এশিয়ায় আরব বিজয়। লন্ডন: রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটি। ওসিএলসি 499987512.
- হাসান, এস. এ. (১৯৭০)। "উমাইয়া খেলাফতের সময় মধ্য এশিয়ায় ইসলামের সম্প্রসারণের সমীক্ষা"। ৪৪ (১): ১৬৫–১৭৬।
- লেকার, মাইকেল (২০০০)। "ইসলামে শহীদদের দাফন সম্পর্কিত"। হিরোয়ুকি, ইয়ানাগিহাশি (সম্পাদনা)। ইসলামিক আইন ও চিন্তাধারায় অঞ্চলের ধারণা। লন্ডন: কেগান পল ইন্টারন্যাশনাল। পৃষ্ঠা ৩৭–৫০। আইএসবিএন 0-7103-0725X।
- মুরগোটেন, ফ্রান্সিস ক্লার্ক (১৯২৪)। The Origins of the Islamic State, Being a Translation from the Arabic, Accompanied with Annotations, Geographic and Historic Notes of the Kitâb Fitûh al-Buldân of al-Imâm Abu-l Abbâs Ahmad Ibn-Jâbir al-Balâdhuri, Part 2। নিউ ইয়র্ক এবং লন্ডন: কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং লংম্যান, গ্রিন অ্যান্ড কোম্পানি।
- আরটিভেলাদ্জে, এডওয়ার্ড ভি. (২০০০)। "মধ্য এশিয়ার জনগণের অভিপ্রয়াণ" (৯): ১–২০।