বিষয়বস্তুতে চলুন

হাইপেরিয়ন (কবিতা)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

"হাইপেরিয়ন" (ইংরেজি: "Hyperion") হল ঊনবিংশ শতাব্দীর ইংরেজ রোম্যান্টিক কবি জন কিটসের লেখা একটি পরিত্যক্ত মহাকাব্য। এই মহাকাব্যে গ্রিক পুরাণের টাইটানঅলিম্পিয়ান দেবতাদের মধ্যে সংঘর্ষ ও অলিম্পিয়ানদের হাতে টাইটানদের পরাজয়ের বর্ণনা পাওয়া যায়। ১৮১৮ সালের শেষ ভাগ থেকে ১৮১৯ সালের বসন্তের মাঝে কিটস এই কবিতাটি লিখেছিলেন। কিন্তু তারপর এই কবিতার মধ্যে "অতিরিক্ত মিলটন-সুলভ স্তর" দেখে লেখা বন্ধ করে দেন। এই সময় তিনি তাঁর যক্ষারোগাক্রান্ত ছোটো ভাই টমের সুশ্রুষা করছিলেন। টম ১৮১৮ সালের ১ ডিসেম্বর মারা যান।

পরে দ্য ফল অফ হাইপেরিয়ন: এ ড্রিম কবিতায় কিটস আবার এই কবিতার বিষয়বস্তু গ্রহণ করেন। এই সময় তিনি সত্য অনুসন্ধান ও উপলব্ধির এক ব্যক্তিগত অভিযানের আদলে মহাকাব্যটি পুনরায় লেখার চেষ্টা করেছিলেন।

সারাংশ

[সম্পাদনা]

অলিম্পিয়ানদের উত্থানের আগে টাইটান নামে এক দেবমণ্ডলী (প্যানথেয়ন) রাজত্ব করতেন। এখন এই টাইটানদের পতন আসন্ন। টাইটানদের মধ্যে ছিলেন স্যাটার্ন (দেবতাদের রাজা), ওপস (তাঁর স্ত্রী), থিয়া (স্যাটার্নের বোন), এনকেল্যাডাস (যুদ্ধের দেবতা), ওশেনাস (সমুদ্রের দেবতা), হাইপেরিয়ন (সূর্যের দেবতা) ও ক্লিমেন (এক তরুণী দেবী)। কবিতার শুরুতে দেখা যায়, জুপিটারের হাতে পরাজিত হয়ে স্যাটার্ন ক্ষমতা হারানোর দুঃখে বিলাপ করছেন। থিয়া তাঁকে নিয়ে যাচ্ছেন সেইখানে যেখানে অন্যান্য টাইটানরা বসে আছেন। তাঁরাও সবাই দুঃখে কাতর। তাঁরা আলোচনা করছেন নতুন দেবতাদের (অলিম্পিয়ান) বিরুদ্ধে নতুন করে যুদ্ধ শুরু করা যায় কিনা তা নিয়ে। ওশেনাস বলছেন, তিনি নেপচুনের (নতুন সমুদ্র দেবতা) হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে চান, কারণ নেপচুন খুবই সুদর্শন (এখানে মনে রাখতে হবে, রোম্যান্টিক ধ্যানধারণায় সৌন্দর্যকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হত)। ক্লিমেন অ্যাপোলোর গানের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেই গান বেদনাময় সুন্দর (আরেক রোম্যান্টিক ধারণা)। শেষে এনকেল্যাডাস একটি বক্তৃতা দিয়ে টাইটানদের যুদ্ধ করতে উদ্বুদ্ধ করে তোলেন।

এদিকে হাইপেরিয়নের বর্ণনার সময় আমরা দেখতে পাই, তিনিই একমাত্র টাইটান যিনি তখনও ক্ষমতাবান রয়েছেন। ইউরেনাস (আকাশের দেবতা, স্যাটার্নের পিতা) তাঁকে সম্বোধন করে স্যাটার্ন ও অন্যান্য টাইটানদের কাছে যেতে উদ্বুদ্ধ করেন। হাইপেরিয়নের আবির্ভাবের পর কবিতায় টাইটানদের বর্ণনা শেষ হয়। অ্যাপোলোর (সংগীত, সভ্যতা ও সংস্কৃতির নতুন দেবতা) বর্ণনা শুরু হয়। অ্যাপোলো সৈকতে বসে কাঁদছিলেন। এখানে নেমোসিনের (স্মৃতিশক্তির দেবী) তাঁর দেখা হয় এবং অ্যাপোলো তাঁর কাছে নিজের কান্নার কারণ ব্যাখ্যা করেন: তিনি তাঁর দৈবশক্তির আভাস পাচ্ছেন, কিন্তু তা পূর্ণ করে তুলতে পারছেন না। নেমোসিনের চোখের দিকে তাকিয়ে তিনি জ্ঞান অর্জন করেন এবং পূর্ণ দেবতায় পরিণত হন। এইখানে একটি পংক্তির মাঝপথে "celestial" (স্বর্গীয়) শব্দটির উল্লেখের পর কবিতাটি অসমাপ্ত রয়ে গেছে।

হাইপেরিয়ন কবিতায় কিটসের অমিত্রাক্ষর ছন্দ নতুন মাত্রা পেয়েছে। থিয়া ও পরাজিত স্যাটার্নকে নিয়ে লেখা উদ্বোধনী পংক্তিগুলি এক্ষেত্রে বিশেষ উল্লেখযোগ্য:

Deep in the shady sadness of a vale,
Far sunken from the healthy breath of morn,
Far from the fiery noon, and eve's one star,
Sat gray-hair'd Saturn, quiet as a stone,
Still as the silence round about his lair.

(অনুবাদ)

উপত্যকার অন্ধকার দুঃখের গভীরে
প্রভাতের সুবাতাস থেকে বহু দূরে
অগ্নিময় দ্বিপ্রহর থেকে বহু দূরে, সন্ধ্যাতারার থেকেও দূরে,
বসে আছেন পক্ককেশ স্যাটার্ন তাঁর আস্তানায়,
পাষাণের ন্যায় স্তব্ধ, নৈঃশব্দের মতো নিশ্চুপ।

ছন্দ ও শৈলীর দিক থেকে এই কবিতাটি অনেকটাই জন মিলটনের কবিতার সঙ্গে তুলনীয়।[] যদিও তাঁর চরিত্রগুলি একটু আলাদা। অ্যাপোলো অনেকটাপ্যারাডাইস লস্ট -এর পুত্র বা প্যারাডাইস রিগেইনড কাব্যের যিশুর মতো হলেও, হাইপেরিয়নের সঙ্গে স্যাটানের তুলনা করা চলে না। তাছাড়া এখানে চরিত্রগুলির ভূমিকাও অন্যরকম। অ্যাপোলো সিংহাসনের দাবিদার। তাঁর জয় হচ্ছে। তিনি আরও “সত্য” হচ্ছেন, আর তাই আরও “সুন্দর” হচ্ছেন।

অংশবিশেষ

[সম্পাদনা]

প্রথম স্কন্দে হাইপেরিয়নের উক্তি:

Saturn is fallen, am I too to fall?
Am I to leave this haven of my rest,
This cradle of my glory, this soft clime,
This calm luxuriance of blissful light,
These crystalline pavilions, and pure fanes,
Of all my lucent empire? It is left
Deserted, void, nor any haunt of mine.
The blaze, the splendor, and the symmetry,
I cannot see – but darkness, death and darkness.
Even here, into my centre of repose,
The shady visions come to domineer,
Insult, and blind, and stifle up my pomp. –
Fall! – No, by Tellus and her briny robes!
Over the fiery frontier of my realms
I will advance a terrible right arm
Shall scare that infant thunderer, rebel Jove,
And bid old Saturn take his throne again.

পাদটীকা

[সম্পাদনা]
  1. Bate, Walter Jackson. The Stylistic Development of Keats. New York: Humanities Press, 1962

The following critics have written on Hyperion and on Keats' handling of the epic form:

  • John Barnard. John Keats. Cambridge University Press 1987. Chapter 4 Hyperion: 'Colossal Grandeur'
  • Cedric Watts. A Preface to Keats. Longman Group Limited 1985. Part two: the Art of Keats, The influence of Milton: Hyperion.

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]