সুহাইলা সিদ্দিকী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লেফটেন্যান্ট জেনারেল
সুহাইলা সিদ্দিকী
Suhaila Siddiq speaking in 2002–2004
জনস্বাস্থ্য মন্ত্রী, আফগানিস্তান
কাজের মেয়াদ
ডিসেম্বর ২০০১ – ২০০৪
রাষ্ট্রপতিহামিদ কারজাই
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৯৩৮ (বয়স ৮৫–৮৬)
কাবুল, আফগানিস্তান
ধর্মইসলাম

লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডা. সুহাইলা সিদ্দিকী (জন্ম ১৯৩৮), প্রায়শই জেনারেল সুহাইলা হিসাবে উল্লেখিত হন, হচ্ছেন আফগানিস্তানের একজন অবসরপ্রাপ্ত রাজনীতিবিদ। তিনি ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত জনস্বাস্থ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনীর সার্জন জেনারেল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। একজন সরকারি মন্ত্রী হিসাবে, তার নামের আগে তাকে মাননীয় শিরোনাম দেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তানে কয়েকজন মহিলা সরকারী নেতাদের মধ্যে সিদ্দিকী একজন এবং আফগানিস্তানের একমাত্র মহিলা লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে অধিষ্ঠিত হন তিনি। তিনি মোহাম্মদ জহির শাহের শাসনামল থেকে আফগানিস্তানের সরকারের জন্য কাজ করেছেন।

প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা[সম্পাদনা]

জেনারেল সুহাইলার জন্ম আফগানিস্তানের কাবুলে। তিনি রাজকীয় বারাকজাই মোহাম্মদজাই পশতুন বংশের অন্তর্গত।[১][২]

উচ্চ বিদ্যালয় সমাপ্তির পর, তিনি কাবুল মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে তার চিকিৎসা অধ্যয়ন সম্পন্ন করেন।[৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

আফগানিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি মুহাম্মদ নজিবউল্লাহর (১৯৮৭-১৯৯২) সরকারের সময়, সিদ্দিকীকে সার্জন জেনারেল পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল। তিনি তালিবানের আগে ও পরে ওয়াজিব আকবর খানের প্রধান কাবুল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের প্রধান ছিলেন। তালিবানদের অধীনে, তিনি নারীদের জন্য ঔষধের নির্দেশনা অব্যাহত রাখেন এবং তালিবানরা এটি বন্ধ করে দেওয়ার পর, যেখানে তিনি কাজ করতেন। সেখানকার মহিলাদের বিভাগটি পুনরায় চালু করতে সক্ষম হন তিনি।[৪]

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ২৪ জুলাই, ২০০২-এ ওভাল অফিসে আফগান মন্ত্রীদের সাথে এক বৈঠকে। বাম থেকে চিত্রিত, হচ্ছেন: আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ, সাঈদ মুস্তফা কাজেমি, সুহাইলা সিদ্দিকী, মোহাম্মদ আমিন ফারহান, এবং হাবিব সোরাবি

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক তালিবান সরকারের অপসারণের পর সিদ্দিকীকে আফগানিস্তানের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রী নিযুক্ত করা হয় এবং অন্তর্বর্তী রাষ্ট্রপতি হামিদ কারজাই কর্তৃক শপথ গ্রহণ করেন তিনি। তার প্রথম কাজ ছিল মহিলাদের একটি চিকিৎসা বাহিনী প্রতিষ্ঠার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সাহায্যের অনুরোধ করা। তিনি ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডাব্লুএইচও) একটি দলকে আনিয়েছিলেন এই যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশে জনগনের স্বাস্থ্যের উন্নতির লক্ষ্যে, এবং বলেন যে আফগান নারীদের প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ কারণ তারা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটি চূড়ান্ত সম্পদ।[৫]

সুহাইলা সিদ্দিকী তালিবান যুগের অনেক নারীবাদী কর্তৃক নায়িকা হিসেবে বিবেচিত। তার বোন সিদিকা ছিলেন কাবুল পলি-টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক, তিনি এবং তার বোন ছিলেন খুব অল্প কয়েকজন নারীর অন্যতম যারা সফলভাবে বোরকা পরিধান করতে অস্বীকার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "যখন ধর্মীয় পুলিশ তাদের বেত সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন এবং আমাকে আঘাত করার জন্য তাদের বেত উপরে উঠালেন,আমি তাদের মারার জন্য উদ্যত হলাম, তারপর তারা তাদের বেত নত করল এবং আমাকে যেতে দিল।"[৪]

মন্ত্রী হিসেবে সুহাইলা সিদ্দিকীর প্রচারিত কয়েকটি কার্যক্রমের তালিকা নিম্নরূপ:

  • এপ্রিল ২০০২-এ, জাতিসংঘ শিশু তহবিলের পক্ষে পোলিওর বিরুদ্ধে ৬ মিলিয়ন আফগান শিশুকে টিকা দেওয়ার বিষয়ে সিদ্দিকী তত্ত্বাবধান করেন।[৬]
  • জুলাই ২০০২-এ, আফগানিস্তানের সবচেয়ে আধুনিক হাসপাতাল নির্মানের প্রতিশ্রুত প্রতিশ্রুতি পুনর্নবীকরণের জন্য একটি চীনা প্রতিনিধিদলের সাথে তহবিল নিয়ে সাক্ষাৎ করেন।[৭]
  • নভেম্বর ২০০৬-এ, সিদ্দিকী আফগানিস্তানে এইডস রোগের বিষয়ে নিউ ইয়র্ক সিটিতে বক্তৃতা উপস্থাপন করেন।[৮]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

সিদ্দিকী আফগানিস্তানে তার সারা জীবন কাটিয়েছিলেন। তিনি কখনোই বিয়ে করেননি কারণ তিনি তার পেশার প্রতি খুব উৎসর্গীকৃত ছিলেন এবং স্বামীর জন্য তার কোন সময় ছিল না:[৩] "আমি বিয়ে করিনি কারণ আমি একজন পুরুষের কাছ থেকে আদেশ নিতে চাইনি।"[৯]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "In Leadership"। ২১ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১৯ 
  2. Interim Government 2001–02
  3. "'We Can Only Rely On Ourselves To Rebuild Our Country'"Newsweek। ডিসেম্বর ২০, ২০০১। মে ৭, ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-০৫ 
  4. Asne Seierstad, The Bookseller of Kabul, trans. Ingrid Christopherson, Virago, 2004, আইএসবিএন ৯৭৮-১-৮৪৪০৮-০৪৭-২, 92.
  5. Los Angeles Times, Health Minister Stresses Training for Women. December 29, 2001
  6. "UNICEF.org"। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১৯ 
  7. "English.people.com"। ২৭ মার্চ ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১৯ 
  8. "Eurasianet.org"। ১৪ জুলাই ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১৯ 
  9. "Profile: Suhaila Seddiqi"। BBC News। ২০০১-১২-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-০১ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]