সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায় (নৃত্যশিল্পী)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের শিক্ষার্থীদের সাথে নৃত্য প্রদর্শন করছেন

সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন ভারতীয় কত্থক বিশেষজ্ঞ, নৃত্য পরিচালিকা (কোরিওগ্রাফার) এবং নৃত্য গবেষক।[১] তিনি অল্প কিছুদিনের জন্য পণ্ডিত বিজয় শঙ্কর এবং শ্রীমতী মায়া চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় শিক্ষালাভ করেছিলেন। এরপর তিনি পণ্ডিত বিরজু মহারাজের কাছ থেকে কত্থক শিখেছিলেন।[২]

তিনি দূরদর্শনের 'এ' গ্রেডভুক্ত শিল্পী এবং ভারতীয় সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পরিষদের (ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্স) তালিকাভুক্ত একজন শিল্পী। তিনি পদ্ম বিভূষণ পণ্ডিত বিরজু মহারাজের সক্রিয় নির্দেশনায় কত্থকের কথাশৈলীকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন।[২]কত্থক ও ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যে তাঁর অবদানের জন্য তিনি স্বার্থমোর কলেজের অধ্যাপক পল্লবী চক্রবর্তীর "বেলজ অব চেঞ্জ" বইটিতে বৈশিষ্ট্যায়িত হয়েছিলেন।[৩]

শিক্ষাগত যোগ্যতা[সম্পাদনা]

সুস্মিতা কলকাতার লরেটো কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।[৪]

ক্রিয়াকলাপ[সম্পাদনা]

সুস্মিতা পুরো ভারত এবং বিশ্বজুড়ে একাধিক বড় উৎসবে নৃত্যাভিনয় করেছেন। ২০০৭ সালে টোকিওতে[৫] কোরিওগ্রাফিক কাজ উপস্থাপনের জন্য তিনি ইউনেস্কো দ্বারা আমন্ত্রিত হয়েছিলেন।[৫] এর আগে ১৯৯২ - ১৯৯৩ সালে তিনি জাপান সফর করেছিলেন কত্থকের আসল ঐশ্বর্য এবং জটিল আকার উপস্থাপন করার জন্য। তিনি অন্যান্য যেসব আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক স্থানে নৃত্য প্রদর্শন করেছেন সেগুলি হল:[৬][৭]

  • রিটবার্গ মিউজিয়াম, জুরিখ
  • উবারসি জাদুঘর, ব্রেমেন
  • বেলগ্রেড টেলিভিশন, বেলগ্রেড
  • বসন্ত উৎসব, পূর্ববর্তী ইউ.এস.এস.আর.
  • উইন্ডোজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড, বেইজিং
  • ফেস্টিভাল অব ইন্ডিয়া, ব্যাংকক
  • নেহেরু সেন্টার, লন্ডন
  • আইসিসিআর ট্যুরস, মাসকট
  • রামায়ণ সম্মেলন, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো
  • ইউসি বার্কলে এবং ইউসিএলএ, বার্কলে এবং লস অ্যাঞ্জেলেস
  • ক্যানসাস স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যানহাটন
  • রামায়ণ সম্মেলন, ডারবান
  • বালি আর্টস ফেস্টিভাল, বালি

শিক্ষকতা[সম্পাদনা]

কলকাতায় সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুকুল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, কুয়েত, সুইজারল্যান্ড, রাশিয়া, স্পেন এবং হল্যান্ডের মতো বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করে।[৭] জেনেভা'স আটিলিয়ার্স ডি এথনোমজিকোলজি থেকে আসা তাঁর শিক্ষার্থীদের সাথে তিনি জেনেভায় ও কেরলে বেশ কয়েকটি প্রযোজনা করেছেন।[৮] সম্প্রতি তিনি কেরল ঘরানা শুরু করেছিলেন, যা ভারতীয় নৃত্য ও সংস্কৃতি শেখার, শেখানোর এবং ভাগ করে নেওয়ার একটি মঞ্চ।[৯]

সুস্মিতা সাংস্কৃতিক সংগঠন স্পিকম্যাকায়ের সাথেও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। তিনি ভারত জুড়ে স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মশালা পরিচালনা করেন। স্পিকম্যাকায়ের সাথে তাঁর যোগাযোগ তাঁকে ভারত জুড়ে প্রতিভাধর শিশুদের সাথে কাজ করতে সক্ষম করেছে।[১০]

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

সুস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিম্নোক্ত পদক বা সম্মাননায় সম্মানিত হয়েছেন-

  • এমেরিটাস ফেলোশিপ - সংস্কৃতি ও মানব সম্পদ মন্ত্রক, ভারত সরকার[১১]
  • শৃঙ্গারমণি পুরস্কার - সুর শৃঙ্গার সংসদ, মুম্বই
  • আর্য নাট্য সমাজ - পশ্চিমবঙ্গ
  • নৃত্য সাধনা পুরস্কার - অখিল ভারতীয় সংস্কৃতিক সংঘ, পুনে[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Charting the course of a tradition called Kathak"The New Indian Express। ২০১৫-১২-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-০১ 
  2. "Kathak show floors airmen"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১০-০৯-০৬। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-০১ 
  3. Pallabi, Chakrevorty (২০০৮)। Bells of Change - Kathak Dance, Women and Modernity In India। University of Chicago Press। আইএসবিএন 978-1905422487 
  4. "Profile"www.sushmitabanerjee.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-০১ 
  5. "The Telegraph - Calcutta : Metro"www.telegraphindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-০১ 
  6. "artsnetworkasia"www.artsnetworkasia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-০১ 
  7. "A voyage of excellence"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-০৯-১১। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-০১ 
  8. "Nathalie Masson Kathak"Nathalie Masson Kathak। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-০১ 
  9. "Kathak danseuse mesmerises children"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১০-১২-০১। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-০১ 
  10. "Kathak danseuse mesmerises children"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১০-১২-০১। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-০১ 
  11. "Merging time, motion and emotions ..."The New Indian Express। ২৭ এপ্রিল ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২০