সাজিদ রাজবংশ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সাজিদ রাজবংশ

ساجیان
৮৮৯–৯২৯
সাজিদ রাজবংশের মানচিত্র
সাজিদ রাজবংশের মানচিত্র
রাজধানীমারাঘা
(৮৮৯-৯০১)
আরদাবিল
(৯০১-৯২৯)
প্রচলিত ভাষাপারসিয়ান
ধর্ম
সুন্নি ইসলাম
সরকাররাজতন্ত্র
আফসিন 
• ৮৮৯-৯০১
মুহাম্মাদ ইবনে আবই’ল সাজ
• ৯২৮-৯২৯
আবুল-মুসাফির আল-ফাতহ্ (শেষ)
ইতিহাস 
• প্রতিষ্ঠা
৮৮৯
• বিলুপ্ত
৯২৯
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
Abbasid Caliphate
Sallarid dynasty

সাজিদ রাজবংশ (ফার্সি: ساجیان, প্রতিবর্ণীকৃত: sajyan), একটি ইরানী মুসলিম রাজবংশ যা ৮৮৯/৮৯০ থেকে ৯২৯ সাল পর্যন্ত শাসন করেছিল। সাজিদরা আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার কিছু অংশ প্রথমে মারাঘা ও বারদা এবং তারপর আরদাবিল থেকে শাসন করেছিল। [ক][১] সাজিদের উৎপত্তি মধ্য এশিয়ার উশ্রুসানা প্রদেশ থেকে এবং তারা ছিল ইরানী (সোগদিয়ান)[২][৩][খ]বংশোদ্ভূত। দিউদাদের পুত্র মুহাম্মদ ইবনে আবই’ল-সাজ দিওদাদ ছিলেন আজারবাইজানের প্রথম সাজিদ শাসক; ৮৮৯ বা ৮৯০ সালে এখানের শাসক হিসেবে নিযুক্ত হন। মুহাম্মদের বাবা আবুল-সাজ দেবদাদ আজারবাইজানে বিদ্রোহী বাবাক খোররামদিনের বিরুদ্ধে শেষ অভিযানের সময় উশ্রুসানান রাজপুত্র আফসিন খায়দারের অধীনে যুদ্ধ করেছিলেন এবং পরে খলিফার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ৯ম শতাব্দীর শেষের দিকে, আব্বাসীয় খিলাফতের কেন্দ্রীয় কর্তৃত্ব দুর্বল হয়ে পড়লে, মুহাম্মদ একটি কার্যকরি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করতে সক্ষম হন। প্রতিবেশী আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টায়, সাজিদের বেশিরভাগ শক্তি ব্যয় হয়েছিল। ৯২৯ সালে আবুল-মুসাফির আল-ফাতহের মৃত্যুর সাথে সাথে এই রাজবংশের সমাপ্তি ঘটে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

নবম শতাব্দীর শেষের দিকে (৮৯৮-৯০০) মুহাম্মদ ইবনে আবু সাজের নামে মুদ্রার নামকরণ করা হয়েছিল। মুহাম্মদ ইবনে আবু সাজ দক্ষিণ ককেশাসের অধিকাংশ সাজিদ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করতে সফল হন। সাজিদের প্রথম রাজধানী ছিল মারাঘা যদিও তারা সাধারণত বরদায় বসবাস করত।[৪][৫][৬]

ইউসুফ ইবনে আবই’ল-সাজ ৯০১ সালে ক্ষমতায় আসেন ও মারাঘার দেয়াল ভেঙে দেন এবং রাজধানীকে আর্দাবিলে স্থানান্তর করেন। সাজিদ রাজবংশের পূর্ব সীমানা কাস্পিয়ান সাগরের তীরে এবং পশ্চিম সীমানা আনি এবং ডাবিল (ডিভিন) শহর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়েছিলো। ইউসুফ ইবনে আবই’ল-সাজ-এর খলিফার সাথে ভালো সম্পর্ক ছিলো না। ৯০৮ সালে, ইউসুফের বিরুদ্ধে একটি খিলাফত বাহিনী পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু আল-মুকতাফি মারা যান এবং তার উত্তরাধিকারী আল-মুক্তাদির, ইউসুফ ইবনে আবই’ল-সাজের বিরুদ্ধে একটি বৃহৎ সৈন্যবাহিনী নিয়ে যান এবং তাকে বছরে ১২০ হাজার দিনার প্রদান করতে বাধ্য করেন। আল-মুক্তাদিরের উজির আবুল-হাসান আলী ইবনে আল-ফুরাত শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং তখন থেকে ইউসুফ ইবনে আবই’ল-সাজ তাকে বাগদাদে তার পৃষ্ঠপোষক হিসাবে বিবেচনা করতেন এবং প্রায়শই তার মুদ্রায় তার উল্লেখ করতেন। শান্তি প্রতিষ্ঠার কারণে, ইউসুফ ইবনে আবই’ল-সাজকে ৯০৯ সালে খলিফা কর্তৃক আজারবাইজানে গভর্নরশিপ গ্রহণ করার অনুমতি দেয়া হয়।[৭][৮][৯]

বাগদাদে তার রক্ষক উজিয়ার ইবনে আল-ফুরাতকে বরখাস্ত (৯১২ সালে)করার পর, ইউসুফ ইবনে আবই’ল-সাজ খিলাফতের কোষাগারে বার্ষিক কর প্রদান বন্ধ করে দেন।[৪][১০]

ইউসুফ ইবনে আবই’ল-সাজের মুদ্রাসমূহ।

আজারবাইজানীয় ঐতিহাসিক আব্বাসগুলু আগা বাকিখানভের মতে, ৯০৮-৯০৯ থেকে ৯১৯ সাল পর্যন্ত, সাজিদরা শিরবংশাহ মাজিয়াদিদদেরকে তাদের উপর নির্ভরশীল করে রাখে। এইভাবে, ১০ম শতাব্দীর শুরুতে, সাজিদ রাজ্য দক্ষিণে জাঞ্জান থেকে উত্তরে ডারবেন্ট, পূর্বে ক্যাস্পিয়ান সাগর, পশ্চিমে আনি এবং ডাবিল শহর পর্যন্ত অঞ্চলগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে, যার অধিকাংশ ভূমি আধুনিক আজারবাইজানে’র অংশ।[১০]

ইউসুফ ইবনে আবই’ল-সাজের শাসনামলে, রাশিয়ান আক্রমণকারীরা ৯১৩-৯১৪ সালে উত্তর থেকে ভলগা হয়ে সাজিদ অঞ্চল আক্রমণ করে। ইউসুফ ইবনে আবু সাজ রাজ্যের উত্তর সীমানা শক্তিশালী করার জন্য ডারবেন্ট প্রাচীর মেরামত করেন। সাগরের ভেতর দেয়ালের ভেঙে পড়া অংশও তিনি পুনঃনির্মাণ করেন।[১১]

৯১৪ সালে, ইউসুফ ইবনে আবই’ল-সাজ জর্জিয়ার দিকে একটি অভিযান চালান। তিবিলিসিকে সামরিক অভিযানের কেন্দ্র হিসাবে বেছে নেয়া হয়। তিনি প্রথমে কাখেতি দখল করেন এবং উজারমা ও বোচোরমা দুর্গও দখল করেন এবং বেশ কয়েকটি অঞ্চল দখল করে ফিরে আসেন।[৪][১২]

ইউসুফ ইবনে আবু সাজের মৃত্যুর পর সাজিদ বংশের শেষ শাসক ফাতহ বিন মুহাম্মদ বিন আবই'ল-সাজকে তার একজন ক্রীতদাস দ্বারা আরদাবিলে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল, যা সাজিদ রাজবংশের অবসান ঘটায় এবং ৯৪১ সালে আজারবাইজানে সালারিদ রাজবংশের চূড়ান্ত সম্প্রসারণকে সক্ষম করে।[৪][১২]

কালানুক্রম[সম্পাদনা]

  • আবদু উবায়দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে আবই’ল-সাজ (৮৮৯-৯০১)
  • আবুল মুসাফির দেবদাদ ইবনে মুহাম্মদ (৯০১)
  • ইউসুফ ইবনে আবই’ল-সাজ (৯০১-৯১৯)
    • সুবুক (৯১৯-৯২২) (সাজিদের একজন সেবক এবং একজন অস্থায়ী তত্ত্বাবধায়ক)
  • ইউসুফ (পুনরুদ্ধার) (৯২২-৯২৮)
  • ফাতহ্ বিন মুহাম্মদ বিন আবই'ল-সাজ (৯২৮-৯২৯)

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Azerbaijan IV, C.E. Bosworth, Encyclopaedia Iranica, December 15, 1987;"...the caliph Moʿtażed appointed one of his generals, Moḥammad b. Abi’l-Sāj, an Iranian from Central Asia, as governor of Azerbaijan and Armenia, and the family of the Sajids (q.v.) took their place as one of the virtually autonomous lines of provincial governors..."
  2. Clifford Edmund Bosworth, The New Islamic Dynasties: A Chronological and Genealogical Manual, Columbia University, 1996. p. 147: "The Sajids were a line of caliphal governors in north-western Persia, the family of a commander in the 'Abbasid service of Soghdian descent which became culturally Arabised."
  3. V. Minorsky, Studies in Caucasian history, Cambridge University Press, 1957. p. 111
  4. The Cambridge History of Iran, Том 4। Cambridge University Press। ১৯৭৫। আইএসবিএন 978-0521200936 
  5. Minorskiy, Vladimir (১৯৫৭)। Studies in Caucasian history। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 111। 
  6. "Azerbaijan iv. Islamic History to 1941 – Encyclopaedia Iranica"iranicaonline.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-১০ 
  7. Muir, William (২০০৪)। The Caliphate: Its Rise, Decline and Fall from Original Sources। Kessinger Publishing। আইএসবিএন 1417948892 
  8. Kennedy, Hugh (২০০৪)। The Prophet and the Age of the Caliphates: The Islamic Near East from the 6th to the 11th Century (second সংস্করণ)। Harlow: Longman। পৃষ্ঠা 190আইএসবিএন 978-0582405257 
  9. Madelung, W (১৯৭৫)। The Minor Dynasties of Northern Iran। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 198–249। আইএসবিএন 0521200938 
  10. Aliyarli, Suleyman (২০০৯)। History of Azerbaijan। Chirag। পৃষ্ঠা 209। 
  11. Василий Владимирович, Бартольд (১৯২৪)। Место Прикаспийских областей в истории мусульманского мира 
  12. Ismailov, Dilgam (২০১৭)। History of Azerbaijan (পিডিএফ)  উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে ":2" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে

টেমপ্লেট:Iranian Intermezzo

সাহিত্য[সম্পাদনা]

  •  
  • Clifford Edmund Bosworth, The New Islamic Dynasties: A Chronological and Genealogical Manual, Columbia University, 1996.
  • V. Minorsky, Studies in Caucasian history, Cambridge University Press, 1957.


উদ্ধৃতি ত্রুটি: "lower-alpha" নামক গ্রুপের জন্য <ref> ট্যাগ রয়েছে, কিন্তু এর জন্য কোন সঙ্গতিপূর্ণ <references group="lower-alpha"/> ট্যাগ পাওয়া যায়নি